দুদক চেয়ারম্যানের আবেদন তাৎপর্যপূর্ণ-দুর্নীতির মামলায় আপিল বিভাগের রায়
দুর্নীতিবিরোধী চলমান নিষ্প্রভ অভিযানে আশার প্রদীপ জ্বালিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। আওয়ামী লীগের সাংসদ হাবিবুর রহমান মোল্লার বিরুদ্ধে জরুরি অবস্থায় দায়ের করা দুর্নীতির মামলা বৈধ বলে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। তবে এ রায়ের সুফল লাভের বিষয়টি নির্ভর করছে দুদকের চেয়ারম্যান গোলাম রহমানের আবেদনের প্রতি সুপ্রিম কোর্ট কীভাবে সাড়া দেন তার ওপর।
দুদকের চেয়ারম্যান ৪ এপ্রিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আপিল বিভাগের রায়ে আমরা আশাবাদী। তবে এই রায়ের প্রভাবে দুদকের বিপুলসংখ্যক মামলায় হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ যাতে দ্রুত রদ হয়, সে বিষয়টি আপিল বিভাগ যেন বিবেচনায় নেন।’ দুদক এমনতিইে ঘরপোড়া গরু। তাই দুদকের চেয়ারম্যানের ইঙ্গিত স্পষ্ট। দুদক দেখেছে, কোনো আইনি প্রশ্ন আপিল বিভাগে মীমাংসিত হলেও তার তেমন বাস্তব সুফল মেলে না। দুদকের মামলা ঘন ঘন মূর্ছা যায়। বিচারিক আদালতে যাতে শুনানি না হতে পারে, সে জন্য আইনি কলাকৌশলের আকাল হয় না।
জরুরি অবস্থায় পুনর্গঠিত দুদক দুর্নীতিবিরোধী এক জিহাদে অবতীর্ণ হয়েছিল। ২০০৭ ও ২০০৮ সালে তারা ২০৩টি দুর্নীতির মামলা দায়ের করে। এসব মামলা থেকে হাইকোর্টে প্রায় ১১০০ মামলার বিস্তার ঘটে। গড়ে একটি মামলা হাইকোর্টে পাঁচটির বেশি মামলার জন্ম দিয়েছে। প্রধানত রিট ও ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১(এ) ধারার আওতায় হাইকোর্টে এসব মামলা করা হয়। বেশির ভাগ আবেদনের যুক্তি ছিল, মামলা দায়েরে দুদকের অনুমোদন ঠিক হয়নি। আমরা আগাগোড়া এ ধরনের অনুশীলনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছি। আমরা বলেছি, বহু ক্ষেত্রে মামলার বিচারকাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করাই থাকে লক্ষ্য। এসব মামলার অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রভাবশালী রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও আমলা। তাঁদের নিযুক্ত ভিআইপি আইনজীবীরা দুদকের মামলাগুলো সরাসরি বাতিল করার আবেদন করেছেন। তাঁরা মূলত যেসব আইনি প্রশ্ন তোলেন, তা এই সাংসদ হাবিবুর রহমান মামলাতেই ২০০৮ সালের নভেম্বরে হাইকোর্ট বিভাগের একটি দ্বৈত বেঞ্চ নিষ্পত্তি করেন। এর পরও দুদকের মামলাগুলো স্বাভাবিক নিয়মে চলেনি। এই মামলায় হাইকোর্ট চার-পাঁচটি প্রক্রিয়াগত আইনি প্রশ্নের সুরাহা করেন। আপিল বিভাগ মাত্র একটি আইনি প্রশ্নে হাবিবুর রহমানকে আপিলের অনুমতি দেন। অথচ গত ১৬ মাস দুদকের আইনজীবীরা সুরাহা করে দেওয়া আইনি প্রশ্নগুলো তাঁদের মামলার অনুকূলে কাজে লাগাতে পারেননি। কারণ, হাইকোর্টের রায় পুরোপুরি স্থগিত ছিল। কোটি টাকা দামের বর্তমান প্রশ্ন হলো, এখন কী হবে? সুফল কি মিলবে? বিচারিক আদালতে দুর্নীতির মামলার শুনানি কি বাধাহীনভাবে চলবে?
সংবিধানের ১১০ অনুচ্ছেদের চেতনা সবার চোখের সামনে নস্যাত্ হচ্ছে। এর সারকথা হলো, জনগুরুত্বসম্পন্ন বিষয় জড়িত থাকা মামলা প্রয়োজনে হাইকোর্ট নিজেই বিচার করবেন। কিন্তু হাইকোর্ট কখনো কোনো দুর্নীতির মামলাকে জনগুরুত্বসম্পন্ন বিবেচনায় বিচার করেননি। অথচ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে দুদকের মামলার বিচার-কার্যক্রম বছরের পর বছর স্থগিত রাখা হয়েছে এবং হচ্ছে।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেছেন, আপিল বিভাগের রায়ের ফলে ৫০৯টি মামলার জট খুলতে পারে। কিন্তু আমরা জানি, এ বিষয়ে কোনো সুষ্ঠু সমীক্ষা দুদক করেনি। এর সংখ্যা আরও বাড়ার কথা। দুদককে অভিন্ন আইনি প্রশ্ন-সংবলিত মামলাগুলোর তালিকা করতে হবে। এবং তা একত্রে হাইকোর্টের নজরে আনতে হবে। তবে দুদকের চেয়ারম্যানের আবেদন তাৎপর্যপূর্ণ। এটি খুব সময়োপযোগী ও দরকারি। বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ত্বরিত বিবেচনায় নেবেন বলে আমরা আশা রাখি।
জরুরি অবস্থায় পুনর্গঠিত দুদক দুর্নীতিবিরোধী এক জিহাদে অবতীর্ণ হয়েছিল। ২০০৭ ও ২০০৮ সালে তারা ২০৩টি দুর্নীতির মামলা দায়ের করে। এসব মামলা থেকে হাইকোর্টে প্রায় ১১০০ মামলার বিস্তার ঘটে। গড়ে একটি মামলা হাইকোর্টে পাঁচটির বেশি মামলার জন্ম দিয়েছে। প্রধানত রিট ও ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১(এ) ধারার আওতায় হাইকোর্টে এসব মামলা করা হয়। বেশির ভাগ আবেদনের যুক্তি ছিল, মামলা দায়েরে দুদকের অনুমোদন ঠিক হয়নি। আমরা আগাগোড়া এ ধরনের অনুশীলনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছি। আমরা বলেছি, বহু ক্ষেত্রে মামলার বিচারকাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করাই থাকে লক্ষ্য। এসব মামলার অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রভাবশালী রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও আমলা। তাঁদের নিযুক্ত ভিআইপি আইনজীবীরা দুদকের মামলাগুলো সরাসরি বাতিল করার আবেদন করেছেন। তাঁরা মূলত যেসব আইনি প্রশ্ন তোলেন, তা এই সাংসদ হাবিবুর রহমান মামলাতেই ২০০৮ সালের নভেম্বরে হাইকোর্ট বিভাগের একটি দ্বৈত বেঞ্চ নিষ্পত্তি করেন। এর পরও দুদকের মামলাগুলো স্বাভাবিক নিয়মে চলেনি। এই মামলায় হাইকোর্ট চার-পাঁচটি প্রক্রিয়াগত আইনি প্রশ্নের সুরাহা করেন। আপিল বিভাগ মাত্র একটি আইনি প্রশ্নে হাবিবুর রহমানকে আপিলের অনুমতি দেন। অথচ গত ১৬ মাস দুদকের আইনজীবীরা সুরাহা করে দেওয়া আইনি প্রশ্নগুলো তাঁদের মামলার অনুকূলে কাজে লাগাতে পারেননি। কারণ, হাইকোর্টের রায় পুরোপুরি স্থগিত ছিল। কোটি টাকা দামের বর্তমান প্রশ্ন হলো, এখন কী হবে? সুফল কি মিলবে? বিচারিক আদালতে দুর্নীতির মামলার শুনানি কি বাধাহীনভাবে চলবে?
সংবিধানের ১১০ অনুচ্ছেদের চেতনা সবার চোখের সামনে নস্যাত্ হচ্ছে। এর সারকথা হলো, জনগুরুত্বসম্পন্ন বিষয় জড়িত থাকা মামলা প্রয়োজনে হাইকোর্ট নিজেই বিচার করবেন। কিন্তু হাইকোর্ট কখনো কোনো দুর্নীতির মামলাকে জনগুরুত্বসম্পন্ন বিবেচনায় বিচার করেননি। অথচ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে দুদকের মামলার বিচার-কার্যক্রম বছরের পর বছর স্থগিত রাখা হয়েছে এবং হচ্ছে।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেছেন, আপিল বিভাগের রায়ের ফলে ৫০৯টি মামলার জট খুলতে পারে। কিন্তু আমরা জানি, এ বিষয়ে কোনো সুষ্ঠু সমীক্ষা দুদক করেনি। এর সংখ্যা আরও বাড়ার কথা। দুদককে অভিন্ন আইনি প্রশ্ন-সংবলিত মামলাগুলোর তালিকা করতে হবে। এবং তা একত্রে হাইকোর্টের নজরে আনতে হবে। তবে দুদকের চেয়ারম্যানের আবেদন তাৎপর্যপূর্ণ। এটি খুব সময়োপযোগী ও দরকারি। বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ত্বরিত বিবেচনায় নেবেন বলে আমরা আশা রাখি।
No comments