আশুলিয়ায় মানামি ফ্যাশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড- ৭ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণ

তাজরীন পোশাক কারখানার পর আশুলিয়ার কবিরপুরে মানামি ফ্যাশন নামের আরেকটি পোশাক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার দিবাগত রাত ৩টায় কারখানাটির পঞ্চতলা ভবনের চতুর্থতলায় এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। দমকল বাহিনীর ১৫টি ইউনিট দীর্ঘ সাত ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে সম হয়। কারখানাটির ভেতরে কোনো শ্রমিক না থাকায় হতাহতের সংবাদ পাওয়া যায়নি। তবে আগুন নেভাতে গিয়ে দমকাল বাহিনীর পাঁচ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের স্থানীয় কয়েকটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা রয়েছে। ঘটনার পরপর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আশুলিয়া থানা পুলিশ, শিল্প পুলিশ, র‌্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনী দায়িত্ব পালন করেন।

দমকল বাহিনী, কারখানা কর্তৃপ, প্রত্যদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই কারখানার শ্রমিকেরা রাতের শিফটের কাজ শেষে রাত ২টায় কর্মস্থল ত্যাগ করেন। রাত ৩টায় ওই কারখানার নিরাপত্তাকর্মীরা কারখানা পঞ্চমতলা ভবনের চতুর্থতলায় আগুনের শিখা দেখতে পান। মুহূর্তের মধ্যে আগুনের শিখা চতুর্থতলার পুরো মেঝেতে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ডিইপিজেড, গাজীপুর, কালিয়াকৈর, ধামরাই, রাজধানী ঢাকাসহ দমকল বাহিনীর ১৫টি ইউনিট দীর্ঘ সাত ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে গতকাল সকাল ১০টায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনে। ততণে পুড়ে যায় কারখানাটির চতুর্থতলায় থাকা সব কাপড়। এ সময় পুরো এলাকায় আগুন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বন্ধ থাকে ওই এলাকার কয়েকটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান।

শ্রমিক সূত্রে জানা যায়, কারখানার শ্রমিকদের গতকাল মঙ্গলবার বেতনভাতা পরিশোধ করার কথা ছিল কর্তৃপরে। তবে এ ঘটনার পর কবে নাগাদ তাদের পাওনা পরিশোধ করা হবে তা নিয়ে তারা হতাশা প্রকাশ করেন। তবে  কারখানার এক কর্মকর্তা জানান, শ্রমিকদের পাওনা যত দ্রুত সম্ভব পরিশোধ করে দেয়া হবে।

আগুন লাগার বিষয়ে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাহসিন খান জানান, কারখানাটির যে স্থানে আগুনের সূত্রপাত সে স্থানে কোনো বৈদ্যুতিক সংযোগ ছিল না। কাজেই বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের প্রশ্নই ওঠে না। আর কারখানার ভেতরে কোনো শ্রমিক না থাকায় সিগারেটের আগুন থেকেও আগুন লাগার সম্ভাবনা কম। সব কিছু মিলিয়ে মনে হচ্ছে আগুনটি রহস্যজনক। এটি নাশকতাও হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। তবে তিনি তাৎণিকভাবে অগ্নিকাণ্ডে য়তির পরিমাণ জানাতে পারেননি।

আগুনের বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক ট্রেনিং ও অপারেশন জিহাদুল ইসলাম বলেন, উচ্চ দাহ্য মতাসম্পন্ন ফেব্রিক্স থাকায় আগুনের তীব্রতা বেড়ে মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সরু রাস্তা, পানির বিকল্প উৎস না থাকা এবং কারখানাটি আবাসিক এলাকায় নির্মিত হওয়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দেরি হয়েছে। তবে আগুন লাগার বিষয়টি তদন্ত করে বলা হবে বলে তিনি জানান।

No comments

Powered by Blogger.