পাকিস্তানের ‘গোপন চিঠি’-তদন্ত কমিশন গঠনের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

পাকিস্তানের ঊর্ধ্বতন সেনা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সরিয়ে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চেয়ে প্রেসিডেন্ট জারদারির ‘গোপন চিঠি’র বিষয়টি তদন্ত করবেন সুপ্রিম কোর্ট। এ লক্ষ্যে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট গতকাল শুক্রবার তদন্ত কমিশন গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। ওই কমিশনকে চার সপ্তাহের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। ‘গোপন চিঠি’র বিষয়টি তদন্তে পাকিস্তানের প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লিগের (পিএমএল-এন) নেতা নওয়াজ শরিফসহ কয়েকজন সুপ্রিম


কোর্টে আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি ইফতিখার মুহাম্মদ চৌধুরীসহ নয় বিচারপতিকে নিয়ে একটি বেঞ্চ গঠিত হয়। ওই বেঞ্চ শুনানি শেষে গতকাল ‘গোপন চিঠি’র তদন্ত ও কমিশন গঠনের সিদ্ধান্তের কথা জানান।
চারজন বিচারপতিকে নিয়ে ওই তদন্ত কমিশন গঠিত হবে। এতে হাইকোর্টের তিনজন প্রধান বিচারপতি ও অন্য একজন বিচারপতি থাকবেন। তাঁরা চার সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন।
গতকাল নওয়াজ শরিফের পক্ষে শুনানিতে অংশ নিয়ে আইনজীবী রাশেদ রিজভি বলেন, কোনো একক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাঁরা আদালতে যাননি। তিনি প্রধান বিচারপতির বরাত দিয়ে বলেন, মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন হলে রাষ্ট্র সেখানে হস্তক্ষেপ করতে পারে।
নয় সদস্যের বেঞ্চের বিচারপতি জাওয়াদ এস খাজা বলেন, ‘গোপন চিঠির’ বিষয়টি তদন্ত করা হলে ক্ষতিকর কোনো কিছু হবে না। বরং যদি চিঠির বিষয়টি সত্যি হয় তাহলে এর পেছনে কারা ছিলেন, তা বেরিয়ে আসবে।
সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির ওপর চাপ আরও বাড়ল। এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল আনোয়ারুল হক আদালতের শুনানিতে অংশ নিয়ে বলেন, এই তদন্ত সুপ্রিম কোর্টে হোক, এটা সরকার চায় না। সরকার চায়, পার্লামেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি এই তদন্ত করুক।
‘গোপন চিঠি’ কেলেঙ্কারির জের ধরে পাকিস্তানের বেসামরিক সরকার ও সামরিক বাহিনী মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। সেনাবাহিনী দেশটির ক্ষমতা নিচ্ছে বলেও গুজব রটে। সব মিলিয়ে প্রেসিডেন্ট জারদারি বেশ চাপের মধ্যে আছেন। গতকাল সুপ্রিম কোর্টের এসব সিদ্ধান্ত তাঁর ওপর আরও চাপ বাড়াল।
গত অক্টোবরে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস-এ এক নিবন্ধে ‘গোপন চিঠি’র কথা ফাঁস করেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যবসায়ী মনসুর ইজাজ। এই চিঠির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত হুসেইন হাক্কানির জড়িত থাকার অভিযোগও তোলেন তিনি। এরই মধ্যে হাক্কানি তাঁর চাকরি হারিয়েছেন। তবে প্রেসিডেন্ট জারদারি ও পদচ্যুত রাষ্ট্রদূত হাক্কানি এমন কোনো ‘গোপন চিঠির’ সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। রয়টার্স ও জিও টিভি।

No comments

Powered by Blogger.