কোরবানির পশুর হাট-সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করুন

কোরবানির ঈদ উপলক্ষে এবার কোনো অবস্থাতেই ঢাকার রাস্তার ওপর পশুর হাট বসতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। এ ব্যাপারে আয়োজিত বৈঠকে ঢাকার জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন ও র‌্যাবের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। এটা ঠিক যে, এখন অতীতের মতো যত্রতত্র কোরবানির সময় পশুর হাট বসানো যায় না। এমনকি রাস্তার ওপর হাট বসানোও তেমন নজরে আসে না। তবে বিশেষ পরিস্থিতির দোহাই দিয়ে কোথাও কোথাও


রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কোরবানির পশুর হাট বসানোর ছিটেফোঁটা নজির রয়েছে। বৈঠকে চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণের বিষয়টি বেশ জোরের সঙ্গেই উচ্চারিত হয়েছে। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন বা র‌্যাব চাইলেই কি চাঁদাবাজি বন্ধ করতে পারে! কারণ, চাঁদাবাজির সঙ্গে ক্ষমতা ও রাজনীতির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকে। ক্ষমতার আশ্রয়-প্রশ্রয় না থাকলে কোনো মাস্তানের পক্ষে চাঁদাবাজি চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। এ কারণেই সরকার এবং শাসক দলকে এ ব্যাপারে দ্ব্যর্থহীন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাহলেই কেবল কোরবানির পশুর হাটকে চাঁদাবাজির কলঙ্ক স্পর্শ করতে পারবে না। তবে পুলিশ প্রশাসন গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আন্তরিকতা ও সৎসাহস প্রদর্শন করতে পারলেও চাঁদাবাজি অনেকাংশে কমানো যায়। ঈদের পরও পশুর চামড়া নিয়ে কম চাঁদাবাজি হয় না। এতে মালিক ও চামড়া বিক্রেতা উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হন। বিক্রেতাকে যেমন তার বিক্রিলব্ধ অর্থের একটি অংশ চাঁদাবাজদের হাতে তুলে দিয়ে নিরাপত্তা কিনতে হয়, একইভাবে ট্যানারি মালিকদেরও ক্রয়মূল্যের সঙ্গে বাড়তি হিসেবে চাঁদাবাজদের বেঁধে দেওয়া শর্ত-মূল্য পরিশোধ করতে হয় বলে চামড়ার দর তাকে বেশি গুনতে হয়। চূড়ান্ত বিচারে এর প্রভাব চামড়াজাত পণ্যের ওপর এসে পড়ে। ফলে সাধারণ ক্রেতারাও এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন। তাই কোরবানির আগে-পরে পশুর হাট ও চামড়া ক্রয়কে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজি বন্ধ করা এবং রাস্তায় হাট বসতে না দেওয়ার ব্যাপারে ডিএমপির সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সরকার এবং প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলকেও উদ্যোগী ভূমিকা পালন করতে হবে।
 

No comments

Powered by Blogger.