শাহজালাল বিমানবন্দর-শর্ষের ভূত তাড়াবে কে

শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে চোরাচালান এখন ওপেনসিক্রেট। দীর্ঘকাল থেকেই এটি এ কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মাঝে মধ্যে তল্লাশি, নজরদারি ব্যবস্থা কঠোর করা হলে কিছুদিন রয়েসয়ে চলে এই অপকর্ম। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই 'যথা পূর্বং তথা পরং' হয়ে যায়। ফলে এই বিমানবন্দরের চোরাচালানের দুর্নাম ঘোচে না। অথচ দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হওয়ার সুবাদে এটি আমাদের বিমান পরিবহন ব্যবস্থাপনা ও যাত্রীসেবার অনন্য উদাহরণ হয়ে


উঠতে পারত। গত সোমবার সমকালে 'শাহজালাল বিমানবন্দর : লাগেজ তল্লাশি শিথিল, পণ্য পাচারে জড়াচ্ছেন কর্মচারীরা' শিরোনামে প্রকাশিত রিপোর্টে নমুনা হিসেবে দু'জন বিমান কর্মচারীর চোরাকারবারি ব্যবসায় জড়িত থাকার বয়ান তুলে ধরা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, বিমানবন্দরে তল্লাশি ব্যবস্থা শিথিল থাকার সুযোগ নিয়ে তারা চোরচালানের সঙ্গে জড়িত হয়ে ইতিমধ্যে বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক বনে গেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, শাহজালাল বিমানবন্দরের তল্লাশি ব্যবস্থা যেখানে আধুনিক ও কঠোর হওয়ার কথা এবং নজরদারিও মানসম্মত থাকার কথা, সেখানে এসব ক্ষেত্রে শিথিলতা প্রদর্শনের ব্যবস্থা হলো কীভাবে এবং কারাই-বা এসব করেছে? শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে যাতে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যবহার হতে পারে এমন দ্রব্য কেউ আনা-নেওয়া করতে না পারে তার জন্য কঠোর পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা থাকার কথা। যাতে কেউ বিমান হাইজ্যাক করতে না পারে তার জন্যও নজরদারি ও প্রতিরোধক ব্যবস্থা সক্রিয় থাকার কথা। এর অর্থ হচ্ছে, তল্লাশি ব্যবস্থাটা আঁটসাঁট হওয়ার কথা। কিন্তু শাহজালাল বিমানবন্দরে ঠিক এর উল্টোটাই আমরা প্রত্যক্ষ করছি। কেন, কীভাবে এবং কারা এ জন্য দায়ী তা খুঁজে বের করা উচিত নয় কি! সমকালের রিপোর্টে দেখা যায়, এহেন তল্লাশি শিথিলতার সুযোগ নিচ্ছে একশ্রেণীর দুর্নীতিগ্রস্ত বিমানকর্মী। তারা নিজেরাই চোরাচালানের মাল বহন করে নিয়ে আসছে এবং বিমানবন্দরের সব নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে বা বিমানেরই কারও কারও সহযোগিতা নিয়ে মালামাল এতদিন বাইরে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করছিল। বিমানবন্দরের তল্লাশি ব্যবস্থা আঁটসাঁট হলে তাদের পক্ষে এভাবে মালামাল পাচারের কাজে নিয়োজিত হওয়ার আগে ধরা পড়ার ভয় জাগত। বিমানবন্দরের তল্লাশি ব্যবস্থা কীভাবে শিথিল হলো তা খুঁজে বের করা দরকার। এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা উচিত। তল্লাশি শিথিলতার সুযোগে ক্ষুদ্র অস্ত্র বা বোমা তৈরির উপকরণ যে দেশের ভেতর-বার হয়নি তা কে বলতে পারে!
 

No comments

Powered by Blogger.