দাম কম, গরুর হাটে খামারিদের হা-হুতাশ

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার শহীদনগর গ্রামের লোকমান হোসেন বছর খানেক আগে দুটি এঁড়ে বাছুর কিনেছিলেন ৫২ হাজার টাকায়। এক বছর ধরে লালন-পালন করেছেন। ভেবেছিলেন, কোরবানির হাটে বিক্রি করে ভালো আয় করবেন।


কিন্তু গো-খাদ্যের অগ্নিমূল্যের কারণে ও কোরবানির হাটে গরুর দাম কম হওয়ায় উল্টো লোকসান হয়েছে তাঁর। গত মঙ্গলবার বেড়ার করমজা হাটে তিনি ষাঁড় দুটি এক লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। লোকমান হোসেন জানান, গরুর খাদ্যের দাম আকাশছোঁয়া। খাদ্য বাবদই ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এতে সব মিলিয়ে গরু দুটির পেছনে খরচ পড়েছে এক লাখ ৩২ হাজার টাকা। তাঁর কমপক্ষে ১২ হাজার টাকা লোকসান হলো।
পাবনার বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার বেশির ভাগ গরু পালনকারীর অবস্থা লোকমানের মতো। ছয় মাস থেকে এক বছর বা এরও বেশি সময় ধরে যেসব গৃহস্থ ও খামারি গরু মোটাতাজা করেছেন, তাঁদের অনেকেরই এবার মাথায় হাত। অগ্নিমূল্যে গো-খাদ্য কেনায় তাঁদের গরু পালনের খরচ ব্যাপক বেড়ে গেছে। কিন্তু সে তুলনায় কোরবানির হাটে গরুর দাম কম হওয়ায় তাঁদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।
গতকাল বুধবার বেড়ার নাকালিয়া গরুর হাটে কথা হয় বেড়ার চাকলা গ্রামের আবদুর রহিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘১৫ দিন আগে ব্যাপারি বাড়িত আইস্যা আমার এই গরুটার দাম ৮০ হাজার কইছিল। অথচ আইজ এর দাম ৭০ হাজারের বেশি কেউ কয় না। এক বছর ধইর্যা এই গরু পাইল্যা এহন ১০ হাজার টাকা লস দেওয়া লাগত্যাছে।’
বেড়ার গরু ব্যবসায়ী আবু সাঈদ জানান, এ এলাকা থেকে প্রচুর গরু ঢাকা-চট্টগ্রামে চলে গেছে। এখন আর কোনো গরু বাইরে নেওয়ার উপায় নেই। হাটের গরুগুলো এখন স্থানীয় ব্যক্তিদেরই কিনতে হবে। এ জন্য বেড়া-সাঁথিয়ার হাটে গরুর দাম এখন কমছে।
সাঁথিয়া উপজেলা পশুসম্পদ কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, এবার ঠিক কত গরুকে মোটাতাজা করা হয়েছে, সে পরিসংখ্যান তাঁদের হাতে নেই। তবে অন্যবারের চেয়ে এবার বেশি গরু মোটাতাজা করা হয়েছে, এটা বলা যায়। গো-খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় খামারিরা এবার তেমন লাভ করতে পারছেন না বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.