এশিয়া-প্যাসিফিক শান্তি সম্মেলন-চাই শান্তির সম্মিলিত প্রয়াস
গত ৪ জুন থেকে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো দুই দিনব্যাপী এশিয়া-প্যাসিফিক শান্তি সম্মেলন। সম্মেলনে আসা দেশগুলোর প্রতিনিধিরা উন্নয়নের প্রধান শর্ত হিসেবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। সম্মেলনের উদ্বোধন করতে গিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দারিদ্র্যকে শান্তির প্রধান শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে দারিদ্র্য বিমোচনে সম্মিলিত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।
পাশাপাশি মৌলবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি এ কাজগুলো করে যাবেন।
প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, 'দারিদ্র্য ও শান্তির সহাবস্থান সম্ভব নয়।' দারিদ্র্য ঈশ্বরপ্রদত্ত বা জন্মগত কোনো ব্যাপার নয়। সমাজে ন্যায়বিচারের অভাব হলে, শোষণ-বঞ্চনা বেড়ে গেলে এবং রাষ্ট্র দরিদ্রদের সহায়তা ও নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হলে স্বাভাবিকভাবেই দারিদ্র্য বেড়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী এই চরম সত্যটি উপলব্ধি করেছেন। আমরা আশাবাদী, তিনি বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচনে সত্যিকার অর্থেই ভূমিকা রেখে যাবেন। ভূমিকা রাখবেন অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর প্রতিনিধিরাও। দারিদ্র্য নিরসনে যে কাজগুলো আমাদের করতে হবে, তা অনেকেরই জানা। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ভূমিকাই অগ্রগণ্য। রাষ্ট্রকে অবশ্যই সংবিধানে স্বীকৃত মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো পূরণ করতে হবে। তাদের যেমন খাদ্য ও বাসস্থানের নিরাপত্তা দিতে হবে, তেমনি তাদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা দিতে হবে। দরিদ্র বলে কেউ যদি শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়, তার মেধা ও দক্ষতা বিকাশের সুযোগ না পায় তাহলে তার পক্ষে দারিদ্র্য থেকে উত্তরণের সুযোগ থাকবে না। একইভাবে খাদ্যাভাবে কিংবা অখাদ্য-কুখাদ্য খেয়ে অপুষ্টি ও রোগবালাইয়ের শিকার হয়, উপযুক্ত স্বাস্থ্যসেবা না পায়, তবে তার কর্মক্ষমতা বহুলাংশে হ্রাস পাবে। শারীরিক সুস্থতা না থাকলেও কারো পক্ষে শ্রম দিয়ে দারিদ্র্য নিরসন করার সুযোগ থাকে না। আবার দেশে যদি সুশাসন না থাকে, অর্থাৎ গণতন্ত্র, আইনের শাসন, জবাবদিহিতা ও মানবাধিকার নিশ্চিত না হয়, তাহলেও সে দেশের পক্ষে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। মানুষ দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হয়। আমরা আশা করি, প্রধানমন্ত্রী তাঁর কথা কাজে পরিণত করার চেষ্টা করে যাবেন, শান্তি বিনষ্টকারী সব অশুভ শক্তিকে কঠোরভাবে দমন করবেন।
কালের কণ্ঠের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপালের (ইউনিফাইড মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ও শীর্ষ নেতা মাধব কুমার নেপাল একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, 'কোনো দেশে বিশেষ কোনো ধর্ম রাষ্ট্রধর্ম থাকলে অন্য ধর্মের অনুসারীরা সমান মর্যাদা পান না।' তিনি নেপালের উদাহরণ টেনে বলেন, 'কয়েক বছর আগেও নেপাল ছিল বিশ্বে সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত একমাত্র হিন্দু রাষ্ট্র। সময়ের পালাবদলে রাষ্ট্রধর্ম বাদ দিয়ে নেপাল নাম লিখিয়েছে উদার ও প্রগতিশীল দেশগুলোর তালিকায়।' বিষয়টি আমাদের দেশের নীতিনির্ধারকরা ভেবে দেখতে পারেন। আবার এ কথাও অস্বীকার করার উপায় নেই যে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির সুযোগ থাকায়, ক্ষেত্রবিশেষে উৎসাহিত করায় দেশে দেশে আজ মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটছে এবং শান্তি বিনষ্ট হচ্ছে।
মানুষ সবার আগে শান্তি চায়। এক বেলা কম খেয়ে হলেও মানুষ নিরাপদে ঘুমাতে চায়। অথচ বিশ্বব্যাপী এই শান্তি আজ সুদূরপরাহত। একদিকে সাম্রাজ্যবাদ ও বেনিয়া পুঁজির চক্রান্ত, অন্যদিকে ধর্মীয় উন্মাদনা ও তথাকথিত নানা মতবাদের সশস্ত্র রূপ বিশ্বকে ক্রমেই অশান্ত করে চলেছে। যার অবশ্যম্ভাবী ফল হচ্ছে বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন ব্যাহত হওয়া, প্রগতি থেমে যাওয়া, দারিদ্র্য বৃদ্ধি এবং উপজাত হিসেবে সংঘাত ও অশান্তি বৃদ্ধি। এই অশুভ ধারাকে ঠেকাতে শুধু রাষ্ট্র নয়, সচেতন ও শান্তিকামী প্রত্যেককেই এগিয়ে আসতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, 'দারিদ্র্য ও শান্তির সহাবস্থান সম্ভব নয়।' দারিদ্র্য ঈশ্বরপ্রদত্ত বা জন্মগত কোনো ব্যাপার নয়। সমাজে ন্যায়বিচারের অভাব হলে, শোষণ-বঞ্চনা বেড়ে গেলে এবং রাষ্ট্র দরিদ্রদের সহায়তা ও নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হলে স্বাভাবিকভাবেই দারিদ্র্য বেড়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী এই চরম সত্যটি উপলব্ধি করেছেন। আমরা আশাবাদী, তিনি বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচনে সত্যিকার অর্থেই ভূমিকা রেখে যাবেন। ভূমিকা রাখবেন অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর প্রতিনিধিরাও। দারিদ্র্য নিরসনে যে কাজগুলো আমাদের করতে হবে, তা অনেকেরই জানা। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ভূমিকাই অগ্রগণ্য। রাষ্ট্রকে অবশ্যই সংবিধানে স্বীকৃত মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো পূরণ করতে হবে। তাদের যেমন খাদ্য ও বাসস্থানের নিরাপত্তা দিতে হবে, তেমনি তাদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা দিতে হবে। দরিদ্র বলে কেউ যদি শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়, তার মেধা ও দক্ষতা বিকাশের সুযোগ না পায় তাহলে তার পক্ষে দারিদ্র্য থেকে উত্তরণের সুযোগ থাকবে না। একইভাবে খাদ্যাভাবে কিংবা অখাদ্য-কুখাদ্য খেয়ে অপুষ্টি ও রোগবালাইয়ের শিকার হয়, উপযুক্ত স্বাস্থ্যসেবা না পায়, তবে তার কর্মক্ষমতা বহুলাংশে হ্রাস পাবে। শারীরিক সুস্থতা না থাকলেও কারো পক্ষে শ্রম দিয়ে দারিদ্র্য নিরসন করার সুযোগ থাকে না। আবার দেশে যদি সুশাসন না থাকে, অর্থাৎ গণতন্ত্র, আইনের শাসন, জবাবদিহিতা ও মানবাধিকার নিশ্চিত না হয়, তাহলেও সে দেশের পক্ষে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। মানুষ দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হয়। আমরা আশা করি, প্রধানমন্ত্রী তাঁর কথা কাজে পরিণত করার চেষ্টা করে যাবেন, শান্তি বিনষ্টকারী সব অশুভ শক্তিকে কঠোরভাবে দমন করবেন।
কালের কণ্ঠের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপালের (ইউনিফাইড মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ও শীর্ষ নেতা মাধব কুমার নেপাল একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, 'কোনো দেশে বিশেষ কোনো ধর্ম রাষ্ট্রধর্ম থাকলে অন্য ধর্মের অনুসারীরা সমান মর্যাদা পান না।' তিনি নেপালের উদাহরণ টেনে বলেন, 'কয়েক বছর আগেও নেপাল ছিল বিশ্বে সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত একমাত্র হিন্দু রাষ্ট্র। সময়ের পালাবদলে রাষ্ট্রধর্ম বাদ দিয়ে নেপাল নাম লিখিয়েছে উদার ও প্রগতিশীল দেশগুলোর তালিকায়।' বিষয়টি আমাদের দেশের নীতিনির্ধারকরা ভেবে দেখতে পারেন। আবার এ কথাও অস্বীকার করার উপায় নেই যে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির সুযোগ থাকায়, ক্ষেত্রবিশেষে উৎসাহিত করায় দেশে দেশে আজ মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটছে এবং শান্তি বিনষ্ট হচ্ছে।
মানুষ সবার আগে শান্তি চায়। এক বেলা কম খেয়ে হলেও মানুষ নিরাপদে ঘুমাতে চায়। অথচ বিশ্বব্যাপী এই শান্তি আজ সুদূরপরাহত। একদিকে সাম্রাজ্যবাদ ও বেনিয়া পুঁজির চক্রান্ত, অন্যদিকে ধর্মীয় উন্মাদনা ও তথাকথিত নানা মতবাদের সশস্ত্র রূপ বিশ্বকে ক্রমেই অশান্ত করে চলেছে। যার অবশ্যম্ভাবী ফল হচ্ছে বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন ব্যাহত হওয়া, প্রগতি থেমে যাওয়া, দারিদ্র্য বৃদ্ধি এবং উপজাত হিসেবে সংঘাত ও অশান্তি বৃদ্ধি। এই অশুভ ধারাকে ঠেকাতে শুধু রাষ্ট্র নয়, সচেতন ও শান্তিকামী প্রত্যেককেই এগিয়ে আসতে হবে।
No comments