ভোটের রাজার হারের রেকর্ড
হারেই তার যত সুখ। হেরেই গড়েছেন রেকর্ড। ভারতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতে না হতেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন কে পদ্মরাজন। জয়ের কোনো আশা নেই- ভালো করেই জানেন। জেনেশুনেই হারের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। গোঁফ নাড়িয়ে তিনি বলেন, 'আমি হলাম ভোটের রাজা!' শাসকবিরোধী শিবিরের নেতারা এখনও রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। কিন্তু তাতে তার কী? আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, অদ্ভুত স্বভাবের এ ব্যক্তির বাড়ি তামিলনাড়ুতে। তিনি নিজের নামের আগে 'ডা.' লেখেন। আসলে হোমিওপ্যাথ চিকিৎসক। তবে তার এ উপাধি স্বঘোষিত। হলফনামায় লিখেছেন অষ্টম শ্রেণী পাস। পরে অবশ্য আন্নামালাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে করসপন্ডেন্স কোর্সে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর করেছেন। এখন হোমিওপ্যাথি ছেড়ে গাড়ির টায়ারের ছোট দোকান চালান। এই ব্যক্তিই নিজেকে বলেন 'ভোটের রাজা'! দাবি করেন, এ পর্যন্ত ১৮০টির মতো ভোটে দাঁড়িয়ে হেরেছেন। আর এই হার দিয়েই বিখ্যাত হতে চান তিনি। এর আগে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম ও বর্তমান রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির বিরুদ্ধেও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন তিনি। যথারীতি তা খারিজও হয়েছিল। শুধু রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নয়, লোকসভা ভোটে গুজরাটের বডোদরায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধেও লড়েছেন। মনমোহন সিংকেও ছাড়েননি রাজ্যসভায়। আর জয়ললিতার বিরুদ্ধে তো ভূরি ভূরি লড়েছেন।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হয় মনোনয়নপত্র খারিজ বা জামানত জব্দ হয়েছে। তাতেও ক্ষোভ নেই ৫৮ বছর বয়সী পদ্মরাজনের। ২০১১ সালের তামিলনাড়ু বিধানসভা নির্বাচনে নিজের সর্বোচ্চ ৬ হাজার ২৭৩ ভোট পেয়ে হেরেছিলেন। দিল্লিতে তিনি বলেন, 'নিজের পকেট থেকে এ পর্যন্ত ২০ লাখ রুপি খুইয়েছি। এবারও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জিতব না জানি। ত্রিশ বছর ধরে ভোটে লড়ছি শুধু হারার জন্য! দেখাতে চাই, আমার মতো সাধারণ মানুষও ভোটে লড়তে পারে।' বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিজ্ঞপ্তি জারির পর রিটার্নিং অফিসার লোকসভার সেক্রেটারি জেনারেলের কাছে এ পর্যন্ত অর্ধডজন মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। তারা কেউ জয়ের জন্য যোগ্য নন। লোকসভা সচিবালয় সূত্রমতে, প্রতিবারই এ ধরনের মনোনয়নপত্র জমা পড়ে। অধিকাংশই বাতিল হয়ে যায়। পদ্মরাজনের অবশ্য তাতেই জয়। ইতিমধ্যে সবচেয়ে 'অসফল' প্রার্থী হিসেবে লিমকা বুকস অব রেকর্ডে ঠাঁই হয়েছে তিনবার। এবার গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসেও নিজের নামটি দেখতে চান পদ্মরাজন।
No comments