সমকালীন প্রসঙ্গ-রাজনীতির ডামাডোলে উলুখড়ের প্রাণরক্ষার উপায় কী? by আবু সাঈদ খান
রাজনৈতিক নেতৃত্ব আজ ধনিক-বণিক পরিবেষ্টিত, সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার ধার তারা ধারে না, আমজনতার ক্ষোভ-দুঃখে তাদের কিছু যায় আসে না। দ্রব্যমূল্য বা বাসভাড়া বৃদ্ধির কারসাজি নিয়ে তারা মাথা ঘামায় না। গ্যাসের দাম বাড়ার পর বাসে সরকারের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দুই-তিনগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
বাস মালিকরা যাত্রীবেশী লাঠিয়াল বসিয়ে রেখে জোর করে ভাড়া আদায় করছে। প্রতিবাদ করলে যাত্রীদের লাঞ্ছিত, অপমানিত হতে হচ্ছে
একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে সাধারণ মানুষের মতামতের অনুষ্ঠান দেখছিলাম। জানতে চাওয়া হয়েছিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলে আদালতের রায় বিষয়ে। জনৈক রিকশা শ্রমিক বললেন, ওসব বুঝি না, জিনিসপত্রের দাম কী অইব, সেটা কন। এটি শুধু একজন রিকশা শ্রমিকের কথা নয়, দারিদ্র্যপীড়িত বৃহত্তর জনগোষ্ঠীরও অভিব্যক্তি। যাদের 'দিন আনো দিন খাও' দশা তাদের পক্ষে সংবিধান, সংসদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইত্যাদি বিষয়ে জটিল রাজনৈতিক বিতর্কে অংশ নেওয়ার সুযোগ কোথায়?
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম স্বরাজের দাবিতে সোচ্চার হওয়ায় জেল-জুলুমের শিকার হয়েছিলেন। তার সে সময়ের লেখায় আছে_ 'ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ,/ চায় দুটো ভাত, একটু নুন।' কবির সমকালে স্বরাজের দাবি কম গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। তবে ক্ষুধার শিশুর জন্য খাদ্যের বিষয়টি ছিল স্বরাজের চেয়েও বড়। তাই কবি সেদিন এ কবিতার মাধ্যমে জনগণের মৌলিক অধিকার অর্থাৎ অর্থনৈতিক মুক্তির কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন নেতাদের।
অস্বীকার করা যাবে না যে, দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় নির্বাচন কীভাবে, কোন সরকারের অধীনে হবে, সেটির ফয়সালা হওয়া জরুরি। চলমান অন্যান্য সাংবিধানিক বিতর্কও পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু রাষ্ট্র, সংবিধান, রাজনীতি সবকিছুই তো মানুষের জন্য। সব উদ্যোগের কেন্দ্রবিন্দু মানুষ। প্রশ্ন হচ্ছে স্বাধীনতার ৪০ বছরে মানুষের জীবনমানের কতটুকু উন্নয়ন হয়েছে? যারা ক্ষমতায় আসছেন, তাদের দাবি, উন্নয়ন জোয়ার বইয়ে দিচ্ছেন। অথচ বাংলাদেশের ৫০ শতাংশ মানুষ এখনও দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুসারে ভারতে এই হার ২৯ শতাংশ। এমনকি পাকিস্তানেও ৩৩ শতাংশ। বৈরী রাজনৈতিক পরিবেশেও শ্রীলংকায় ৯২ শতাংশ লোক শিক্ষিত, আমাদের শিক্ষার হার ৬২ শতাংশ। এটি অবশ্য অক্ষর জানা মানুষের হিসাব। শিক্ষিতের স্বীকৃত সংজ্ঞা হচ্ছে, কমপক্ষে খবরের কাগজ পড়তে পারা, লিখতে পারা এবং সাধারণ হিসাব করার যোগ্যতা। সে অনুযায়ী বাংলাদেশে শিক্ষিতের হার শতকরা ৩০ জন হবে কি-না সন্দেহ। আমাদের জনশক্তির বৃহদংশই এখন অদক্ষ। এ প্রসঙ্গে বলতে হয়, ভারত-শ্রীলংকা থেকে যে শ্রমিকরা মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কর্মরত, তারা আমাদের দেশ থেকে যাওয়া শ্রমিকের চেয়ে অনেক বেশি বেতন পায়। কারণ তাদের বৃত্তিমূলক শিক্ষা-প্রশিক্ষণ দিয়েই পাঠানো হয়, আর আমাদের দেশের অদক্ষ যুবকরা প্রশিক্ষণ ছাড়া গিয়ে বঞ্চিত হচ্ছে। সে যা-ই হোক, এসব পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশ এশিয়ার সবচেয়ে দারিদ্র্যপীড়িত দেশ।
ভিশন ২০২১ এখন স্রেফ স্লোগান, এ লক্ষ্য পূরণে সঙ্গতিপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। জাতীয় পরিকল্পনা, বাজেটসহ রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ গতানুগতিক; যা দারিদ্র্য কমাচ্ছে না। বরং রাষ্ট্রীয় নীতি ও পরিকল্পনায় ধনী-দরিদ্র্যের মধ্যে ব্যবধান বাড়ছে, ব্যবধান বাড়ছে শহর ও গ্রামের মধ্যে। এ প্রবণতা দেশের উন্নয়নের জন্য সহায়ক নয়। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে ১৯৭২-এর সংবিধানে সমাজতন্ত্রকে অন্যতম রাষ্ট্রীয় নীতি ঘোষণা করা হয়েছিল, বর্তমান প্রেক্ষাপটে নতুন করে ক্ষমতার প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো সেই লক্ষ্যে অগ্রসর হবে এমনটি আশা করি না। তবে ক্ষুধা-দারিদ্র্য-অপুষ্টি-অশিক্ষা দূরীকরণে যৌক্তিক কিছু উদ্যোগ নেবে না, তা কী করে মানা যায়? পুঁজিবাদের প্রতিভূ যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রেও বেকার ভাতা, বয়স্ক ভাতা, চিকিৎসা সুযোগসহ সামাজিক নিরাপত্তা বিধানে হরেক রকমের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হয়। বাংলাদেশেও দুস্থ প্রবীণ-প্রবীণাদের জন্য ভাতা, কৃষকদের জন্য ভর্তুকিসহ কিছু ব্যবস্থা চালু আছে। কিন্তু সমস্যার তুলনায় তা অপ্রতুল। তারপরও বিতরণে রয়েছে অব্যবস্থা, দুর্নীতি ও দলবাজি।
দেশের অগ্রগতির স্বার্থেই দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর দিকে দৃষ্টি ফেরানো দরকার। এ প্রসঙ্গে সাম্প্রতিক দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি উল্লেখ করব। সংবাদপত্র বা বিভিন্ন সূত্র মতে, গত স্বল্প সময়ের মধ্যে দ্রব্যমূল্য শতকরা ১০ থেকে ১৫ ভাগ বেড়ে গেছে। একমাত্র চাল ছাড়া অন্য সব জিনিসের দামই বাড়ন্ত। এই বাড়ার কি যুক্তি আছে? মন্ত্রী-এমপিরা কথায় কথায় আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দেন। এখানে লক্ষণীয়, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের মূল্য যতটুকু বাড়ে, তার চেয়ে বেশি বাড়িয়ে দেওয়া হয় স্থানীয় বাজারে। আর আন্তর্জাতিক বাজারে যখন দাম কমে, তখন বাংলাদেশে দাম কমে না।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই কেন? আন্তর্জাতিক যে শ্রমবাজার আছে, মজুরি কাঠামো আছে_ তা কি বাংলাদেশে অনুসরণ করা হয়? সবাই জানেন, সেটি করা হয় না। আমাদের দেশের মাথাপিছু আয় ও মজুরি কাঠামো প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে অনেক কম। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুসারে ভারতে মাথাপিছু আয় ৯৫০ ডলার, পাকিস্তানে ৮৭০ ডলার, শ্রীলংকায় ১,৫৪০ ডলার_ সেখানে বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় মাত্র ৪৭০ ডলার। আয় যেখানে কম, সেখানে আন্তর্জাতিক বাজারের দামে পণ্য ক্রয়ের সামর্থ্য আছে কি সাধারণ মানুষের?
আয় না বাড়লে পণ্যমূল্য কেন বাড়ানো হবে? সেই ক্ষেত্রে জিনিসপত্রের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার আওতায় রাখতে আমদানি শুল্ক রেয়াত_ ভর্তুকি দেওয়ার বিকল্প নেই। এখানে ব্যবসায়ীদের শুল্ক রেয়াতের সুযোগ দেওয়া হলেও তার সুফল সাধারণ মানুষ পায় না। বরং কারণে-অকারণে দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এই ব্যবসায়ী মাফিয়া চক্র ভয়ঙ্কর। কেউ কেউ বলেন, সরকারের চেয়ে শক্তিধর। বাস্তবে তা নয়। সমস্যা হচ্ছে, সরকারের মন্ত্রী-এমপি নেতাদের বড় অংশ আজ ব্যবসায় শ্রেণী থেকে আসা। তারা ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষা করতেই অধিকতর তৎপর। ব্যবসায়ী শ্রেণী থেকে আসা ব্যক্তি রাজনীতি করতে বা এমপি-মন্ত্রী হতে পারবেন না, তা বলছি না। বলতে চাইছি যে, একজন ব্যবসায়ী মন্ত্রী হলেও জনগণের স্বার্থরক্ষা তার লক্ষ্য হওয়া উচিত।
ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারিতে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করেছে; যেখানে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের নেতৃস্থানীয়রা আছেন। আমার মনে হয়, অস্বাভাবিক দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির চক্রান্ত নিরূপণে তদন্ত কমিটি করা হলে ক্ষমতার প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর বাঘা বাঘা নেতাদের নামও জানা যাবে। এদের নামধাম একেবারে অজানা তা নয়, তবে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির হোতাদের মতো তাদেরও চিহ্নিত করা প্রয়োজন।
দেশের সাধারণ মানুষের কাছে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিই সবচেয়ে বড় ঘটনা। ভাত-কাপড়ের সমস্যাই প্রধান সমস্যা। তাই পাকিস্তান আমলে তো বটেই, স্বাধীনতা-উত্তর সত্তর দশকে রাজপথে প্রধান স্লোগান ছিল_ ভাত দাও, কাজ দাও/নইলে গদি ছেড়ে দাও, চাল-ডাল-তেলের দাম কমাতে হবে/নইলে গদি ছাড়তে হবে। ব্রিটিশ আমলেও ধ্বনিত হতো 'তেল-কাপড়া-চাল দাও/ঔর না কুরছি ছোড়।'
আজ আর সাধারণ মানুষের এই দাবি নিয়ে রাজপথে স্লোগান ধ্বনিত হয় না, সংসদে বিতর্ক হয় না। রাজনীতি এখন কেবল ক্ষমতা দখল-বেদখলের খেলা। এ খেলায় কাদা ছোড়াছুড়ি হচ্ছে, লাঠালাঠি হচ্ছে। বিরোধী দল হরতাল দিচ্ছে, সরকার পুলিশ নামিয়ে দমনপীড়ন করছে। কিন্তু জনস্বার্থে কোনো হরতাল দূরে থাক_ মিছিলও হচ্ছে না।
রাজনৈতিক নেতৃত্ব আজ ধনিক-বণিক পরিবেষ্টিত, সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার ধার তারা ধারে না, আমজনতার ক্ষোভ-দুঃখে তাদের কিছু যায় আসে না। দ্রব্যমূল্য বা বাসভাড়া বৃদ্ধির কারসাজি নিয়ে তারা মাথা ঘামায় না। গ্যাসের দাম বাড়ার পর বাসে সরকারের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দুই-তিনগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। বাস মালিকরা যাত্রীবেশী লাঠিয়াল বসিয়ে রেখে জোর করে ভাড়া আদায় করছে। প্রতিবাদ করলে যাত্রীদের লাঞ্ছিত, অপমানিত হতে হচ্ছে। সংবাদপত্রে সে দৃশ্য ছাপা হচ্ছে, টিভি চ্যানেলে দেখানো হচ্ছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। কারও বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, এ জবরদস্তিমূলক ভাড়া আদায়ের পেছনে সরকারের কিছু কিছু কর্তাব্যক্তির সমর্থন রয়েছে। সাধারণ বাসযাত্রীরা কী করবেন_ নির্বাচনের সময় দেখে নেবেন? নির্বাচনী বৈতরণী পারের কৌশলও তাদের জানা আছে। এখন নেতারা টাকা কামাবেন আর নির্বাচনের সময় দু'হাতে ছিটাবেন।
প্রশ্ন হচ্ছে_ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা কি কঠিন কিছু? চক্রান্তকারীদের নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সরকার টিসিবির মাধ্যমে পণ্য আমদানি করে বাজারে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে। টিসিবিকে সক্রিয় করার কথা বাণিজ্যমন্ত্রীর মুখেও বহুবার শুনেছি। মনে পড়ে, গত বছর রমজানের আগে তিনি বলেছিলেন, রমজানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে টিসিবির মাধ্যমে পর্যাপ্ত চিনি, তেল, ডাল আমদানি করা হচ্ছে। রমজানে টিসিবির মাধ্যমে পণ্যসামগ্রী এলো না। কিন্তু বললেন, ঈদের কথা মাথায় রেখে পর্যাপ্ত তেল-চিনি আনা হচ্ছে। ঈদেও চালান পেঁৗছল না। শোনা যায়, ব্যবসায়ীদের স্বার্থেই টিসিবিকে সক্রিয় করা হচ্ছে না। আবার রমজান আসন্ন, এবার তিনি কী বলবেন? বাজারের ওপর নিয়ন্ত্রণ রক্ষায় টিসিবিকে অবশ্যই কার্যকর করা জরুরি।
প্রয়োজনে খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ওপর ভর্তুকি দিতে হবে। তবে বাংলাদেশের পক্ষে সমগ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী চিহ্নিত করে তাদের রেশনের মাধ্যমে চাল-আটা সরবরাহ করা যেতে পারে। স্বাধীনতার পর ন্যায্যমূল্যের দোকান খোলা হয়েছিল, আজও শহর-গ্রামের স্বল্প আয়ের মানুষ, গ্রামে প্রান্তিক চাষি, ক্ষেতমজুর, জেলে-কামার-কুমার, শহরের গার্মেন্টকর্মী, কলকারখানার শ্রমিক, ক্ষুদে ব্যবসায়ী, ফেরিওয়ালা, হোটেলকর্মী, গৃহকর্মী, নির্মাণকর্মী, পিয়ন, আরদালি, কেরানি ইত্যাদি শ্রেণী-পেশার মানুষের জন্য ন্যায্যমূল্যের দোকানের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করার বিষয়টি সরকার বিবেচনায় নিতে পারে।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, চাল-ডালের মতো কৃষিপণ্যের দাম কমিয়ে রাখা যুক্তিগ্রাহ্য নয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষক। তাই কৃষি ও কৃষকের স্বার্থে বিবেচনায় রেখে নিম্নআয়ের মানুষের জন্য রেশনিং ও ন্যায্যমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ যৌক্তিক।
প্রকৃত হিসেবে দারিদ্র্যপীড়িত জনগোষ্ঠী সমগ্র জনগণের অর্ধেক কিংবা তার চেয়ে বেশি। এই বিপুলসংখ্যক মানুষকে অনাহার, অপুষ্টি, অশিক্ষার থাবা থেকে মুক্ত করা ছাড়া কি জাতির সামগ্রিক উন্নয়ন আদৌ সম্ভব?
তাই আজ প্রয়োজন দারিদ্র্যসীমার নিচে যাদের বসবাস, তাদের জন্য খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা প্রবর্তন। সেই লক্ষ্যে রেশন ব্যবস্থা ও ন্যায্যমূল্যের দোকানের মাধ্যমে স্বল্পমূল্যের পণ্যসামগ্রী সরবরাহ করা হবে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য অতি জরুরি পদক্ষেপ।
আবু সাঈদ খান : সাংবাদিক
ask_bangla71@yahoo.com
www.abusayeedkhan.com
একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে সাধারণ মানুষের মতামতের অনুষ্ঠান দেখছিলাম। জানতে চাওয়া হয়েছিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলে আদালতের রায় বিষয়ে। জনৈক রিকশা শ্রমিক বললেন, ওসব বুঝি না, জিনিসপত্রের দাম কী অইব, সেটা কন। এটি শুধু একজন রিকশা শ্রমিকের কথা নয়, দারিদ্র্যপীড়িত বৃহত্তর জনগোষ্ঠীরও অভিব্যক্তি। যাদের 'দিন আনো দিন খাও' দশা তাদের পক্ষে সংবিধান, সংসদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইত্যাদি বিষয়ে জটিল রাজনৈতিক বিতর্কে অংশ নেওয়ার সুযোগ কোথায়?
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম স্বরাজের দাবিতে সোচ্চার হওয়ায় জেল-জুলুমের শিকার হয়েছিলেন। তার সে সময়ের লেখায় আছে_ 'ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ,/ চায় দুটো ভাত, একটু নুন।' কবির সমকালে স্বরাজের দাবি কম গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। তবে ক্ষুধার শিশুর জন্য খাদ্যের বিষয়টি ছিল স্বরাজের চেয়েও বড়। তাই কবি সেদিন এ কবিতার মাধ্যমে জনগণের মৌলিক অধিকার অর্থাৎ অর্থনৈতিক মুক্তির কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন নেতাদের।
অস্বীকার করা যাবে না যে, দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় নির্বাচন কীভাবে, কোন সরকারের অধীনে হবে, সেটির ফয়সালা হওয়া জরুরি। চলমান অন্যান্য সাংবিধানিক বিতর্কও পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু রাষ্ট্র, সংবিধান, রাজনীতি সবকিছুই তো মানুষের জন্য। সব উদ্যোগের কেন্দ্রবিন্দু মানুষ। প্রশ্ন হচ্ছে স্বাধীনতার ৪০ বছরে মানুষের জীবনমানের কতটুকু উন্নয়ন হয়েছে? যারা ক্ষমতায় আসছেন, তাদের দাবি, উন্নয়ন জোয়ার বইয়ে দিচ্ছেন। অথচ বাংলাদেশের ৫০ শতাংশ মানুষ এখনও দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুসারে ভারতে এই হার ২৯ শতাংশ। এমনকি পাকিস্তানেও ৩৩ শতাংশ। বৈরী রাজনৈতিক পরিবেশেও শ্রীলংকায় ৯২ শতাংশ লোক শিক্ষিত, আমাদের শিক্ষার হার ৬২ শতাংশ। এটি অবশ্য অক্ষর জানা মানুষের হিসাব। শিক্ষিতের স্বীকৃত সংজ্ঞা হচ্ছে, কমপক্ষে খবরের কাগজ পড়তে পারা, লিখতে পারা এবং সাধারণ হিসাব করার যোগ্যতা। সে অনুযায়ী বাংলাদেশে শিক্ষিতের হার শতকরা ৩০ জন হবে কি-না সন্দেহ। আমাদের জনশক্তির বৃহদংশই এখন অদক্ষ। এ প্রসঙ্গে বলতে হয়, ভারত-শ্রীলংকা থেকে যে শ্রমিকরা মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কর্মরত, তারা আমাদের দেশ থেকে যাওয়া শ্রমিকের চেয়ে অনেক বেশি বেতন পায়। কারণ তাদের বৃত্তিমূলক শিক্ষা-প্রশিক্ষণ দিয়েই পাঠানো হয়, আর আমাদের দেশের অদক্ষ যুবকরা প্রশিক্ষণ ছাড়া গিয়ে বঞ্চিত হচ্ছে। সে যা-ই হোক, এসব পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশ এশিয়ার সবচেয়ে দারিদ্র্যপীড়িত দেশ।
ভিশন ২০২১ এখন স্রেফ স্লোগান, এ লক্ষ্য পূরণে সঙ্গতিপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। জাতীয় পরিকল্পনা, বাজেটসহ রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ গতানুগতিক; যা দারিদ্র্য কমাচ্ছে না। বরং রাষ্ট্রীয় নীতি ও পরিকল্পনায় ধনী-দরিদ্র্যের মধ্যে ব্যবধান বাড়ছে, ব্যবধান বাড়ছে শহর ও গ্রামের মধ্যে। এ প্রবণতা দেশের উন্নয়নের জন্য সহায়ক নয়। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে ১৯৭২-এর সংবিধানে সমাজতন্ত্রকে অন্যতম রাষ্ট্রীয় নীতি ঘোষণা করা হয়েছিল, বর্তমান প্রেক্ষাপটে নতুন করে ক্ষমতার প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো সেই লক্ষ্যে অগ্রসর হবে এমনটি আশা করি না। তবে ক্ষুধা-দারিদ্র্য-অপুষ্টি-অশিক্ষা দূরীকরণে যৌক্তিক কিছু উদ্যোগ নেবে না, তা কী করে মানা যায়? পুঁজিবাদের প্রতিভূ যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রেও বেকার ভাতা, বয়স্ক ভাতা, চিকিৎসা সুযোগসহ সামাজিক নিরাপত্তা বিধানে হরেক রকমের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হয়। বাংলাদেশেও দুস্থ প্রবীণ-প্রবীণাদের জন্য ভাতা, কৃষকদের জন্য ভর্তুকিসহ কিছু ব্যবস্থা চালু আছে। কিন্তু সমস্যার তুলনায় তা অপ্রতুল। তারপরও বিতরণে রয়েছে অব্যবস্থা, দুর্নীতি ও দলবাজি।
দেশের অগ্রগতির স্বার্থেই দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর দিকে দৃষ্টি ফেরানো দরকার। এ প্রসঙ্গে সাম্প্রতিক দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি উল্লেখ করব। সংবাদপত্র বা বিভিন্ন সূত্র মতে, গত স্বল্প সময়ের মধ্যে দ্রব্যমূল্য শতকরা ১০ থেকে ১৫ ভাগ বেড়ে গেছে। একমাত্র চাল ছাড়া অন্য সব জিনিসের দামই বাড়ন্ত। এই বাড়ার কি যুক্তি আছে? মন্ত্রী-এমপিরা কথায় কথায় আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দেন। এখানে লক্ষণীয়, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের মূল্য যতটুকু বাড়ে, তার চেয়ে বেশি বাড়িয়ে দেওয়া হয় স্থানীয় বাজারে। আর আন্তর্জাতিক বাজারে যখন দাম কমে, তখন বাংলাদেশে দাম কমে না।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই কেন? আন্তর্জাতিক যে শ্রমবাজার আছে, মজুরি কাঠামো আছে_ তা কি বাংলাদেশে অনুসরণ করা হয়? সবাই জানেন, সেটি করা হয় না। আমাদের দেশের মাথাপিছু আয় ও মজুরি কাঠামো প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে অনেক কম। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুসারে ভারতে মাথাপিছু আয় ৯৫০ ডলার, পাকিস্তানে ৮৭০ ডলার, শ্রীলংকায় ১,৫৪০ ডলার_ সেখানে বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় মাত্র ৪৭০ ডলার। আয় যেখানে কম, সেখানে আন্তর্জাতিক বাজারের দামে পণ্য ক্রয়ের সামর্থ্য আছে কি সাধারণ মানুষের?
আয় না বাড়লে পণ্যমূল্য কেন বাড়ানো হবে? সেই ক্ষেত্রে জিনিসপত্রের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার আওতায় রাখতে আমদানি শুল্ক রেয়াত_ ভর্তুকি দেওয়ার বিকল্প নেই। এখানে ব্যবসায়ীদের শুল্ক রেয়াতের সুযোগ দেওয়া হলেও তার সুফল সাধারণ মানুষ পায় না। বরং কারণে-অকারণে দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এই ব্যবসায়ী মাফিয়া চক্র ভয়ঙ্কর। কেউ কেউ বলেন, সরকারের চেয়ে শক্তিধর। বাস্তবে তা নয়। সমস্যা হচ্ছে, সরকারের মন্ত্রী-এমপি নেতাদের বড় অংশ আজ ব্যবসায় শ্রেণী থেকে আসা। তারা ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষা করতেই অধিকতর তৎপর। ব্যবসায়ী শ্রেণী থেকে আসা ব্যক্তি রাজনীতি করতে বা এমপি-মন্ত্রী হতে পারবেন না, তা বলছি না। বলতে চাইছি যে, একজন ব্যবসায়ী মন্ত্রী হলেও জনগণের স্বার্থরক্ষা তার লক্ষ্য হওয়া উচিত।
ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারিতে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করেছে; যেখানে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের নেতৃস্থানীয়রা আছেন। আমার মনে হয়, অস্বাভাবিক দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির চক্রান্ত নিরূপণে তদন্ত কমিটি করা হলে ক্ষমতার প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর বাঘা বাঘা নেতাদের নামও জানা যাবে। এদের নামধাম একেবারে অজানা তা নয়, তবে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির হোতাদের মতো তাদেরও চিহ্নিত করা প্রয়োজন।
দেশের সাধারণ মানুষের কাছে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিই সবচেয়ে বড় ঘটনা। ভাত-কাপড়ের সমস্যাই প্রধান সমস্যা। তাই পাকিস্তান আমলে তো বটেই, স্বাধীনতা-উত্তর সত্তর দশকে রাজপথে প্রধান স্লোগান ছিল_ ভাত দাও, কাজ দাও/নইলে গদি ছেড়ে দাও, চাল-ডাল-তেলের দাম কমাতে হবে/নইলে গদি ছাড়তে হবে। ব্রিটিশ আমলেও ধ্বনিত হতো 'তেল-কাপড়া-চাল দাও/ঔর না কুরছি ছোড়।'
আজ আর সাধারণ মানুষের এই দাবি নিয়ে রাজপথে স্লোগান ধ্বনিত হয় না, সংসদে বিতর্ক হয় না। রাজনীতি এখন কেবল ক্ষমতা দখল-বেদখলের খেলা। এ খেলায় কাদা ছোড়াছুড়ি হচ্ছে, লাঠালাঠি হচ্ছে। বিরোধী দল হরতাল দিচ্ছে, সরকার পুলিশ নামিয়ে দমনপীড়ন করছে। কিন্তু জনস্বার্থে কোনো হরতাল দূরে থাক_ মিছিলও হচ্ছে না।
রাজনৈতিক নেতৃত্ব আজ ধনিক-বণিক পরিবেষ্টিত, সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার ধার তারা ধারে না, আমজনতার ক্ষোভ-দুঃখে তাদের কিছু যায় আসে না। দ্রব্যমূল্য বা বাসভাড়া বৃদ্ধির কারসাজি নিয়ে তারা মাথা ঘামায় না। গ্যাসের দাম বাড়ার পর বাসে সরকারের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দুই-তিনগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। বাস মালিকরা যাত্রীবেশী লাঠিয়াল বসিয়ে রেখে জোর করে ভাড়া আদায় করছে। প্রতিবাদ করলে যাত্রীদের লাঞ্ছিত, অপমানিত হতে হচ্ছে। সংবাদপত্রে সে দৃশ্য ছাপা হচ্ছে, টিভি চ্যানেলে দেখানো হচ্ছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। কারও বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, এ জবরদস্তিমূলক ভাড়া আদায়ের পেছনে সরকারের কিছু কিছু কর্তাব্যক্তির সমর্থন রয়েছে। সাধারণ বাসযাত্রীরা কী করবেন_ নির্বাচনের সময় দেখে নেবেন? নির্বাচনী বৈতরণী পারের কৌশলও তাদের জানা আছে। এখন নেতারা টাকা কামাবেন আর নির্বাচনের সময় দু'হাতে ছিটাবেন।
প্রশ্ন হচ্ছে_ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা কি কঠিন কিছু? চক্রান্তকারীদের নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সরকার টিসিবির মাধ্যমে পণ্য আমদানি করে বাজারে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে। টিসিবিকে সক্রিয় করার কথা বাণিজ্যমন্ত্রীর মুখেও বহুবার শুনেছি। মনে পড়ে, গত বছর রমজানের আগে তিনি বলেছিলেন, রমজানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে টিসিবির মাধ্যমে পর্যাপ্ত চিনি, তেল, ডাল আমদানি করা হচ্ছে। রমজানে টিসিবির মাধ্যমে পণ্যসামগ্রী এলো না। কিন্তু বললেন, ঈদের কথা মাথায় রেখে পর্যাপ্ত তেল-চিনি আনা হচ্ছে। ঈদেও চালান পেঁৗছল না। শোনা যায়, ব্যবসায়ীদের স্বার্থেই টিসিবিকে সক্রিয় করা হচ্ছে না। আবার রমজান আসন্ন, এবার তিনি কী বলবেন? বাজারের ওপর নিয়ন্ত্রণ রক্ষায় টিসিবিকে অবশ্যই কার্যকর করা জরুরি।
প্রয়োজনে খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ওপর ভর্তুকি দিতে হবে। তবে বাংলাদেশের পক্ষে সমগ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী চিহ্নিত করে তাদের রেশনের মাধ্যমে চাল-আটা সরবরাহ করা যেতে পারে। স্বাধীনতার পর ন্যায্যমূল্যের দোকান খোলা হয়েছিল, আজও শহর-গ্রামের স্বল্প আয়ের মানুষ, গ্রামে প্রান্তিক চাষি, ক্ষেতমজুর, জেলে-কামার-কুমার, শহরের গার্মেন্টকর্মী, কলকারখানার শ্রমিক, ক্ষুদে ব্যবসায়ী, ফেরিওয়ালা, হোটেলকর্মী, গৃহকর্মী, নির্মাণকর্মী, পিয়ন, আরদালি, কেরানি ইত্যাদি শ্রেণী-পেশার মানুষের জন্য ন্যায্যমূল্যের দোকানের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করার বিষয়টি সরকার বিবেচনায় নিতে পারে।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, চাল-ডালের মতো কৃষিপণ্যের দাম কমিয়ে রাখা যুক্তিগ্রাহ্য নয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষক। তাই কৃষি ও কৃষকের স্বার্থে বিবেচনায় রেখে নিম্নআয়ের মানুষের জন্য রেশনিং ও ন্যায্যমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ যৌক্তিক।
প্রকৃত হিসেবে দারিদ্র্যপীড়িত জনগোষ্ঠী সমগ্র জনগণের অর্ধেক কিংবা তার চেয়ে বেশি। এই বিপুলসংখ্যক মানুষকে অনাহার, অপুষ্টি, অশিক্ষার থাবা থেকে মুক্ত করা ছাড়া কি জাতির সামগ্রিক উন্নয়ন আদৌ সম্ভব?
তাই আজ প্রয়োজন দারিদ্র্যসীমার নিচে যাদের বসবাস, তাদের জন্য খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা প্রবর্তন। সেই লক্ষ্যে রেশন ব্যবস্থা ও ন্যায্যমূল্যের দোকানের মাধ্যমে স্বল্পমূল্যের পণ্যসামগ্রী সরবরাহ করা হবে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য অতি জরুরি পদক্ষেপ।
আবু সাঈদ খান : সাংবাদিক
ask_bangla71@yahoo.com
www.abusayeedkhan.com
No comments