বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি- মোরসালিন মিজান
কিছুটা অস্থিতিশীল এখন রাজনীতি। যে যার মতো করে বলে যাচ্ছেন। বকে যাচ্ছেন। মিছিল মিটিং হরতাল অবরোধ চলছে। সেই সঙ্গে চলছে পিপার স্প্রে। ধর্ষণের মতো বর্বরতাও থামানো যাচ্ছে না।
আজ এখানে তো কাল ওখানে জঘন্য আক্রমণের শিকার হচ্ছেন নারীরা। বিষয়গুলো সত্যি দুঃখজনক। হতাশার। সারাদেশের মতো রাজধানী ঢাকার মানুষও এসব ঘটনায় চিন্তিত। মনমরা। তবে হ্যাঁ, মাঝে মধ্যে কিছু ভাল খবরও পাওয়া যাচ্ছে। এই যেমন শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার বিচারের কাজ বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। যে কোন দিন রায় ঘোষণা করবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ নিয়ে ট্রাইব্যুনালে মোট তিনটি মামলা শুনানি শেষে রায়ের পর্যায়ে গেল। এর আগে গত ২৬ ডিসেম্বর আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের বিরুদ্ধে মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার শুনানিও শেষ হয়েছিল। তবে ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠনের কারণে ফের শুরু হয়েছে যুক্তিতর্ক। সহসাই এ কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর তাহলে পর পর কয়েকটি রায় পাওয়া যাবে। বলা বাহুল্য, এসব রায়ের জন্য বহু দিন প্রতীক্ষা করে আছে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ। এবার আসা যাক বিপিএলের আলোচনায়। হ্যাঁ, বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলির শহর ঢাকায় আবারও শুরু হয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল)। ক্রিকেটপ্রেমী বাঙালীর জন্য আনন্দের বিড়াট উপলক্ষ এনে দিয়েছে এই আসর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বর্ণাঢ্য এ আসরের উদ্বোধন করা হয়। প্রথম দিন খেলা ছিল না। তবে নাচ, গান, আতশবাজিতে মুখরিত ছিল স্টেডিয়াম। আয়োজনের শুরুতে মঞ্চে উঠেন দেশের কিংবদন্তি শিল্পী রুনা লায়লা। নিজের জনপ্রিয় গান ‘শিল্পী আমি’ ও ‘দমাদম মাসকালান্দার’ গেয়ে শোনান তিনি। গান দুটোর সঙ্গে নেচে গেয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন উপস্থিত শ্রোতা। ফোক গানের জনপ্রিয় শিল্পী মমতাজ শুরু করেন ক্রিকেট বিষয়ক গান দিয়ে। পরে নিজের অত্যন্ত জনপ্রিয় দুটি গান গেয়ে শোনান তিনি। ‘মরার কোকিল’র গল্প শোনান সুরে সুরে। বাদ যায়নি ‘নান্টু ঘটক’র কথাও। এভাবে কিছু সময় মাতিয়ে রাখার পর মঞ্চ ছাড়েন মমতাজ। তবে এই প্রজন্মের শ্রোতাদের কাছে বড় আকর্ষণ ছিলেন ব্যান্ড তারকা জেমস। এ শিল্পীর গানের সঙ্গে যেন দোলে ওঠে স্টেডিয়াম। সকলেই গায়কের কণ্ঠে কণ্ঠ মেলান। গাওয়ার চেষ্টা করেন। এভাবে চমৎকার এগিয়ে চলে অনুষ্ঠান। গান করেন দেশ বিদেশের খ্যাতিমান শিল্পীরা। এদিকে, আজ শুক্রবার থেকে শুরু হবে মূল আয়োজন। মাঠে গড়াবে ক্রিকেট। আর তাহলে সামনের কিছুদিন ভীষণ আনন্দে কাটাবে বাংলাদেশের মানুষ। বিপিএল প্রসঙ্গে আরও একটি বিষয় খুব আলোচিত হচ্ছে এখন। আর তা হচ্ছে, টুর্নামেন্টে পাকিস্তানী ক্রিকেটারদের অনুপস্থিতি। চরম নিরাপত্তাহীন পাকিস্তানে খেলতে শেষতক যায়নি বাংলাদেশ। আর তাই যারপরনাই নাখোশ পাকিস্তান শেষ মুহূর্তে নিজেদের ক্রিকেটারদের টুর্নামেন্ট থেকে সরিয়ে নিয়েছে। পিসিবি কর্তারাহয়ত ধারণা করেছিলেন, এতে করে ভেস্তে যাবে বিপিএল। কিন্তু সেটি হয়নি। বরং একই রকম উৎসাহ দেখা যাচ্ছে ক্রিকেট ভক্তদের মধ্যে। এখন আয়োজনটি সফল করার প্রশ্ন। আয়োজকরা তা করে দেখাবেন এমনটি আশা করছেন ক্রিকেটপ্রেমী বাঙালী।
No comments