এ সপ্তাহের সাক্ষাৎকার-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ চাই
২০১১ সাল ছিল উচ্চ মূল্যস্ফীতির বছর। অন্যদিকে দেশের নতুন শিল্প-কারখানাগুলোয় মেলেনি গ্যাস-বিদ্যুতের সংযোগ। ইউরোপের অর্থনৈতিক সংকট ধাক্কা দিয়েছে রপ্তানিমুখী শিল্প খাতে। ব্যবসা-বাণিজ্যের এসব প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়েই নতুন বছর ২০১২ সালে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ। নতুন বছরে শিল্প-বাণিজ্যের চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও প্রত্যাশা নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আসিফ
ইব্রাহীম প্রথম আলো: বিদায়ী ২০১১ সালে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলো প্রধান বাধা হিসেবে দেখা দিয়েছে?
আসিফ ইব্রাহীম: আমার দৃষ্টিতে ২০১১ সালে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রধান বাধাগুলো ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর অর্থনৈতিক সংকট, দেশের অভ্যন্তরে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন এবং নতুন শিল্প-কারখানাগুলোয় গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ না পাওয়া। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের অন্যতম বড় বাজার হচ্ছে ইউরোপের দেশগুলো। রপ্তানি আয়ের একটি বড় অংশই আসে এসব দেশ থেকে। কিন্তু এ বছর ইউরোপে যে অর্থনৈতিক সংকট চলছে, তাতে এ দেশের তৈরি পোশাক খাত বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। মন্দার কারণে অনেক বিদেশি ক্রেতাই তাঁদের কার্যাদেশ (অর্ডার) বাতিল কিংবা স্থগিত করেছেন। অন্যদিকে উচ্চহারে মূল্যস্ফীতি এবং ডলারের বিপরীতে টাকার মান ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় কাঁচামালের দাম আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। এতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। শুধু তা-ই নয়, দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য। সর্বোপরি শিল্প-বাণিজ্য প্রসারের যে অন্যতম পূর্বশর্ত অবকাঠামো খাতে দ্রুত অগ্রগতি, সেটাও এ বছর খুব একটা হয়নি। সব মিলিয়ে বলতে হয়, লোকসানের মধ্য দিয়েই ব্যবসায়ীরা এ বছরটা পার করছেন।
প্রথম আলো: নতুন বছরে অর্থাৎ ২০১২ সালে ব্যবসা-বাণিজ্যে কোন বিষয়গুলোকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন?
আসিফ ইব্রাহীম: আমার কাছে নতুন বছরের চ্যালেঞ্জ মূলত দুটি। প্রথমত, ভৌত অবকাঠামো খাতে দ্রুত অগ্রগতি করা। আন্তর্জাতিক পরামর্শক সংস্থা ম্যাককেনসি ইতিমধ্যে বলেছে, ২০২০ সালের মধ্যে তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশের রপ্তানি তিন থেকে চার গুণ বাড়তে পারে। এ জন্য প্রয়োজন অবকাঠামোগত উন্নয়ন। আমাদের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সক্ষমতা এখনো বাড়েনি। চট্টগ্রামে পৌঁছাতে এখনো অনেক সময় ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা লেগে যায়। আবার চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতাও বাড়ানো দরকার। দ্বিতীয়ত, নতুন শিল্প-কারখানা বা ইউনিটগুলোতে গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া। আমরা রপ্তানি বাড়াতে চাই। এ জন্য প্রয়োজন শিল্প খাতের সম্প্রসারণ। কিন্তু নতুন শিল্প ইউনিটগুলোতে সরকার গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ দিচ্ছে না। গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ না পেলে তো নতুন কারখানা চালু করা যাচ্ছে না।
প্রথম আলো: নতুন বছরে শিল্প-বাণিজ্যে সম্ভাবনার কোন ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করবেন?
আসিফ ইব্রাহীম: সম্ভাবনার ক্ষেত্র হিসেবে আমি রপ্তানিমুখী শিল্প খাতের কথাই বলব। পাশাপাশি দেশীয় শিল্প খাত তো আছেই। এ ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের (এসএমই) কথা উল্লেখ করতে হয়। তবে সম্ভাবনার ক্ষেত্র হলেও মূল্যস্ফীতি আর ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন অব্যাহত থাকলে দেশীয় শিল্পের সংকট কাটবে না বরং এই খাতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
প্রথম আলো: সরকারের কাছে নতুন বছরে সুনির্দিষ্টভাবে কী কী নীতি-সমর্থন প্রত্যাশা করেন?
আসিফ ইব্রাহীম: আগামী বছরটায় মানে ২০১২ সালে দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা শুরু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই প্রথমত, আমরা ব্যবসায়ীরা সরকারের কাছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রত্যাশা করি। শুধু সরকার নয়, সব রাজনৈতিক দলের কাছেও আমাদের এটাই প্রত্যাশা। দ্বিতীয়ত, নতুন যেসব শিল্প-কারখানা ইতিমধ্যে আমরা স্থাপন করছি, সেগুলোতে অবিলম্বে গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ চাই। সরকারের কাছ থেকে এ দুটি বিষয়ে নিশ্চয়তা পেলেই ব্যবসায়ী-শিল্পোদ্যোক্তারা খুশি হবেন।
(সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আবুল হাসনাত)
আসিফ ইব্রাহীম: আমার দৃষ্টিতে ২০১১ সালে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রধান বাধাগুলো ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর অর্থনৈতিক সংকট, দেশের অভ্যন্তরে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন এবং নতুন শিল্প-কারখানাগুলোয় গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ না পাওয়া। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের অন্যতম বড় বাজার হচ্ছে ইউরোপের দেশগুলো। রপ্তানি আয়ের একটি বড় অংশই আসে এসব দেশ থেকে। কিন্তু এ বছর ইউরোপে যে অর্থনৈতিক সংকট চলছে, তাতে এ দেশের তৈরি পোশাক খাত বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। মন্দার কারণে অনেক বিদেশি ক্রেতাই তাঁদের কার্যাদেশ (অর্ডার) বাতিল কিংবা স্থগিত করেছেন। অন্যদিকে উচ্চহারে মূল্যস্ফীতি এবং ডলারের বিপরীতে টাকার মান ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় কাঁচামালের দাম আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। এতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। শুধু তা-ই নয়, দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য। সর্বোপরি শিল্প-বাণিজ্য প্রসারের যে অন্যতম পূর্বশর্ত অবকাঠামো খাতে দ্রুত অগ্রগতি, সেটাও এ বছর খুব একটা হয়নি। সব মিলিয়ে বলতে হয়, লোকসানের মধ্য দিয়েই ব্যবসায়ীরা এ বছরটা পার করছেন।
প্রথম আলো: নতুন বছরে অর্থাৎ ২০১২ সালে ব্যবসা-বাণিজ্যে কোন বিষয়গুলোকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন?
আসিফ ইব্রাহীম: আমার কাছে নতুন বছরের চ্যালেঞ্জ মূলত দুটি। প্রথমত, ভৌত অবকাঠামো খাতে দ্রুত অগ্রগতি করা। আন্তর্জাতিক পরামর্শক সংস্থা ম্যাককেনসি ইতিমধ্যে বলেছে, ২০২০ সালের মধ্যে তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশের রপ্তানি তিন থেকে চার গুণ বাড়তে পারে। এ জন্য প্রয়োজন অবকাঠামোগত উন্নয়ন। আমাদের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সক্ষমতা এখনো বাড়েনি। চট্টগ্রামে পৌঁছাতে এখনো অনেক সময় ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা লেগে যায়। আবার চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতাও বাড়ানো দরকার। দ্বিতীয়ত, নতুন শিল্প-কারখানা বা ইউনিটগুলোতে গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া। আমরা রপ্তানি বাড়াতে চাই। এ জন্য প্রয়োজন শিল্প খাতের সম্প্রসারণ। কিন্তু নতুন শিল্প ইউনিটগুলোতে সরকার গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ দিচ্ছে না। গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ না পেলে তো নতুন কারখানা চালু করা যাচ্ছে না।
প্রথম আলো: নতুন বছরে শিল্প-বাণিজ্যে সম্ভাবনার কোন ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করবেন?
আসিফ ইব্রাহীম: সম্ভাবনার ক্ষেত্র হিসেবে আমি রপ্তানিমুখী শিল্প খাতের কথাই বলব। পাশাপাশি দেশীয় শিল্প খাত তো আছেই। এ ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের (এসএমই) কথা উল্লেখ করতে হয়। তবে সম্ভাবনার ক্ষেত্র হলেও মূল্যস্ফীতি আর ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন অব্যাহত থাকলে দেশীয় শিল্পের সংকট কাটবে না বরং এই খাতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
প্রথম আলো: সরকারের কাছে নতুন বছরে সুনির্দিষ্টভাবে কী কী নীতি-সমর্থন প্রত্যাশা করেন?
আসিফ ইব্রাহীম: আগামী বছরটায় মানে ২০১২ সালে দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা শুরু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই প্রথমত, আমরা ব্যবসায়ীরা সরকারের কাছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রত্যাশা করি। শুধু সরকার নয়, সব রাজনৈতিক দলের কাছেও আমাদের এটাই প্রত্যাশা। দ্বিতীয়ত, নতুন যেসব শিল্প-কারখানা ইতিমধ্যে আমরা স্থাপন করছি, সেগুলোতে অবিলম্বে গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ চাই। সরকারের কাছ থেকে এ দুটি বিষয়ে নিশ্চয়তা পেলেই ব্যবসায়ী-শিল্পোদ্যোক্তারা খুশি হবেন।
(সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আবুল হাসনাত)
No comments