ধরাশায়ী ইংলিশ সিংহরা-চট্টগ্রামে প্রথম ওয়ানডেতে ইংল্যান্ড 'এ' দলকে ৬ উইকেটে হারাল বাংলাদেশ 'এ' দল by রুবেল খান

দু'দিন আগে প্র্যাকটিস ম্যাচে বিসিবি একাদশকে পাত্তাই দেয়নি ইংলিশ লায়ন্স। ম্যাচটি ৪ উইকেটে জিতেছিল লায়ন্সরা। তবে জোড়াতালির দল নিয়ে গতকাল প্রথম সুযোগেই প্রতিশোধ নিয়েছে বাংলাদেশ 'এ' দল। ইংলিশ সিংহদের বিপক্ষে ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটি গতকাল ৬ উইকেটে জিতে নিয়েছে বেঙ্গল টাইগাররা। ম্যাচটিকে একতরফা বানিয়ে ১৭ ওভার বাকি থাকতেই ৬ উইকেট অক্ষত রেখে জয়ের বন্দরে নোঙর করে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের


নেতৃত্বাধীন স্বাগতিকরা। জয় পেয়ে সতীর্থদের প্রশংসা করলেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। 'এই ম্যাচে আমাদের বোলাররা ভালো বল করেছে। ব্যাটসম্যানরাও রান পেয়েছে। এটা পুরো সিরিজে ধরে রাখতে চাই। সে সঙ্গে সিরিজটি জিততে চাই।'
শীতের সকালে চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম ছিল কুয়াশার চাদরে ঢাকা। তাই সূর্যের দেখাও মিলেছে অনেক দেরিতে। পেস বোলারদের সহায়ক আবহাওয়ায় টস জিতলে ফিল্ডিংটাই আগে বেছে নিতেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। টস না জিতলেও তাকে সেই সুযোগ করে দেন ইংল্যান্ড লায়ন্স দলপতি জেমস টেইলর। আর প্রাপ্ত সুযোগ কাজে লাগাতে মোটেই ভুল করেননি স্বাগতিক দলের বোলাররা। বিশেষ করে পেসার আল আমিন ইংলিশ টপ অর্ডার প্রায় একাই ধসিয়ে দেন। যদিও ইংলিশ শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন আরেক পেসার আলাউদ্দিন বাবু। প্রথম ওভারের শেষ বলে উইকেটকিপার ধীমানের হাতে ক্যাচ বানিয়ে ইংলিশ ওপেনার জেসন রয়কে ফিরিয়ে দেন আলাউদ্দিন। এরপরই ইংলিশদের ব্যাটিংয়ে মিনি ধস নামান পেসার আল আমিন। দলীয় অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় ও চতুর্থ বলে ওপেনার রুট ও অধিনায়ক জেমস টেইলরকে ফিরিয়ে দেন তিনি। ইংলিশরা ৩২ রানে থাকতেই ওই জোড়া আঘাত হানেন আল আমিন। দশম ওভারের দ্বিতীয় বলে আবারও উইকেটের দেখা পান আল আমিন। এবার এলবিডবিল্গউর ফাঁদে ফেলেন ওয়ান ডাউনে নেমে ১৪ রান করা জেমস ভিন্সকে। এরপর দলীয় সর্বোচ্চ ৪৫ রান করা বাটলার লোয়ার মিডল অর্ডারে জনি বারিস্ট্র ও স্কট বোর্থউইকের সঙ্গে দুটি জুটি করে বিপর্যয় সামাল দেওয়ার পাশাপাশি দলের শতরান পার করান। তবে সেই প্রতিরোধ বেশিক্ষণ টিকে থাকেনি স্বাগতিক স্পিনারদের দাপটে। বিশেষ করে নূর হোসেন ও সোহরাওয়ার্দী শুভর ঘূর্ণিজাদুতে দিশেহারা হয়ে পড়েন ইংলিশরা। এ দুই স্পিনার মিলে ইংলিশদের শেষ ৫ উইকেটের পতন ঘটান মাত্র ১৭ রানে। তাই ইংলিশরা গুটিয়ে যাওয়ার আগে দলীয় সংগ্রহ ১৩৯ রানের বেশি করতে পারেনি। স্বাগতিক দলের বোলার আল আমিন ৯ ওভারে দুটি মেডেনসহ ১৮ রান খরচায় তিন উইকেট নিয়ে ইংলিশদের অল্প রানে বেঁধে রাখতে মূখ্য ভূমিকা রাখেন। যা তাকে ম্যাচ শেষে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পেতেও সহায়তা করে। স্পিনার নূর হোসেন তিনটি, শুভ দুটি এবং রিয়াদ ও আলাউদ্দিন বাবু একটি করে উইকেট পান।
এদিকে জয়ের জন্য ১৪০ রানের মামুলি টার্গেট পেয়ে স্বাগতিক দলের ব্যাটসম্যানরাও যেন জ্বলে ওঠেন। ইমরুল কায়েস ও রনি তালুকদার ব্যাট হাতে ওপেনিং জুটিতে দলকে ৪৭ রানে নিয়ে যান। টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের সবাই রান পাওয়ায় বিশেষ করে ওপেনার ইমরুল কায়েসের ফিফটির সুবাদে জয় পেতে কোনো বেগই পেতে হয়নি টাইগারদের। ৩৩তম ওভারের শেষ বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ছয় উইকেটের জয় নিশ্চিত করেন ৩৮ রানে অপরাজিত থাকা অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। অবশ্য জয়ের খুব কাছাকাছি এসে ৮৩ বলে ৫৩ রান করা ইমরুল কায়েস নাথান বাকের বলে বোল্ড হন। তার ফিফটি আসে ছয়টি চারের সাহায্যে ৭২ বলে। প্রথম ম্যাচটি হারলেও সিরিজটি জিততে চান ইংল্যান্ড লায়ন্স দলের অধিনায়ক জেমস টেইলর। 'এই সিরিজটি আমরা জিততে চাই। এ জন্য পরের ম্যাচেই বাউন্স ব্যাক করব আমরা। এ ম্যাচটিতে আমাদের ব্যাটিংটা মোটেই ভালো হয়নি। বাংলাদেশ দলের বোলাররা বেশ ভালো বল করেছে।' চট্টগ্রাম ভেন্যুর উইকেট ও কন্ডিশন নিয়ে কোনো অভিযোগ
নেই তার।

No comments

Powered by Blogger.