চার বছরে ১৪ হাজার কোটি টাকা ফিরিয়ে নিয়েছে দাতারা by হামিদ-উজ-জামান মামুন
চার বছরে বিভিন্ন প্রকল্প থেকে বিপুল অর্থ
প্রত্যাহার করে নিয়েছে দাতারা। এর পরিমাণ প্রায় ১৩ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা
(১৬৮ কোটি ২৬ লাখ ৭১ হাজার ডলার)।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক
বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক
বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আরস্তু খান বলেন, নানা কারণে দাতারা বিভিন্ন প্রকল্প
থেকে অর্থ প্রত্যাহার করে নেয়। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর
অদক্ষতা এখানে অন্যতম কারণ বলে মনে করছি। মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর দক্ষতা
বাড়ানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ থাকলেও কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয় না বলে অভিযোগ করেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট উন্নয়ন প্রকল্পে দাতারা দুর্নীতির অনেক সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করলেও এসব বিষয় আমলে নেয়া হয় না। এর ফলে দাতারা বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পে সময়মতো অর্থছাড় করে না। এর ধারাবাহিকতায় নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেলেও প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শেষ হয় না।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী ২০১১-১২ অর্থবছরে দাতারা ১০৮ কোটি ৭৫ লাখ ৬৬ হাজার ডলারের চুক্তি বাতিল করেছে। বাংলাদেশী মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৮ হাজার ৯১৮ কোটি টাকা। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ পর্যন্ত ৪৯৪ কোটি ৮ লাখ ২৮ হাজার ডলারের সহায়তা ফিরে গেছে।
১৯৮৪ সালে সর্বপ্রথম দাতারা ৩৯ কোটি ১৩ লাখ ৭৫ হাজার ডলার সহায়তা প্রত্যাহার করেছিল। এর পর থেকেই প্রতিবছর কম-বেশি সহায়তা ফিরে যাচ্ছে। ১৯৯৬-৯৭ অর্থবছরে ৭২ কোটি ২৭ লাখ ৭১ হাজার ডলার সহায়তা প্রত্যাহার হয়। এর পরে সবচেয়ে বেশি অঙ্কের ঋণচুক্তি বাতিল হয় গত অর্থবছরে।
ঋণ চুক্তি বাতিলের পাশাপাশি অর্থনীতির অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে বৈদেশিক সহায়তা ছাড়ে ধীরগতি। বিপুল প্রতিশ্রুতি থাকলেও উন্নয়ন প্রকল্পে দাতারা অর্থ ছাড় করছে দুর্নীতির অভিযোগসহ নানা কারণে। চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ছাড় না হওয়া বৈদেশিক সহায়তার পরিমাণ ১ হাজার ৫৩৩ কোটি ৯১ লাখ ২৩ হাজার মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশী মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা।
গত চার বছরে ৯৩৭ কোটি ডলারের সহায়তা অনাদায়ী রয়েছে। ১ হাজার ৮৬৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার প্রতিশ্রুতির বিপরীতে এ পর্যন্ত ছাড় হয়েছে ৯২৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা। প্রতিশ্রুতির অর্ধেকের বেশি টাকা ছাড় হয়নি গত চার বছরে।
বৈদেশিক অর্থের ছাড় না হওয়ায় দাতারা অব্যবস্থাপনা, অপচয় ও দুর্নীতিকেই দায়ী করে আসছেন। বিশ^ব্যাংকের ঢাকা অফিসের সদ্য বিদায়ী কান্ট্রি ডিরেক্টর এ্যালেন গোল্ডস্টেইন সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় দেখে বাংলাদেশের জনগণ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। এ দেশের জনগণ আর কোন দুর্নীতি দেখতে চায় না।
সহযোগিতা কৌশলপত্রের আওতায় ২০১১ সাল থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ৪০০ কোটি ডলার দেয়ার কথা থাকলেও বিশ্বব্যাংক এ পর্যন্ত ছাড় করেছে ১১৫ কোটি ডলার। এ অবস্থায় বাংলাদেশের জন্য প্রণীত সহায়তা কৌশলপত্র মূল্যায়ন করছে বিশ্বব্যাংক। প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতি ও অনিয়ম এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীর গতির কারণে প্রত্যাশিত হারে অর্থ ছাড় হয়নি বলে সংস্থার মূল্যায়নে বলা হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নেয়া চলমান ৩৪টি প্রকল্পের মধ্যে ছয়টির অবস্থা খুবই নাজুক। এ প্রকল্পগুলোকে সমস্যাগ্রস্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিশ্বব্যাংক। এসব প্রকল্পের মেয়াদকাল শেষের দিকে থাকলেও বাস্তবায়ন অগ্রগতি হতাশাজনক। এ অবস্থায় প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারপক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ায় সংস্থাটির পক্ষ থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে।
বাস্তবায়নে ধীরগতির কারণে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে হতাশা প্রকাশ করা হয়েছে এমন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ঢাকা পানি সরবরাহ এবং পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্প। বিশ্বব্যাংকের ১৪৯ মিলিয়ন ডলার সহায়তার এ প্রকল্পটি শুরু হয় ২০০৯ সালে। তিন বছর শেষ হতে চললেও অর্থছাড়ের হিসাবে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন হার মাত্র ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ।
এসব বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব আবুল কালাম আজাদ সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকসহ অন্য দাতাদের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে বলেছেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে কিছু সমস্যা রয়েছে। দুর্নীতির কারণে প্রতিটি বিভাগে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কিন্তু এজন্য অর্থ আটকে রাখা সমাধান নয়। এ সব সমস্যা মেনে নিয়েই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। দাতাদের অর্থছাড় প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন ইআরডি সচিব। তিনি বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারী বিনিয়োগের অর্থ প্রায় শতভাগ ব্যয় হয়। কিন্ত দাতাদের অর্থ ছাড়ে রয়েছে দীর্ঘ প্রক্রিয়া। কিন্তু বিলম্বের জন্য বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর ওপর দোষ চাপানো হয়।
এদিকে প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ থাকলেও কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয় না বলে অভিযোগ করেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট উন্নয়ন প্রকল্পে দাতারা দুর্নীতির অনেক সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করলেও এসব বিষয় আমলে নেয়া হয় না। এর ফলে দাতারা বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পে সময়মতো অর্থছাড় করে না। এর ধারাবাহিকতায় নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেলেও প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শেষ হয় না।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী ২০১১-১২ অর্থবছরে দাতারা ১০৮ কোটি ৭৫ লাখ ৬৬ হাজার ডলারের চুক্তি বাতিল করেছে। বাংলাদেশী মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৮ হাজার ৯১৮ কোটি টাকা। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ পর্যন্ত ৪৯৪ কোটি ৮ লাখ ২৮ হাজার ডলারের সহায়তা ফিরে গেছে।
১৯৮৪ সালে সর্বপ্রথম দাতারা ৩৯ কোটি ১৩ লাখ ৭৫ হাজার ডলার সহায়তা প্রত্যাহার করেছিল। এর পর থেকেই প্রতিবছর কম-বেশি সহায়তা ফিরে যাচ্ছে। ১৯৯৬-৯৭ অর্থবছরে ৭২ কোটি ২৭ লাখ ৭১ হাজার ডলার সহায়তা প্রত্যাহার হয়। এর পরে সবচেয়ে বেশি অঙ্কের ঋণচুক্তি বাতিল হয় গত অর্থবছরে।
ঋণ চুক্তি বাতিলের পাশাপাশি অর্থনীতির অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে বৈদেশিক সহায়তা ছাড়ে ধীরগতি। বিপুল প্রতিশ্রুতি থাকলেও উন্নয়ন প্রকল্পে দাতারা অর্থ ছাড় করছে দুর্নীতির অভিযোগসহ নানা কারণে। চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ছাড় না হওয়া বৈদেশিক সহায়তার পরিমাণ ১ হাজার ৫৩৩ কোটি ৯১ লাখ ২৩ হাজার মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশী মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা।
গত চার বছরে ৯৩৭ কোটি ডলারের সহায়তা অনাদায়ী রয়েছে। ১ হাজার ৮৬৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার প্রতিশ্রুতির বিপরীতে এ পর্যন্ত ছাড় হয়েছে ৯২৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা। প্রতিশ্রুতির অর্ধেকের বেশি টাকা ছাড় হয়নি গত চার বছরে।
বৈদেশিক অর্থের ছাড় না হওয়ায় দাতারা অব্যবস্থাপনা, অপচয় ও দুর্নীতিকেই দায়ী করে আসছেন। বিশ^ব্যাংকের ঢাকা অফিসের সদ্য বিদায়ী কান্ট্রি ডিরেক্টর এ্যালেন গোল্ডস্টেইন সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় দেখে বাংলাদেশের জনগণ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। এ দেশের জনগণ আর কোন দুর্নীতি দেখতে চায় না।
সহযোগিতা কৌশলপত্রের আওতায় ২০১১ সাল থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ৪০০ কোটি ডলার দেয়ার কথা থাকলেও বিশ্বব্যাংক এ পর্যন্ত ছাড় করেছে ১১৫ কোটি ডলার। এ অবস্থায় বাংলাদেশের জন্য প্রণীত সহায়তা কৌশলপত্র মূল্যায়ন করছে বিশ্বব্যাংক। প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতি ও অনিয়ম এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীর গতির কারণে প্রত্যাশিত হারে অর্থ ছাড় হয়নি বলে সংস্থার মূল্যায়নে বলা হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নেয়া চলমান ৩৪টি প্রকল্পের মধ্যে ছয়টির অবস্থা খুবই নাজুক। এ প্রকল্পগুলোকে সমস্যাগ্রস্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিশ্বব্যাংক। এসব প্রকল্পের মেয়াদকাল শেষের দিকে থাকলেও বাস্তবায়ন অগ্রগতি হতাশাজনক। এ অবস্থায় প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারপক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ায় সংস্থাটির পক্ষ থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে।
বাস্তবায়নে ধীরগতির কারণে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে হতাশা প্রকাশ করা হয়েছে এমন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ঢাকা পানি সরবরাহ এবং পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্প। বিশ্বব্যাংকের ১৪৯ মিলিয়ন ডলার সহায়তার এ প্রকল্পটি শুরু হয় ২০০৯ সালে। তিন বছর শেষ হতে চললেও অর্থছাড়ের হিসাবে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন হার মাত্র ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ।
এসব বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব আবুল কালাম আজাদ সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকসহ অন্য দাতাদের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে বলেছেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে কিছু সমস্যা রয়েছে। দুর্নীতির কারণে প্রতিটি বিভাগে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কিন্তু এজন্য অর্থ আটকে রাখা সমাধান নয়। এ সব সমস্যা মেনে নিয়েই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। দাতাদের অর্থছাড় প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন ইআরডি সচিব। তিনি বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারী বিনিয়োগের অর্থ প্রায় শতভাগ ব্যয় হয়। কিন্ত দাতাদের অর্থ ছাড়ে রয়েছে দীর্ঘ প্রক্রিয়া। কিন্তু বিলম্বের জন্য বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর ওপর দোষ চাপানো হয়।
No comments