শীতের জ্যাকেট by তৌফিক অপু
শীত যেন জেকে বসেছে। তাই বলে থেমে নেই মানুষের জীবন গতি, বরং শীতকাল এলেই সে গতি যেন আরও বেড়ে যায়। সারা বিশ্বে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের যে গৌরবান্বিত পরিচয় রয়েছে, ঠিক তেমনি রয়েছে উৎসবপ্রিয় জাতি হিসেবে। দিনক্ষণ মেপে কোন উৎসব নয়।
একেবারেই প্রাণের আবেগ নিয়ে বাঙালী জাতি পালন করে তাদের উৎসব। আবেগময়তার কারণেই উৎসবে যোগ হয় ভিন্নমাত্রা। উৎসবগুলোও যেন প্রকৃতি কেন্দ্রিক। সারা বছর বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান পালিত হলেও শীতকালে এর মাত্রা বেড়ে যায়। অর্থাৎ নানা উৎসব আয়োজন, পালা-পার্বন ও মৌসুমকে ঘিরেই যেন আবর্তিত হয়। আর উৎসব-পার্বনে যোগ দিয়ে যে বিষয়টি সবার আগে মাথায় আসে তা হলো পোশাক, ঋতুর পালাবদলে চলছে শীতকাল। দিন দিন যেন বেড়েই চলছে শীতের তীব্রতা। যে কারণে উৎসবের পোশাকের ব্যাপারটির চেয়েও প্রাধান্য পায় শীতের পোশাক। আর এ শীতের পোশাকেই রয়েছে ভেরিয়েশন। বাহারি পোশাক, বৈচিত্র্যময় পোশাক, নজরকাড়া পোশাক যাই বলি না কেন, পোশাকের বাজারে ফ্যাশনেবল পোশাকের যেন অন্ত নেই। যে কারণে যে কোন সময় মনের মাধুরী মিশিয়ে নিজের পছন্দসই পোশাক শরীরের সঙ্গে মানিয়ে নেয়া সম্ভব। এতেই বোঝা যায় দেশীয় ফ্যাশন ট্রেন্ড কতটা এগিয়েছে। বিশ্বের ফ্যাশন পালাবদলের আগে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে দেশীয় ফ্যাশন। আর সে ছোঁয়া লেগেছে শীতের পোশাকে। বর্তমান সময়ে শীতের নানা ভেরিয়েশনের পোশাক চোখে পড়বে ফ্যাশন আউটলেটগুলোতে, তেমনি ফ্যাশনেবল শীতের পোশাক হচ্ছে জ্যাকেট। যা তরুণ প্রজন্মের কাছে খুবই প্রিয়। শীত এলেই যেন বেড়ে যায় জ্যাকেটের কদর। আর এ চাহিদাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে আকর্ষণীয় ডিজাইন ও রঙ বিভিন্ন রঙ এবং ডিজাইনের জ্যাকেট এখন শোভা পাচ্ছে নগরীর শপিং মলগুলোতে। তরুণ-তরুণী উভয়ের জন্যই ফ্যাশনেবল জ্যাকেটের পসরা সাজিয়েছে দোকানিরা এবং ডিজাইন, প্যাটার্ন ও শেপের দিক থেকেও স্বকীয় পার্থক্য বিরাজমান। একেকটি একেকটির চেয়ে আলাদা। বর্তমান সময়ে লেদার, উল, জিন্স, কড এবং কটন জ্যাকেটের চাহিদা বেশ। ডিজাইন কাপড় এবং কালারভেদে দামের পার্থক্য রয়েছে। লেদারের জ্যাকেট অন্যান্য জ্যাকেটের তুলনায় সঙ্গত কারণেই একটু বেশি দামী। ছেলেমেয়ে উভয়ের জন্যই প্রস্তুত করা হয়েছে লেদার জ্যাকেট। রকিং প্যাটার্নকে প্রাধান্য দিয়ে প্রস্তুতি করা হয়েছে লেদার জ্যাকেট। অনেকেই একে হিপ-হপ জ্যাকেট বলে চিহ্নিত করে থাকে। তবে লেদার জ্যাকেটের তুলনায় কড কিংবা কটন জ্যাকেট একটু সিম্বল। সিম্বল কথাটির মানে হচ্ছে একটু অফিসিয়াল গেট-আপ জ্যাকেট। অর্থাৎ হিপ-হপ প্যাটার্নের বাইরের ডিজাইনে প্রস্তুত এ জ্যাকেটগুলো। অফিসগামী ব্যক্তিদের প্রথম পছন্দ এ ধরনের জ্যাকেটগুলো। তবে লেদার সিনথেটিক কিংবা লেদার সিথেটিক মিক্সড বিন্দু জ্যাকেট রয়েছে যা সম্পূর্ণই অফিসিয়াল গেটআপে প্রস্তুত। খুবই আকর্ষণীয় দেখতে এবং চাহিদাও বেশ। জিন্স জ্যাকেটের প্রচলন এদেশে বেশ পুরনো। পুরনো দিনের হলিউড তারকাদের পরনের জিন্স জ্যাকেটগুলো এদেশের ফ্যাশন ট্রেন্ডে যোগ করেছে বাড়তি মাত্রা। সেই থেকে আজ অবধি জিন্স জ্যাকেটের চাহিদা প্রচুর। তবে ভেরিয়েশন এসেছে ডিজাইন এবং প্যাটার্নে। জেন্টস-লেডিস দুটো ক্যাটাগরিতেই প্রস্তুত হচ্ছে জিন্স জ্যাকেট। মেয়েদের জ্যাকেটের ক্ষেত্রে উলের প্রাধান্য চোখে পড়ার মতো। দুতি কিংবা দ্যুতিচাড়া জ্যাকেট যেটাই হোক না কেন সুন্দর মানিয়ে যায় উলের জ্যাকেট। তাছাড়া ওম হয় বেশ। এ বছরের মতো উলের জ্যাকেটের ভেরিয়েশন অন্য কোন বার ছিল না। পশমি বা ফেন্সি জ্যাকেট দ্যুতি ছড়াচ্ছে এবার। বিশেষ করে দ্যুতি জ্যাকেটের ক্ষেত্রে। পশমি সুতার বাইরের আবরণ দেখতে বেশ আকর্ষণীয়। লেদার কিংবা সিনথেটিক জ্যাকেটের হুডি এবং বাটনের ওপর পশমি সুতাগুলো বের হয়ে থাকে। যা খুবই সমার্থ এবং দেখতে ফ্যাশনেবল। শীত এলেই বেড়ে যায় জ্যাকেটের কদর। আর এ কদর বাড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে সহনীয় দাম। পশমি জ্যাকেটের দাম পড়বে ৫০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা। উলের জ্যাকেটের দাম ৪০০ থেকে ৯০০ টাকা। জিন্সের জ্যাকেটের মূল্য পড়বে ৫০০ টাকা থেকে ২২০০ টাকা। ডেনিসসহ আরও কিছু ব্যান্ডের জিন্সের জ্যাকেটের দাম অবশ্য একটু বেশি। ১৫০০ থেকে ৩৫০০ টাকা পড়বে জিন্সের ব্রান্ডের জ্যাকেটগুলো। সিনথেটিক লেদারের জ্যাকেট মিলবে ৮০০ থেকে ২৪০০ টাকা। তবে লেদার জ্যাকেট অন্যান্য জ্যাকেটের তুলনায় মূল্যমানে একটু বেশি। ২৫০০ টাকা থেকে ৫,৫০০ টাকার মধ্যে মিলবে লেদারের জ্যাকেট। তবে হাই রেঞ্জের কিছু লেদার জ্যাকেট রয়েছে যা পাওয়া যাবে ১০,০০০ টাকা থেকে ২৫,০০০ টাকার মধ্যে। নিজের রুচি চাহিদা ও সাধ্যের মধ্যে সংগ্রহ করে নিতে হবে পছন্দসই জ্যাকেট। দেশের আধুনিক শপিংমল থেকে শুরু করে বেশিরভাগ জ্যাকেটই দেখা মিলবে শীতের ফ্যাশনেবল জ্যাকেটের প্রয়োজন শুধু নিজের ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তোলা।সামির-তুষার ফটোগ্রাফি
মডেল : এডলফ খান, মাসুম, বাবলি ও রিফাত
মেকআপ : পারসোনা
পোশাক : ডোরস,
কৃতজ্ঞতা : ব্রাইডাল জোন
No comments