রাজশাহীতে জামায়াত নেতার সঙ্গে মহিলা ভক্তের সাক্ষাত তুলকালাম, উত্তেজনা

রাজশাহীর বাঘায় উপজেলা জামায়াতের আমির ও স্থানীয় শাহী মসজিদের ইমাম জিন্নাত আলীর সঙ্গে মহিলা ভক্তের সাাত নিয়ে তুলকালাম কা- ঘটেছে। স্থানীয় জনতা শুক্রবার সকালে উভয়কে মাজার প্রাঙ্গণের একটি ক েআটকে রেখে পুলিশে খবর দেয়।
পুলিশ উভয়কে তিন ঘণ্টা পর ছেড়ে দেয়। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় লোকজন জানায়, জামায়াত নেতা জিন্নাত আলীর সঙ্গে আগত মহিলা ভক্তের সাাত ও আচরণ সন্দেহজনক। বাঘার ঐতিহ্যবাহী শাহী মসজিদের মতো একটি ধমর্ীয় প্রতিষ্ঠানের ইমামের পদে থেকে জিন্নাত আলী শুধু জামায়াতের রাজনীতিই করেন না; উপজেলা জামায়াতের আমির হিসেবে তিনি মসজিদে জামায়াতের সভাও করেন। শুক্রবারের ঘটনায় শাহী মসজিদের ইমামের পদ থেকে তাকে বহিষ্কারের দাবি উঠেছে। এজন্য এলাকার কয়েক শ' ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে লিখিত অভিযোগ দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
পুলিশ জানায়, 'শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে জামায়াত নেতা জিন্নাত আলী আগত এক মহিলা ভক্তকে নিয়ে শাহী মসজিদসংলগ্ন মাজারের একটি ক েআপত্তিকর অবস্থায় রয়েছেন'_ এমন খবর পেয়ে এলাকার কয়েক শ' মানুষ মাজার ঘেরাও করে পুলিশে খবর দেয়। মাজার কমিটির সেক্রেটারি খন্দকার মুনসুরম্নল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে তিনি মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি এ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। সামান্য সময়ের ব্যবধানে বাঘা থানার এসআই মনসুর হাবিব ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। জামায়াত নেতা ও আগত মহিলা ভক্তকে মাজারের একটি ঘরে পাওয়া যায়। জিজ্ঞাসাবাদে আগত মহিলা ভক্ত জানান, স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তিনি মাঝে মধ্যেই দোয়া নিতে জামায়াত নেতা জিন্নাত আলীর কাছে আসতেন। শুক্রবারও তিনি একই উদ্দেশ্যে আসেন। এ সময় জিন্নাত আলী তাকে বলেন_ সময় খারাপ যাচ্ছে, তুমি এখন থেকে আর না আসলে ভাল হয়। মহিলা তার কাছ থেকে একটি তসবিহ নিয়েছেন। ভক্ত মহিলা জামায়াত নেতার পূর্বপরিচিত বলেও মাজার কমিটির সেক্রেটারির কাছে স্বীকার করেন। তবে জামায়াত নেতা জিন্নাত আলী মাজার মসজিদ কমিটি ও পুলিশের কাছে দাবি করেন তিনি মহিলাকে চেনেন না। এই প্রথম তার সঙ্গে সাাত হয়েছে। সমস্যা শুনে মহিলাকে তিনি একটি তসবিহ দিয়ে বিদায় করেন মাত্র।
পুলিশের এসআই মনসুর হাবিব জানান, জিজ্ঞাসাবাদে মহিলা তার বাড়ি নাটোরের গোপালপুরের যে গ্রামের নাম বলেছেন সেখানে সরেজমিনে পুলিশ পাঠিয়ে খোঁজ নিয়ে এ নামের কোন মহিলার সন্ধান পাওয়া যায়নি। মহিলা সকলকে বিভ্রানত্ম করতে অথবা নিজের পরিচয় গোপনের জন্যই পুলিশকে ভুয়া ঠিকানা দিয়ে থাকতে পারে। অন্যদিকে জামায়াত নেতা জিন্নাত আলী ওই মহিলার সঙ্গে প্রথম সাাতের যে দাবি করেন তাও সঠিক নয়। বাঘা বাজারের ব্যবসায়ী শাকিল, সালামসহ অন্যরা পুলিশকে বলেন, জামায়াত নেতা জিন্নাত আলীর কাছে এ মহিলাকে তারা এর আগেও অনেকবার আসতে দেখেছেন। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হলেও সকলকে শানত্ম থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে।
অন্যদিকে বাঘা শাহী মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি এ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান বলেন, জামায়াত নেতা জিন্নাত আলী ও তার মহিলা ভক্তকে পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা উভয়ে কোন প্রকার অসামাজিক কাজে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ফলে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। জামায়াত নেতার এত ভোরে মহিলা নিয়ে মাজারে বসা উচিত হয়নি বলে তিনি মনত্মব্য করেন।
এদিকে বাঘা শাহ্ দৌলা ডিগ্রী কলেজের অধ্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শাহী মসজিদের ইমাম জিন্নাত আলী বিতর্কিত হয়ে পড়েছেন। মসজিদের ভেতরে তিনি জামায়াতের সাংগঠনিক কর্মকা-সহ সভা করেন। এছাড়া বিভিন্ন এলাকা থেকে মহিলা ভক্তের আগমনের কারণে এলাকার অনেকে দীর্ঘদিন থেকে তার পেছনে নামাজ পড়েন না। শুক্রবারও বিপুলসংখ্যক মুসলিস্ন জামায়াত নেতার পেছনে নামাজ না পড়ে অন্য মসজিদে গিয়ে জুমার নামাজ আদায় করেছেন। শাহ্ দৌলা ডিগ্রী কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আলী মোহাম্মদ হাশেম বলেন, শাহী মসজিদের ইমাদের পদ থেকে জামায়াত নেতা জিন্নাত আলীকে বহিষ্কারের দাবিতে কয়েক শ' এলাকাবাসীর স্বারিত লিখিত অভিযোগ আজ শনিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দেয়া হবে। জামায়াত নেতা জিন্নাত আলী বলেন, মসজিদে ইসলামের সভা করতে বাধা নেই।

No comments

Powered by Blogger.