শাবির ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধ ঘোষণা- ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের প্রতি হুঁশিয়ারিঃ সুরঞ্জিত

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন, সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর তাই এই প্রকল্পে অর্থের জন্য কারো কাছে ধরনা দিতে রাজি নয় সরকার।
যুদ্ধাপরাধীদের সহযোগীদের ‘বেজন্মার দল’ আখ্যয়িত করেছেন তিনি। এ ছাড়া শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধ রাখারও ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী গতকাল বিকেলে সিলেটে ১৪ দল আয়োজিত এক বিরাট জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা উল্লেখ করে বলেন, দেশে এখন দুই লাখ কোটি টাকার বাজেট হচ্ছে। প্রতি বছর প্রবৃদ্ধি ছয় শতাংশ। পদ্মা সেতুর প্রাক প্রকল্পে প্রয়োজন পাঁচ হাজার কোটি টাকা। ইতোমধ্যে এই প্রকল্পে এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। আগামী বাজেটে আরো এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। সুতরাং, পদ্মা সেতু নির্মাণ সরকারের জন্য বড় কোনো চ্যালেঞ্জ নয়।

যুদ্ধাপরাধ বিচার যারা বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তাদের ‘বেজন্মার দল’ আখ্যায়িত করে অর্থমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের কোনোমতেই   নিস্তার দেয়া হবে না। বাংলার মাটিতে যুদ্ধাপরাধের বিচার হচ্ছে এবং হবে। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধের মামলায় যারা ফাঁসির আসামি তাদের ফাঁসি হবে। যাদের যাবজ্জীবন দেয়া হবে, তাদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করে ফাঁসি নিশ্চিত করা হবে।

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাস্কর্য নির্মাণ স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়ে অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা চাইনা কোনো বিতর্কিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হোক। সবাইকে নিয়েই আমরা চলতে চাই। তাই আমরা শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাস্কর্য নির্মাণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইতোমধ্যে কর্তৃপ এটি নির্মাণ স্থগিত করেছেন। বর্তমান সরকারের আমলে কোনো ভাস্কর্য নির্মাণ করা হবে না।

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের সভাপতিত্বে এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদের পরিচালনায় নগরীর কোর্ট পয়েন্টে আয়োজিত জনসভায় ১৪ দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।

জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে কোনো রাজনৈতিক দল যুদ্ধাপরাধ ট্রাব্যুনালের বিরুদ্ধে মাঠে নামেনি। শাহবাগ থেকে শুরু করে সিলেটের শহীদ মিনার পর্যন্ত সর্বত্র কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে মাঠে নেমেছে নতুন প্রজন্ম। দফতরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, সারা দেশ আজ অগ্নিগর্ভ। বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসি হয়, কিন্তু মূল রাজাকার কাদের মোল্লার যাবজ্জীবনÑ  ট্রাইব্যুনালের এই বিচার জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। তিনি ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা আজ জেগেছে সেই জনতা’।

আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম কেয়ারটেকার ইস্যুতে বিরোধী দলের আন্দোলনকে অযৌক্তিক আখ্যায়িত করে বলেন, বিরোধী দল আরেকটি ওয়ান ইলেভেন সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। তিনি বলেন, একটি শক্তি আবারো শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

জনসভায় শিামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, জাসদের কেন্দ্রীয় নেত্রী শিরিন আক্তার, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মাহমুদ উস সামাদ কয়েস চৌধুরী এমপি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, ওয়ার্কার্স পার্টি নেতা জামরুল হাসান, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.