কোরবানি কী ও কেন? by মুফতি এনায়েতুল্লাহ
শরিয়তের পরিভাষায় আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি লাভের জন্য নিজের প্রিয় বস্তু ত্যাগ করার নামই কোরবানি। তবে আমাদের সমাজে ঈদুল আজহার দিন আল্লাহর উদ্দেশে হালাল পশু জবাই করাকে সাধারণভাবে কোরবানি বলে অভিহিত করা হয়।
কোরবানি একটি ইবাদতবিশেষ : ইসলামে ইবাদত তিন ধরনের। একটি শারীরিক, অন্যটি আর্থিক আর তৃতীয়টি আর্থিক ও শারীরিক। যেমন_ নামাজ ও রোজা হলো শারীরিক ইবাদত। জাকাত ও কোরবানি হলো আর্থিক ইবাদত। আর তৃতীয় ইবাদত হলো আর্থিক ও শারীরিক_ যেমন হজ। অর্থনৈতিকভাবে সামর্থ্যবানরা শারীরিক ইবাদতের পাশাপাশি আর্থিক ইবাদতেও সমান যত্নবান হবেন এটাই নিয়ম। এ লক্ষ্যেই আল্লাহতায়ালা কোরবানির বিধান প্রদান করেছেন।
দরকার পরিশুদ্ধ নিয়ত : কোরবানি করার ক্ষেত্রে নিয়তের গুরুত্ব অপরিসীম। নিয়ত শুদ্ধ না হলে কোরবানি হবে না। যে কোনো ইবাদতই নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। কোরবানির সূচনাই হয়েছে নিয়তকে কেন্দ্র করে। নিয়ত শুদ্ধ হলে কোরবানি কবুল হয়, নিয়ত শুদ্ধ না হলে আল্লাহ কারও কোরবানি কবুল করেন না। মানব সভ্যতার শুরুতে যখন কোরবানির বিধান চালু হয় তখন থেকেই এ ধারা চলে আসছে। কোরবানির সূচনা হয় হজরত আদমের (আ.) দুই ছেলে হাবিল ও কাবিলের কোরবানির মাধ্যমে। তাদের একজনের কোরবানি আল্লাহ কবুল করেন, অন্যেরটা করেননি। তার কোরবানি কবুল না করার কারণ ছিল শুদ্ধ নিয়তের অভাব। এ প্রসঙ্গে সূরা মায়েদার ২৭ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে, 'আর তাদেরকে আদমের দুই পুত্রের ঘটনা ঠিকমতো শুনিয়ে দাও। যখন তারা দু'জনই কোরবানি করল, তখন তাদের একজনের কোরবানি কবুল হলো, আর অন্যজনের কোরবানি কবুল হলো না।'
কোরবানি নিয়ে প্রতিযোগিতা নয় : কোরবানির ক্ষেত্রে পশুর গোশত বা রক্ত কোনো কিছুই আল্লাহর দরবারে পেঁৗছে না, আল্লাহর দরবারে পেঁৗছে শুধু বান্দার তাকওয়া। কোরবানিদাতাই সে গোশত ভোগ করে। তবে গোশত খাওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে কোরবানি করলে তা কবুল হবে না। অনেক সময় সমাজে নিজের প্রভাব-প্রতিপত্তি ও সামাজিক মর্যাদা প্রদর্শনের জন্য কে কত দামি পশু কোরবানি করল তার প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যায়, এটা ঠিক নয়। সামাজিক সম্মান বজায় রাখার জন্য কোরবানি করলে তা আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না। তাই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কোরবানির ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ নিয়ত করা অত্যাবশ্যক। নিয়ত পরিশুদ্ধ হলে আল্লাহ বান্দার কোরবানি অবশ্যই কবুল করবেন।
কোরবানির সময় : কোরবানির দিন সূর্যোদয়ের পর ঈদের নামাজ তাড়াতাড়ি শেষ করে কোরবানি করতে হবে। এটাই কোরবানির উৎকৃষ্ট সময়। তবে ঈদের দিন, ঈদের পরের দিন এবং এর পরের দিন কোরবানি করা যায়। কিন্তু ঈদের নামাজ পড়ার আগে কোরবানি করা যায় না।
কোরবানি ও পরিবেশ সচেতনতা : কোরবানি যেহেতু আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য হয়ে থাকে, তাই এ কাজটিও অত্যন্ত নিখুঁতভাবে হওয়া দরকার। বিশেষ করে কোরবানির পর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দেওয়া আবশ্যক। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় যদি কোরবানির পশুর বর্জ্য যথাযথভাবে পরিষ্কার করা না হয় তাহলে তা পরিবেশ দূষিত করে। এ জন্য কোরবানির পশুর রক্ত, হাড়, নাড়িভুঁড়ি, মল ইত্যাদি যথাযথভাবে পরিষ্কার করা দরকার এবং তা যেন পরিবেশকে অস্বাস্থ্যকর করে না তোলে সেদিকে সবার কঠোর দৃষ্টি রাখা উচিত। কোরবানি দেওয়ার আগে তাই স্থান নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত বসতবাড়ি থেকে কোরবানির জায়গাটা দূরে হলে ভালো হয়। আর কোরবানির পশুর যাবতীয় বর্জ্য গর্ত করে মাটিতে পুঁতে ফেললে তা আর পরিবেশ দূষণ করতে পারবে না। মনে রাখতে হবে, কোরবানি দেওয়া হচ্ছে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। সে কাজ করতে গিয়ে আমাদের তৎপরতার জন্য পরিবেশ ও মানুষের যেন কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকেও নজর দেওয়া একজন মুমিনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
কোরবানি ও ঈদ : ঈদ মানে আনন্দ। আর কোরবানি মানে ত্যাগ স্বীকার করা। কোরবানির ঈদ মানে অন্যের জন্য ত্যাগ স্বীকারের মধ্য দিয়ে নিজের মনে আনন্দ ও প্রশান্তি অনুভব করা। নিজের সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে আনন্দ অনুভব করা। আনন্দ ও বিনোদন মানুষের এক সহজাত প্রবৃত্তি। এ প্রবৃত্তি আল্লাহই মানুষকে দিয়েছেন, মানুষ যেন এর মধ্য দিয়ে প্রফুল্ল জীবন লাভ করতে পারে এবং নিজের অবসাদ ও অলসতা দূর করে আল্লাহতায়ালার ইবাদত-বন্দেগিতে আরও বেশি করে আত্মনিবেদিত হতে পারে। মুসলমানরা যেন আনন্দ-বিনোদন বিমুখ না হয় যে জন্যই আল্লাহ বছরে দুই ঈদ মুসলিম জাতিকে উপহার দিয়ে তাদের বিনোদনমুখী করার ব্যবস্থা করেছেন। তবে এ বিনোদন যেন ইসলামের গণ্ডির মধ্যেই হয় সেদিকে নজর দেওয়া আবশ্যক।
দরকার পরিশুদ্ধ নিয়ত : কোরবানি করার ক্ষেত্রে নিয়তের গুরুত্ব অপরিসীম। নিয়ত শুদ্ধ না হলে কোরবানি হবে না। যে কোনো ইবাদতই নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। কোরবানির সূচনাই হয়েছে নিয়তকে কেন্দ্র করে। নিয়ত শুদ্ধ হলে কোরবানি কবুল হয়, নিয়ত শুদ্ধ না হলে আল্লাহ কারও কোরবানি কবুল করেন না। মানব সভ্যতার শুরুতে যখন কোরবানির বিধান চালু হয় তখন থেকেই এ ধারা চলে আসছে। কোরবানির সূচনা হয় হজরত আদমের (আ.) দুই ছেলে হাবিল ও কাবিলের কোরবানির মাধ্যমে। তাদের একজনের কোরবানি আল্লাহ কবুল করেন, অন্যেরটা করেননি। তার কোরবানি কবুল না করার কারণ ছিল শুদ্ধ নিয়তের অভাব। এ প্রসঙ্গে সূরা মায়েদার ২৭ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে, 'আর তাদেরকে আদমের দুই পুত্রের ঘটনা ঠিকমতো শুনিয়ে দাও। যখন তারা দু'জনই কোরবানি করল, তখন তাদের একজনের কোরবানি কবুল হলো, আর অন্যজনের কোরবানি কবুল হলো না।'
কোরবানি নিয়ে প্রতিযোগিতা নয় : কোরবানির ক্ষেত্রে পশুর গোশত বা রক্ত কোনো কিছুই আল্লাহর দরবারে পেঁৗছে না, আল্লাহর দরবারে পেঁৗছে শুধু বান্দার তাকওয়া। কোরবানিদাতাই সে গোশত ভোগ করে। তবে গোশত খাওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে কোরবানি করলে তা কবুল হবে না। অনেক সময় সমাজে নিজের প্রভাব-প্রতিপত্তি ও সামাজিক মর্যাদা প্রদর্শনের জন্য কে কত দামি পশু কোরবানি করল তার প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যায়, এটা ঠিক নয়। সামাজিক সম্মান বজায় রাখার জন্য কোরবানি করলে তা আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না। তাই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কোরবানির ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ নিয়ত করা অত্যাবশ্যক। নিয়ত পরিশুদ্ধ হলে আল্লাহ বান্দার কোরবানি অবশ্যই কবুল করবেন।
কোরবানির সময় : কোরবানির দিন সূর্যোদয়ের পর ঈদের নামাজ তাড়াতাড়ি শেষ করে কোরবানি করতে হবে। এটাই কোরবানির উৎকৃষ্ট সময়। তবে ঈদের দিন, ঈদের পরের দিন এবং এর পরের দিন কোরবানি করা যায়। কিন্তু ঈদের নামাজ পড়ার আগে কোরবানি করা যায় না।
কোরবানি ও পরিবেশ সচেতনতা : কোরবানি যেহেতু আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য হয়ে থাকে, তাই এ কাজটিও অত্যন্ত নিখুঁতভাবে হওয়া দরকার। বিশেষ করে কোরবানির পর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দেওয়া আবশ্যক। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় যদি কোরবানির পশুর বর্জ্য যথাযথভাবে পরিষ্কার করা না হয় তাহলে তা পরিবেশ দূষিত করে। এ জন্য কোরবানির পশুর রক্ত, হাড়, নাড়িভুঁড়ি, মল ইত্যাদি যথাযথভাবে পরিষ্কার করা দরকার এবং তা যেন পরিবেশকে অস্বাস্থ্যকর করে না তোলে সেদিকে সবার কঠোর দৃষ্টি রাখা উচিত। কোরবানি দেওয়ার আগে তাই স্থান নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত বসতবাড়ি থেকে কোরবানির জায়গাটা দূরে হলে ভালো হয়। আর কোরবানির পশুর যাবতীয় বর্জ্য গর্ত করে মাটিতে পুঁতে ফেললে তা আর পরিবেশ দূষণ করতে পারবে না। মনে রাখতে হবে, কোরবানি দেওয়া হচ্ছে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। সে কাজ করতে গিয়ে আমাদের তৎপরতার জন্য পরিবেশ ও মানুষের যেন কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকেও নজর দেওয়া একজন মুমিনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
কোরবানি ও ঈদ : ঈদ মানে আনন্দ। আর কোরবানি মানে ত্যাগ স্বীকার করা। কোরবানির ঈদ মানে অন্যের জন্য ত্যাগ স্বীকারের মধ্য দিয়ে নিজের মনে আনন্দ ও প্রশান্তি অনুভব করা। নিজের সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে আনন্দ অনুভব করা। আনন্দ ও বিনোদন মানুষের এক সহজাত প্রবৃত্তি। এ প্রবৃত্তি আল্লাহই মানুষকে দিয়েছেন, মানুষ যেন এর মধ্য দিয়ে প্রফুল্ল জীবন লাভ করতে পারে এবং নিজের অবসাদ ও অলসতা দূর করে আল্লাহতায়ালার ইবাদত-বন্দেগিতে আরও বেশি করে আত্মনিবেদিত হতে পারে। মুসলমানরা যেন আনন্দ-বিনোদন বিমুখ না হয় যে জন্যই আল্লাহ বছরে দুই ঈদ মুসলিম জাতিকে উপহার দিয়ে তাদের বিনোদনমুখী করার ব্যবস্থা করেছেন। তবে এ বিনোদন যেন ইসলামের গণ্ডির মধ্যেই হয় সেদিকে নজর দেওয়া আবশ্যক।
No comments