বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে সংসদে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে- মতবিনিময় সভায় মালিকদের দাবি

অধ্যাদেশ পাস করতে গিয়ে সংসদে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে দাবি করেছেন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকরা। তাঁদের দাবি, হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী দেশের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বৈধ।
অথচ সংসদে বলা হয়েছে দেশের ৪৮টি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ই অবৈধ। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিৰাক্রম, শৃঙ্খলা এবং শিক নিয়োগে কোন নিয়মনীতি মানা হয় না বলে সংসদে দেয়া তথ্যও সম্পূর্ণ ভুল। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে ভুল তথ্য দিয়ে যে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ পাস হতে যাচ্ছে, তা হবে দেশের উচ্চ শিক্ষার জন্যে মারাত্মক হুমকি। সোমবার জাতীয় প্রেসকাবে আয়োজিত 'বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষায় বেসরকারী উদ্যোগ' শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তারা এসব দাবি করেন। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকদের ঐক্যবদ্ধ সংগঠন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি আয়োজিত এই সভায় দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। আইউবিএটি'র উপাচার্য অধ্যাপক এম আলীমুলাহ্ মিয়া তাঁর 'বাংলাদেশের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন' শীর্ষক প্রবন্ধে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা, উন্নয়ন এবং বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০-এর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ১৯৯২ এবং ১৯৯৮ সালের যে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন রয়েছে তাই যথেষ্ট, যদি তার সুষ্ঠু প্রয়োগ করা হয়। সংসদে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে ভুল তথ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে। নতুন আইনে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) প্রাধান্য রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইনের ৫৬টি ধারার মধ্যে ২৩টিতেই মঞ্জুরি কমিশনের প্রাধান্য রয়েছে। আগে ছিল ২৬টি ধারার মধ্যে ৩টি। অনুমতি না নিয়ে দূরশিণের মাধ্যমে শিক্ষাদান, সার্টিফিকেট বিক্রি করা হয় বলে সংসদে যে তথ্য দেয়া হয়েছে, তার জন্যে ইউজিসির হসত্মপে অপ্রাসঙ্গিক বলে উল্লেখ করেন তিনি। আইনশৃঙ্খলা রাকারী সংস্থাকে এসব ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা উচিত বলে জানান তিনি।
মতবিনিময় সভায় আরেকটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমএ মান্নান চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চ শিায় বিরাট ভূমিকা রাখছে। সরকারের উচিত এমন আইন প্রণয়ন করা যাতে উদ্যোক্তাদেরও সুযোগ সুবিধা বিবেচনা করা হয়। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আমেরিকার বিশিষ্ট কলামিস্ট ড. ফরেস্ট কুকসন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়কে আনত্মর্জাতিক মানে উন্নত হওয়া প্রয়োজন বলে উলেস্নখ করেন। সরকারের উদ্যোক্তাদের দিকটিও দেখতে হবে এবং তাদেরকে সাহায্য করা উচিত বলে জানান তিনি। মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এমএ কাশেম, ইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রহিম বি তালুকদার, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য মুনীরউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কমিটির সিদ্ধানত্ম পারে জন্যে ইউজিসির অনুমতি লাগবে, নতুন আইনের এ ধরনের ধারা থাকায় মালিকপৰ হতাশা প্রকাশ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম নির্বাচনে ইউজিসির হসত্মপেকেও অবৈধ বলে দাবি করেন । তারা বলেন, এ ধরনের আইনের কারণে ইউজিসির কাছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জিম্মি হয়ে যাবে।
ইউজিসি'তে আনত্মর্জাতিক বায়োএথিকস সংক্রানত্ম সম্মেলন শুরম্ন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসিতি) শুরম্ন হয়েছে বয়োএথিকস বিষয়ে আনত্মর্জাতিক সম্মেলন। সোমবার সকালে 'প্রগ্রেসিং বায়োএথিক ইন বাংলাদেশ ফর দ্য ফিউচার' শীর্ষক এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। ইউনেস্কো ব্যাঙ্কক, ইউনেস্কো ঢাকা এবং ইউজিসির সহযোগিতায় বাংলাদেশ বায়োএথিক সোসাইটি সম্মেলনের আয়োজন করেছে। সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে বক্তারা বলেছেন, শিা, বিজ্ঞান, পরিবেশ, প্রযুক্তিসহ সমাজের প্রতিটি ৰেত্রে নৈতিক শিার গুরম্নত্ব অপরিসীম। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ নির্মাণের জন্য নৈতিক শিা বিকাশের কোন বিকল্প নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক তাসলিমা মনসুরের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, ইউনেস্কো ব্যাঙ্ককের আঞ্চলিক উপদেষ্টা ড. ডেরিল মেইসা, ইউনেস্কো ঢাকার পরিচালক ড. মালামা মেলেইসা, ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. এহসানুল হক, অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল হাকিম, অধ্যাপক ড. মোঃ তাজুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. আমেনা বেগম, ইউজিসির সচিব মোঃ খালেদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বায়োএথিকস সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক আধ্যাপক ডা. শামিমা পারভীন লস্কর সংগঠনের ষাণ্মাসিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। সম্মেলনের প্রথম দিন বিভিন্ন অধিবেশনে দেশ-বিদেশের শতাধিক বিশেষজ্ঞ অংশগ্রহণ করেন। প্রধান অতিথির ভাষণে প্রফেসর ড. আরেফিন সিদ্দিক দেশে বায়োএথিকস কমিশন গঠনের ওপর জোর দেন। তিনি আরও বলেন, উচ্চশিা প্রতিষ্ঠানে এ সংক্রানত্ম কোর্স প্রণয়নে মঞ্জুরি কমিশন অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে।

No comments

Powered by Blogger.