আল্লাহর পথে আহ্বান by মোহাম্মদ সদরুল আমীন রাশেদ

মানুষের জীবনে ও আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য আল্লাহর নির্দেশে নবী-রাসূলদের মাধ্যমেই দাওয়াত পরিচালিত হয়েছে। শেষ নবী (সা.) পর্যন্ত সব নবীর কাজের সূচনা হয়েছে দাওয়াতের মাধ্যমে। দাওয়াতের কাজ কোথাও সরাসরি নির্দেশ আকারে এসেছে।
যেমন সুরা নহলের শেষ দুটি আয়াতে দাওয়াতের পদ্ধতি শেখাতে গিয়ে বলা হয়েছে, 'বলে দিন হে মুহাম্মদ! এটাই আমার একমাত্র পথ, যে পথে আমি আল্লাহর দিকে আহ্বান জানাই।'_সূরা ইউসুফ : ১০৮।
দাওয়াতি কাজের ফজিলত সম্পর্কে রাসূল (সা.) বলেন, 'যে ব্যক্তি হেদায়েতের আহ্বান জানাবে, সেও পাবে হেদায়েত অনুসরণকারীর সমান সওয়াব। এ দু'জনের কারও সওয়াবেও কমতি হবে না।'_মুসলিম।
দাওয়াতের কাজ সহজ ও সুস্পষ্ট ভাষায় তিন দফায় পেশ করা যায়। ১. সাধারণত সব মানুষকে এবং বিশেষভাবে মুসলমানদের আহ্বান জানানো, ২. ইসলাম গ্রহণ করার কিংবা তা মেনে নেওয়ার কথা যারা বলেন, তাদের প্রতি আহ্বান এই যে, আপনারা বাস্তব জীবন হতে মুনাফেকি ও কর্ম-বৈষম্য দূর করুন এবং মুসলমান হওয়ার দাবি করলে খাঁটি মুসলমান হতে ও ইসলামের পূর্ণ আদর্শে আদর্শবান হতে প্রস্তুত হোন, ৩. বর্তমান পৃথিবীর যে নেতৃত্ব রয়েছে তাদের প্রতি দাওয়াত এই যে, নেতৃত্ব-কর্তৃত্ব উভয় ক্ষেত্রেই আল্লাহর বিধান পরিচালনা করুন। উলি্লখিত তিনটি বিষয়ই যদিও সুস্পষ্ট। তবুও দীর্ঘকাল পর্যন্ত এর ওপর ক্রমাগত ভুল ধারণা ও অবসাদ উপেক্ষার আবর্জনা পুঞ্জীভূত হয়েছে বলে আজ কেবল অমুসলমানই নয়, মুসলমানদের নিকটও বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। 'পূর্ণরূপে ইসলামের মধ্যে দাখিল হও বলে আল্লাহর রাস্তায় দাওয়াতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ নিজেদের জীবনের কোনো একটি দিক বা বিভাগকেও আল্লাহর বন্দেগির বাইরে রাখতে পারবে না। পরিপূর্ণ সত্তা নিয়ে আল্লাহ্র গোলামি কর, জীবনের কোনো একটি কাজও আল্লাহর বন্দেগি থেকে মুক্ত রাখা চলবে না। আল্লাহর নির্দেশ ও বিধানকে পরিত্যাগ করে, স্বাধীন ও স্বেচ্ছাচারী হয়ে অথবা কোনো স্বাধীন স্বেচ্ছাচারী মানুষের অনুসারী ও অনুগামী হয়ে চলা যাবে না। বস্তুত আল্লাহর রাহে দাওয়াতের এ অর্থই প্রচার করতে হবে, এরূপ দাওয়াত কবুল করার জন্যই আমাদের মুসলিম-অমুসলিম সব মানুষকে আহ্বান জানাতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.