সিরিয়ায় দমন বন্ধে সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব পাস

সিরিয়ায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-পীড়ন দ্রুত বন্ধ ও প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব পাস হয়েছে। প্রস্তাবে বেসামরিক জনগণের ওপর দমন-পীড়নের তীব্র নিন্দা জানানো হয়।


গত বৃহস্পতিবার সাধারণ পরিষদে পাস হওয়া এ প্রস্তাবের পক্ষে ১৩৭ ভোট পড়ে। চীন, রাশিয়া, ইরানসহ ১২টি দেশ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়। ১৭টি দেশ ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে।
সিরিয়া সাধারণ পরিষদে পাস হওয়া এ প্রস্তাব মানতে বাধ্য নয়। এ ছাড়া নিরাপত্তা পরিষদে এ প্রস্তাব পাস হলে দেশটির ওপর যেমন চাপ পড়ত, সাধারণ পরিষদে পাস হওয়ায় তেমন চাপ পড়বে না। সে কারণেই কি না, গতকাল শুক্রবারও হোমস শহরে বড় ধরনের অভিযান চালিয়েছে সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী।
এদিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, সাধারণ পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাব সহিংসতা বন্ধে সিরিয়ার প্রতি ‘সুস্পষ্ট বার্তা’।
এর আগে নিরাপত্তা পরিষদে এ প্রস্তাব দুবার উত্থাপন করা হয়। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যরাষ্ট্র চীন ও রাশিয়ার ভেটোর কারণে তা নাকচ হয়ে যায়।
সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব পাস হওয়ার পর জাতিসংঘে নিযুক্ত মিসরের উপরাষ্ট্রদূত ওসামা আবদেলখালেক বলেন, এ প্রস্তাব পাসের মধ্য দিয়ে দামেস্কর প্রতি ‘দ্ব্যর্থহীন বার্তা’ পাঠানো হলো। বিশ্ব সম্প্রদায়ের কথা শোনার এটাই তাদের উপযুক্ত সময়।
তবে জাতিসংঘে নিযুক্ত সিরিয়ার রাষ্ট্রদূত বাশার জাফরি প্রস্তাব পাস হওয়াকে তাঁর দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল উল্লেখ করে বলেন, দামেস্ক যখন নতুন সংবিধানের জন্য গণভোট আয়োজনে ‘সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর’ সঙ্গে লড়াই করছে, তখন সাধারণ পরিষদে এমন একটি প্রস্তাব পাস করা হলো। তিনি অভিযোগ করেন, সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়কে আন্তর্জাতিক বিষয়ে পরিণত করতে পশ্চিমারা আরব লিগকে দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করেছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার দূত ভিতালি চুরকিন বলেন, সাধারণ পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাবে বেশ কিছু সংশোধনী আনার প্রস্তাব দিয়েছিল মস্কো। কিন্তু প্রস্তাবে এসব অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তিনি এ প্রস্তাবকে ‘ভারসাম্যহীন’ আখ্যা দিয়ে বলেন, এতে সিরিয়ার নেতৃত্বকে একঘরে করে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ না করেই রাজনৈতিক সমঝোতার ফর্মুলা বাইরে থেকে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, এটি একটি সার্বভৌম দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার শামিল বলে তাঁরা মনে করেন।
ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটি সিরিয়ায় সহিংসতা বন্ধের নতুন পদক্ষেপ। জাতিসংঘের মার্কিন দূত সুসান রাইস বলেন, প্রস্তাব পাসের মাধ্যমে এ বার্তা পাঠানো হলো, ‘সারা বিশ্ব সিরিয়ার জনগণের সঙ্গে রয়েছে।’
হোমস শহরে গত দুই সপ্তাহের মধ্যে গতকাল বড় ধরনের অভিযান চালিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। খালদিয়েহ ও বায়াদা এলাকায় ব্যাপক রকেট হামলা চালানো হয়।
জেনারেল কমিশন অব দ্য সিরিয়ান রেভল্যুশনের হাদি আবদুল্লাহ বলেন, ১৪ দিনের মধ্যে এটি ছিল সবচেয়ে বড় ধরনের অভিযান। প্রতি চার মিনিটে একটি করে রকেট ছোড়া হয়েছে। বিরোধী কর্মীরা জানান, গতকাল হোমস শহরের আকাশে বিপুলসংখ্যক সামরিক বিমান ও পর্যবেক্ষক হেলিকপ্টার দেখা যায়। ইউটিউবে দেওয়া ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, হোমস শহরে ট্যাংক নিয়ে অভিযান চালাচ্ছে সেনারা। এএফপি,

No comments

Powered by Blogger.