ঢাকা চেম্বারের সংবাদ সম্মেলনে অভিমত-অর্থনীতির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক সমঝোতা চান

দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির স্বার্থে ও বিনিয়োগ বাড়াতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা একান্ত প্রয়োজন বলে মত দিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। সমিতির সভাপতি আসিফ ইব্রাহীম গতকাল রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘২০১২ সালে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সম্ভাবনা খুব বেশি। ব্যবসাসহ পুরো অর্থনীতির জন্য এটি উদ্বেগের বিষয়। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ব্যবসা-বাণিজ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।


তাই ব্যবসায়ী মহল জাতীয় অর্থনৈতিক ইস্যুতে রাজনৈতিক সমঝোতা প্রত্যাশা করে।’ সরকার ব্যাংক থেকে যেভাবে ঋণ নিচ্ছে, তাতে করে বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আসিফ ইব্রাহীম বলেন, ‘ব্যাংকে তো টাকাই নেই, বিনিয়োগ হবে কোত্থেকে?’ এ সময় তিনি বলেন, এভাবে চলতে থাকলে সরকার তো চার-পাঁচ মাস পর বেতনই দিতে পারবে না।
ঢাকার মতিঝিলে ডিসিসিআই মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে আসিফ ইব্রাহীম দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে বলতে গিয়ে এসব মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ডিসিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি হায়দার আহমেদ খান ছাড়াও নতুন নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আসিফ ইব্রাহীম বলেন, ‘আজকের যে রোডমার্চ বিরোধীদলীয় নেত্রীর নেতৃত্বে করা হচ্ছে, রাজনৈতিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে হরতালের পরিবর্তে এ ধরনের কর্মসূচি তুলনামূলক ভালো। ভবিষ্যতে প্রয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলো হরতালের পরিবর্তে এমন কর্মসূচি দিলে ব্যবসায়ীরা স্বাগত জানাবেন।’
২০১২ সালে রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কা করার কারণ হিসেবে আসিফ বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে নাকি অন্য কোনো সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে—এই ইস্যুতে রাজনৈতিক অস্থিরতা হতে পারে।’
লিখিত বক্তব্যে আসিফ ইব্রাহীম বলেন, ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে গেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের ঋণ পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে।
ডিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, মূল্যস্ফীতির কারণে অর্থনীতির অন্যান্য সূচক থমকে গেছে। এক বছরে ডলারের দাম ১৮ শতাংশ বেড়েছে। এর প্রভাব পড়ছে নিত্যপণ্যের দামের ওপর। ডলারের সংকট ও মূলবৃদ্ধির কারণে আমদানি করা পণ্যের দাম বাড়বে। এটা মূল্যস্ফীতিকে আরও বাড়াবে।
ব্যাংক ঋণের সুদের সর্বোচ্চ সীমা তুলে দেওয়ার সমালোচনা করে আসিফ বলেন, এর ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সুদ ব্যবসার দিকেই ঝুঁকে পড়ছে। চড়া সুদের কারণে শিল্প খাতে বিনিযোগকারীরা ঋণ নিচ্ছেন না।
জ্বালানির দাম বাড়ানোর সমালোচনা করে ডিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, আমদানিপর্যায়ে তেলের ওপর নানা শুল্ক আরোপের পর সরকার ভর্তুকি দেয়। সরকার চাইলে জ্বালানির এসব শুল্ক কমিয়ে করযোগ্য অন্য খাতে কর বসিয়ে এ ঘাটতি পুষিয়ে নিতে পারত। কিন্তু তা না করে ক্রমাগত জ্বালানির দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, সরকারকে রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলের লোকসান কমাতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.