চুয়েট ৩৮তম ব্যাচের শিক্ষা সমাপনী উৎসব-আবার হবে তো দেখা... by আসাদুজ্জামান খান

ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে লাল, নীল আর সবুজ আলোকসজ্জা। রাস্তায় আঁকা হয়েছে রঙিন আল্পনা। ক্যাম্পাসের যেদিকেই চোখ যায় চোখে পড়ে রংবেরঙের পোস্টার, ফেস্টুন আর ব্যানার।ক্যাম্পাস-জুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ।


বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ মুহূর্তগুলোকে আরও একটু স্মরণীয় করে রাখতে নাচ, গান আর রং খেলায় মেতে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। এভাবেই হাসি-আনন্দের নানা আয়োজনে ৩ থেকে ৫ মে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) পালিত হলো ৩৮তম ব্যাচের শিক্ষা সমাপনী উৎসব (র‌্যাগ ডে)।
উৎসবের প্রথম দিন সকাল থেকেই চুয়েট ক্যাম্পাসের গোলচত্বরে ভিড় জমিয়েছিল বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ দুই মাসের প্রস্তুতির পর এ উৎসব। তাই প্রত্যেক শিক্ষার্থীর চোখেমুখেই ছিল জয়ের আনন্দ।
আনন্দ শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হয় তিন দিনের এ আয়োজন। শোভাযাত্রাটি চুয়েটের গোলচত্বর থেকে শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে পুনরায় গোলচত্বরে শেষ হয়।
এরপর বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শিক্ষা সমাপনী উৎসবের প্রধান আহ্বায়ক সৈয়দ আবুল হাসনাত। সংবাদ সম্মেলনে তিন দিনব্যাপী শিক্ষা সমাপনী উৎসবের বিভিন্ন আয়োজন ও নানা দিক সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনের পর ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি) চট্টগ্রাম কেন্দ্র থেকে আরও একটি শোভাযাত্রা বের হয়।
এর পরই শুরু হয় উৎসবের প্রথম দিনে সবচেয়ে আকর্ষণীয় রং খেলা ও ডিজে পার্টি। গানের তালে তালে প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী চলে এ রং খেলা। এ সময় সিনিয়র-জুনিয়র ভেদাভেদ ভুলে পুরো ক্যাম্পাস মেতে ওঠে রঙের খেলায়। একে অন্যের গায়ে রং ছিটিয়ে বরণ করে নেয় অনুষ্ঠানের প্রথম দিনের শেষ প্রহরকে।
‘বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ হয়ে যাচ্ছে। ক্যাম্পাসের এ সোনালি সময়গুলোকে খুব মিস করব। তাই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ মুহূর্তগুলোকে স্মরণীয় করে রাখতে এ আয়োজন আমাদের জীবনে অমর হয়ে থাকবে’। জানালেন বিদায়ী ব্যাচের শিক্ষার্থী ও উৎসবের প্রধান আহ্বায়ক সৈয়দ আবুল হাসনাত।
উৎসবের দ্বিতীয় দিনে (৪ মে) ছিল রক্তদান, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। চুয়েটের মেডিকেল সেন্টার প্রাঙ্গণে রক্তদান ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর বিকেলে চুয়েটের কেন্দ্রীয় মাঠে আলোচনা সভা ও রাতে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ক্যাম্পাসে জীবনের বিভিন্ন তিক্ত ও মজার অভিজ্ঞতা নিয়ে নাটক, গান ও ভিডিও ক্লিপস প্রদর্শিত হয়।
তৃতীয় দিনের আয়োজনে ছিল একেএস চুয়েট ওপেন এয়ার কনসার্ট। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় শুরু হয় কনসার্ট। চুয়েটের ঐতিহ্য অনুযায়ী সারা রাত চলে অনুষ্ঠান। কনসার্টে গান পরিবেশন করে সোলস, অর্থহীন, শিরোনামহীন, স্পেলবাউন্ড, নর্থ-২০১, দ্য ট্রি, হার্ড রিলেশন ও মেটালমেজ নামক ব্যান্ড দল। উপস্থিত সব শিক্ষার্থীই গায়কদের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে আনন্দে নেচে-গেয়ে উদ্যাপন করে মনমাতানো কনসার্ট। এভাবেই নাচে-গানে আর আনন্দে ভাসে সবাই।

No comments

Powered by Blogger.