ওএসজেআইয়ের প্রতিবেদন-সিআইএর 'অপকর্মে' ৫৪ দেশের সহায়তা

টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার পর শুরু হওয়া সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধে বিশ্বের অন্তত ৫৪টি দেশ যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা দিয়েছিল। মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) চোখে সন্দেহভাজনদের অপহরণ, আটক ও নির্যাতনে সহযোগিতা করে দেশগুলো।
এসব দেশের কারাগার ব্যবহারের অনুমোদন পায় সিআইএ। নিউ ইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ওপেন সোসাইটি জাস্টিস ইনিশিয়েটিভ (ওএসজেআই) গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ দাবি করেছে।
'গ্লোবালাইজিং টর্চার_সিআইএ সিক্রেট ডিটেনশন অ্যান্ড এক্সট্রা-অর্ডিনারি রেনডিশন' শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সহায়তা ছাড়া সিআইএয়ের পক্ষে একা তাদের অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হতো না। কারাগারের পাশাপাশি ওই সব দেশ তাদের আকাশসীমা ব্যবহারেরও অনুমতি দেয় যুক্তরাষ্ট্রকে। এ তালিকায় ইউরোপের অনেক দেশ রয়েছে।
২১৩ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) করাচির কারাগার ব্যবহার করে সিআইএ। সন্দেহভাজন আটক ব্যক্তিদের অন্য জায়গায় পাঠানোর আগে সেখানে আটক রাখা হতো। পাশাপাশি আটক ব্যক্তিদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালানো হতো সেখানে। পাকিস্তান ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রকে এ কাজে সহায়তা দেওয়া কয়েকটি দেশ হলো আফগানিস্তান, জর্দান, মিসর, অস্ট্রেলিয়া, আজারবাইজান, জার্মানি, ইরান, লিবিয়া, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা, ব্রিটেন, আয়ারল্যান্ড, আইসল্যান্ড, সুইডেন, ফিনল্যান্ড ও সাইপ্রাস। কানাডা তাদের আকাশসীমা ও কারাগার ব্যবহার করতে দেওয়ার পাশাপাশি সব নাগরিকের তথ্যও দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রকে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এ ধরনের কোনো প্রমাণ পায়নি ওএসজেআই। সংস্থাটির দাবি, 'গোপন বন্দিশিবিরগুলোয় নির্যাতনের মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডাব্লিউ বুশের প্রশাসনের কর্মকর্তারা অবগত ছিলেন। মানবাধিকার লঙ্ঘন করার পরও যুক্তরাষ্ট্র কখনো সাজা পায়নি। যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রকে এ কাজে সহযোগিতা করেছে, সেসব দেশের সরকারও এর জন্য দায়ী।'
ওএসজেআইয়ের এ প্রতিবেদন তৈরিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মেয়ে অমৃত সিং জড়িত ছিলেন। অমৃত জানান, থাইল্যান্ড, রোমানিয়া, পোল্যান্ড ও লিথিউনিয়াতেও যুক্তরাষ্ট্রের গোপন বন্দিশিবির পরিচালনার প্রমাণ রয়েছে তাঁদের হাতে। এক দেশ থেকে অন্য দেশে বন্দি স্থানান্তরের সময় আন্তর্জাতিক কিংবা সংশ্লিষ্ট দেশের আইনও মানা হয়নি বলে তিনি দাবি করেন। সূত্র : গার্ডিয়ান।

No comments

Powered by Blogger.