কে. জি. মুস্তাফাকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন
স্বাধীনতা সংগ্রামের সক্রিয় সংগঠক,
প্রগতিশীল চেতনার নিভর্ীক সাংবাদিক ও ভাষাসৈনিক কে জি মুসত্মাফাকে রবিবার
রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হলো।
বিউগলের করম্নণ সুরে
মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁকে প্রদান করা হলো গার্ড অব অনার। দাফনের
আগে জাতির শেষ শ্রদ্ধা প্রদানের জন্য তাঁর মরদেহ নিয়ে আসা হয় কেন্দ্রীয়
শহীদ মিনারে। বেদীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ বিশিষ্টজনেরা
তাঁকে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান। এর আগে জাতীয় প্রেসকাবে এবং তাঁর
মোহাম্মদপুর ইকবাল রোডের বাসভবনের নিকটের মসজিদে দু'টি নামাজে জানাজা
অনুষ্ঠিত হয়। উলেস্নখ্য, কে জি মুসত্মাফা কিডনি, হৃদরোগ ও বার্ধক্যজনিত
নানা রোগে আক্রানত্ম হয়ে ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার
রাত দেড়টায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃতু্যতে রবিবার আরও শোক প্রকাশ
করেন রাষ্ট্রপতি মোঃ জিলস্নুর রহমান, স্পীকার এ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ ও
ডেপুটি স্পীকার শওকত আলী। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি সংগঠনও শোক প্রকাশ করে।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে জাতির শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেজি
মুসত্মাফার মরদেহ বিকেল চারটায় নিয়ে আসা হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। এখানে
প্রথমেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পৰে তাঁকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান
আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম
আজাদ। আওয়ামী লীগের পৰে শ্রদ্ধা জানান তোফায়েল আহমেদ, মোফাজ্জল হোসেন
চৌধুরী মায়া, বাহাউদ্দিন নাছিম ও আফজাল হোসেন। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট
পার্টির পৰে সভাপতি মঞ্জুরম্নল আহসান খান ও সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম
সেলিম শ্রদ্ধা জানান। এভাবেই একে একে আরও শ্রদ্ধা জানান জাতীয়
সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের নূরম্নল আম্বিয়া, অধ্যাপক মুসত্মাফা নূরউল ইসলাম,
কালের কণ্ঠের সম্পাদক আবেদ খান, অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, খ ম জাহাঙ্গীর,
নূরজাহান বোস, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের পৰে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া,
রাশেদা কুদ্দুস, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর পৰে সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ ইদু,
ভাষাসৈনিক আব্দুল মতিন, নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, আরটিভির পৰে ম.
হামিদ, ওয়ার্ল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল মান্নান চৌধুরী
বাংলা একাডেমীর পৰে মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান প্রমুখ। এ ছাড়া বিভিন্ন
সংগঠনের মধ্যে আরও শ্রদ্ধা জানায় জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন,
নিজেরা করি, বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী, মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ড কেন্দ্রীয়
কমিটি, জাকের পার্টি, ক্রানত্মি শিল্পী গোষ্ঠী, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদ,
কর্মজীবী নারী, বঙ্গবন্ধু সংস্কৃতি পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, সম্মিলিত
সাংস্কৃতিক জোট, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, জয়বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট,
বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ,
বাংলাদেশ নারী মুক্তি আন্দোলনসহ আরও অনেক সংগঠন। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা
নিবেদনের আগে জাতীয় প্রেসকাবে তাঁর দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে
তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, সাংবাদিক শওকত মাহমুদ, আতাউস
সামাদ, ইকবাল সোবহান চৌধুরী, মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীসহ আরও
অনেকে অংশ নেন।
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ভাষাসৈনিক আব্দুল মতিন বলেন, ভাষা আন্দোলন বেশ ব্যাপক একটি আন্দোলন ছিল। এতে অনেক ব্যক্তিরই অবদান ছিল। তাঁদের মধ্যে কে জি মুসত্মাফা ছিলেন নেতৃস্থানীয়। রাজনৈতিক কারণে তিনি সরাসরি আন্দোলনে অংশ নিতে না পারলেও অন্যদের উৎসাহ দিয়েছেন। তাঁর চলে যাওয়ার পর ভাষা আন্দোলনের আমিসহ আর ২/৩ জন লোক এখন জীবিত আছি।
আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ বলেন, ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতার আন্দোলনে কে জি মুসত্মাফার ছিল সক্রিয় ভূমিকা। প্রগতিশীল চেতনায় বিশ্বাসী এই ব্যক্তিটি আজীবন অন্যায়ের বিরম্নদ্ধে লড়ে গেছেন। সাংবাদিকতার ৰেত্রেও তাঁর মতো বিরল প্রতিভা খুব কমই দেখা যায়। তাঁর চলে যাওয়ায় দেশ ও জাতির অপূরণীয় ৰতি হলো।
সিপিবি সভাপতি মঞ্জুরম্নল আহসান খান বলেন, তিনি আগাগোড়াই কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার পরও দেশের সকল প্রগতিশীল আন্দোলনে তিনি প্রথম কাতারে থাকতেন। আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকেও তিনি ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। স্বাধীনতার আন্দোলনেও ছিল তাঁর সক্রিয় ভূমিকা। প্রগতিশীল চেতনাকে প্রতিষ্ঠা করতে তিনি আগাগোড়াই ছিলেন আপোসহীন। যে স্বপ্ন নিয়ে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম, সে স্বপ্ন হয়ত আমাদের পূরণ হয়নি, কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণে তিনি '৭২-এর সংবিধানের পুনপর্্রতিষ্ঠা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাসত্মবায়নে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, '৮০-এর দশকে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হন। আন্ডারগ্রাউন্ডে অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে থেকেও তখন তিনি দলের জন্য অনেক গুরম্নত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। এমন প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও তিনি ও শহীদুলস্নাহ কায়সার ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। আর পার্টির নির্দেশেই তিনি সংবাদপত্রে কাজ শুরম্ন করেন, তবে পরে এটাই তাঁর মূল পেশা হয়ে যায়।
তাঁর দীর্ঘদিনের বন্ধু অধ্যাপক মুসত্মাফা নূরউল ইসলাম বলেন, তাঁর সাংবাদিকতা শুরম্ন অবিভক্ত বাংলার কলকাতায়। পার্টিশনের পর তিনি ঢাকায় এসে ভর্তি হন বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু যথাসময়ে পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি বাম রাজনীতির কারণে। আর সে সময়ে যে কারও যে কোন সমস্যার মধ্যে তাঁকে আমরা পেতাম, এ জন্য তাঁকে আমরা বলতাম 'উৎসর্গপ্রাণ কে জি মুসত্মাফা।' তিনটি বিষয়ের সঙ্গে তিনি কখনও আপোস করেননি, তা হলো_ সাংবাদিকতা, ভাষা আন্দোলন ও নীতির সঙ্গে। এ কারণে বাম রাজনীতিতেই তাঁকে জীবন উৎসর্গ করতে হয়েছে। আর তাঁর সময়ে সাংবাদিকতায় তাঁর জুড়ি কেউ ছিলেন না।
আবেদ খান বলেন, আমরা এমন একজনকে হারিয়েছি যিনি শুধু সংগ্রামীই ছিলেন না, আামাদের কাজের উৎসাহদাতাও ছিলেন। এখনকার সাংবাদিকরা জানেন না, তাঁদের জন্য তিনি কি করে গেছেন। তিনি পাকিসত্মান আমলে আন্দোলন করে সাংবাদিকদের জন্য ওয়েজ বোর্ড আদায় করেছেন। তাঁর আন্দোলনের কাছে লৌহমানব আইয়ুব খানকেও নত হতে হয়েছিল।
তাঁর ছেলে সাবির মুসত্মাফা বলেন, পিতা হিসেবে আমার বাবা আমার প্রধান আদর্শ। তাঁর সঙ্গে আমার রাজনৈতিক চিনত্মাধারার মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু আমি তাঁর পেশার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়েই তাঁর আদর্শে নিজেকে এই পেশায় জড়িয়েছি। তিনি কখনও অন্যায়ের সঙ্গে আপোস করেননি। তাই তাঁর লেখায় দেশ, সমাজ ও পরিবারের নানা অসঙ্গতি উঠে এসেছে। নতুন প্রজন্মের সাংবাদিকরা আমার বাবার আদর্শ অনুসরণ করলে ভাল করবেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠজন ছিলেন, কিন্তু আওয়ামী লীগের লোক ছিলেন না। তিনি কমিউনিস্ট পার্টি করতেন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক চিনত্মাধারার পার্থক্য থাকলেও, দেশের বৃহত্তর স্বার্থে তেমন কোন মতদ্বৈধতা ছিল না। ষাট, সত্তরের দশকের স্বাধিকার আন্দোলন ও স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর ছিল সক্রিয় ভূমিকা। যা তখন তাঁর লেখায়ও উঠে এসেছিল। কমিউনিস্ট আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে তাঁকে অনেক সময়ই আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকতে হতো। তবে সেখানে তিনি কি করেছেন বা সেখানকার কোন ঘটনাই তিনি কখনও প্রকাশ করেননি এবং এ নিয়ে কোন বইও লেখেন নি। তাই তাঁর আন্ডারগ্রাউন্ডের জীবন এখনও আমাদের কাছে অপ্রকাশিতই রয়ে গেছে।
রাষ্ট্রপতি জিলস্নুর রহমান তাঁর শোকবাণীতে বলেছেন, কে জি মুসত্মাফা স্বাধিকার আন্দোলনসহ দেশের গণমানুষের মুক্তির আন্দোলনে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। অসাম্প্রদায়িক ও মুক্ত চিনত্মার অধিকারী এই সাংবাদিক কখনও অসত্য ও অন্যায়ের সঙ্গে আপোস করেননি। দেশের মানুষ তাঁর অবদান শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ভাষাসৈনিক আব্দুল মতিন বলেন, ভাষা আন্দোলন বেশ ব্যাপক একটি আন্দোলন ছিল। এতে অনেক ব্যক্তিরই অবদান ছিল। তাঁদের মধ্যে কে জি মুসত্মাফা ছিলেন নেতৃস্থানীয়। রাজনৈতিক কারণে তিনি সরাসরি আন্দোলনে অংশ নিতে না পারলেও অন্যদের উৎসাহ দিয়েছেন। তাঁর চলে যাওয়ার পর ভাষা আন্দোলনের আমিসহ আর ২/৩ জন লোক এখন জীবিত আছি।
আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ বলেন, ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতার আন্দোলনে কে জি মুসত্মাফার ছিল সক্রিয় ভূমিকা। প্রগতিশীল চেতনায় বিশ্বাসী এই ব্যক্তিটি আজীবন অন্যায়ের বিরম্নদ্ধে লড়ে গেছেন। সাংবাদিকতার ৰেত্রেও তাঁর মতো বিরল প্রতিভা খুব কমই দেখা যায়। তাঁর চলে যাওয়ায় দেশ ও জাতির অপূরণীয় ৰতি হলো।
সিপিবি সভাপতি মঞ্জুরম্নল আহসান খান বলেন, তিনি আগাগোড়াই কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার পরও দেশের সকল প্রগতিশীল আন্দোলনে তিনি প্রথম কাতারে থাকতেন। আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকেও তিনি ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। স্বাধীনতার আন্দোলনেও ছিল তাঁর সক্রিয় ভূমিকা। প্রগতিশীল চেতনাকে প্রতিষ্ঠা করতে তিনি আগাগোড়াই ছিলেন আপোসহীন। যে স্বপ্ন নিয়ে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম, সে স্বপ্ন হয়ত আমাদের পূরণ হয়নি, কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণে তিনি '৭২-এর সংবিধানের পুনপর্্রতিষ্ঠা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাসত্মবায়নে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, '৮০-এর দশকে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হন। আন্ডারগ্রাউন্ডে অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে থেকেও তখন তিনি দলের জন্য অনেক গুরম্নত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। এমন প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও তিনি ও শহীদুলস্নাহ কায়সার ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। আর পার্টির নির্দেশেই তিনি সংবাদপত্রে কাজ শুরম্ন করেন, তবে পরে এটাই তাঁর মূল পেশা হয়ে যায়।
তাঁর দীর্ঘদিনের বন্ধু অধ্যাপক মুসত্মাফা নূরউল ইসলাম বলেন, তাঁর সাংবাদিকতা শুরম্ন অবিভক্ত বাংলার কলকাতায়। পার্টিশনের পর তিনি ঢাকায় এসে ভর্তি হন বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু যথাসময়ে পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি বাম রাজনীতির কারণে। আর সে সময়ে যে কারও যে কোন সমস্যার মধ্যে তাঁকে আমরা পেতাম, এ জন্য তাঁকে আমরা বলতাম 'উৎসর্গপ্রাণ কে জি মুসত্মাফা।' তিনটি বিষয়ের সঙ্গে তিনি কখনও আপোস করেননি, তা হলো_ সাংবাদিকতা, ভাষা আন্দোলন ও নীতির সঙ্গে। এ কারণে বাম রাজনীতিতেই তাঁকে জীবন উৎসর্গ করতে হয়েছে। আর তাঁর সময়ে সাংবাদিকতায় তাঁর জুড়ি কেউ ছিলেন না।
আবেদ খান বলেন, আমরা এমন একজনকে হারিয়েছি যিনি শুধু সংগ্রামীই ছিলেন না, আামাদের কাজের উৎসাহদাতাও ছিলেন। এখনকার সাংবাদিকরা জানেন না, তাঁদের জন্য তিনি কি করে গেছেন। তিনি পাকিসত্মান আমলে আন্দোলন করে সাংবাদিকদের জন্য ওয়েজ বোর্ড আদায় করেছেন। তাঁর আন্দোলনের কাছে লৌহমানব আইয়ুব খানকেও নত হতে হয়েছিল।
তাঁর ছেলে সাবির মুসত্মাফা বলেন, পিতা হিসেবে আমার বাবা আমার প্রধান আদর্শ। তাঁর সঙ্গে আমার রাজনৈতিক চিনত্মাধারার মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু আমি তাঁর পেশার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়েই তাঁর আদর্শে নিজেকে এই পেশায় জড়িয়েছি। তিনি কখনও অন্যায়ের সঙ্গে আপোস করেননি। তাই তাঁর লেখায় দেশ, সমাজ ও পরিবারের নানা অসঙ্গতি উঠে এসেছে। নতুন প্রজন্মের সাংবাদিকরা আমার বাবার আদর্শ অনুসরণ করলে ভাল করবেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠজন ছিলেন, কিন্তু আওয়ামী লীগের লোক ছিলেন না। তিনি কমিউনিস্ট পার্টি করতেন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক চিনত্মাধারার পার্থক্য থাকলেও, দেশের বৃহত্তর স্বার্থে তেমন কোন মতদ্বৈধতা ছিল না। ষাট, সত্তরের দশকের স্বাধিকার আন্দোলন ও স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর ছিল সক্রিয় ভূমিকা। যা তখন তাঁর লেখায়ও উঠে এসেছিল। কমিউনিস্ট আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে তাঁকে অনেক সময়ই আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকতে হতো। তবে সেখানে তিনি কি করেছেন বা সেখানকার কোন ঘটনাই তিনি কখনও প্রকাশ করেননি এবং এ নিয়ে কোন বইও লেখেন নি। তাই তাঁর আন্ডারগ্রাউন্ডের জীবন এখনও আমাদের কাছে অপ্রকাশিতই রয়ে গেছে।
রাষ্ট্রপতি জিলস্নুর রহমান তাঁর শোকবাণীতে বলেছেন, কে জি মুসত্মাফা স্বাধিকার আন্দোলনসহ দেশের গণমানুষের মুক্তির আন্দোলনে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। অসাম্প্রদায়িক ও মুক্ত চিনত্মার অধিকারী এই সাংবাদিক কখনও অসত্য ও অন্যায়ের সঙ্গে আপোস করেননি। দেশের মানুষ তাঁর অবদান শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।
No comments