কীর্তনখোলার ভাঙনে হুমকির মুখে ফেরিঘাট, শিপইয়ার্ড

বরিশাল নগরের বেলতলা এলাকায় কীর্তনখোলা নদীর
ভাঙনের মুখে পড়েছে বেলতলা ফেরিঘাট। -প্রথম আলো
কীর্তনখোলার তীব্র স্রোত ও জোয়ারের পানিতে ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে বরিশাল নগরের বেলতলা এলাকার পানি শোধনাগারের প্রাচীর, ফেরি ও শিপইয়ার্ড। গত দুই দিনের ভাঙনে বেলতলা ফেরির গ্যাংওয়ে দেবে গেছে।
গতকাল সোমবার সরেজমিনে দেখা গেছে, কীর্তনখোলা নদীর তীব্র স্রোত আছড়ে পড়ছে বেলতলা ফেরিঘাটে। প্রতি মুহূর্তে ভেঙে পড়ছে পাড়ের মাটি। ভাঙনে ফেরির গ্যাংওয়ের বেশির ভাগেরই মাটি সরে গেছে। স্রোতের আঘাতে বাকি অংশ দেবে গেছে। প্রবল স্রোত আঘাত হানছে পানি শোধনাগারের প্রাচীরে। পাশে থাকা সুন্দরবন এবং সুরভী শিপইয়ার্ড ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে।
বেলতলা এলাকার বাসিন্দা সামসুল আলম বলেন, গত পরশু থেকে ফেরির গ্যাংওয়ের মাটি ভেঙে পড়তে থাকে। গতকাল ভাঙনে গ্যাংওয়ে দেবে গেছে। স্থানীয় লোকজন ইট দিয়ে কোনোমতে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। ব্যবস্থা না নিলে গ্যাংওয়ে ডুবে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বরিশাল কার্যালয় জানায়, কীর্তনখোলা নদীর ভাঙন থেকে বেলতলা এলাকার ২ দশমিক ৩ কিলোমিটার এবং চরবাড়িয়া ইউনিয়নে ২ দশমিক ৩ কিলোমিটার এলাকা রক্ষার জন্য ৪৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ওই প্রকল্পের চরবাড়িয়া ইউনিয়নের জন্য মাত্র তিন কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। বেলতলা এলাকার জন্য কোনো বরাদ্দ মেলেনি।
সুন্দরবন শিপইয়ার্ডের মালিক এবং বরিশাল শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি সাইদুর রহমান প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করে বলেন, বহুবার পাউবো এমনকি মন্ত্রীকে এনে দেখানো হয়েছে। কিন্তু ভাঙন প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ইতিমধ্যে তিন একর জায়গায় থাকা শিপইয়ার্ডের দুই একর ভেঙে নিয়ে গেছে। শিপইয়ার্ডে নির্মাণাধীন সুন্দরবন-১০সহ কয়েকটি জাহাজ নির্মাণের কাজ চলছে। সবকিছুই এখন হুমকির মুখে রয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ বরিশাল কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদ সাহেদ বলেন, ‘শুধু বেলতলা ফেরিঘাট নয়, ওই এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। ওই ভাঙন প্রতিরোধ করা সড়ক ও জনপথ বিভাগের পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা ওই এলাকা পরিদর্শন করেছি। ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে পাউবোকে জানানো হবে।’
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেলতলা এলাকার ভাঙন প্রতিরোধে ২৩ কোটি টাকার একটি প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই প্রকল্প অনুমোদন হয়নি। তাই ওই এলাকার ভাঙন প্রতিরোধে উদ্যোগ নেওয়া যাচ্ছে না।’

No comments

Powered by Blogger.