বিচারবহির্ভূত হত্যা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ, টুকুর আপত্তি- মার্কিন মানবাধিকার রিপোর্ট প্রকাশ
বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে
উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সে
দেশের পররাষ্ট্র বার্ষিক প্রতিবেদনে নিরাপত্তা হেফাজতে বিডিআর সদস্যদের
মৃতু্যর ঘটনা তদনত্মে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করা হয়েছে।
একই সঙ্গে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার ৰমতা গ্রহণ করা এবং জরম্নরী
অবস্থা উঠিয়ে নেয়ায় মানবাধিকার পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি এবং সরকার
সাধারণভাবে প্রতিরৰা বাহিনীর ওপর কার্যকর নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছিল বলে
উলেস্নখ করা হয়। বর্তমান সরকারের আমলে ক্রসফায়ারে মৃতু্যর সংখ্যা আগের
তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ কমে এসেছে বলেও প্রতিবেদনে উলেস্নখ করা হয়। মার্কিন
পররাষ্ট্র দফতরের এই প্রতিবেদনের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন স্বরাষ্ট্র
প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট সামসুল হক টুকু। তিনি বলেছেন, প্রতিবেদনে যে সকল
তথ্য দেয়া হয়েছে তা পুরোপুরি সঠিক বলে মনে হয় না। তিনি বলেন, কোন কোন
রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি
করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে কোন হত্যাকা- সংঘটিত হলে তাদেরও জবাবদিহি
করতে হয়।
সারাবিশ্বের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দফতরের এই বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে অনুমোদিত এই প্রতিবেদন প্রকাশকালে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি কিনটন বলেন, মানবাধিকার সুরৰা ও পরিস্থিতির উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাসত্মবসম্মত ও কার্যকর কৌশল এই প্রতিবেদন। প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু শুক্রবার রাতে বিবিসিকে বলেছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর কোন্ তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তা পরিষ্কার নয়। প্রতিবেদনটি পুরোপুরি সঠিক বলে মনে করি না। তিনি বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হাতে হত্যাকা- সংঘটিত হলেও তা প্রশ্নাতীত নয়। তাদেরও জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হয় এবং তাদের ৰেত্রেও তদনত্ম করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। তিনি অভিযোগ করেন, কোন কোন রাজনৈতিক দল পরিকল্পিতভাবে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। এ প্রসঙ্গে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ কর্মী খুন ও পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক সহিংসতার কথা উলেস্নখ করেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক উপায়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইলে তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে হবে। রাজনৈতিভাবে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পরিকল্পনা গ্রহণ করা না হলেও সাধারণ সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করা আইনশৃঙ্খলা রৰাকারী বাহিনীর জন্য কঠিন কোন কাজ নয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার ব্যবস্থা ফিরে এলেও এখনও ৰমতার গুরম্নতর অপব্যবহার অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হেফাজতে থাকা অবস্থায় মৃতু্য, আইন বহির্ভূতভাবে গ্রেফতার, বন্দী করা এবং সাংবাদিক হয়রানির মতো ঘটনা। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রৰাকারী বাহিনীর সদস্যদের হাতে নিহতের সংখ্যা ৩ শতাংশ বেড়েছে। বিভিন্ন ধরনের নাগরিক প্রতিবাদের পরও সরকার প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের প্রতি অসহিষ্ণু আচরণ করছে এবং আইনবহির্ভূত হত্যাকা-গুলোর কোন তদনত্ম হয়নি। বিভিন্ন গণমাধ্যম, স্থানীয় ও আনত্মর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রৰাকারী বাহিনীর সদস্যরা ১৫৪ টি মৃতু্যর জন্য দায়ী, যার মধ্যে ১২৯ টি কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা রয়েছে। এর মধ্যে ৩৮ টি বন্দুকযুদ্ধ র্যাব, ৬৩ টি বন্দুকযুদ্ধ পুলিশ এবং ২৫ টি র্যাব-পুলিশ অথবা যৌথ বাহিনী ঘটিয়েছে।
একইসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্দুকযুদ্ধে মৃতু্যর সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ৪০ শতাংশ কমে এসেছে। আগের বছরের ৬৮ টি বন্দুকযুদ্ধে মৃতু্যর বদলে গত বছর এ ধরনের মৃতু্য ঘটে ৪১ টি। তবে এ সকল মৃতু্যর কোনটির তদনত্ম করেনি সরকার। প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচিত সরকার ৰমতা গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক সহিংসতা ৩ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। জরম্নরী অবস্থা উঠিয়ে নেয়ার পরপরই রাজনৈতিক সহিংসতা পুনরায় শুরম্ন হয়েছে। বিরোধী দল ক্রমাগত সরকারী দলের হামলার শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়ে যাচ্ছে। একটি মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদনে রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৫১ জনের মৃতু্য হয়েছে বলে জানানো হয়। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে জরম্নরী অবস্থা তুলে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে সভা-মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা বাতিল হয়ে যায়। নতুন সরকার সভা-মিছিলের অনুমতি দিলেও কোন কোন ৰেত্রে ক্রিমিনাল প্রসিডিউর কোড ১৪৪ ধারা জারি করার মাধ্যমে বিরোধী দলকে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ থেকে বিরত রাখা হয়। ১৪৪ ধারার অধীনে কর্তৃপৰ কোন স্থানে চারজনের বেশি জমায়েত হতে দেখলে তাদের বিরম্নদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত বছরে ৮২ বার ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। কিছু কিছু ৰেত্রে ৰমতাসীন দল বা পুলিশ ব্যবহার করে সভাসমাবেশ বন্ধ করে দিয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
প্রতিবেদনে নিরাপত্তা হেফাজতে বিডিআর সদস্যদের মৃতু্যও ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেবু্রয়ারি বিডিআর সদস্যরা অপর্যাপ্ত বেতন-ভাতা এবং সেনাবাহিনী থেকে আসা বিডিআর উচ্চ পর্যায়ের কর্মকতর্াদের অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিদ্রোহ করে। বিদ্রোহের পর এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়ার মধ্যে ৫৯ পুলিশী হেফাজতে মারা যায়। অভিযুক্তরা নির্যাতিত হয়ে মারা যায় বলে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের দাবি। এই মৃতু্য তদনত্মে সরকার একটি কমিটি গঠন করলেও ওই কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, মাত্র দুইজন নির্যাতনের কারণে এবং অন্যরা অসুস্থ হয়ে বা আত্নহত্যা করে মারা যায়। তবে এর পর সরকার আর কোন পদৰেপ নেয়নি। গ্রেফতারকৃত বিডিআর সদস্যদের উদ্ধৃতি দিয়ে বেশ কয়েকটি সংগঠন বলেছে, অনেক বিডিআর সদস্যের ওপর র্যাব ও পুলিশ শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে। ইলেট্রিক শক দিয়েছে, চোখ বেঁধে রেখেছে এবং উল্টো করে ঝুলিয়ে রেখেছে। হেফাজতে থাকা বিডিআর সদস্যদের মৃতু্যর পেছনে সেনা কর্মকতর্াদের হাত রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিষয়টির তদনত্ম করে সরকার ২০০৯ সালের জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছিল। তবে তা ওই সময়ের মধ্যে প্রকাশ করা হয়নি।
প্রতিবেদনে সাংবাদিক নির্যাতন এখনও অব্যাহত, বলা হয়েছে। এ জন্য সরকার ও বিরোধী দলের সঙ্গে সংশিস্নষ্টদের দায়ী করা হয়। প্রতিবেদনে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলা হয়, ২০০৯ সালে অনত্মত তিন সাংবাদিক নিহত, ৪৫ জনকে মারপিট, ৭৩ জনকে হুমকি এবং ২৩ জনের বিরম্নদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কয়েক সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংগঠন জানায়, সাংবাদিকরা এই ধরনের ঘটনার ফলে সরকারের পৰ থেকে শাসত্মিমূলক হয়রানির আশঙ্কায় স্বেচ্ছায় তথ্য গোপন বা সেলফ সেন্সনশিপের আশ্রয় নিচ্ছেন। প্রশাসনে দুনর্ীতি ও সরকারের স্বচ্ছতার বিষয়ে সরকার কোন কার্যকর পদৰেপ নিতে পারেনি বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। এতে উলেস্নখ করা হয়, এক বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৰমতাসীন দলের নেতাদের বিরম্নদ্ধে করা ১ হাজার ৮১৭ টি মামলা তুলে নেয়া হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৯ সালে বিশ্বজুড়েই সরকার কতর্ৃক প্রতিপৰকে দমিয়ে রাখার একটি সাধারণ প্রবণতা লৰ্য করা গেছে। প্রতিবেদনে চীন ও ইরানে ইন্টারনেট যোগাযোগের ওপর নিষেধাজ্ঞা, সুশীল সমাজের ওপর নির্মম বাধ্যবাধতা আরোপ, সংখ্যালঘু, নারী ও শিশুদের ওপর হয়রানিমূলক আচরণের বিষয়গুলো উঠে এসেছে। এছাড়াও গত কয়েক বছরে বিভিন্ন দেশের সরকার সন্ত্রাসবাদ ও জরম্নরী ৰমতার অতিরিক্ত বিসত্মৃত ব্যাখ্যা দিয়ে অভিযুক্ত বন্দী ও অন্যদের প্রতি মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে বলেও মনত্মব্য করা হয়। ইউরোপে মুসলিম বিরোধী মনোভাব বৃদ্ধি পাওয়া নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় প্রতিবেদনে। উদাহরণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে মিনার তৈরির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা তুলে ধরা হয়।
সারাবিশ্বের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দফতরের এই বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে অনুমোদিত এই প্রতিবেদন প্রকাশকালে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি কিনটন বলেন, মানবাধিকার সুরৰা ও পরিস্থিতির উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাসত্মবসম্মত ও কার্যকর কৌশল এই প্রতিবেদন। প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু শুক্রবার রাতে বিবিসিকে বলেছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর কোন্ তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তা পরিষ্কার নয়। প্রতিবেদনটি পুরোপুরি সঠিক বলে মনে করি না। তিনি বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হাতে হত্যাকা- সংঘটিত হলেও তা প্রশ্নাতীত নয়। তাদেরও জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হয় এবং তাদের ৰেত্রেও তদনত্ম করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। তিনি অভিযোগ করেন, কোন কোন রাজনৈতিক দল পরিকল্পিতভাবে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। এ প্রসঙ্গে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ কর্মী খুন ও পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক সহিংসতার কথা উলেস্নখ করেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক উপায়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইলে তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে হবে। রাজনৈতিভাবে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পরিকল্পনা গ্রহণ করা না হলেও সাধারণ সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করা আইনশৃঙ্খলা রৰাকারী বাহিনীর জন্য কঠিন কোন কাজ নয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার ব্যবস্থা ফিরে এলেও এখনও ৰমতার গুরম্নতর অপব্যবহার অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হেফাজতে থাকা অবস্থায় মৃতু্য, আইন বহির্ভূতভাবে গ্রেফতার, বন্দী করা এবং সাংবাদিক হয়রানির মতো ঘটনা। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রৰাকারী বাহিনীর সদস্যদের হাতে নিহতের সংখ্যা ৩ শতাংশ বেড়েছে। বিভিন্ন ধরনের নাগরিক প্রতিবাদের পরও সরকার প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের প্রতি অসহিষ্ণু আচরণ করছে এবং আইনবহির্ভূত হত্যাকা-গুলোর কোন তদনত্ম হয়নি। বিভিন্ন গণমাধ্যম, স্থানীয় ও আনত্মর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রৰাকারী বাহিনীর সদস্যরা ১৫৪ টি মৃতু্যর জন্য দায়ী, যার মধ্যে ১২৯ টি কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা রয়েছে। এর মধ্যে ৩৮ টি বন্দুকযুদ্ধ র্যাব, ৬৩ টি বন্দুকযুদ্ধ পুলিশ এবং ২৫ টি র্যাব-পুলিশ অথবা যৌথ বাহিনী ঘটিয়েছে।
একইসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্দুকযুদ্ধে মৃতু্যর সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ৪০ শতাংশ কমে এসেছে। আগের বছরের ৬৮ টি বন্দুকযুদ্ধে মৃতু্যর বদলে গত বছর এ ধরনের মৃতু্য ঘটে ৪১ টি। তবে এ সকল মৃতু্যর কোনটির তদনত্ম করেনি সরকার। প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচিত সরকার ৰমতা গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক সহিংসতা ৩ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। জরম্নরী অবস্থা উঠিয়ে নেয়ার পরপরই রাজনৈতিক সহিংসতা পুনরায় শুরম্ন হয়েছে। বিরোধী দল ক্রমাগত সরকারী দলের হামলার শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়ে যাচ্ছে। একটি মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদনে রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৫১ জনের মৃতু্য হয়েছে বলে জানানো হয়। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে জরম্নরী অবস্থা তুলে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে সভা-মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা বাতিল হয়ে যায়। নতুন সরকার সভা-মিছিলের অনুমতি দিলেও কোন কোন ৰেত্রে ক্রিমিনাল প্রসিডিউর কোড ১৪৪ ধারা জারি করার মাধ্যমে বিরোধী দলকে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ থেকে বিরত রাখা হয়। ১৪৪ ধারার অধীনে কর্তৃপৰ কোন স্থানে চারজনের বেশি জমায়েত হতে দেখলে তাদের বিরম্নদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত বছরে ৮২ বার ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। কিছু কিছু ৰেত্রে ৰমতাসীন দল বা পুলিশ ব্যবহার করে সভাসমাবেশ বন্ধ করে দিয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
প্রতিবেদনে নিরাপত্তা হেফাজতে বিডিআর সদস্যদের মৃতু্যও ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেবু্রয়ারি বিডিআর সদস্যরা অপর্যাপ্ত বেতন-ভাতা এবং সেনাবাহিনী থেকে আসা বিডিআর উচ্চ পর্যায়ের কর্মকতর্াদের অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিদ্রোহ করে। বিদ্রোহের পর এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়ার মধ্যে ৫৯ পুলিশী হেফাজতে মারা যায়। অভিযুক্তরা নির্যাতিত হয়ে মারা যায় বলে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের দাবি। এই মৃতু্য তদনত্মে সরকার একটি কমিটি গঠন করলেও ওই কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, মাত্র দুইজন নির্যাতনের কারণে এবং অন্যরা অসুস্থ হয়ে বা আত্নহত্যা করে মারা যায়। তবে এর পর সরকার আর কোন পদৰেপ নেয়নি। গ্রেফতারকৃত বিডিআর সদস্যদের উদ্ধৃতি দিয়ে বেশ কয়েকটি সংগঠন বলেছে, অনেক বিডিআর সদস্যের ওপর র্যাব ও পুলিশ শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে। ইলেট্রিক শক দিয়েছে, চোখ বেঁধে রেখেছে এবং উল্টো করে ঝুলিয়ে রেখেছে। হেফাজতে থাকা বিডিআর সদস্যদের মৃতু্যর পেছনে সেনা কর্মকতর্াদের হাত রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিষয়টির তদনত্ম করে সরকার ২০০৯ সালের জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছিল। তবে তা ওই সময়ের মধ্যে প্রকাশ করা হয়নি।
প্রতিবেদনে সাংবাদিক নির্যাতন এখনও অব্যাহত, বলা হয়েছে। এ জন্য সরকার ও বিরোধী দলের সঙ্গে সংশিস্নষ্টদের দায়ী করা হয়। প্রতিবেদনে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলা হয়, ২০০৯ সালে অনত্মত তিন সাংবাদিক নিহত, ৪৫ জনকে মারপিট, ৭৩ জনকে হুমকি এবং ২৩ জনের বিরম্নদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কয়েক সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংগঠন জানায়, সাংবাদিকরা এই ধরনের ঘটনার ফলে সরকারের পৰ থেকে শাসত্মিমূলক হয়রানির আশঙ্কায় স্বেচ্ছায় তথ্য গোপন বা সেলফ সেন্সনশিপের আশ্রয় নিচ্ছেন। প্রশাসনে দুনর্ীতি ও সরকারের স্বচ্ছতার বিষয়ে সরকার কোন কার্যকর পদৰেপ নিতে পারেনি বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। এতে উলেস্নখ করা হয়, এক বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৰমতাসীন দলের নেতাদের বিরম্নদ্ধে করা ১ হাজার ৮১৭ টি মামলা তুলে নেয়া হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৯ সালে বিশ্বজুড়েই সরকার কতর্ৃক প্রতিপৰকে দমিয়ে রাখার একটি সাধারণ প্রবণতা লৰ্য করা গেছে। প্রতিবেদনে চীন ও ইরানে ইন্টারনেট যোগাযোগের ওপর নিষেধাজ্ঞা, সুশীল সমাজের ওপর নির্মম বাধ্যবাধতা আরোপ, সংখ্যালঘু, নারী ও শিশুদের ওপর হয়রানিমূলক আচরণের বিষয়গুলো উঠে এসেছে। এছাড়াও গত কয়েক বছরে বিভিন্ন দেশের সরকার সন্ত্রাসবাদ ও জরম্নরী ৰমতার অতিরিক্ত বিসত্মৃত ব্যাখ্যা দিয়ে অভিযুক্ত বন্দী ও অন্যদের প্রতি মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে বলেও মনত্মব্য করা হয়। ইউরোপে মুসলিম বিরোধী মনোভাব বৃদ্ধি পাওয়া নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় প্রতিবেদনে। উদাহরণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে মিনার তৈরির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা তুলে ধরা হয়।
No comments