সুফিবাদ শান্তির পথ by হাকীম সালেহ আহমদ মিঞা
যারা আল্লাহর প্রতি গভীর বিশ্বাস ও
ভালোবাসা রেখে আধ্যাত্মিক সাধনা করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে ইবাদত ও
আনুগত্যের মাধ্যমে নিজেদের চরিত্রগুণে আল্লাহর নিকট প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত
করেন, তারাই সুফি।
ইমাম গাজ্জালীর (রহ.) মতে, 'যে নিজ
চরিত্র এবং কাজ-কারবার পরিশুদ্ধ, পরিপাটি করেছে এবং কলুষতা ও অপবিত্রতা
থেকে নিজেকে শুদ্ধ করে নিয়েছে আর আল্লাহর খাঁটি বান্দারূপে নিজেকে গঠন করতে
সক্ষম হয়েছে, সে-ই প্রকৃত সুফি। বস্তুত যে শাস্ত্র মানুষকে উত্তম চরিত্র
গঠন করতে সাহায্য করে, আল্লাহর পরিচয় লাভকরত তার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের পথ
দেখায় এবং যার মাধ্যমে আল্লাহ ও তার নবীর (সা.) বিধান মোতাবেক শান্তিময়
জীবন পরিচালনার শিক্ষা লাভ করা যায়, তাকে ইলমে তাসাওফ বলে।
সুফিবাদ চর্চার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি লাভ হয় এবং হৃদয়ের চোখ খুলে যায়। সে চোখে আল্লাহ ও রাসুলের (সা.) দিদার লাভ হয়। বড়পীর আবদুুল কাদের জিলানীর (রহ.) মতে, 'কামেল পীরের নিকট বায়াত গ্রহণকরত আল্লাহর জিকির দ্বারা পশু-প্রকৃতি এবং কুরিপু দমন করলে অন্তর আলোকোজ্জ্বল হয় এবং অন্তর্দৃষ্টি দ্বারা আল্লাহর পবিত্র সিফাতি নূরসমূহ দৃষ্টিগোচর হয়।'
নবীজি (সা.) বলেন, 'নামাজ মুমিন বান্দার জন্য আল্লাহর সাক্ষাৎ।' সাহাবাগণ সুদীর্ঘ সময় ধ্যান-মোরাকাবা করে আত্মশুদ্ধি লাভের পর নামাজের দিকে ধাবিত হলেও আমাদের জন্য কিন্তু নামাজকে সঙ্গে রেখেই অন্য সব ইবাদত করতে হবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, 'সে-ই সফলকাম, যে পবিত্রতা অর্জন করে ও তার প্রভুর নামে জিকির করে এবং সালাত আদায় করে।' (সূরা আল্-আলা :১৪, ১৫)। হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, 'নিশ্চয়ই মানুষের দেহে এমন এক টুকরো গোশত আছে, সে গোশতের টুকরো যখন পবিত্র হয়, তখন সমস্ত দেহই পবিত্র হয়; আর সে গোশতের টুকরো যখন অপবিত্র হয়ে পড়ে, তখন সমস্ত দেহই অপবিত্র হয়ে যায়; আর তা হলো কাল্ব বা হৃদয়।' (বুখারী ও মুসলিম)।
আমরা বাহ্যত ইসলাম অনুসরণ করি; তবে আংশিক। তবুও আমাদের মাঝে শান্তি নেই। আমরা ইবাদত-বন্দেগি করে কোনো সুফল পাচ্ছি না। ইবাদতের বরকত ও রহমত কলব দ্বারা উপলব্ধি করতে হয়। ইসলামের প্রাণ হলো সুফিবাদ। প্রাণ ছেড়ে আমরা অসারকে ধরে আছি বলেই আজ এ অবস্থা। এক কথায়, শরিয়তের আমল করছি, মারেফাতের আমলের প্রতি রয়েছি উদাসীন। অথচ এ দুটো মিলেই প্রকৃত ইসলাম এবং শান্তির ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায়।
নবীর আদর্শের কথা, নবীকে অনুসরণের কথা সবাই বলি। কিন্তু নবীর বর্ণাঢ্য জীবনে হেরা গুহার ধ্যান-মোরাকাবা চর্চার কথা কেউ বলি না। দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণে জাগতিক শিক্ষার পরেও ইলমে তাসাওফ শিক্ষা করা অপরিহার্য। সুফিবাদ আত্মাকে রোগমুক্ত ও পরিশুদ্ধ করে। আত্মশুদ্ধি ছাড়া সব ইবাদত নিষ্ফম্ফল।
এ উপমহাদেশে ইসলামের প্রচার হয়েছে সুফি ও অলি-আওলিয়াদের মাধ্যমে, যাদের শিক্ষার মূল ভিত্তি হলো ইলমে তাসাওফ। একমাত্র খাঁটি আওলিয়ায়ে কেরামই ইলমে তাসাওফের জ্ঞান দিয়ে মানুষকে পরিপূর্ণভাবে ইসলামী শিক্ষা দিতে পারেন। আমাদের পূর্বপুরুষ হযরত মুহাম্মদের (সা.) আদর্শের ধারক-বাহক আওলিয়ায়ে কেরামের সাহচর্যে গিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে আদর্শ চরিত্রবান হয়েছিলেন। বর্তমান যুগে আমরাও যদি ইলমে তাসাওফ চর্চার মাধ্যমে ইসলামী শিক্ষা যথাযথভাবে অনুসরণ করে আদর্শ চরিত্রের অধিকারী হতে পারি, তবেই মুসলিম জাতির হারানো ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।
সুফিবাদ চর্চার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি লাভ হয় এবং হৃদয়ের চোখ খুলে যায়। সে চোখে আল্লাহ ও রাসুলের (সা.) দিদার লাভ হয়। বড়পীর আবদুুল কাদের জিলানীর (রহ.) মতে, 'কামেল পীরের নিকট বায়াত গ্রহণকরত আল্লাহর জিকির দ্বারা পশু-প্রকৃতি এবং কুরিপু দমন করলে অন্তর আলোকোজ্জ্বল হয় এবং অন্তর্দৃষ্টি দ্বারা আল্লাহর পবিত্র সিফাতি নূরসমূহ দৃষ্টিগোচর হয়।'
নবীজি (সা.) বলেন, 'নামাজ মুমিন বান্দার জন্য আল্লাহর সাক্ষাৎ।' সাহাবাগণ সুদীর্ঘ সময় ধ্যান-মোরাকাবা করে আত্মশুদ্ধি লাভের পর নামাজের দিকে ধাবিত হলেও আমাদের জন্য কিন্তু নামাজকে সঙ্গে রেখেই অন্য সব ইবাদত করতে হবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, 'সে-ই সফলকাম, যে পবিত্রতা অর্জন করে ও তার প্রভুর নামে জিকির করে এবং সালাত আদায় করে।' (সূরা আল্-আলা :১৪, ১৫)। হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, 'নিশ্চয়ই মানুষের দেহে এমন এক টুকরো গোশত আছে, সে গোশতের টুকরো যখন পবিত্র হয়, তখন সমস্ত দেহই পবিত্র হয়; আর সে গোশতের টুকরো যখন অপবিত্র হয়ে পড়ে, তখন সমস্ত দেহই অপবিত্র হয়ে যায়; আর তা হলো কাল্ব বা হৃদয়।' (বুখারী ও মুসলিম)।
আমরা বাহ্যত ইসলাম অনুসরণ করি; তবে আংশিক। তবুও আমাদের মাঝে শান্তি নেই। আমরা ইবাদত-বন্দেগি করে কোনো সুফল পাচ্ছি না। ইবাদতের বরকত ও রহমত কলব দ্বারা উপলব্ধি করতে হয়। ইসলামের প্রাণ হলো সুফিবাদ। প্রাণ ছেড়ে আমরা অসারকে ধরে আছি বলেই আজ এ অবস্থা। এক কথায়, শরিয়তের আমল করছি, মারেফাতের আমলের প্রতি রয়েছি উদাসীন। অথচ এ দুটো মিলেই প্রকৃত ইসলাম এবং শান্তির ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায়।
নবীর আদর্শের কথা, নবীকে অনুসরণের কথা সবাই বলি। কিন্তু নবীর বর্ণাঢ্য জীবনে হেরা গুহার ধ্যান-মোরাকাবা চর্চার কথা কেউ বলি না। দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণে জাগতিক শিক্ষার পরেও ইলমে তাসাওফ শিক্ষা করা অপরিহার্য। সুফিবাদ আত্মাকে রোগমুক্ত ও পরিশুদ্ধ করে। আত্মশুদ্ধি ছাড়া সব ইবাদত নিষ্ফম্ফল।
এ উপমহাদেশে ইসলামের প্রচার হয়েছে সুফি ও অলি-আওলিয়াদের মাধ্যমে, যাদের শিক্ষার মূল ভিত্তি হলো ইলমে তাসাওফ। একমাত্র খাঁটি আওলিয়ায়ে কেরামই ইলমে তাসাওফের জ্ঞান দিয়ে মানুষকে পরিপূর্ণভাবে ইসলামী শিক্ষা দিতে পারেন। আমাদের পূর্বপুরুষ হযরত মুহাম্মদের (সা.) আদর্শের ধারক-বাহক আওলিয়ায়ে কেরামের সাহচর্যে গিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে আদর্শ চরিত্রবান হয়েছিলেন। বর্তমান যুগে আমরাও যদি ইলমে তাসাওফ চর্চার মাধ্যমে ইসলামী শিক্ষা যথাযথভাবে অনুসরণ করে আদর্শ চরিত্রের অধিকারী হতে পারি, তবেই মুসলিম জাতির হারানো ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।
No comments