এই মূল্যায়নকে সতর্কভাবে কাজে লাগাতে হবে-বৈশ্বিক ঋণমানে বাংলাদেশ
ঘটনাটি তাৎপর্যবহ। স্বাধীনতার ৩৯ বছর পেরিয়ে বাংলাদেশ যে এখন বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি অবস্থান করে নিচ্ছে, এটি তারই প্রতিফলন। আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস (এসঅ্যান্ডপি) বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো তাদের ঋণমানের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।
এর ফলে বিশ্বের ১২৪টি দেশের ঋণমানের পাশাপাশি এখন যে-কেউ বাংলাদেশের ঋণমানটিও জানতে পারবে। একে বলা হয় সার্বভৌম ঋণমান (সভরেইন ক্রেডিট রেটিং)। সহজভাবে এর মানে হলো, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাজার থেকে বন্ড ছেড়ে ঋণ গ্রহণ করলে, সেই ঋণ পরিশোধ করার ক্ষমতা কতটুকু, তা প্রকাশ করার সূচক। অন্যভাবে বললে, বিদেশি, যাঁরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চান, তাঁরা একনজরে এই ঋণমান দেখে বুঝে নিতে পারবেন যে বাংলাদেশে বিনিয়োগে ঝুঁকির মাত্রা কতখানি বা এখানে বিনিয়োগ করে কতখানি লাভবান হওয়া যাবে।
বস্তুত বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো সহনক্ষমতা। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে বাংলাদেশের অর্থনীতি যেমন এগিয়ে গেছে, তেমনি আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলার সক্ষমতাও বিভিন্ন সময় প্রতীয়মান হয়েছে। এর সর্বশেষ প্রতিফলন হলো বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার ধাক্কা সত্ত্বেও অর্থনীতির দাঁড়িয়ে থাকা। যেমন, ২০০৯ সালে যেখানে মন্দার কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নে চীন, ভারত ও ভিয়েতনামের রপ্তানি আগের বছরের তুলনায় কমে গেছে, সেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে। সুতরাং বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নতুনভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছে। তাই এখানে বিনিয়োগ করার জন্য নতুনভাবে আগ্রহ তৈরি হবে বলে মনে করা যেতে পারে। এ ছাড়া আরেকটি সংস্থা মুডি বাংলাদেশের ওপর তাদের ঋণমান প্রকাশ করবে।
এসঅ্যান্ডপির ঋণমানে ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার সমকক্ষতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। আর এগিয়ে আছে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে। এই প্রতিবেদনে স্বল্প মেয়াদে যেকোনো আর্থিক দায় মেটানোর সক্ষমতার বিষয়টি উঠে এসেছে। এটি এখন বিদেশি বাণিজ্যে লেনদেনকারী বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংককে বিদেশি ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতার ক্ষেত্রে কিছুটা এগিয়ে রাখবে, ব্যয় কমাতে সহায়ক হবে। পাশাপাশি এই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অর্থনীতির পূর্বাভাসে যে স্থিতিশীলতার কথা বলা হয়েছে, তা গুরুত্বপূর্ণ। স্থিতিশীলতার পূর্বাভাস এ জন্যই দেওয়া হয়েছে যে সরকার জ্বালানি ও অবকাঠামোগত সংকট কাটানোর জন্য যেসব সংস্কার-কর্মসূচির কথা বলেছে, তা বাস্তবায়ন করবে বলে বিশ্বাস তৈরি করা গেছে। এ ছাড়া রাজস্ব পরিস্থিতির উন্নতি করার পরামর্শ এসেছে এই প্রতিবেদনে, যা নিয়ে দ্বিমত করার কোনো অবকাশ নেই। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে কর-জিডিপির অনুপাত বাংলাদেশের সবচেয়ে কম। এটা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তাহলেই দীর্ঘ মেয়াদে ঋণমান আরও উন্নত হবে আর সেখান থেকে সুফল নিয়ে আসা যাবে।
তবে একটি সতর্কতাও এখানে জরুরি। ঋণমান নির্ণয়কারী আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সৃষ্ট আর্থিক সংকটে নানাভাবে সমালোচিত হয়েছে। এরা উচ্চ হারে ঋণমান নির্ধারণ করেছিল এমন একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে লালবাতি জ্বলেছে। তাই এসব সংস্থার এই ঋণমান প্রকাশ নিয়ে অতি উচ্ছ্বাস না দেখানোই ভালো। বরং তারা যেসব তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এবং যে পদ্ধতিতে এই ঋণমান নির্ণয় করছে, তা নিবিড়ভাবে পর্যালোচনার মধ্যে রাখা দরকার।
বস্তুত বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো সহনক্ষমতা। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে বাংলাদেশের অর্থনীতি যেমন এগিয়ে গেছে, তেমনি আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলার সক্ষমতাও বিভিন্ন সময় প্রতীয়মান হয়েছে। এর সর্বশেষ প্রতিফলন হলো বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার ধাক্কা সত্ত্বেও অর্থনীতির দাঁড়িয়ে থাকা। যেমন, ২০০৯ সালে যেখানে মন্দার কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নে চীন, ভারত ও ভিয়েতনামের রপ্তানি আগের বছরের তুলনায় কমে গেছে, সেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে। সুতরাং বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নতুনভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছে। তাই এখানে বিনিয়োগ করার জন্য নতুনভাবে আগ্রহ তৈরি হবে বলে মনে করা যেতে পারে। এ ছাড়া আরেকটি সংস্থা মুডি বাংলাদেশের ওপর তাদের ঋণমান প্রকাশ করবে।
এসঅ্যান্ডপির ঋণমানে ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার সমকক্ষতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। আর এগিয়ে আছে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে। এই প্রতিবেদনে স্বল্প মেয়াদে যেকোনো আর্থিক দায় মেটানোর সক্ষমতার বিষয়টি উঠে এসেছে। এটি এখন বিদেশি বাণিজ্যে লেনদেনকারী বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংককে বিদেশি ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতার ক্ষেত্রে কিছুটা এগিয়ে রাখবে, ব্যয় কমাতে সহায়ক হবে। পাশাপাশি এই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অর্থনীতির পূর্বাভাসে যে স্থিতিশীলতার কথা বলা হয়েছে, তা গুরুত্বপূর্ণ। স্থিতিশীলতার পূর্বাভাস এ জন্যই দেওয়া হয়েছে যে সরকার জ্বালানি ও অবকাঠামোগত সংকট কাটানোর জন্য যেসব সংস্কার-কর্মসূচির কথা বলেছে, তা বাস্তবায়ন করবে বলে বিশ্বাস তৈরি করা গেছে। এ ছাড়া রাজস্ব পরিস্থিতির উন্নতি করার পরামর্শ এসেছে এই প্রতিবেদনে, যা নিয়ে দ্বিমত করার কোনো অবকাশ নেই। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে কর-জিডিপির অনুপাত বাংলাদেশের সবচেয়ে কম। এটা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তাহলেই দীর্ঘ মেয়াদে ঋণমান আরও উন্নত হবে আর সেখান থেকে সুফল নিয়ে আসা যাবে।
তবে একটি সতর্কতাও এখানে জরুরি। ঋণমান নির্ণয়কারী আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সৃষ্ট আর্থিক সংকটে নানাভাবে সমালোচিত হয়েছে। এরা উচ্চ হারে ঋণমান নির্ধারণ করেছিল এমন একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে লালবাতি জ্বলেছে। তাই এসব সংস্থার এই ঋণমান প্রকাশ নিয়ে অতি উচ্ছ্বাস না দেখানোই ভালো। বরং তারা যেসব তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এবং যে পদ্ধতিতে এই ঋণমান নির্ণয় করছে, তা নিবিড়ভাবে পর্যালোচনার মধ্যে রাখা দরকার।
No comments