ফতুর হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়েঃ শুধু কথায় লোকসানের বহর কমবে না
দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় সবচেয়ে প্রাচীন গণপরিবহন সংস্থা রেলওয়ের হালহকিকত মোটেই ভালো নয়। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে দিন দিন বিশাল এক লোকসানি সংস্থায় পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বস্তুত ১৯৮২ সালের পর থেকে রেলওয়ের ইতিহাস মানে লোকসানের ইতিহাস। মারাত্মক করুণদশায় নিপতিত এই অতি গুরুত্বপূর্ণ খাতটিকে লাভজনক করতে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে ক্রমাগত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে।
এখন বছরে রেলওয়ের লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় তিনশ’ কোটি টাকায়। এ অবস্থার পেছনে যেসব অভিযোগ রয়েছে তা নতুন কিছু নয়। অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা, সুষ্ঠু সংরক্ষণের অভাব, দক্ষ জনবলের ঘাটতি, বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ বিভিন্ন দাতাসংস্থার পরামর্শ, সর্বোপরি রাষ্ট্রীয় অদূরদর্শিতার কবলে পড়ে রেলওয়ের এ বেহাল দশা। সরকার পক্ষ থেকে বারবার এর লাগসই সুরাহা করার কথা বলা হলেও রেলওয়ের বিপাক কাটছে না।
বর্তমানে সারাদেশে ২৫৯টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করছে। এর মধ্যে ৬৮টি আন্তঃনগর, ৬৪টি এক্সপ্রেস এবং ১২৭টি লোকাল সার্ভিস। দেশের ৪৪টি জেলায় দুই হাজার ৭৬৮ কিলোমিটার রেলপথে সেল্টশনের সংখ্যা ৪৪০। কিন্তু বিদ্যমান অবস্থায় সংখ্যা দিয়ে রেলের মান বিবেচনার সুযোগ নেই। কারণ রেলের ইঞ্জিন ও যাত্রীবাহী কোচের অবস্থা শুধু করুণ নয়, বিপজ্জনকও বটে। এগুলোর অর্ধেকই মেয়াদোত্তীর্ণ। প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে এখন ২৮৬টি ইঞ্জিনের মধ্যে প্রতি মাসেই ৪০ থেকে ৪৫টি ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। সম্প্রতি পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জনৈক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অর্ধশতাব্দী বয়সী ইঞ্জিনও ব্যবহৃত হচ্ছে। আরেক তথ্য মতে, বর্তমানে ইঞ্জিন সঙ্কটে ধুঁকছে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল। নিয়মানুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ যান্ত্রিক ত্রুটিযুক্ত ইঞ্জিন পরিত্যক্ত ঘোষণার কথা থাকলেও নতুন ইঞ্জিনের অভাবে সেগুলোই চলছে। কাজেই বুড়িয়ে যাওয়া ট্রেন হারাচ্ছে গতি, ব্যাহত হচ্ছে ট্রেনের শিডিউল। কোচগুলোর মাত্র ৭০ ভাগ ব্যবহারের উপযোগী। এদিকে রেললাইন নিয়েও সমস্যার অন্ত নেই। স্বাধীনতার পর থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে এ পর্যন্ত সারাদেশে বন্ব্দ হয়ে গেছে ১০টি শাখা লাইনসহ প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার রেললাইন। পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে বন্ব্দ রয়েছে ৬২টি রেলসেল্টশন। জনবল সঙ্কটের কারণে বেশকিছু ছোট সেল্টশন বন্ব্দ হওয়ার পথে বলে জানা গেছে। অথচ রেলের ট্রাফিক বিভাগ ‘অপ্রয়োজনীয় রেললাইন’ বলা সত্ত্বেও যমুনা তীরবর্তী কিছু রেললাইন মেরামতের নামে কর্তৃপক্ষ গচ্চা দিয়েছে দুই কোটি টাকা। এ নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছে পত্রিকায় গত জুলাই মাসে।
রেলওয়েকে লাভজনক খাতে পরিণত করতে সরকার তথা রেলমন্ত্রী মাঝেমধ্যে যেসব প্রকল্পে কথা বলছেন তা মূলত দাতাসংস্থার ওপর নির্ভর করেই। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বব্যাংক ও এডিবি এবং বিভিন্ন দাতাসংস্থার বানিয়ে দেয়া সিদ্ধান্তের ফলেই বাংলাদেশ রেলওয়ের এই দীনদশা। স্বাধীনতার পর থেকে দাতাগোষ্ঠীর প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী এ খাতে যেসব সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হয়েছে তার বেশিরভাগই কোনো সুফল বয়ে আনেনি। রেলওয়েকে লাভজনক সংস্থায় পরিণত করতে সরকারকে এদিকে কড়া নজর দিতে হবে। দূরদর্শিতার অভাব হলে বাড়তেই থাকবে লোকসানের বহর। উপরন্তু, নতুন ইঞ্জিন ও রেলওয়ে কোচ ক্রয়, প্রয়োজনীয় রেললাইন স্থাপন বা মেরামত, দক্ষ জনবল বাড়িয়ে যাত্রী সাধারণের সুবিধার্থে রেলসেল্টশন বাড়ানোর ক্ষেত্রে কার্যকর বিহিত করতে হবে। এ জন্য দরকার রেলওয়ে থেকে দুর্নীতির উত্পাটন। প্রয়োজন হলে নতুন রেলওয়ে বোর্ড গঠন করার বিষয়টিও বিবেচনার দাবি রাখে। বলার অপেক্ষা রাখে না, সরকার ঘোষিত দিনবদলের জন্য শুধু কথার গতি বাড়ালে চলবে না, গতিশীল করে তুলতে হবে প্রয়োজনীয় সব খাতকে। এর মধ্যে রেলওয়ে খাত অন্যতম।
বর্তমানে সারাদেশে ২৫৯টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করছে। এর মধ্যে ৬৮টি আন্তঃনগর, ৬৪টি এক্সপ্রেস এবং ১২৭টি লোকাল সার্ভিস। দেশের ৪৪টি জেলায় দুই হাজার ৭৬৮ কিলোমিটার রেলপথে সেল্টশনের সংখ্যা ৪৪০। কিন্তু বিদ্যমান অবস্থায় সংখ্যা দিয়ে রেলের মান বিবেচনার সুযোগ নেই। কারণ রেলের ইঞ্জিন ও যাত্রীবাহী কোচের অবস্থা শুধু করুণ নয়, বিপজ্জনকও বটে। এগুলোর অর্ধেকই মেয়াদোত্তীর্ণ। প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে এখন ২৮৬টি ইঞ্জিনের মধ্যে প্রতি মাসেই ৪০ থেকে ৪৫টি ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। সম্প্রতি পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জনৈক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অর্ধশতাব্দী বয়সী ইঞ্জিনও ব্যবহৃত হচ্ছে। আরেক তথ্য মতে, বর্তমানে ইঞ্জিন সঙ্কটে ধুঁকছে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল। নিয়মানুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ যান্ত্রিক ত্রুটিযুক্ত ইঞ্জিন পরিত্যক্ত ঘোষণার কথা থাকলেও নতুন ইঞ্জিনের অভাবে সেগুলোই চলছে। কাজেই বুড়িয়ে যাওয়া ট্রেন হারাচ্ছে গতি, ব্যাহত হচ্ছে ট্রেনের শিডিউল। কোচগুলোর মাত্র ৭০ ভাগ ব্যবহারের উপযোগী। এদিকে রেললাইন নিয়েও সমস্যার অন্ত নেই। স্বাধীনতার পর থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে এ পর্যন্ত সারাদেশে বন্ব্দ হয়ে গেছে ১০টি শাখা লাইনসহ প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার রেললাইন। পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে বন্ব্দ রয়েছে ৬২টি রেলসেল্টশন। জনবল সঙ্কটের কারণে বেশকিছু ছোট সেল্টশন বন্ব্দ হওয়ার পথে বলে জানা গেছে। অথচ রেলের ট্রাফিক বিভাগ ‘অপ্রয়োজনীয় রেললাইন’ বলা সত্ত্বেও যমুনা তীরবর্তী কিছু রেললাইন মেরামতের নামে কর্তৃপক্ষ গচ্চা দিয়েছে দুই কোটি টাকা। এ নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছে পত্রিকায় গত জুলাই মাসে।
রেলওয়েকে লাভজনক খাতে পরিণত করতে সরকার তথা রেলমন্ত্রী মাঝেমধ্যে যেসব প্রকল্পে কথা বলছেন তা মূলত দাতাসংস্থার ওপর নির্ভর করেই। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বব্যাংক ও এডিবি এবং বিভিন্ন দাতাসংস্থার বানিয়ে দেয়া সিদ্ধান্তের ফলেই বাংলাদেশ রেলওয়ের এই দীনদশা। স্বাধীনতার পর থেকে দাতাগোষ্ঠীর প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী এ খাতে যেসব সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হয়েছে তার বেশিরভাগই কোনো সুফল বয়ে আনেনি। রেলওয়েকে লাভজনক সংস্থায় পরিণত করতে সরকারকে এদিকে কড়া নজর দিতে হবে। দূরদর্শিতার অভাব হলে বাড়তেই থাকবে লোকসানের বহর। উপরন্তু, নতুন ইঞ্জিন ও রেলওয়ে কোচ ক্রয়, প্রয়োজনীয় রেললাইন স্থাপন বা মেরামত, দক্ষ জনবল বাড়িয়ে যাত্রী সাধারণের সুবিধার্থে রেলসেল্টশন বাড়ানোর ক্ষেত্রে কার্যকর বিহিত করতে হবে। এ জন্য দরকার রেলওয়ে থেকে দুর্নীতির উত্পাটন। প্রয়োজন হলে নতুন রেলওয়ে বোর্ড গঠন করার বিষয়টিও বিবেচনার দাবি রাখে। বলার অপেক্ষা রাখে না, সরকার ঘোষিত দিনবদলের জন্য শুধু কথার গতি বাড়ালে চলবে না, গতিশীল করে তুলতে হবে প্রয়োজনীয় সব খাতকে। এর মধ্যে রেলওয়ে খাত অন্যতম।
No comments