চরাচর-নো ম্যানস ল্যান্ডের গণকবর by বিশ্বজিৎ পাল বাবু
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর থেকে
ডান দিকে বাউতলা গ্রামে যাওয়ার সড়ক। সড়কের পাশের একটি মসজিদ ঘেঁষে একটু
পূর্বদিকে গেলেই চোখে পড়বে ঝোপঝাড়। গণকবরটি কোথায়? এমন প্রশ্নে কেউ
ঝোপঝাড়টি দেখিয়ে দিলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
হ্যাঁ,
এখানেই শুয়ে আছেন প্রায় ২৫০ শহীদ। গণকবরটির অবস্থান বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত
ঘেঁষে ভারতীয় সীমানায়। এপারে বাংলাদেশের সেনারবাদী, ওপারে ভারতের রামনগর।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সম্মুখযুদ্ধে ও আগরতলার জিবি হাসপাতালে শহীদ হয়েছেন
এমন মুক্তিযোদ্ধাদের লাশ দাফন করা হয় এ গণকবরে। দু-একজন বাদে কাউকে চেনাও
যায়নি। বলা চলে, গণকবরটি একরকম অরক্ষিত। সীমান্তের ২০২১/১ এস পিলারের কাছে
প্রায় ৫০ শতক জমির ওপর অবস্থিত গণকবরটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নিশ্চিহ্ন
হওয়ার পথে। বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবছরই গণকবরের কাছে গিয়ে শহীদদের ফুল দিয়ে
শ্রদ্ধা জানায়।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাঞ্চল কমান্ডার জহুর আহমেদ চৌধুরী গণকবরটি পরিদর্শন করেন। সে সময় ১৯৭৪ সালে মন্ত্রী থাকাকালে রক্ষণাবেক্ষণ ও স্মৃতিসৌধ নির্মাণে প্রাথমিকভাবে ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ ঘোষণা দেন। কিন্তু আজও তা আলোর মুখ দেখেনি। সম্প্রতি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা গণকবরের বিষয়টি তাঁকে অবহিত করেন।
কাপ্তান মিয়া নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, প্রায় প্রতিদিনই এখানে লাশ নিয়ে আসা হতো। তিনি নিজে লাশ ধোয়ার কাজটি করতেন। স্থানীয় মসজিদের ইমামকে ডেকে এনে লাশ দাফন করা হতো। তবে শহীদদের কারো নাম সঠিকভাবে জানা যায়নি।
আজিজুর রহমান আব্দু জানান, তিনি নিজে ৭০-৭৫ জনকে দাফন করেছেন এখানে। এত বেশি লাশ আসত যে একটি কবরে চার-পাঁচজনকে দাফন করা হতো। একদিন এক যুবকের লাশ দেখে গ্রামের লোকজন তাঁকে চিনে ফেলে। ওই যুবক নাকি ভালো ফুটবল খেলতেন। সীমান্ত জিরো পয়েন্টে হওয়ায় সরকারি উদ্যোগ ছাড়া স্থানীয়দের পক্ষে গণকবরটি রক্ষণাবেক্ষণ অসম্ভব। মুক্তিযোদ্ধাসহ এলাকার লোকজন গণকবরটি রক্ষায় সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করেছেন। অন্যথায় এটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন অনেকে। আখাউড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার শহীদুল ইসলাম ও সহকারী কমান্ডার বাহার মিয়া মালদার বলেন, 'আমরা প্রায়ই গণকবরটি রক্ষার জন্য কথা বলি। কিন্তু স্বাধীনতার ৪১ বছর পেরিয়ে গেলেও গণকবরটি রক্ষণাবেক্ষণে সরকারি কোনো উদ্যোগ না থাকায় কষ্ট হয়।
বিশ্বজিৎ পাল বাবু
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাঞ্চল কমান্ডার জহুর আহমেদ চৌধুরী গণকবরটি পরিদর্শন করেন। সে সময় ১৯৭৪ সালে মন্ত্রী থাকাকালে রক্ষণাবেক্ষণ ও স্মৃতিসৌধ নির্মাণে প্রাথমিকভাবে ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ ঘোষণা দেন। কিন্তু আজও তা আলোর মুখ দেখেনি। সম্প্রতি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা গণকবরের বিষয়টি তাঁকে অবহিত করেন।
কাপ্তান মিয়া নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, প্রায় প্রতিদিনই এখানে লাশ নিয়ে আসা হতো। তিনি নিজে লাশ ধোয়ার কাজটি করতেন। স্থানীয় মসজিদের ইমামকে ডেকে এনে লাশ দাফন করা হতো। তবে শহীদদের কারো নাম সঠিকভাবে জানা যায়নি।
আজিজুর রহমান আব্দু জানান, তিনি নিজে ৭০-৭৫ জনকে দাফন করেছেন এখানে। এত বেশি লাশ আসত যে একটি কবরে চার-পাঁচজনকে দাফন করা হতো। একদিন এক যুবকের লাশ দেখে গ্রামের লোকজন তাঁকে চিনে ফেলে। ওই যুবক নাকি ভালো ফুটবল খেলতেন। সীমান্ত জিরো পয়েন্টে হওয়ায় সরকারি উদ্যোগ ছাড়া স্থানীয়দের পক্ষে গণকবরটি রক্ষণাবেক্ষণ অসম্ভব। মুক্তিযোদ্ধাসহ এলাকার লোকজন গণকবরটি রক্ষায় সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করেছেন। অন্যথায় এটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন অনেকে। আখাউড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার শহীদুল ইসলাম ও সহকারী কমান্ডার বাহার মিয়া মালদার বলেন, 'আমরা প্রায়ই গণকবরটি রক্ষার জন্য কথা বলি। কিন্তু স্বাধীনতার ৪১ বছর পেরিয়ে গেলেও গণকবরটি রক্ষণাবেক্ষণে সরকারি কোনো উদ্যোগ না থাকায় কষ্ট হয়।
বিশ্বজিৎ পাল বাবু
No comments