সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলন by অ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিক

বাংলাদেশের সংবিধানের ৩ অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী 'প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংল।' সংবিধানের এ বিধান সঠিকভাবে পালিত হচ্ছে না দেখে বাংলা ভাষা প্রচলন আইন-১৯৮৭ প্রণয়ন করা হয়। ১৯৮৭ সালের আইনের ৩(১) ধারায় বলা হয়েছে, 'এই আইন প্রবর্তনের পর বাংলাদেশের সর্বত্র তথা সরকারি অফিস-আদালত, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত


প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিদেশের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যতীত অন্য সব ক্ষেত্রে নথি ও চিঠিপত্র, আইন-আদালতের সওয়াল-জবাব এবং অন্যান্য আইনানুগ কার্যাবলি অবশ্যই বাংলায় লিখিতে হইবে। এই ধারা মোতাবেক কোন কর্মস্থলে যদি কোন ব্যক্তি বাংলা ভাষা ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় আবেদন বা আপীল করেন তাহা হইলে উহা বেআইনি ও অকার্যকর বলিয়া গণ্য হইবে।' সংবিধানের ১৫২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, 'আদালত' অর্থ সুপ্রিম কোর্টসহ যে কোনো আদালত। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩ এবং উলি্লখিত আইনের অধীন আদালতসহ প্রজাতন্ত্রের সব কার্যক্রম ও রাষ্ট্রীয় নথিপত্র বাংলা ভাষায়ই বাধ্যতামূলকভাবে সম্পাদিত হওয়ার কথা। প্রসঙ্গত, দেশে সর্বস্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে ১৯৮৭ সালের ৮ মার্চ 'বাংলা ভাষা প্রচলন আইন' করা হলেও তা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
একুশে ফেব্রুয়ারি ছাড়া বছরের বাকি দিনগুলোতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষা করা হয় না_ এই অভিযোগ এনে হাইকোর্টে রিট করা হয়। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারির ৯ তারিখে বিষয়টি আমলে নেন হাইকোর্ট। শহীদ মিনারের পবিত্রতা ও মর্যাদা রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না_ সে বিষয়ে রুলও ইস্যু করেন বিচারপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ও বিচারপতি নাঈমা হায়দারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ। শুনানি শেষে রায় হয় ২৫ আগস্ট। রায়ে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে, তাদের স্মৃতি রক্ষায় শহীদ মিনার গড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পবিত্রতা ও মর্যাদা রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতেও নির্দেশ দেওয়া হয় বলে সাংবাদিকদের জানান আবেদনকারীর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। অবশ্য কিছু কিছু পদক্ষেপ আদালতের তরফে পরিষ্কার করে বলে দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে_ সেখানে পাহারার ব্যবস্থা করা, যারা ভবঘুরে বা মাদকাসক্তদের আনাগোনা ঠেকাবে।
রায়ে নির্দেশনা এসেছে ভাষা শহীদ ও ভাষাসংগ্রামীদের সম্পর্কেও। ভাষা আন্দোলনে শহীদ, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের মরণোত্তর পদক আর জীবিত ভাষাসংগ্রামীদের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে রায়ে। সরকারকে বলা হয়েছে তাদের যথাযথ সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার।
স কুষ্টিয়া

No comments

Powered by Blogger.