অবসরপ্রাপ্তরা কী দোষ করলেন মাননীয় মন্ত্রী?
অর্থমন্ত্রী হেসে হেসে অবসরপ্রাপ্তদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলছেন। বাজেট দেয়ার সময় প্রথমদিকে তিনি অবসরপ্রাপ্তদের গণনার মধ্যেই নেননি। পরে বাস্তবতা বুঝতে পারেন এবং তাদের দিকে দৃষ্টি দেন। যেমন- নববর্ষ ভাতা। প্রথমে অবসরপ্রাপ্তদের এ ভাতা দেয়া হল না; অথচ তারাও এ দেশের সেবা করে অবসরে গিয়েছেন। তারাও এ উৎসব করার অধিকার রাখেন। তারা নববর্ষ ভাতা থেকে বঞ্চিত হবেন কেন? অর্থমন্ত্রী বুঝতে পারলেন। তাই অবসরপ্রাপ্তদের সেই ভাতা পরে দেয়ার ব্যবস্থা হল। তিনি যখন অহেতুক বেসরকারি চাকুরেদের কাল্পনিক অধিক বেতনপ্রাপ্তির কথা বলে সরকারি কর্মচারীদের বেতন অযৌক্তিকভাবে বৃদ্ধি করলেন, তখন বেসরকারি আর সরকারি চাকুরেদের বেতন ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ল। দেশের টাকা লুটপাট করে খাওয়া কিছু বেসরকারি ব্যাংক, বহুজাতিক কোম্পানি এবং কম্পিউটারে আউটসোর্সিং করে এমন ধরনের কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্মচারীদের ন্যায্য বেতন দিলেও অন্যান্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্মচারীদের সরকারি বেতনের অর্ধেক বেতনও দেয় না। অথচ অর্থমন্ত্রী ওইসব চোরা ব্যাংক এবং আউটসোর্সিং করা প্রতিষ্ঠানের বেতনের সঙ্গে তুলনা করে সরকারি চাকুরেদের অযৌক্তিকভাবে বেতন বৃদ্ধি করে বসলেন। দেশের আত্মঘাতী দুর্নীতি বন্ধের কোনো ব্যবস্থা করলেন না। ব্যাংকগুলো হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করে দিচ্ছে।
তাদের শাস্তি হচ্ছে না। অথচ সরকার ব্যাংকগুলোকে জনগণের অর্থ দিয়ে তাদের ঘাটতি তহবিল তৈরি করে দিচ্ছে। ফলে সরকারের যে ঘাটতি ঘটছে, সেটা পুষিয়ে নেয়ার জন্য অবসরপ্রাপ্তদের যে শেষ অবলম্বন ‘সঞ্চয়পত্র’, তার মুনাফার হার ক্রমেই কমিয়ে দেয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ব্যাংক মুনাফার হার অনেক কম, তাই সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমিয়ে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা হচ্ছে। প্রশ্ন হল- ব্যাংকে মুনাফার হার কম কেন? তারা কি গ্রাহকের টাকা লগ্নি করছে না? লগ্নি করলে শতকরা কত লাভ হচ্ছে? ন্যূনতম লাভ ১০ ভাগ হচ্ছে নিশ্চয়ই, সব ওভারহেড খরচ বাদ দিয়ে। তাহলে গ্রাহককে কেন ৫ ভাগ মুনাফা দেয়া হবে? প্রকৃত ঘটনা তা নয়। তাদের মুনাফা ঠিকই হচ্ছে; কিন্তু ব্যাংকে যে লুটপাট হচ্ছে, সেটা পুষিয়ে নেয়ার জন্যই গ্রাহকদের ন্যায্য মুনাফা দেয়া হচ্ছে না। অর্থাৎ বাংলাদেশে যেসব আর্থিক অন্যায় হচ্ছে, তার কোনো যৌক্তিক কারণ কেউ দেখাতে পারবে না। সবই অব্যবস্থাপনার ফসল। এ সরকার প্রকৃত কারণ উদঘাটন এবং তার কঠোর প্রতিকারের ব্যবস্থা না করে ওই ভুয়া কারণগুলো দেখিয়ে বারবার সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমিয়ে দিচ্ছে। ফলে দেশের সাধারণ মানুষ অহেতুক করের বোঝা বা কম মুনাফা নিয়ে শাস্তি ভোগ করছে। উদাহরণ- ব্যাংকের হিসাব থেকে আবগারি শুল্ক কর্তন। আবগারি শুল্ক ব্যাংক হিসাবধারীকে দিতে হবে কেন? তারা কি মাদকদ্রব্য, বিড়ি বা অন্যান্য নেশাজাতীয় দ্রব্যের ব্যবসায়ী? আবগারি শুল্ক তো তাদের জন্য, যারা ওইসব ব্যবসা করে। অবিলম্বে হিসাব থেকে আবগারি শুল্কহার বৃদ্ধি দূরের কথা, আগের অবৈধ আবগারি শুল্ক কর্তন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা এবং সেই সঙ্গে আগে যে অবৈধভাবে আবগারি শুল্ক কর্তন করা হয়েছে, তা ফেরত দেয়া উচিত। বাংলাদেশ কি একটা পাগলের দেশে পরিণত হয়েছে? ব্যাংক লুটপাটের খেসারত কেন দেশের সাধারণ মানুষকে দিতে হবে? আবার যদি বলা হয়, ব্যাংকে গ্রাহকদের টাকা অলস পড়ে আছে, বিনিয়োগ হচ্ছে না বলে ব্যাংক গ্রাহকদের অধিক হারে মুনাফা দিতে পারছে না, তখন প্রশ্ন আসে- দেশে এত প্রবৃদ্ধি ঘটলে ব্যাংকে টাকা পড়ে থাকবে কেন? কেন বিনিয়োগ হচ্ছে না? তাহলে দেশ উন্নত হওয়ার স্লোগান কি ভুয়া? দেশ উন্নয়নের ওপর ভাসলে ব্যাংকে টাকা অলস পড়ে থাকবে কেন? কী তার কারণ, সরকারকে সেটা বলতে হবে। নাকি কেবল পোশাক বানানোর দর্জিগিরির অর্থ, বিদেশের শ্রমিকদের পাঠানো কষ্টের অর্থই কি বাংলাদেশের চালিকাশক্তি? এমন হলে সেটা টেকসই কোনো বিষয় নয়। তাই বাংলাদেশের উন্নয়নের কথা বলে আত্মপ্রসাদ লাভের কোনো অর্থ নেই। আর দেশ উন্নয়নের ক্রিমের ওপর ভাসলে দেশ থেকে মানুষ পালায় কেন? আশপাশের দেশ থেকে তো মানুষ পালাচ্ছে না।
এবার আসি অবসরপ্রাপ্তদের বিষয়ে। অবসরপ্রাপ্তদের জন্য সরকারের পেনশনার্স সঞ্চয়পত্র থাকায় অনেকে সম্পূর্ণ গ্র্যাচুইটির অর্থ এককালীন তুলে নিয়েছেন। তখন হিসাব করা হয়েছিল পেনশনার্স সঞ্চয়পত্রের মুনাফার যে হার, তাতে যে অর্থ পাওয়া যাবে, তা সরকার থেকে মাসে মাসে যে পেনশন পাওয়া যায় তার প্রায় সমান হয়। সুতরাং গ্র্যাচুইটির টাকা এককালীন নেয়ায় কোনো ক্ষতি নেই। উপরন্তু হাতে যে টাকা থাকে, বিপদ-আপদে সেটা কাজে লাগানো সম্ভব হবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, প্রতি ৪-৫ বছর পর যে পে-স্কেল দেয়া হয়, সে সময় যারা মাসিক পেনশন নেয়, তাদের পেনশনের হার বৃদ্ধি করা হয়। অন্যদিকে পেনশনার্স সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ক্রমেই হ্রাস করা হচ্ছে। ফলে যারা এককালীন গ্র্যাচুইটির অর্থ তুলে নিয়েছেন, সরকারের পেনশনার্স সঞ্চয়পত্র ছিল বলে, তারা দিন দিন ফতুর হয়ে যাচ্ছে। সরকার কেন পেনশনার্স সঞ্চয়পত্র সৃষ্টি করে এ প্রতারণা করছে অবসরপ্রাপ্তদের সঙ্গে? বর্তমানে পে-স্কেল আর দেয়া হবে না; কিন্তু সরকারি চাকুরেদের এবং যারা মাসিক পেনশন নেন, তাদের প্রতিবছর বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ন্যূনতম ৫ ভাগ হারে দেয়া হবে। অন্যদিকে পেনশনার্স সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমানো হবে। কেন পেনশনার্স সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমানো হবে? তাহলে যারা পেনশনার্স সঞ্চয়পত্রে পেনশনের অর্থ বিনিয়োগ করেছিল, তারা কি সরকারের দ্বারা প্রতারিত হচ্ছে না? তাই আবেদন জানাই, সরকার যেন তাদেরকে মাসিক পেনশন গ্রহণকারীদের মতো মানুষ বলে গণ্য করে এবং তাদের প্রতি সমআচরণ করে এবং অতীতে অযৌক্তিকভাবে পেনশনার্স সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার যা কমানো হয়েছিল, সেটা পূরণ করে তার ওপর ৫ পারসেন্ট বার্ষিক ইনক্রিমেন্টের ব্যবস্থা করে। কারণ একই দেশের নাগরিকদের প্রতি দুই রকম আচরণ কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। যারা গ্র্যাচুইটির অর্থ এককালীন তুলে নিয়ে সেটা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করেছে, তাদের প্রতি সরকার অন্যায় আচরণ করছে। আমরা তার প্রতিবাদ জানাই এবং তার ন্যায্য প্রতিকার চাই। অর্থমন্ত্রীর এবারের বাজেট তার জীবনের সবচেয়ে খারাপ বাজেট বলে আমরা মনে করি। কারণ যারা আয়কর দিচ্ছে না (যেমন মফস্বলের বছরে ২০-৩০ লাখ টাকা বা তারও বেশি আয়কারী দোকানি বা ব্যবসায়ী) বা ঠিকভাবে দিচ্ছে না, তাদের থেকে আয়কর আদায়ে কঠোর না হয়ে সাধারণ ব্যাংক হিসাবধারীর ওপর অবৈধ শুল্ক চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। কোটি কোটি টাকা আয় করা ডাক্তার, চুটিয়ে প্রাইভেট পড়ায় এমন শিক্ষকদের থেকেও যথাযথভাবে আয়কর আদায় করার ব্যবস্থা রাখা হয়নি। অনেক ধনী ব্যবসায়ী অবিশ্বাস্য রকমের কম আয়কর দিচ্ছে। এ জন্য অসৎ আয়কর উকিল এবং আয়কর বিভাগের অসৎ কর্মচারীরা দায়ী। তাদের শাস্তির ব্যবস্থার কোনো উপায় বলা হয়নি। আয়কর আদায়ের ফাঁকি বন্ধ করতে পারলে সরকার দ্বিগুণ আয়কর বৈধভাবেই আদায় করতে পারবে। ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা তছরুপকারীদের কোনো শাস্তি দেয়া হচ্ছে না। উপরন্তু তাদের আবারও পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হচ্ছে জনগণের অর্থে। আর এ অর্থ তুলতে সাধারণ মানুষের ওপর নানা কর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। জ্বালানি তেলের দাম কমানো হচ্ছে না। এতে সাধারণ মানুষের খরচের বোঝা বাড়ছে। অর্থমন্ত্রীর এসবের দিকে কোনো নজর নেই।
ইঞ্জিনিয়ার সাইদ আহমেদ : অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকুরে
এবার আসি অবসরপ্রাপ্তদের বিষয়ে। অবসরপ্রাপ্তদের জন্য সরকারের পেনশনার্স সঞ্চয়পত্র থাকায় অনেকে সম্পূর্ণ গ্র্যাচুইটির অর্থ এককালীন তুলে নিয়েছেন। তখন হিসাব করা হয়েছিল পেনশনার্স সঞ্চয়পত্রের মুনাফার যে হার, তাতে যে অর্থ পাওয়া যাবে, তা সরকার থেকে মাসে মাসে যে পেনশন পাওয়া যায় তার প্রায় সমান হয়। সুতরাং গ্র্যাচুইটির টাকা এককালীন নেয়ায় কোনো ক্ষতি নেই। উপরন্তু হাতে যে টাকা থাকে, বিপদ-আপদে সেটা কাজে লাগানো সম্ভব হবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, প্রতি ৪-৫ বছর পর যে পে-স্কেল দেয়া হয়, সে সময় যারা মাসিক পেনশন নেয়, তাদের পেনশনের হার বৃদ্ধি করা হয়। অন্যদিকে পেনশনার্স সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ক্রমেই হ্রাস করা হচ্ছে। ফলে যারা এককালীন গ্র্যাচুইটির অর্থ তুলে নিয়েছেন, সরকারের পেনশনার্স সঞ্চয়পত্র ছিল বলে, তারা দিন দিন ফতুর হয়ে যাচ্ছে। সরকার কেন পেনশনার্স সঞ্চয়পত্র সৃষ্টি করে এ প্রতারণা করছে অবসরপ্রাপ্তদের সঙ্গে? বর্তমানে পে-স্কেল আর দেয়া হবে না; কিন্তু সরকারি চাকুরেদের এবং যারা মাসিক পেনশন নেন, তাদের প্রতিবছর বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ন্যূনতম ৫ ভাগ হারে দেয়া হবে। অন্যদিকে পেনশনার্স সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমানো হবে। কেন পেনশনার্স সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমানো হবে? তাহলে যারা পেনশনার্স সঞ্চয়পত্রে পেনশনের অর্থ বিনিয়োগ করেছিল, তারা কি সরকারের দ্বারা প্রতারিত হচ্ছে না? তাই আবেদন জানাই, সরকার যেন তাদেরকে মাসিক পেনশন গ্রহণকারীদের মতো মানুষ বলে গণ্য করে এবং তাদের প্রতি সমআচরণ করে এবং অতীতে অযৌক্তিকভাবে পেনশনার্স সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার যা কমানো হয়েছিল, সেটা পূরণ করে তার ওপর ৫ পারসেন্ট বার্ষিক ইনক্রিমেন্টের ব্যবস্থা করে। কারণ একই দেশের নাগরিকদের প্রতি দুই রকম আচরণ কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। যারা গ্র্যাচুইটির অর্থ এককালীন তুলে নিয়ে সেটা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করেছে, তাদের প্রতি সরকার অন্যায় আচরণ করছে। আমরা তার প্রতিবাদ জানাই এবং তার ন্যায্য প্রতিকার চাই। অর্থমন্ত্রীর এবারের বাজেট তার জীবনের সবচেয়ে খারাপ বাজেট বলে আমরা মনে করি। কারণ যারা আয়কর দিচ্ছে না (যেমন মফস্বলের বছরে ২০-৩০ লাখ টাকা বা তারও বেশি আয়কারী দোকানি বা ব্যবসায়ী) বা ঠিকভাবে দিচ্ছে না, তাদের থেকে আয়কর আদায়ে কঠোর না হয়ে সাধারণ ব্যাংক হিসাবধারীর ওপর অবৈধ শুল্ক চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। কোটি কোটি টাকা আয় করা ডাক্তার, চুটিয়ে প্রাইভেট পড়ায় এমন শিক্ষকদের থেকেও যথাযথভাবে আয়কর আদায় করার ব্যবস্থা রাখা হয়নি। অনেক ধনী ব্যবসায়ী অবিশ্বাস্য রকমের কম আয়কর দিচ্ছে। এ জন্য অসৎ আয়কর উকিল এবং আয়কর বিভাগের অসৎ কর্মচারীরা দায়ী। তাদের শাস্তির ব্যবস্থার কোনো উপায় বলা হয়নি। আয়কর আদায়ের ফাঁকি বন্ধ করতে পারলে সরকার দ্বিগুণ আয়কর বৈধভাবেই আদায় করতে পারবে। ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা তছরুপকারীদের কোনো শাস্তি দেয়া হচ্ছে না। উপরন্তু তাদের আবারও পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হচ্ছে জনগণের অর্থে। আর এ অর্থ তুলতে সাধারণ মানুষের ওপর নানা কর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। জ্বালানি তেলের দাম কমানো হচ্ছে না। এতে সাধারণ মানুষের খরচের বোঝা বাড়ছে। অর্থমন্ত্রীর এসবের দিকে কোনো নজর নেই।
ইঞ্জিনিয়ার সাইদ আহমেদ : অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকুরে
No comments