পবিত্র কোরআনের আলো-আল্লাহর পথে বের হয়ে মৃত্যুবরণ করলে প্রতিদান দেবেন আল্লাহ নিজ হাতে
৯৮. ইল্লাল মুছতাদ্আ'ফীনা মিনার্ রিজালি ওয়ান নিছায়ি ওয়ালবিলদানি লা-ইয়াছতাত্বীঊনা হীলাতান ওয়া লা-ইয়াহ্তাদূনা ছাবীলা। ৯৯. ফাউলা-য়িকা আ'ছা-ল্লাহু আনইয়্যা'ফুওয়া আ'নহুম; ওয়া কানাল্লাহু আ'ফুওয়্যান গাফূরা। ১০০. ওয়া মান ইঁয়্যুহা-জিরু ফী ছাবীলিল্লাহি ইয়াজিদ ফিল আরদ্বি মুরা-গামান কাছীরান ওঁয়্যাছাআ'হ; ওয়া মান ইয়্যাখরুজ মিম্ বাইতিহি
মুহাজিরান ইলাল্লাহি ওয়া রাসূলিহি ছুম্মা ইউদ্রিকহুল মাওতু ফাক্বাদ ওয়াক্বাআ' আজরুহূ আ'লাল্লাহি; ওয়া কানাল্লাহু গাফূরার্ রাহীমা।
১০১. ওয়া ইযা দ্বারাবতুম ফিল আরদ্বি ফালাইছা আ'লাইকুম জুনাহুন আন তাক্বসূরূ মিনাস্ সালাতি ইন খিফ্তুম আন ইয়্যাফ্তিনাকুমুল্লাযীনা কাফারূ-; ইন্নাল কাফিরীনা কা-নূ লাকুম আ'দুয়্যাম্ মুবীনা। [সুরা : আন নিসা, আয়াত : ৯৮-১০১]
অনুবাদ : ৯৮. তবে সেসব নারী, পুরুষ ও শিশু যারা শারীরিকভাবে অক্ষম এবং কোথাও যাওয়ার কোনো উপকরণ নেই, তাদের কথা আলাদা।
৯৯. এরা হচ্ছে সেসব মানুষ, যারা হয়তো আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা লাভ করবেন। অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা পাপমোচনকারী ও পরম ক্ষমাশীল।
১০০. আর যারা আল্লাহর পথে হিজরত করার জন্য বের হবে, তারা পৃথিবীতে প্রশস্ত জায়গা ও অগাধ ধন-সম্পদ লাভ করবে। যখন কোনো ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসুলের উদ্দেশে হিজরত করার জন্য বাড়ি থেকে বের হয় এবং এ অবস্থায় মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তার পুরস্কার দেওয়ার দায়িত্ব আল্লাহর ওপর। আল্লাহ তায়ালা পরম ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
১০১. তোমরা যখন সফরে বের হবে, তখন যদি এমন আশঙ্কা থাকে যে কাফেররা নামাজের সময় তোমাদের বিপদগ্রস্ত করে ফেলবে, তাহলে নামাজ সংক্ষিপ্ত করে নাও_এতে কোনো দোষ নেই। নিঃসন্দেহে কাফেররা তোমাদের প্রকাশ্য দুশমন।
ব্যাখ্যা : আগের আয়াতে সক্ষম ও সামর্থ্যবান হওয়া সত্ত্বেও যারা হিজরত করেনি, সেসব মুসলমানকে তিরস্কার করা হয়েছে এবং শাস্তির কথা শোনানো হয়েছে। ৯৮ ও ৯৯ নম্বর আয়াতে বলা হচ্ছে_যারা দুর্বল, অক্ষম ও সামর্থ্যহীন, সেই সঙ্গে নারী ও শিশু_তাদের হিজরত না করার অপরাধে দায়ী করা হবে না এবং ক্ষমা করে দেওয়া হবে সেই প্রসঙ্গ। এখানে হিজরতের গুরুত্ব সম্পর্কে কিছু কথা বলা প্রয়োজন। মক্কা থেকে মুসলমানদের মদিনায় হিজরত করা সেই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল, শুধু মক্কার কাফেরদের অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচার জন্য নয়। ইসলাম রক্ষা করা এবং এর প্রচার ও প্রসারের জন্যও হিজরত একান্ত প্রয়োজন ছিল। যারা সম্পদের মায়া এবং সৎ সাহসের অভাবে যারা সামর্থ্যবান হওয়া সত্ত্বেও হিজরত করেনি, তারা নিঃসন্দেহে দুর্বল ইমানের লোক।
কিন্তু অক্ষম, বিশেষ করে বৃদ্ধ, নারী ও শিশু_যাদের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নেই বা সক্ষমতা নেই, উপযুক্ত যানবাহন যেমন উট, ঘোড়া, গাধা ইত্যাদি নেই_তাদের ওপর হিজরতের কর্তব্য বর্তায়নি। এই আয়াতগুলোতে তাদের ক্ষমা করে দেওয়ার কথাই বর্ণনা করা হয়েছে।
হিজরত নিঃসন্দেহে কঠিন ত্যাগ ও কঠিন কাজ। ১০০ নম্বর আয়াতে এই কাজ যাঁরা করবেন, তাঁদের উচ্চ মর্যাদা এবং ইহকাল ও পরকালে তাঁদের অপরিমেয় প্রাপ্তির কথা বলা হয়েছে। সহায়-সম্পদের মায়া ত্যাগ করে যাঁরা হিজরতের পথে রওনা হবেন তাঁরা ইহ ও পরকালে অন্তত দুটি সৌভাগ্য লাভ করবেন। ইহকালে তাঁরা আরো প্রশস্ত দুনিয়ায় গিয়ে হাজির হবেন, যেখানে ভাগ্য গড়ার আরো অনেক সুযোগ-সুবিধা তাঁরা পাবেন, আর পরকালে তাঁরা অপরিমেয় সৌভাগ্যের অধিকারী হবেন_যদি পথে মারাও যান। অর্থাৎ পথিমধ্যে মারা গেলেও তাঁরা মুহাজিরের মর্যাদা পাবেন এবং তাঁদের পরিণাম আল্লাহ দেবেন নিজ হাতে।
১০১ নম্বর আয়াতে সফররত অবস্থায় ফরজ নামাজ সংক্ষিপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ চার রাকাত নামাজ দুই রাকাত পড়তে হবে। শরিয়তের সংজ্ঞা অনুযায়ী মুসাফির হচ্ছে সেই ব্যক্তি যে নিজের আবাসস্থল থেকে অন্তত তিন দিনের পথ অর্থাৎ ৪৮ মাইল দূরে যাওয়ার জন্য বের হয় এবং পনেরো দিনের বেশি কোনো এক জায়গায় অবস্থান না করে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
১০১. ওয়া ইযা দ্বারাবতুম ফিল আরদ্বি ফালাইছা আ'লাইকুম জুনাহুন আন তাক্বসূরূ মিনাস্ সালাতি ইন খিফ্তুম আন ইয়্যাফ্তিনাকুমুল্লাযীনা কাফারূ-; ইন্নাল কাফিরীনা কা-নূ লাকুম আ'দুয়্যাম্ মুবীনা। [সুরা : আন নিসা, আয়াত : ৯৮-১০১]
অনুবাদ : ৯৮. তবে সেসব নারী, পুরুষ ও শিশু যারা শারীরিকভাবে অক্ষম এবং কোথাও যাওয়ার কোনো উপকরণ নেই, তাদের কথা আলাদা।
৯৯. এরা হচ্ছে সেসব মানুষ, যারা হয়তো আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা লাভ করবেন। অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা পাপমোচনকারী ও পরম ক্ষমাশীল।
১০০. আর যারা আল্লাহর পথে হিজরত করার জন্য বের হবে, তারা পৃথিবীতে প্রশস্ত জায়গা ও অগাধ ধন-সম্পদ লাভ করবে। যখন কোনো ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসুলের উদ্দেশে হিজরত করার জন্য বাড়ি থেকে বের হয় এবং এ অবস্থায় মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তার পুরস্কার দেওয়ার দায়িত্ব আল্লাহর ওপর। আল্লাহ তায়ালা পরম ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
১০১. তোমরা যখন সফরে বের হবে, তখন যদি এমন আশঙ্কা থাকে যে কাফেররা নামাজের সময় তোমাদের বিপদগ্রস্ত করে ফেলবে, তাহলে নামাজ সংক্ষিপ্ত করে নাও_এতে কোনো দোষ নেই। নিঃসন্দেহে কাফেররা তোমাদের প্রকাশ্য দুশমন।
ব্যাখ্যা : আগের আয়াতে সক্ষম ও সামর্থ্যবান হওয়া সত্ত্বেও যারা হিজরত করেনি, সেসব মুসলমানকে তিরস্কার করা হয়েছে এবং শাস্তির কথা শোনানো হয়েছে। ৯৮ ও ৯৯ নম্বর আয়াতে বলা হচ্ছে_যারা দুর্বল, অক্ষম ও সামর্থ্যহীন, সেই সঙ্গে নারী ও শিশু_তাদের হিজরত না করার অপরাধে দায়ী করা হবে না এবং ক্ষমা করে দেওয়া হবে সেই প্রসঙ্গ। এখানে হিজরতের গুরুত্ব সম্পর্কে কিছু কথা বলা প্রয়োজন। মক্কা থেকে মুসলমানদের মদিনায় হিজরত করা সেই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল, শুধু মক্কার কাফেরদের অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচার জন্য নয়। ইসলাম রক্ষা করা এবং এর প্রচার ও প্রসারের জন্যও হিজরত একান্ত প্রয়োজন ছিল। যারা সম্পদের মায়া এবং সৎ সাহসের অভাবে যারা সামর্থ্যবান হওয়া সত্ত্বেও হিজরত করেনি, তারা নিঃসন্দেহে দুর্বল ইমানের লোক।
কিন্তু অক্ষম, বিশেষ করে বৃদ্ধ, নারী ও শিশু_যাদের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নেই বা সক্ষমতা নেই, উপযুক্ত যানবাহন যেমন উট, ঘোড়া, গাধা ইত্যাদি নেই_তাদের ওপর হিজরতের কর্তব্য বর্তায়নি। এই আয়াতগুলোতে তাদের ক্ষমা করে দেওয়ার কথাই বর্ণনা করা হয়েছে।
হিজরত নিঃসন্দেহে কঠিন ত্যাগ ও কঠিন কাজ। ১০০ নম্বর আয়াতে এই কাজ যাঁরা করবেন, তাঁদের উচ্চ মর্যাদা এবং ইহকাল ও পরকালে তাঁদের অপরিমেয় প্রাপ্তির কথা বলা হয়েছে। সহায়-সম্পদের মায়া ত্যাগ করে যাঁরা হিজরতের পথে রওনা হবেন তাঁরা ইহ ও পরকালে অন্তত দুটি সৌভাগ্য লাভ করবেন। ইহকালে তাঁরা আরো প্রশস্ত দুনিয়ায় গিয়ে হাজির হবেন, যেখানে ভাগ্য গড়ার আরো অনেক সুযোগ-সুবিধা তাঁরা পাবেন, আর পরকালে তাঁরা অপরিমেয় সৌভাগ্যের অধিকারী হবেন_যদি পথে মারাও যান। অর্থাৎ পথিমধ্যে মারা গেলেও তাঁরা মুহাজিরের মর্যাদা পাবেন এবং তাঁদের পরিণাম আল্লাহ দেবেন নিজ হাতে।
১০১ নম্বর আয়াতে সফররত অবস্থায় ফরজ নামাজ সংক্ষিপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ চার রাকাত নামাজ দুই রাকাত পড়তে হবে। শরিয়তের সংজ্ঞা অনুযায়ী মুসাফির হচ্ছে সেই ব্যক্তি যে নিজের আবাসস্থল থেকে অন্তত তিন দিনের পথ অর্থাৎ ৪৮ মাইল দূরে যাওয়ার জন্য বের হয় এবং পনেরো দিনের বেশি কোনো এক জায়গায় অবস্থান না করে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments