গণবিচ্ছিন্ন গণতন্ত্রচর্চার পরিণাম by লুৎফর রহমান রনো
৫ জুন হরতাল হয়ে গেল। হরতালের তালে যা যা ক্ষতি দেশবাসীর হওয়ার তাও যথারীতি সাধিত হলো। দেশজুড়ে প্রায় অর্ধশত গাড়ি ভাঙচুর কিংবা ভস্মীভূত হলো। এক দিনে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি হলো শত কোটি টাকা। এ ক্ষতির কথা তো গেল বড় আকারের। 'ছোট-ছোট' মানুষের যে ক্ষতি হলো তার হিসাব কষা হয় না।
মিডিয়াকর্মী, মানবাধিকারকর্মী, জনদরদি রাজনীতিক_কেউই করেন না। কারো পরীক্ষা দেওয়া হলো না। মজুরি খাটা হলো না বলে কাউকে অন্নসংস্থানের জন্য ঋণ করতে হয়েছে কিংবা উপোস থাকতে হয়েছে সপরিবারে। যার রিকশাটা ভেঙেছে, তার আবার রিকশা নিয়ে রাস্তায় বেরোনো হবে কবে রোজগারের জন্য কে জানে? তত দিন তার সংসারের অভাব-অনটন ও এর জের ধরে কী ধরনের বিপর্যয় তৈরি হতে পারে, তার বর্ণনা অবান্তর।
আশঙ্কার কথা, এসব ক্ষয়ক্ষতি ও মানবিক-সামাজিক বিপর্যয় সৃষ্টির অস্থিতিশীল প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি শুরু হলো। বিরোধী দলের এ ধরনের রাজনীতি আমাদের দেশে অতি পরিচিত। কিন্তু কেন? ২০ বছরের গণতন্ত্রচর্চা ও পূর্ববর্তী দুই রাষ্ট্রনায়কের (সামরিক শাসক) ঐতিহাসিক 'গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের' রাজনীতি, দল গঠন, শাসন প্রভৃতি মিলে ৩০-৩৫ বছরেও সংসদ বর্জন ও হরতাল করার ধ্বংসাত্মক পদ্ধতি কেন বন্ধ হলো না? সংসদে যোগ না দেওয়াও কি জনগণের স্বার্থে? হরতাল ডাকা ও অস্থিতিশীল করে তোলা রাজনীতি কোন দল বা গোষ্ঠী বা 'জনগণের' স্বার্থে? এসব প্রশ্নের কোনো সদুত্তর কিন্তু রাজনীতিবিদদের কাছে নেই। মূলত জনগণ এখানে একটি মুখোশ মাত্র। এ দেশের ক্ষমতায় পালাক্রমে যারা যায়, তাদের মধ্যে একটি গোষ্ঠী স্পষ্টত স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও ধর্মান্ধতার ভিত্তিকে ক্ষমতা দখলের উপায় হিসেবে ব্যবহার করে। অন্য পক্ষ এর বিপরীত অবস্থানে। যারা এখন ক্ষমতায় আছে। মৌলিক লড়াই এখানেই। রাজনীতিবিদরা কমবেশি সবাই জননেতা হিসেবে পরিচিত হন বা হতে চেষ্টা করেন। জননেতা বলতে আমরা বুঝি জনগণের নেতা, যিনি জনগণের স্বার্থ রক্ষায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করেন, প্রয়োজনে সংগ্রাম করেন, জনস্বার্থে কাজের ও সংগ্রামের নেতৃত্ব দেন, তিনিই জননেতা। রাজনীতি থেকে রাজনীতিবিদ। আর রাজনীতিবিদরা যদি জননেতা হন, তাহলে রাজনীতির লক্ষ্য-উদ্দেশ্য অবশ্যই জনগণ। কিন্তু আমাদের দেশে শুধু নয়, কোনো দেশেই, এ বিশ্বে, বর্তমানে বা অতীতেও রাজনীতি ছিল না জনগণের জন্য, গণমানুষের স্বার্থে। রাজনীতির প্রকৃত উদ্দেশ্য ক্ষমতা-রাষ্ট্রক্ষমতা দখল ও বেদখলের নিরলস চিন্তা-চর্চা-লড়াই-সংগ্রাম করেন যাঁরা, তাঁরাই রাজনীতিবিদ। তবে তাঁরা বলেন, মানুষের জন্য করেন। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষমতায় যেতে চান। আবার কখনো কখনো জনবিচ্ছিন্ন সামরিক ব্যক্তিরাও জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রক্ষমতা কেড়ে নেন এবং পরে রাজনীতিবিদ হয়ে যান। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতিবিদ হতে হলে একটি দল করতে হয়, তাই অনেক অরাজনৈতিক ব্যক্তি, যেমন সামরিক ব্যক্তি, ব্যবসায়ী বা অবসরপ্রাপ্ত সামরিক অফিসার, আমলা প্রমুখ জনবিচ্ছিন্ন ব্যক্তি কোনো প্রতিষ্ঠিত দলের অন্তর্ভুক্ত হন অথবা নতুন দলই গঠন করে ফেলেন। এ জন্য শত শত কোটি টাকা লাগে, তাও তাঁদের জন্য কোনো সমস্যা নয়। আর এটিই দেশের মানুষের জন্য মূল সমস্যা। এই যে রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার জন্য রাজনীতিবিদ হওয়া, রাজনীতিচর্চা, ভোটাভুটি ইত্যাদি করতে যে প্রচুর টাকা ব্যয় করা হয়, এসব অর্থ তাঁরা পান কোথায়? কোথা থেকে আসে হাজার কোটি টাকা? আর কারোই কিন্তু জনগণকে প্রয়োজন পড়ে না, জনগণকে সঙ্গে নিয়েও সংগ্রাম করতে হয় না। জনগণের স্বার্থ রক্ষা করার অঙ্গীকারের কথা নিরলস বলে যেতে হয় শুধু সভা-সেমিনার, লিফলেট বা দলীয়-নির্দলীয় নির্বাচনী ইশতেহারে বা সংগঠনের সংবিধানে জনগণের কথা থাকতে হয়। এটাই নিয়ম। কিন্তু অবশ্যই জনগণের স্বার্থে কিছু করতে নেই। জনগণের জন্য ভাবলে, জনগণের সুখ-দুঃখ নিয়ে মানুষের জন্য মানবিক সমাজজীবন গড়ে তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে চিন্তা-চর্চা করলে রাজনীতিবিদ হওয়া যায় না। ক্ষমতায় যাওয়া যায় না, যদি জনগণের স্বার্থ রক্ষা করার ইচ্ছা পোষণ করে কেউ বা কোনো দল। এ কেমন যেন এক উল্টাপাল্টা ব্যাপার, শুভংকরের ফাঁক বা দুর্বোধ্য রকম বৈপরীত্য। তাই শেষমেশ সেই ভরসা জনগণের কাউকে না কাউকে তো ভোট দিতে হবে। এবার 'এ'কে তো, আরেকবার 'ও'কে। কিন্তু দেখা যায়, কোনোবারই যথার্থ অর্থে যারা তৃণমূল বা প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তাদের স্বার্থ রক্ষার্থে কিছুই হয় না। তারা যেন শুধু সার আর সেচের ডিজেল খেয়ে বাঁচে। কৃষকের জন্য এ দুটি শব্দ বহুল ব্যবহৃত। কিন্তু ধান উৎপাদন এবং তা থেকে কৃষকের জীবনযাপনের কোনো পরিবর্তন হলো কি না, তাদের সন্তানদের লেখাপড়া-চিকিৎসার উন্নতি হলো কি না, অপুষ্টি-মহামারি হ্রাস পেল কি না এবং কৃষি ও কলকারখানায় লাখ লাখ শ্রমিক_যাদের জীবনের অন্যান্য মৌলিক অধিকার কেবল জীবিকার মধ্যেই সংকুচিত বা নিঃশেষিত হয়ে গেছে_তাদের নূ্যনতম মজুরি কত হলে বেঁচে থাকার বাইরে শিক্ষা-চিকিৎসা-বাসস্থানের ভাবনা ভাবতে পারবে, এসব চিন্তা কেউ কোনো দিন করেনি। এসব কথা অতি পুরনো। এদের সমস্যা পুরনো। ক্ষমতার পরিবর্তন হয়, কিছু মানুষের ভাগ্যে কিছু সুবিধা হয়তো জোটে; কিন্তু দেশের কোনো সমস্যার তেমন একটা সমাধান হয়_এ কথা কেউ বলবে বলে মনে হয় না। লোডশেডিং হয়, তাও গ্রাম ও শহরের নিম্নআয়ের মানুষের বসবাস যেখানে, সেখানেই বেশি হয়, তাদের অন্ধকার দীর্ঘতর হয়। আর যারা ভালো আছে সব দিক দিয়ে, তাদের আলো ও অন্যান্য সুবিধাও যেন কম না হয় সেদিকে লক্ষ্য থাকে রাষ্ট্র ও নগরকর্তাদের। এই তো আমাদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার বরাবরের চিত্র! যা হোক, তত্ত্বাবধায়ক সরকারেরও কোনো প্রয়োজনীয়তা জনগণের নেই। ক্ষমতা কাড়াকাড়ির রাজনীতি ও নির্বাচন যেন একটি বৈধতা পায় দেশ-বিদেশে, এ জন্য এর উৎপত্তি। বরং দেখা গেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের চরিত্রও এখন প্রশ্নের ঊধর্ে্ব নয়। ক্ষমতায় কেউ এলে সহজে এর সুযোগ-সুবিধা ছেড়ে ফিরে যেতে চায় না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের চরিত্রও এখন আমাদের প্রচলিত রাজনৈতিক সংস্কৃতির হাওয়ায় আক্রান্ত হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষের স্বার্থ ও সম্পদ লুটপাটের উদ্দেশ্যে যত দিন রাজনীতি চলতে থাকবে তত দিন দেশ ও দশের কোনো উন্নতি আসবে না। কোনো দল, গোষ্ঠী বা সরকারও আস্থা অর্জন করতে পারবে না। আর সংসদ বর্জন ও হরতালের রাজনীতিও যাবে না। গণবিচ্ছিন্ন তথাকথিত গণতন্ত্রচর্চার পরিণতি এমনই হয়।
লেখক : সাংবাদিক
আশঙ্কার কথা, এসব ক্ষয়ক্ষতি ও মানবিক-সামাজিক বিপর্যয় সৃষ্টির অস্থিতিশীল প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি শুরু হলো। বিরোধী দলের এ ধরনের রাজনীতি আমাদের দেশে অতি পরিচিত। কিন্তু কেন? ২০ বছরের গণতন্ত্রচর্চা ও পূর্ববর্তী দুই রাষ্ট্রনায়কের (সামরিক শাসক) ঐতিহাসিক 'গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের' রাজনীতি, দল গঠন, শাসন প্রভৃতি মিলে ৩০-৩৫ বছরেও সংসদ বর্জন ও হরতাল করার ধ্বংসাত্মক পদ্ধতি কেন বন্ধ হলো না? সংসদে যোগ না দেওয়াও কি জনগণের স্বার্থে? হরতাল ডাকা ও অস্থিতিশীল করে তোলা রাজনীতি কোন দল বা গোষ্ঠী বা 'জনগণের' স্বার্থে? এসব প্রশ্নের কোনো সদুত্তর কিন্তু রাজনীতিবিদদের কাছে নেই। মূলত জনগণ এখানে একটি মুখোশ মাত্র। এ দেশের ক্ষমতায় পালাক্রমে যারা যায়, তাদের মধ্যে একটি গোষ্ঠী স্পষ্টত স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও ধর্মান্ধতার ভিত্তিকে ক্ষমতা দখলের উপায় হিসেবে ব্যবহার করে। অন্য পক্ষ এর বিপরীত অবস্থানে। যারা এখন ক্ষমতায় আছে। মৌলিক লড়াই এখানেই। রাজনীতিবিদরা কমবেশি সবাই জননেতা হিসেবে পরিচিত হন বা হতে চেষ্টা করেন। জননেতা বলতে আমরা বুঝি জনগণের নেতা, যিনি জনগণের স্বার্থ রক্ষায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করেন, প্রয়োজনে সংগ্রাম করেন, জনস্বার্থে কাজের ও সংগ্রামের নেতৃত্ব দেন, তিনিই জননেতা। রাজনীতি থেকে রাজনীতিবিদ। আর রাজনীতিবিদরা যদি জননেতা হন, তাহলে রাজনীতির লক্ষ্য-উদ্দেশ্য অবশ্যই জনগণ। কিন্তু আমাদের দেশে শুধু নয়, কোনো দেশেই, এ বিশ্বে, বর্তমানে বা অতীতেও রাজনীতি ছিল না জনগণের জন্য, গণমানুষের স্বার্থে। রাজনীতির প্রকৃত উদ্দেশ্য ক্ষমতা-রাষ্ট্রক্ষমতা দখল ও বেদখলের নিরলস চিন্তা-চর্চা-লড়াই-সংগ্রাম করেন যাঁরা, তাঁরাই রাজনীতিবিদ। তবে তাঁরা বলেন, মানুষের জন্য করেন। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষমতায় যেতে চান। আবার কখনো কখনো জনবিচ্ছিন্ন সামরিক ব্যক্তিরাও জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রক্ষমতা কেড়ে নেন এবং পরে রাজনীতিবিদ হয়ে যান। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতিবিদ হতে হলে একটি দল করতে হয়, তাই অনেক অরাজনৈতিক ব্যক্তি, যেমন সামরিক ব্যক্তি, ব্যবসায়ী বা অবসরপ্রাপ্ত সামরিক অফিসার, আমলা প্রমুখ জনবিচ্ছিন্ন ব্যক্তি কোনো প্রতিষ্ঠিত দলের অন্তর্ভুক্ত হন অথবা নতুন দলই গঠন করে ফেলেন। এ জন্য শত শত কোটি টাকা লাগে, তাও তাঁদের জন্য কোনো সমস্যা নয়। আর এটিই দেশের মানুষের জন্য মূল সমস্যা। এই যে রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার জন্য রাজনীতিবিদ হওয়া, রাজনীতিচর্চা, ভোটাভুটি ইত্যাদি করতে যে প্রচুর টাকা ব্যয় করা হয়, এসব অর্থ তাঁরা পান কোথায়? কোথা থেকে আসে হাজার কোটি টাকা? আর কারোই কিন্তু জনগণকে প্রয়োজন পড়ে না, জনগণকে সঙ্গে নিয়েও সংগ্রাম করতে হয় না। জনগণের স্বার্থ রক্ষা করার অঙ্গীকারের কথা নিরলস বলে যেতে হয় শুধু সভা-সেমিনার, লিফলেট বা দলীয়-নির্দলীয় নির্বাচনী ইশতেহারে বা সংগঠনের সংবিধানে জনগণের কথা থাকতে হয়। এটাই নিয়ম। কিন্তু অবশ্যই জনগণের স্বার্থে কিছু করতে নেই। জনগণের জন্য ভাবলে, জনগণের সুখ-দুঃখ নিয়ে মানুষের জন্য মানবিক সমাজজীবন গড়ে তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে চিন্তা-চর্চা করলে রাজনীতিবিদ হওয়া যায় না। ক্ষমতায় যাওয়া যায় না, যদি জনগণের স্বার্থ রক্ষা করার ইচ্ছা পোষণ করে কেউ বা কোনো দল। এ কেমন যেন এক উল্টাপাল্টা ব্যাপার, শুভংকরের ফাঁক বা দুর্বোধ্য রকম বৈপরীত্য। তাই শেষমেশ সেই ভরসা জনগণের কাউকে না কাউকে তো ভোট দিতে হবে। এবার 'এ'কে তো, আরেকবার 'ও'কে। কিন্তু দেখা যায়, কোনোবারই যথার্থ অর্থে যারা তৃণমূল বা প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তাদের স্বার্থ রক্ষার্থে কিছুই হয় না। তারা যেন শুধু সার আর সেচের ডিজেল খেয়ে বাঁচে। কৃষকের জন্য এ দুটি শব্দ বহুল ব্যবহৃত। কিন্তু ধান উৎপাদন এবং তা থেকে কৃষকের জীবনযাপনের কোনো পরিবর্তন হলো কি না, তাদের সন্তানদের লেখাপড়া-চিকিৎসার উন্নতি হলো কি না, অপুষ্টি-মহামারি হ্রাস পেল কি না এবং কৃষি ও কলকারখানায় লাখ লাখ শ্রমিক_যাদের জীবনের অন্যান্য মৌলিক অধিকার কেবল জীবিকার মধ্যেই সংকুচিত বা নিঃশেষিত হয়ে গেছে_তাদের নূ্যনতম মজুরি কত হলে বেঁচে থাকার বাইরে শিক্ষা-চিকিৎসা-বাসস্থানের ভাবনা ভাবতে পারবে, এসব চিন্তা কেউ কোনো দিন করেনি। এসব কথা অতি পুরনো। এদের সমস্যা পুরনো। ক্ষমতার পরিবর্তন হয়, কিছু মানুষের ভাগ্যে কিছু সুবিধা হয়তো জোটে; কিন্তু দেশের কোনো সমস্যার তেমন একটা সমাধান হয়_এ কথা কেউ বলবে বলে মনে হয় না। লোডশেডিং হয়, তাও গ্রাম ও শহরের নিম্নআয়ের মানুষের বসবাস যেখানে, সেখানেই বেশি হয়, তাদের অন্ধকার দীর্ঘতর হয়। আর যারা ভালো আছে সব দিক দিয়ে, তাদের আলো ও অন্যান্য সুবিধাও যেন কম না হয় সেদিকে লক্ষ্য থাকে রাষ্ট্র ও নগরকর্তাদের। এই তো আমাদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার বরাবরের চিত্র! যা হোক, তত্ত্বাবধায়ক সরকারেরও কোনো প্রয়োজনীয়তা জনগণের নেই। ক্ষমতা কাড়াকাড়ির রাজনীতি ও নির্বাচন যেন একটি বৈধতা পায় দেশ-বিদেশে, এ জন্য এর উৎপত্তি। বরং দেখা গেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের চরিত্রও এখন প্রশ্নের ঊধর্ে্ব নয়। ক্ষমতায় কেউ এলে সহজে এর সুযোগ-সুবিধা ছেড়ে ফিরে যেতে চায় না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের চরিত্রও এখন আমাদের প্রচলিত রাজনৈতিক সংস্কৃতির হাওয়ায় আক্রান্ত হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষের স্বার্থ ও সম্পদ লুটপাটের উদ্দেশ্যে যত দিন রাজনীতি চলতে থাকবে তত দিন দেশ ও দশের কোনো উন্নতি আসবে না। কোনো দল, গোষ্ঠী বা সরকারও আস্থা অর্জন করতে পারবে না। আর সংসদ বর্জন ও হরতালের রাজনীতিও যাবে না। গণবিচ্ছিন্ন তথাকথিত গণতন্ত্রচর্চার পরিণতি এমনই হয়।
লেখক : সাংবাদিক
No comments