লেবাননে নতুন সরকার গঠনে সর্বদলীয় বৈঠকের উদ্যোগ

নতুন সরকার গঠনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিচেল সুলেমান সর্বদলীয় বৈঠকের পরিকল্পনা করছেন। বৈরুতে ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি ওঠায় তিনি এই পরিকল্পনা করেন। যুক্তরাষ্ট্র লেবাননের নতুন সরকার গঠনের পদক্ষেপকে সমর্থন দেবে বলে জানিয়েছে।


প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গতকাল বুধবার জানান, নতুন সরকারের রূপরেখা নির্ধারণে প্রেসিডেন্ট সুলেমান জাতীয় সংলাপের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিবিদদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন।
গত শুক্রবার বৈরুতে গাড়িবোমা হামলায় লেবাননের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীর গোয়েন্দা শাখার প্রধান উইসাম আল হাসান নিহত হন। এর পর দেশে রাজনৈতিক সংকট শুরু হয়।
উইসাম লেবাননের বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তদন্ত করছিলেন। ধারণা করা হয়, প্রতিবেশী সিরিয়ার যোগসাজশে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, লেবাননে ক্ষমতার শূন্যতা বড় ধরনের অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি করতে পারে। তিনি বলেন, ‘সিরিয়া থেকে আমদানি করা অস্থিতিশীলতা লেবাননের নিরাপত্তাকে যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি হুমকিতে ফেলেছে।’
নুল্যান্ড বলেন, ‘লেবাননের বৈধ রাজনৈতিক কর্তৃত্বে শূন্যতার সৃষ্টি হোক, আমরা সেটা চাই না। তাই বর্তমানে নতুন সরকার গঠনের জন্য যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সেটিকে আমরা সমর্থন করি। তবে এ ক্ষেত্রে লেবাননের জনগণের স্বার্থ যেন অক্ষুণ্ন থাকে, সেটা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।’
এ ছাড়া নতুন সরকারের সম্ভাব্য রূপরেখা নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মরা কোনলির লেবাননের রাজনীতিবিদদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মিকাতির নেতৃত্বাধীন সরকারে সিরিয়াপন্থী শিয়া ইসলামিস্ট মুভমেন্ট হিজবুল্লাহ এবং এর মিত্ররাই প্রভাবশালী। মিকাতি বলেন, সংকট নিয়ে আলোচনার আগ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট তাঁকে পদত্যাগ না করার পরামর্শ দিয়েছেন এবং ‘জাতীয় স্বার্থের’ কথা বিবেচনা করে তিনি প্রেসিডেন্টের প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন।
বৈরুতে বোমা হামলার ঘটনার পর লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতা সাদ হারিরিসহ অনেক রাজনীতিবিদ প্রধানমন্ত্রী মিকাতির পদত্যাগ দাবি করেছেন।
এরই মধ্যে মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান ক্যাথারিন অ্যাস্টন বৈরুতে প্রেসিডেন্ট সুলেমান ও প্রধানমন্ত্রী মিকাতির সঙ্গে বৈঠক করেন। অ্যাস্টনও বলেন, লেবাননের ‘জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে স্থিতিশীলতা রক্ষার’ পদক্ষেপকে আমরা স্বাগত জানাই। বিবিসি ও এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.