পাকিস্তানে ‘চিঠি কেলেঙ্কারি’ তদন্তে কমিশন গঠন

পাকিস্তানে বহুল আলোচিত গোপন চিঠি কেলেঙ্কারি তদন্তে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট একটি বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করেছেন। এর জেরে হুমকির মুখে পড়েছে দেশটির বেসামরিক সরকারের স্থিতিশীলতা। আল-জাজিরা টেলিভিশনের অনলাইন জানিয়েছে, দেশটির সুপ্রিম কোর্ট গতকাল শুক্রবার আলোচিত গোপন চিঠি কেলেঙ্কারি তদন্তে একটি বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ২০১১ সালের মে মাসে পাকিস্তানের ইসলামাবাদের কাছে মার্কিন বিশেষ


বাহিনীর অভিযানে আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন নিহত হন। ওই ঘটনার পর পাকিস্তানে সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কা করে তা ঠেকাতে মার্কিন সহায়তা চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের তত্কালীন জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান মাইক মুলেনের কাছে ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে একটি গোপন চিঠি দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে।
এদিকে পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সদস্যরা সুপ্রিম কোর্টের এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়েছেন বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন। এই ঘরানার রাজনীতিবিদেরা মনে করছেন, সুপ্রিম কোর্টের সরকারবিরোধীরা, সেনাবাহিনী এবং বিরোধী রাজনীতিকেরা দেশটির বর্তমান নেতৃত্বকে বিপদে ফেলার পন্থা হিসেবে এই কেলেঙ্কারিকে ব্যবহার করছে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গোপন চিঠি কেলেঙ্কারি বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত অপ্রয়োজনীয়। কারণ, এ ক্ষেত্রে পার্লামেন্টই উপযুক্ত ক্ষেত্র এবং পার্লামেন্ট বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
গত অক্টোবরে ওই গোপন চিঠির বিষয়ে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যবসায়ী মনসুর ইজাজের একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হলে এ কেলেঙ্কারির খবর প্রথম আলোচনায় আসে।
মনসুর ইজাজ দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত হুসাইন হাক্কানি ওই চিঠির খসড়া করেন এবং তাঁকে সেটা পাঠাতে বলেন। তিনি আরও দাবি করেন, ওই চিঠির ব্যাপারে পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির সমর্থন ছিল। হাক্কানি ও জারদারি উভয়ই এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে পরে সরকারের চাপের মুখে হাক্কানি পদত্যাগ করেন।
ওই ঘটনার জেরে জারদারি সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর টানপোড়েন শুরু হয়। সেনাবাহিনী দেশটির প্রেসিডেন্ট জারদারিকে আর দেখতে চায় না বলে খবর চাউর হয়। এমনকি পাকিস্তানে সামরিক অভ্যুত্থানের গুজবও রটে। তবে দেশটির সেনাবাহিনী এ ধরনের অভ্যুত্থানের অভিযোগ নাকচ করে একে স্রেফ গুজব বলে উল্লেখ করে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, গোপন চিঠি কেলেঙ্কারি তদন্তে সুপ্রিম কোর্টের এই উদ্যোগ জারদারি সরকারের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে।

No comments

Powered by Blogger.