পরিবর্তনের আশায় 'না' উত্তর কোরিয়ার
কিম জং ইলের মৃত্যুতে দেশটির নীতির কোনো পরিবর্তন হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। আন্তর্জাতিক মহলকে এ বিষয়ে কিছু আশা না করতেই বলেছেন দেশটির নেতৃত্ব। এ ছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান সরকারের সঙ্গেও কোনো সম্পৃক্ততা রাখবে না তারা। খবর এএফপি ও বিবিসি অনলাইনের। প্রভাবশালী জাতীয় প্রতিরক্ষা কমিশনের (এনডিসি) বরাত দিয়ে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, কিম জং ইলের মৃত্যুর পর নতুন নেতৃত্ব ক্ষমতা
নিলেও দেশটির দীর্ঘদিনের নীতিতে পরিবর্তন আসবে না। গতকাল শুক্রবার এনডিসি এ কথা জানিয়েছে। এনডিসি বলেছে, আমরা দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের নির্বোধ রাজনীতিকদের আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আমাদের কাছ থেকে কোনো ধরনের পরিবর্তনের প্রত্যাশা করা তাদের উচিত হবে না।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ও টেলিভিশনে দেওয়া এনডিসির এক বিবৃতিতে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টকে উদ্দেশ করে বলা হয়, উত্তর কোরিয়া বিশ্বাসঘাতক লি মিউন-বাক ও তার সাঙ্গোপাঙ্গর সঙ্গে কোনো ব্যাপারে সম্পৃক্ত হতে চিরদিনের মতো অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী সংস্থা এনডিসি ১৭ ডিসেম্বর কিমের মৃত্যুতে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিক্রিয়ার তীব্র সমালোচনা এবং পাল্টা জবাবেরও হুমকি দিয়েছে। কিমের মৃত্যুতে শোক জানাতে উত্তর কোরিয়া সফরে দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকদের ওপর দেশটির নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং বুধবার কিমের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার দিনে একটি গ্রুপের আন্তঃসীমানা লিফলেট বিতরণ উদ্বোধনের সমালোচনা করে এনডিসি। বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠান নিয়ে লি মিউন বাকের বিশ্বাসঘাতক গোষ্ঠী যে অমার্জনীয় পাপ করেছে, আমরা তাদের অনন্তকাল তার প্রায়শ্চিত্ত করতে বাধ্য করব।
১৭ ডিসেম্বর কিম জং ইলের ১৭ বছরের শাসনের অবসান হলে অনেকেই আশা করেছিলেন এবার উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তন আসতে পারে। বিশেষ করে দেশটির প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো এ বিষয়ে সতর্ক নজর রেখেছিল। কিম ইলের শাসনামলে অনেকটাই একঘরে হয়ে ছিল উত্তর কোরিয়া। ক্ষমতার পট পরিবর্তনে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলারও আশঙ্কা করেছিলেন অনেকে। বৃহস্পতিবার কিমের তৃতীয় ছেলে কিম জং উনের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর শান্তিপূর্ণভাবে হওয়াতে সে আশঙ্কা আর নেই। দেশটির শক্তিশালী সামরিক বাহিনী উনের নেতৃত্ব নিয়ে কোনো প্রশ্নও তোলেনি। উনকে দেশের সর্বোচ্চ নেতা ঘোষণার একদিন পরই এনডিসি জানিয়ে দিল, তারা দীর্ঘদিনের নীতিরও কোনো পরিবর্তন আনছে না। দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট লি মিউন বাকের সঙ্গে উত্তর কোরিয়া কখনও কোনো চুক্তিতে যাবে না।
দূত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র : উত্তর কোরিয়া পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে যুক্তরাষ্ট্র পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বিষয়ক অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি কার্ট ক্যাম্পবেলকে ওই অঞ্চলে পাঠাচ্ছে। আগামী বছরের ৩-৭ জানুয়ারি তিনি চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান সফর করবেন। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এ তথ্য জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার মার্কিন ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা প্রধানরা প্রায় ২০ মিনিট কোরিয়ান অঞ্চল নিয়ে কথা বলেছেন। এতে দু'পক্ষই পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয় অব্যাহত রাখা কোরীয় অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার বিষয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
No comments