বিশেষ সাক্ষাৎকার : আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী-দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও গ্যাস-বিদ্যুৎই মূল সমস্যা

কালের কণ্ঠ : আসন্ন বাজেট সম্পর্কে আপনার মতামত জানতে চাই। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী : দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি বাজেট বৃদ্ধি হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে এই বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দেখতে হবে, গুণগত পরিবর্তন আসছে কি না এবং দেশের উন্নয়নে তা সত্যিকারভাবে কোনো অবদান রাখবে কি না।


রাজস্ব খাতে খরচ বাড়ছে, কিন্তু সেই অনুপাতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) প্রবৃদ্ধির প্রতিফলন হচ্ছে না। বাজেটের চৎরসব ধষষড়পধঃরড়হ-এর প্রায়োরিটিটা গুরুত্বপূর্ণ। প্রবৃদ্ধির মধ্যে অনেকগুলো সরকারি ব্যয় আসছে। একটি বড় ব্যয় আসছে বিদ্যুৎ খাতে। বিদ্যুৎ খাতে সাবসিডি পাঁচ হাজার কোটি টাকার ওপরে চলে যাচ্ছে। বাস্তবায়ন শেষে দেখা যাবে, এডিপিতে এটা হয়ে দাঁড়াবে ২০ হাজার কোটি টাকা। এখানে আল্টিমেটলি প্রেশার সরকারের তহবিল এবং জনগণের ওপর আসবে। এর ফলে জনগণের ক্রয়ক্ষমতায় চাপ যেমন বাড়বে, তেমনি উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাবে। একই সূত্রে বর্তমান মূল্যস্ফীতির ওপর আরো চাপ সৃষ্টি করবে। জনগণের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাবে এবং জীবনযাত্রার মান বিপর্যস্ত হবে। এ রকম আরো ব্যয় নন-প্রোডাকটিভ খাতে আমরা দেখতে পাই, যেগুলো প্রোডাকটিভ খাতে থাকতে পারত। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি বাজেট বাড়বে, বিশাল অঙ্ক হবে। তবে দেশের সত্যিকারের উন্নতি হচ্ছে কি না দেখতে হবে, অপচয় ও দুর্নীতি হচ্ছে কি না দেখতে হবে। চলতি অর্থবছরে দেখা গেল, এডিপি রিভাইজ্ড করে কমিয়ে আনা হয়েছে, এর পরও তা বাস্তবায়িত হয়নি। সেক্ষেত্রে বড় বাজেট দিয়ে ফোকাসটা নষ্ট করার দরকার কী ছিল? সীমিত আয়ের মধ্যে বাস্তবায়ন ক্ষমতার কথা চিন্তা করে বাজেট দিতে হবে। আগেই বলেছি, বড় কলেবরের এডিপি রিভাইজ্ড করে কমিয়েও বাস্তবায়িত হয়নি। আমার এ মুহূর্তে মনে পড়ছে, ৬০ থেকে ৭০ ভাগ বাস্তবায়িত হয়েছে। অন্যদিকে রাজস্ব খাত সম্পর্কে সারা বছরই সিদ্ধান্ত আসছে। অঙ্ক রিভাইজ্ড হতে থাকে। এ সবই হওয়া দরকার বাস্তবতাকে ভিত্তি করে। নির্দিষ্ট ফোকাস থাকা উচিত। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মানুষের উন্নয়নের জন্য বাজেট দিতে হবে। বিভিন্ন ইন্টারেস্ট থাকে বিভিন্ন সময়ে, তাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মানুষের উন্নয়ন হয় না। বাজেটে কিছু থাকে, যা অর্থবছরের শেষে রাজনৈতিক ইন্টারেস্টে দুর্নীতির মাধ্যমে ব্যয় হয়ে যায়। তাড়াহুড়ো করে বাস্তবায়ন করতে গিয়ে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। যতটুকু বাস্তবায়িত হওয়ার কথা, তা-ই বাজেটে থাকা দরকার।
কালের কণ্ঠ : আগামী অর্থবছরে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট ছাড়া আর কী বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া দরকার বলে আপনি মনে করেন?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী : আসলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, গ্যাস-বিদ্যুৎ_এগুলো মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে বিপর্যয় নেমে আসছে আর তার সঞ্চয় কমে যাচ্ছে। গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির সঠিক সাপ্লাই ছাড়া দেশের বিনিয়োগ সম্ভব নয়। বিনিয়োগ না হলে বাকি কাজ করতে পারছেন না। কর্মসংস্থান ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়। সার্বিক উন্নয়ন অসম্ভব। এ ছাড়া আছে অর্থনীতির ক্ষেত্রে মুদ্রাবাজারের সংকট। এটা বড় সংকট। এই সংকটের ফলে বিনিয়োগে ব্যাংকগুলো টাকা দিতে পারছে না। ফলে বাজেটে যত কিছুই করুন, বিনিয়োগ হবে না। ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। কৃষিতে অগ্রগতি একটা পর্যায়ে এসেছে। কিন্তু তার কর্মসংস্থান ও প্রবৃদ্ধি সীমিত আকারের। আসল গ্রোথ হতে হবে ম্যানুফ্যাকচারিং ও সার্ভিস সেকশনে। অন্যদিকে ব্যাংকের টাকার অভাবে বিনিয়োগ নেই। বিশ্বের অন্যান্য দেশে দিন দিন ডলার দুর্বল হচ্ছে, আর আমাদের টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়ছে। ফলে আমদানি খরচ বাড়বে। এতে দ্রব্যমূল্যের ওপর চাপ বৃদ্ধি পাবে। ডলারে লেনদেনের মাধ্যমে আমদানিকৃত খাদ্য থেকে শুরু করে মিল-কারখানার কাঁচামাল আসে। অর্থাৎ, মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ স্বাভাবিক। এতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আরো ভীষণভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হবে। বর্তমানে ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর বিশৃঙ্খল। কারণ শেয়ারবাজারে বিপর্যয় ঘটেছে। শত শত মানুষ পুঁজি হারিয়েছে। এসব মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমছে। এতে বিনিয়োগও কমে আসছে। কারণ তারা শেয়ারবাজার ছাড়াও তো কৃষি কিংবা অন্যান্য ছোট শিল্পের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করত। বিনিয়োগ এবং ক্রয়ক্ষমতা কমার সঙ্গে আছে ব্যাংকের টাকা না দিতে পারা। ইউনি পে-২-এর মাধ্যমে মানুষকে পথে বসানো হয়েছে। শত-হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে যারা, তারা ভালো আছে। অন্যদিকে অর্থনৈতিক ভূমিকায় আসতে পারছে না ক্ষতিগ্রস্তরা। তারপর একটা পর্যায়ে রাজনীতির কিছু কথা বলতেই হয়। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট ব্যর্থ হয়েছেন। আদালতের ওপর জনগণের আস্থা নেই। শেষ আস্থার জায়গা আজ প্রশ্নবিদ্ধ। কিন্তু বিনিয়োগ-অর্থনীতির জন্য সঠিক বিচারব্যবস্থা তথা আইনের শাসনের গুরুত্ব অপরিসীম। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী আইনের শাসনের অভাব দেখলে নিরাপদ অনুভব করে না। বিনিয়োগ করে নিরাপত্তা পেল না, তাহলে হবে? ঘুষ-চাঁদাবাজি-দুর্নীতি যে পরিমাণে বেড়েছে, এগুলো হিসাব করে ব্যবসায়ী হিসেবে যে আয় হচ্ছে, তা আর বিনিয়োগে খাটাচ্ছে না কেউ। কারণ তাতে তাদের সংশয় আছে। বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সমস্যায় ব্যবসায়ীর খরচ বেড়ে গেছে। বাজেট বড় হলেও চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি এবং সিন্ডিকেট করে এক কোটি টাকার প্রজেক্ট দুই কোটি করে নিলে অপচয় হওয়াটাই স্বাভাবিক। সেটার সঙ্গে জড়িত সবাই। এসব ইনভেস্টমেন্টের রিটার্ন নেই। ফলে এর চাপ সার্বিকভাবে সাধারণ মানুষ এবং সরকারের তহবিলের ওপর পড়ছে।
কালের কণ্ঠ : চট্টগ্রামের উন্নয়নে জাতীয় বাজেটের গুরুত্ব কতটুকু?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী : কেবল চট্টগ্রাম বলে নয়, দেশের যেকোনো সম্ভাবনাময় স্থানের জন্য বাজেটে আলাদা বরাদ্দ থাকতে পারে। জাতীয় উন্নয়নের সম্ভাবনাকে মাথায় রেখে দেশের কিছু এলাকা বেশি গুরুত্ব পেতে পারে। এদিক থেকে চট্টগ্রামের সম্ভাবনাকে মাথায় রাখতে হবে। চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক ও শিল্পনগরী। এদিক থেকে তার আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। দেখা যায়, বিশ্বের পোর্টসিটিগুলোতে শিল্প বিকশিত হয়েছে। তবে বন্দরনগরীর ভূমির মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যক্তিগত পর্যায়ে শিল্প স্থাপন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার সেই দায়িত্ব নিয়ে অনেক শিল্প এলাকা গড়ে তুললে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা সম্ভব। ইন্ডাস্ট্রিয়াল লিংকেজ সৃষ্টি করা প্রয়োজন। চট্টগ্রামে পর্যটন, মৎস্য সম্পদ এবং প্রাকৃতিক লবণ শিল্পের সম্ভাবনা আছে। চট্টগ্রামের সঙ্গে বিশ্বের পূর্বাঞ্চলের কানেক্টিভিটিকে মাথায় রাখতে হবে। গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ আমাদের অনেক দিনের দাবি। বাংলাদেশকে উন্নয়নের সুযোগ নিতে হবে চট্টগ্রামকে কেন্দ্র করে। এ রকম যেকোনো অঞ্চলের জন্য নির্দিষ্ট বাজেট থাকা দরকার। শিপ বিল্ডিং এবং ব্রেকিং ইন্ডাস্ট্রির জন্য জায়গাগুলো এরিয়ামার্ক করতে হবে। অবকাঠামোগত সুযোগ সৃষ্টি করতে যা প্রয়োজন, তা বাজেটে থাকতে পারে।
কালের কণ্ঠ : অর্থমন্ত্রী বলেছেন, জেলা বাজেটের মাধ্যমে জনপ্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণ সম্ভব? চট্টগ্রামকে কেন্দ্র করে এ সম্পর্কে আপনার মতামত বলুন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী : জেলা বাজেটের চেয়ে আমার কাছে যেটা গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো স্থানীয় সরকারকে সমৃদ্ধ করা। উন্নয়ন সেখান থেকে শুরু হওয়া দরকার। তাদের প্রজেক্ট বাস্তবায়নে গুরুত্ব দিতে হবে। চট্টগ্রামের যে সম্ভাবনা আছে, তাকে স্থানীয় সরকার ভালোভাবেই চিহ্নিত করতে পারবে; এবং বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করে সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারবে।
কালের কণ্ঠ : কালো টাকা সাদা করার বিষয়ে নানা রকম কথা আসছে। এ বিষয়ে যদি কিছু বলেন?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী : কালো টাকা সাদা করার পক্ষপাতী আমি নই। এটা নীতির প্রশ্ন। যারা নিয়মিত ট্যাঙ্ দিচ্ছে, সঠিক পথে ব্যবসা-বাণিজ্য করছে, তাদের জন্য এটা হুমকিস্বরূপ। কালো টাকা আয় করে পার পেয়ে যাচ্ছে অনেকে। এর মাধ্যমে সামাজিক পরিবর্তন সম্ভব নয়। এ প্রক্রিয়ায় সরকারের পক্ষ থেকে সমর্থন দেওয়ার দরকার নেই।
কালের কণ্ঠ : দেশের অধিকাংশ ব্যাংক উৎপাদন খাতে বিনিয়োগ না করে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করছে। এ বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী : ব্যাংকগুলো নিয়ন্ত্রণ করা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাজ। ব্যাংকিং ও কম্পানি ল' পরিবর্তন করতে হবে। মনিটরিং বাড়াতে হবে। মানি সাপ্লাই বেড়েছে, কিন্তু শিল্পে বিনিয়োগ হচ্ছে না। প্রাইভেট সেক্টরে ২৮-২৯ ভাগ মানি সাপ্লাই হচ্ছে। কোথায় গেল টাকা? বাংলাদেশ ব্যাংককে শেয়ারবাজার বা অন্য সব দিকে লক্ষ রাখতে হবে। এটা বাজেটের কিছু নয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর সীমিত বিনিয়োগ করা উচিত। ব্যাংকের কাজ স্বতন্ত্র। শিল্প বিনিয়োগ খাতে ইনভেস্টমেন্ট বাড়িয়ে ব্যাংকগুলো সার্ভিস দিতে পারে ব্রোকারেজ হাউসের মাধ্যমে। সরাসরি শেয়ারবাজারে যাওয়ার দরকার নেই। প্রথমে শিল্প গড়ে তুলতে হবে। সেখান থেকে আয়কৃত অর্থই শেয়ারবাজারে যাবে।
কালের কণ্ঠ : দেশে নতুন কর্মসংস্থান কিভাবে সৃষ্টি হতে পারে?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী : নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে, আয় বাড়াতে হবে। আয়ের মাধ্যমে আবার দ্রব্যমূল্য বেড়ে গেলে সঞ্চয় তো দূরের কথা, দৈনন্দিন জীবনযাপনও সম্ভব নয়। এ জন্য দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। অন্য দেশের দৃষ্টান্ত টানা ঠিক নয়। ভারতের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেশি। এ জন্য আমার দেশের ক্রয়ক্ষমতার দিকে দৃষ্টি দিয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দেশের উন্নয়নের জন্য জীবনযাত্রার মান ঠিক রাখতে হবে।
কালের কণ্ঠ : জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়ের বাইরে রাজস্ব বাড়ানোর জন্য সরকারকে আপনি কী পরামর্শ দেবেন?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী : বিভিন্ন ফি রিভিউ করা দরকার। যেসব ফি অনেক বছর হয়ে গেছে, সেগুলো বাড়াতে হবে। তবে নন-ট্যাঙ্ ইনকাম বাড়াতে হলে স্বচ্ছতা বাড়াতে হবে। সরকার যা পায়, তার চেয়ে অফিসের কর্মচারীরা দুর্নীতির মাধ্যমে বেশি পায়। এসব দুর্নীতি রোধ করার জন্য অফিসে না গিয়ে অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
কালের কণ্ঠ : করের পরিধি বাড়ানো দরকার কি?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী : এটা ঠিক, করের পরিধি বাড়াতে হবে। তবে সব কিছু মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হবে। এখানে ভ্যাটের রেট হাই। ভ্যাটের চাপ ধনী-গরিবের ওপর একই। যেসব পণ্য সাধারণ মানুষ কেনে, সেগুলোর কর কমাতে হবে। ইনকাম ট্যাঙ্ বাড়াতে হবে। কর মানুষ কেন দিচ্ছে, তার বিনিময়ে কী পাচ্ছে_এটা পরিষ্কার থাকা দরকার। প্রাইভেট সেকশনে বিনিয়োগে রিটার্ন বেশি, কর্মসংস্থান বেশি। এখানে সুযোগ দিতে হবে বেশি। যারা আয় করছে, তারা ট্যাঙ্ দিয়ে জীবন নির্বাহের পর যেন বিনিয়োগ করতে পারে, এই সুযোগ রাখতে হবে।
কালের কণ্ঠ : দেশের কর প্রশাসন সম্পর্কে আপনার মতামত কী?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী : কর প্রশাসনে স্বচ্ছতা আনতে হবে। অনলাইনের ব্যবস্থা করতে হবে। রাষ্ট্রব্যবস্থা-করব্যবস্থা জনস্বার্থে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অপচয়-দুর্নীতি রোধ করে কতটুকু ভালো করতে পারছে, এটাই গুরুত্বপূর্ণ। সব কিছুই জবাবদিহিতায় আনতে হবে। কর দিয়ে যেন ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান গৌরবান্বিত হয়, এ ধরনের ব্যবস্থা থাকা দরকার।
কালের কণ্ঠ : বিভিন্ন পর্যায়ের প্রাক-বাজেট আলোচনা-সমালোচনা থেকে এবারকার বাজেট কেমন হবে বলে আপনি মনে করেন? এটা কি আদৌ জনকল্যাণমূলক ও উন্নয়নমুখী বাজেট হবে?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী : প্রাক-বাজেট আলোচনা সুবিধাপ্রাপ্ত অর্গানাইজ্ড গ্রুপ করে থাকে। এতে সরকারি দলের পক্ষপাতমূলক সুবিধা আদায়ের প্রচেষ্টা আছে। যারা কোনো গ্রুপে নেই, তারা অবহেলিত। এ ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা আছে। বাজেটকে জনকল্যাণমূলক ও উন্নয়নমূলক হতে হলে স্থানীয় সরকারের তৃণমূল পর্যায়ের অংশগ্রহণ দরকার। তাদের মাধ্যমে প্রজেক্ট তৈরি করে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা সম্ভব। যেমন, চট্টগ্রামের জন্য জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসনের প্রকল্প স্থানীয় সরকারের এখতিয়ারে হবে। কারণ জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয় তাদের।
কালের কণ্ঠ : আপনাকে ধন্যবাদ।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী : আপনাকেও ধন্যবাদ।

No comments

Powered by Blogger.