কুমিল্লা ও নোয়াখালীতে হরতালবিরোধীদের তাণ্ডবঃ ঢাকার বাইরে আহত শতাধিক গ্রেফতার ১৫০

জামায়াতে ইসলামীর ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে গতকাল কুমিল্লা ও নোয়াখালীতে হরতালবিরোধী বিক্ষোভের নামে তাণ্ডব চালিয়েছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ।
পুলিশের উপস্থিতিতে তারাবিভিন্ন শিক্ষা ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে হামলা করেছে। কুরআন শরিফ  পুড়িয়ে দিয়েছে এবং গুলি করেছে। এ দিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে পুলিশসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এ ছাড়া গ্রেফতার করা হয়েছে প্রায় দেড় শ’ জনকে।

নোয়াখালী সংবাদদাতা জানান, নোয়াখালীতে ছাত্রলীগের গুলিতে জামায়াতকর্মী আহত হয়েছেন। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা শিাপ্রতিষ্ঠান ব্যাংক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে এবং কুরআন শরিফ পুড়িয়ে দেয়।  সকাল থেকে ছাত্রলীগ কর্মীরা পুলিশের সামনে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ-বসুরহাটে প্রকাশ্য আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়। তাদের সাথে জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। এ সময় আওয়ামী লীগ কর্মীরা আটটি কুরআন শরিফ, পরীার্থীদের বই, পোশাক, প্রবেশপত্র পুড়িয়ে দেয় এবং ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। এ দিকে ছাত্রলীগকর্মীরা বসুরহাট বাজারে জামায়াতকর্মী ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিনকে ল্য করে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ হেলালকে এলাকাবাসী গুরুতর আহতাবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ছাড়া ছাত্রলীগের হামলায় অষ্টম শ্রেণীর শিার্থী ফয়সাল আহত হয়। মাইজদীতে আ’লীগ-ছাত্রলীগকর্মীরা হরতালবিরোধী মিছিল বের করে। পরে তারা ইসলামী ব্যাংক মাইজদী কোর্ট শাখা ভাঙচুর করে। পিকেটাররা মার্কেটাইল ব্যাংক মাইজদী শাখায় ইটপাটকেল নিপে করে। ছাত্রলীগের নেতা রায়হান মাইজদী গোদার মসজিদের কাছে জামায়াত সমর্থক ও ব্যবসায়ী কাজী নুরুল আমিনকে মারধর করে।

কুমিল্লা সংবাদদাতা জানান, জামায়াতের ডাকা হরতালে আওয়ামী লীগ কুমিল্লায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। কুমিল্লা শহরের সেন্ট্রাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, কুমিল্লা টাওয়ার শপিং কমপ্লেক্স, এস পরিবহন অফিস, এনসিসি ব্যাংক ও হোটেল মিড পয়েন্টে তারা ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। সেন্ট্রাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল দাবি করেছে, তাদের তির পরিমাণ ১০ লাখ টাকার। কুমিল্লা টাওয়ার ভাঙচুরের ফলে তাদের পাঁচ লাখ টাকার তিসাধন হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। হোটেল মিড পয়েন্টের তির পরিমাণ পাঁচ লাখ টাকা বলে তারা জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগ গতকাল দুপুরে হরতালবিরোধী মিছিল বের করে এসব তাণ্ডব চালায়। এ সময় পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। সাংবাদিকেরা হামলার ছবি উঠাতে গেলে আওয়ামী লীগ ক্যাডাররা এসএ টিভির কুমিল্লা প্রতিনিধি আবু মুছাকে লাঞ্ছিত করে এবং এনটিভির কুমিল্লা প্রতিনিধি জালাল উদ্দিনের ক্যামেরা নিয়ে যায়। বুড়িচং জামায়াত শিবিরের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে এক কনস্টেবলসহ পাঁচ জামায়াত-শিবিরকর্মী আহত হয়।

যশোর অফিস জানায়, যশোরে জামায়াতের ডাকা হরতাল শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে। জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা শহরের বিভিন্ন এলাকায় পিকেটিং করে। হরতাল চলাকালে শামীম, সজীব, মঈন ও হাবিবুর রহমান নামে চার শিবিরকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে সদর উপজেলার নতুনহাট এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।

এ দিকে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে দেয়া রায় প্রত্যাখ্যান করে যশোরে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা মিছিল ও সমাবেশ করে।

নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, পুলিশের কড়া নিরাপত্তা এবং আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা রাজপথে থাকলেও নারায়ণগঞ্জে লাঠি নিয়ে মিছিল করে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা। মিছিলে তাদের স্লোগান ছিল ‘জামায়াত-শিবির-পুলিশ ভাই ভাই, শেখ হাসিনার রক্ত চাই’।

এ দিকে শহরের ডিআইটি এলাকায় জামায়াত-শিবিরকর্মীদের মিছিলের খবরে শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়া গোল চত্বর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামানের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক পুলিশ জামায়াত-শিবির সদস্যদের ঠেকাতে রণপ্রস্তুতি নিলে শহরময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

সিদ্ধিরগঞ্জের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল এলাকায় টায়ারে অগ্নিসংযোগের সময় দুলাল নামে জামায়াতের এক কর্মীকে গ্রেফতার করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ।

গাজীপুর সংবাদদাতা জানান, হরতালের সমর্থনে গতকাল গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল, পিকেটিং, গাড়ি ভাঙচুর ও বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। নাশকতা ঠেকাতে জামাত-শিবিরের নেতাকর্মী সন্দেহে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ ।

তবে সারা জেলার কোথাও বড় ধরনের অপ্রীতিকর কোনো ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

টাঙ্গাইল সংবাদদাতা জানান, সারা দেশের মতো টাঙ্গাইলেও হরতাল পালিত হয়েছে। হরতালের সমর্থনে টাঙ্গাইল পৌর জামায়াত বিক্ষোভ মিছিল বের করে। শহরের হবিবর রহমান প্লাজার সামনে থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি রেজিস্ট্রি পাড়া শাহীন কলেজের সামনে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন পৌর আমির আহসান হাবীব মাসুদ।

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা  জানান, চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় হরতালের সমর্থনে বিােভ মিছিল করে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে পিকেটিং করে হরতালকারীরা। সকালে মিঠাছড়া এলাকায় মিছিলে নেতৃত্ব দেন শিবিরের উপজেলার সভাপতি হাফেজ আশরাফ হোসাইন, নিজামপুরে মিছিলে নেতৃত্ব দেন শিবির নেতা তৌহিদুল হক, লোকমান হোসেন ও শাহীন কামাল। এ সময় পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয়। দুপুরে জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার রায় ঘোষণার পরপরই একই এলাকায় জামায়াত-শিবির একটি বিােভ মিছিল বের করে। মিছিলটিকে পুলিশ ধাওয়া করলে পুলিশের সাথে জামায়াত-শিবিরের সংর্ঘষ বাধে। তবে এতে কেউ আহত হয়নি বলে পুলিশ জানায়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা জানান, জামায়াতের ডাকা হরতাল চলাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন স্থানে পিকেটিংয়ের সময় পুলিশ বাধা দেয়। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ৯ জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

ফরিদপুর অফিস জানায়, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার মুক্তি দাবিতে সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে বিক্ষোভ মিছিল বের করে জামায়াত। স্থানীয় জনতা মিছিলে অংশ নেন। এ সময় মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করতে কয়েক রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছোড়ে। এতে শিবিরকর্মী তারেক, ইমন ও জাহেদ গুলিবিদ্ধ হন। এরপর মিছিল থেকে পাঁচজনকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন আবদুস সালাম, দেলোয়ার হোসেন, হজরত আলী, আবদুল আউয়াল বেপারি ও আবু বক্কার কাড়াল।

পাবনা সংবাদদাতা জানান, পাবনায় অভূতপূর্ব হরতাল পালিত হয়েছে। পাবনা-নগড়বাড়ী মহাসড়কের জালালপুর থেকে কুচিয়ামোড়া পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার মহাসড়ক অবরোধ করেন হাজার হাজার পিকেটার। জেলার ৩০ পয়েন্টে পিকেটিংকালে ৪০টি যানবাহন ভাঙচুর করা হয়। এ দিকে উত্তর ও দণিাঞ্চলের প্রবেশদ্বার ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া মোড়, লালনশাহ সংযোগ সড়কসহ অনেক এলাকায় পিকেটারেরা ২০টি ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন ভাঙচুর করেছেন।

টঙ্গী সংবাদদাতা জানান, টঙ্গীতে গতকাল হরতাল পালিত হয়েছে। হরতালের আগের দিন সন্ধ্যায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের স্থানীয় কলেজ গেট বাসস্ট্যান্ডে পরিবহনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় টঙ্গীতে আতঙ্ক বিরাজ করছিল। তবে গতকাল হরতাল চলাকালে টঙ্গীতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, সিরাজগঞ্জে সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়েছে। হরতালের সমর্থনে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে এবং জেলার অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে পিকেটিং করেছেন।

এ দিকে আবদুল কাদের মোল্লার রায় শোনার পরপরই শহরের রহমতগঞ্জ সমাজকল্যাণ মোড়ে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা প্রতিবাদ মিছিল করেন। এ ছাড়া গোশালা রোডে জামায়াত-শিবির আরেকটি প্রতিবাদ মিছিল বের করেন। মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ চার রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে। এ সময় পুলিশ জামায়াত-শিবিরের নয়জনকে আটক করে।

সাতীরা সংবাদদাতা জানান, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, পুলিশ পিকআপে আগুন, দেবহাটা জামায়াত অফিসে আগুন ও ভাঙচুরসহ বিপ্তি সংঘর্ষের মধ্যে সাতীরা হরতাল পালিত হয়েছে। হরতালের সমর্থনে সকালে শহরের বিভিন্ন স্থানে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা পুলিশের সাথে হরতাল সমর্থকদের দফা দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পুলিশসহ ১০ জামায়াত-শিবিরকর্মী আহত হয়েছেন।

দিনাজপুর সংবাদদাতা জানান, দিনাজপুরে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, সংঘর্ষ, গুলিবর্ষণ ও লাঠিচার্জের মধ্য দিয়ে গতকাল হরতাল পালিত হয়েছেন। সংঘর্ষে সারা জেলায় পুলিশসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। গ্রেফতার হয়েছেন ২১ জন। আহতদের মধ্যে জামায়াত নেতা সাইফুল ইসলামকে দিনাজপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সিলেট ব্যুরো জানায়, জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার পরপরই সিলেট নগরীজুড়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে পুলিশ ও সাংবাদিকসহ ৩০ জন আহত হয়েছেন।

বেলা ১টায় নগরীর প্রাণকেন্দ্র বন্দরবাজার এলাকায় কয়েক শ’ জামায়াত-শিবিরকর্মী সড়ক অবরোধের চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ শতাধিক রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ, ২০ রাউন্ড টিয়ার শেল ও ৫ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড নিপে করে। অবরোধকারীরা রংমহল পয়েন্ট এলাকায় অবস্থান নিয়ে পুলিশকে ল্য করে ইটপাটকেল নিপে করতে থাকেন। ইটের আঘাতে ৩ পুলিশ কনস্টেবল আহত হন। পুলিশ চারজনকে আটক করে।

এ ছাড়া নয়াসড়ক এলাকায় পুলিশ ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। সকাল ৯টার দিকে দণি সুরমা এলাকায় হরতালকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে এক পুলিশ সদস্য আহত হন। গুলিতে পাঁচজন আহত হয়েছেন।

গাইবান্ধা সংবাদদাতা জানান, মহাসড়ক অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর ও পিকেটিংয়ের মধ্য দিয়ে গাইবান্ধায় হরতাল পালিত হয়।

তুলশিঘাটে বিদ্যুতের পোল ও কলাগাছ ফেলে পিকেটারেরা রাস্তা অবরোধ করেন এবং কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। পলাশবাড়ীতে পিকেটারেরা গাড়ি ভাঙচুর করেন।

খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনায় শান্তিপূর্ণ ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল পালিত হয়েছে। হরতাল সফল করতে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় পিকেটিং করা হয় বলে জামায়াতে ইসলামী খুলনা মহানগরীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। বিকেলে তারেরপুকুরের দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মহানগর আমির মাওলানা আবুল কালাম আযাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তৃতা দেন খুলনা জেলা উত্তরের আমির মাওলানা এমরান হোসাইন, মহানগরী নায়েবে আমির অধ্যাপক আবদুল মতিন, সেক্রেটারি অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শাহ আলম, অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, মহানগর ছাত্রশিবির সভাপতি মু. সাইদুর রহমান সাইদ, সদর থানা আমির অধ্যাপক জি এম শফিকুল ইসলাম, খানজাহান আলী থানা আমির মো: আজিজুর রহমান স্বপন, মহানগর ছাত্রশিবির সেক্রেটারি আজিজুল ইসলাম ফারাজী প্রমুখ।

বরিশাল ব্যুরো জানায়, বরিশালে হরতালে বিক্ষোভ করেছে মহানগর শাখা ছাত্রশিবির। টেক্সটাইল কলেজ এলাকায় একটি অটোরিকশা ভাঙচুর করেন পিকেটারেরা। সেখান থেকে ফেরার পথে নগরীর চৌমাথা এলাকায় ছাত্রলীগের বাধার মুখে পড়ে শিবির নেতাকর্মীরা। এতে সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের ১০ আহত হন। রুপাতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি বাস ভাঙচুর করেন হরতাল সমর্থকেরা। পুলিশ সেখান থেকে শিবিরকর্মী সানাউল্লাহ ও হালিমকে আটক করে।

শেরপুর (বগুড়া) সংবাদদাতা জানান, বগুড়ার শেরপুরে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়েছে। জামায়াত-শিবিরের নেতৃত্বে মহিপুর ও ধুনট মোড়ে দু’টি মিছিল মহাসড়ক প্রদণি করে। ওই সময় উপজেলা জামায়াতের কয়েক হাজার মহিলা কর্মী মহিপুরে ঝাঁটা হাতে রাস্তায় অবস্থান নেন।

মানিকগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, মানিকগঞ্জে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হয়েছে। দুপুরের দিকে শিবিরকর্মীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে টায়ার পুড়িয়ে অবরোধের সৃষ্টি করলে পুলিশ বাধা দেয়। জেলার কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

মৌলভীবাজার সংবাদদাতা জানান, জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতাল মৌলভীবাজার জেলায় পালিত হয়েছে শান্তিপূর্ণভাবে। জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা কোর্ট রোড, শমসেরনগর রোড, শ্রীমঙ্গল রোড, মৌলভীবাজার সিলেট রোডে টায়ার জ্বালান এবং বিােভ মিছিল করেন। এতে নেতৃত্ব দেন জেলা জামায়াতের আমির আবদুল মান্নান, জেলা সেক্রেটারি মো: শাহেদ আলী, সদর আমির আলাউদ্দিন শাহ, ছাত্রশিবিরের শহর সভাপতি হাফেজ তাজুল ইসলাম, জেলা সভাপতি দেলওয়ার হোসেন প্রমুখ।

জামালপুর সংবাদদাতা জানান, সকাল থেকেই জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন মোড়ে পিকেটিং ও খণ্ড খণ্ড মিছিল করেছেন। এ দিকে আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে অবৈধ রায়ের বিরোধিতা করে তার মুক্তির দাবিতে দুপুরে জেলা জামায়াত বিক্ষোভ মিছিল করেছে। জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক হারুনুর রশীদের নেতৃত্বে স্টেশন বাজার থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেছে।

রংপুর অফিস জানায়, টানটান উত্তেজনায় পিকেটিং, কড়া পুলিশি নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে রংপুরে গতকাল পালিত হলো জামায়াতের ডাকা হরতাল। হরতালে পুরো নগরী অচল হয়ে পড়ে। জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা নগরীর দমদমায় রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে দাবি আদায়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

এ দিকে আবদুুল কাদের মোল্লাকে দেয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় প্রত্যাখ্যান করে মহানগর জামায়াত ও শিবির নেতৃবৃন্দ বলেছেন, প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে অবৈধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া এই রায় দেশ এবং বিশ্ববাসী মানে না। কাদের মোল্লা নিদোর্ষ। কসাই মোল্লার দায়ভার কাদের মোল্লার ওপর চাপানোর অপচেষ্টা করা হয়েছে। অন্য দিকে আওয়ামী লীগ আনন্দ মিছিল করলেও নেতারা বলেছেন, জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী রায় হয়নি।

খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা জানান, খাগড়াছড়িতে হরতালের সমর্থনে পিকেটিং করার সময় জেলা শহরের আদালত সড়ক এলাকা থেকে আমীর হোসেন (২৫) ও আমীর হোসেইন (২১) নামে দুই শিবিরকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। শহরের বিভিন্ন স্থানে শিবিরকর্মীরা পিকেটিং করেছেন। তবে হরতাল ছিল শান্তিপূর্ণ।

বান্দরবান সংবাদদাতা জানান, হরতালে অচল ছিল বান্দরবান। বিকেলে জামায়াত নেতাকর্মীরা জেলা জামায়াত আমির মাওলানা আবদুস সালাম আজাদের নেতৃত্বে শহরে মিছিল করেন। পরে মাদরাসা শপিং কমপ্লেক্স এলাকায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াত আমির মাওলানা আবদুস সালাম আজাদ, জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট আবুল কালাম, তাজুদ্দিন, জামায়াত নেতা রেজাউল করিম, আবদুল হামিদ, জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি হারুনুর রশিদ প্রমুখ।

রাজবাড়ী সংবাদদাতা জানান, রাজবাড়ীতে কড়াকড়িভাবে হরতাল পালিত হয়েছে। হরতালের সমর্থনে সোমবার রাতে জামায়াত শহরে লাঠিমিছিল বের করলে পাটবাজার মোড়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। সেখানে জামায়াত কর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে সদর থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক ও এসআই জাফর ও পাঁচ শিবিরকর্মী আহত হন। এ সময় পুলিশ চার শিবিরকর্মীকে আটক করে।

ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা জানান, ঠাকুরগাঁওয়ে হরতাল সমর্থকরা দু’টি বাস ভাঙচুর করেছে। এ সময় দুইজন আহত হন। আহতরা হলেন- মাসুম (১৪) ও বুধু (২০)।

এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ে তিন শিবিরকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুস সবুর (৩৫), ময়নুল ইসলাম (৪৫) ও আসাদ (২৭)।

ছাতক (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, ছাতকে পিকেটিং করার সময় আতাউল গনি (৩২) নামের এক জামায়াতকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গোবিন্দগঞ্জ বটেরখাল ব্রিজের কাছে টায়ারে অগ্নিসংযোগ করার সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়।

নওগাঁ সংবাদদাতা জানান, নওগাঁয় শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হয়েছে। সকাল সাড়ে ৬টায় জামায়াত-শিবির কর্মীরা একটি বিােভ মিছিল বের করেন। এতে নেতৃত্ব দেন জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি তোফাজ্জল হোসেন মোল্লা। এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পিকেটিং হয়েছে।

রাজশাহী ব্যুরো জানায়, হরতালের শুরুতে গতকাল রাজশাহীর বিনোদপুরে পুলিশের সাথে ছাত্রশিবির নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়েছে। এতে পুলিশসহ ২৫ জন আহত হয়েছেন। শিবিরকর্মীদের ওপর পুলিশ শর্টগানের গুলি, টিয়া শেল ও রাবার বুলেট নিপে করে। এ সময় শিবিরকর্মীরাও পুলিশকে ল্য করে ইটপাটকেল নিপে করেন। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়। এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে।

মতিহার থানার ওসি এস এম আব্দুস সোবহান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন এলাকা থেকে ২৪ শিবিরকর্মীকে আটক করা হয়েছে।

বগুড়া অফিস জানায়, হরতালে বগুড়ায় পিকেটারদের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশের গুলির জবাবে শিবিরকর্মীরা ককটেল নিপে করেন। তবে কেউ হতাহত হননি। পিকেটার সন্দেহে পুলিশ পাঁচজনকে আটক করেছে।

চান্দিনা (কুমিল্লা) সংবাদদাতা জানান, হরতালে কুমিল্লার চান্দিনায় পাঁচটি ট্রাক ও একটি প্রাইভেটকার ভাঙচুর করে পিকেটাররা। তবে এতে কোনো হতাহত হয়নি।

চান্দিনা বাগুর বাসস্টেশন এলাকায় তিনটি ট্রাক ও দোতলা-মাধাইয়া এলাকায় আরো দু’টি ট্রাক ও একটি ভাইভেটকার ভাঙচুর করে পিকেটাররা।

হরতাল সমর্থনে মহাসড়কের চান্দিনা এলাকার বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা বিােভ মিছিল করেন জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা।

রাজনগর (মৌলভীবাজার) সংবাদদাতা জানান, রাজনগরে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হয়েছে। উপজেলা জামায়াত-শিবির কদমহাটা, কর্ণিগ্রাম, চৌধুরীবাজার, পাঁচগাঁও ও ইলাশপুর এলাকায় পিকেটিং করেছে। পুলিশ পাঁচগাঁও থেকে সামছুল ইসলাম (১৮) ও মোজাহিদুল ইসলাম (১৭) নামে দুই শিবিরকর্মীকে আটক করেছে। এ দিকে ইলাশপুর এলাকায় পিকেটিং করার সময় দুই শিবিরকর্মী বেলাল আহমদ ও সাইফুল ইসলামের বাড়িতে হানা দিয়ে পুলিশ আসবাবপত্র ভাঙচুর ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ময়মনসিংহ অফিস জানায়, জামায়াতের ডাকা হরতাল ময়মনসিংহে শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে। শহরের কোথাও মিছিল ও পিকেটিং দেখা যায়নি। কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফজলুল করিম জানান, নাশকতার অভিযোগে উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে জামায়াত-শিবিরের ২৫ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।

পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) সংবাদদাতা জানান, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার কুসুম্বা এলাকায় হরতাল চলাকালে আওয়ামী লীগ ও জামায়াত সংঘর্ষে তিনজন আহত হয়েছেন।

তারা হলেন, আওয়ামী লীগের সাইদুল ইসলাম (৪০), ছাত্রলীগের হিমু (১৮) এবং জামাতের হারুনুর রশিদ (৩৫)।

লক্ষ্মীপুর সংবাদদাতা জানান, লক্ষ্মীপুরে ঢাকা-লক্ষ্মীপুর মহাসড়কের বাস টার্মিনাল, আলিয়া মাদরাসা, মিয়ার রাস্তার মাথাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ, টায়ারে অগ্নিসংযোগ, গাছের গুঁড়ি, ককটেল বিস্ফোরণ ও পিকেটিংয়ের মধ্য দিয়ে জামায়াতের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়েছে। এ সময় শিবিরকর্মীরা কয়েকটি স্থানে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

নরসিংদী সংবাদদাতা জানান, নরসিংদীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গতকাল চার জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সকালে শীলমান্দী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির নাজির উদ্দিন ভূঁইয়াকে নরসিংদী আসার পথে গ্রেফতার করা হয়। শিবির নেতা নূূর মোহাম্মদ, নজরুল ইসলাম ও শ্যামলকে মাধবদী থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে। নরসিংদী কলেজ রোড, মাধবদী, শিবপুর, পলাশ, মনোহরদী ও রায়পুরার বিভিন্ন এলাকায় জামায়াত ও শিবিরকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল বের করে। কোনো রকমের সঙ্ঘাত ছাড়াই নরসিংদীতে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা জানান, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় হরতাল চলাকালে পুলিশ-জামায়াত সংঘর্ষে পুলিশের এসআইসহ চারজন আহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে আহসান নামে জামায়াতের এক সমর্থককে। আহতরা হলেনÑ এসআই টিপু সুলতান, নায়েক শামসুল হক, জামায়াত নেতা আবদুস সালাম ও শিবিরের আলমডাঙ্গা পৌর সভাপতি আশরাফুল হক।

বালিয়াকান্দি(রাজবাড়ী) সংবাদদাতা জানান, রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি থানা পুলিশ সোমবার রাতে ইসলামপুর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি এস এম ওহিদুজ্জামানকে (৪০) নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে। গতকাল তাকে বিএনপির হরতালে পুলিশের দায়েরকৃত দ্রুতবিচার আইনের মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ঝিনাইদহ সংবাদদাতা জানান, হরতালের সমর্থনে ঝিনাইদহ শহরের নতুন হাট এলাকায় ইসলামী ছাত্রশিবির গতকাল লাঠি মিছিল করেছে। মিছিল শেষে সেখানে এক সংপ্তি সমাবেশে শিবির শহর শাখার সভাপতি ইবনুল পারভেজ বক্তব্য রাখেন। এর আগে পুলিশ পাঁচ জামায়াত নেতাকর্মীকে আটক করে।

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, সুনামগঞ্জে কোথাও পিকেটিংয়ে নামতে পারেনি জামায়াত কর্মীরা। সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের গোবিন্দগঞ্জ পয়েন্টে পিকেটিং করার সময় জামায়াত কর্মী আতাউল মগ্নিকে আটক করে পুলিশ।

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) সংবাদদাতা জানান, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে গতকাল শান্তিপূর্ণ হরতাল পালিত হয়েছে। জামায়াত-শিবিরকর্মীরা মহাসড়কের ১০-১২টি স্থানে পিকেটিং করে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্থানে সারা দিন বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল।

কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা জানান, জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতাল কুড়িগ্রামে শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে।

হরতালের সমর্থনে কোনো পিকেটিং না হলেও বেশির ভাগ দোকান ও ব্যবসায়-বাণিজ্য বন্ধ ছিল। পুলিশি তৎপরতার কারণে পিকেটাররা রাস্তায় নামতে পারেনি।

সকালে জেলা সেক্রেটারি আবদুল মতিন ফারুকীর নেতৃত্বে পাটেশ্বরী বাজারে ও শহর আমির মাওলানা আবদুস সবুর খানের নেতৃত্বে শহরের টেক্সটাইল মোড়ে হরতালের সমর্থনে মিছিল করে নেতাকর্মীরা।

হবিগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, হরতাল চলাকালে হবিগঞ্জের মাধবপুরে একটি ও বাহুবলে চারটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। জেলা শহরসহ উপজেলাগুলোতে বিােভ মিছিল হয়েছে। এ সময় পুলিশ দর্শকের ভূমিকায় ছিল।

কুষ্টিয়া সংবাদদাতা জানান, কুষ্টিয়ায় জামায়াতের ডাকা হরতাল শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পালিত হয়েছে। কোথাও কোনো রকমের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। হরতালের সমর্থনে শহরতলী চৌড়হাস ও জুগিয়া এলাকায় মহাসড়কে সামান্য সময়ের জন্য পিকেটিং হলেও পরে আর তা দেখা যায়নি।

নেত্রকোনা সংবাদদাতা জানান, নেত্রকোনায় ছাত্রশিবির কার্যালয়, মেস ও একটি কোচিং সেন্টারে ব্যাপক হামলা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে তাণ্ডব লীলা চালিয়েছে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দেয়া আগুনে লাখ লাখ টাকার মূল্যবান আসবাবপত্র ও ধর্মীয় গ্রন্থাদি দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকলেও পুলিশ ছিল একেবারেই নির্বিকার। দমকল বাহিনী আগুন নেভাতে এলে তাদের বাধা দেয়া হয়।

মাধবদী (নরসিংদী) সংবাদদাতা জানান, মাধবদীতে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াত-শিবিরের তিনকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেনÑ নূর মোহাম্মদ, নজরুল ও সোহাগ।

আশুলিয়া (ঢাকা) সংবাদদাতা জানান, আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়ক, নবীনগর-কালিয়াকৈর সড়ক ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা কয়েকটি স্পটে পিকেটিং করেছে।

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) সংবাদদাতা জানান, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল মো: আব্বাস মোল্লাকে আটক করেছে পুলিশ। গোয়ালন্দঘাট থানার উপসহকারী পরিদর্শক তপন কুমার দাস জানান, হরতালে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে তাকে আটক করে রাজবাড়ী আদালতে পাঠানো হয়েছে।

নীলফামারী সংবাদদাতা জানান, নীলফামারীতে হরতাল শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে। হরতালের সমর্থনে দুপুরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে জামায়াত। এ ছাড়া জলঢাকায় হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।

এ দিকে সকালে শহরের নীল প্রগতিপাড়া থেকে জামায়াতকর্মী রাজা মিয়াকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মাগুরা সংবাদদাতা জানান, জামায়াতের ডাকা হরতাল মাগুরায় শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে।

শহরের পারনান্দুয়ালী ব্যাপারীপাড়া এলাকায় জামায়াত-শিবির মিছিল বের করে। পুলিশি বাধায় মিছিলকারীরা মাগুরা-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে ঘণ্টাব্যাপী সমাবেশ করে। সমাবেশে যোগ দিতে আসা জামায়াতের ১৩ নেতাকর্মীকে আটক করার দাবি করলেও পুলিশ আটকের বিষয়টি অস্বীকার করেছে।

বরগুনা সংবাদদাতা জানান, বরগুনায় জামায়াত ইসলামীর হরতাল পালিত হয়েছে। সকাল থেকে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা বরগুনা-নিশানবাড়ীয়-বড়ইতলা সড়কে গাছ ও টায়ার জ্বালিয়ে পিকিটিং করেছে। পুলিশ সদর উপজেলা ও পাথরঘাটা থেকে তিনজন জামায়াত-শিবিরের কর্মীকে আটক করেছে।

কিশোরগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, কিশোরগঞ্জে হরতাল চলাকালে পুলিশ ১০ জন শিবির ও জামায়াতকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। পিকেটিং করার সময় পুলিশ আখড়াবাজার এলাকা থেকে শিবিরের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি আবুল কালাম ও শিবিরকর্মী বোখারিকে গ্রেফতার করে।

এ দিকে একরামপুর থেকে শিবিরের জেলা সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর আলম, জেলা সমাজকল্যাণ সম্পাদক ওবায়দুল্লাহ, জেলা সাহিত্য সম্পাদক আলাউদ্দিন, দফতর সম্পাদক মহিউদ্দিন মুক্তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিশ্বরোড এলাকা থেকে শিবিরের শহর শাখার সভাপতি হযরত আলী ও সেক্রেটারি আনোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করে।

এ দিকে গত সোমবার রাতে পাকুন্দিয়ার হোসেন্দি ইউনিয়নের জামায়াত সভাপতি মুমতাজ উদ্দিন ও কর্মী নাজমুল হককে পুলিশ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে।

রাবি সংবাদদাতা জানান, হরতালের কারণে গতকাল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) কোনো কাস-পরীা অনুষ্ঠিত হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবনগুলো ছিল তালাবদ্ধ।

বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক কার্যক্রম চললেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি।

ভোলা সংবাদদাতা জানান, ভোলায় টায়ার জ্বালিয়ে, সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করে হরতাল পালন করেছে জামায়াত-শিবির।

ইলিশায় পিকেটিংকালে পুলিশের সাথে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ পাঁচ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ এবং নুর উদ্দিন, মানিক, আমির ও লিটন নামের চার পিকেটারকে আটক করে। এ ছাড়া তজুমদ্দিন, লালমোহন থেকে পিকেটিংকালে আরো চারজনকে আটক করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.