শিশুদের আপন ভূমি by গোলাম আহমেদ ইসহাক
শিশুরা
দেশ ও সমাজের ভবিষ্যৎ, বর্তমান ও ভবিষ্যতের সেতুবন্ধন। তাদের সুপ্ত
প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে সমাজের একজন সফল ও দক্ষ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার
দায়িত্ব সবার। শিশুর নিরাপদ জন্মলাভ ও বাঁচার অধিকার, তাদের শিক্ষা, মানসিক
ও সাংস্কৃতিক বিকাশ, স্বার্থরক্ষা, অনুকূল পরিবার-সমাজ-পরিবেশে বেড়ে উঠার
সুযোগ নিশ্চিতকরণসহ বিভিন্ন দিক বিবেচনায় রেখে শিশুকল্যাণ কার্যক্রম গ্রহণ
পরিচালনের গুরুত্ব্ব স্বীকৃত। শিশু কল্যাণে যেসব সরকারী, বেসরকারী ও
আন্তর্জাতিক সাহায্য ও কল্যাণমূলক সংস্থা কাজ করছে তাদের মধ্যে এসওএস
শিশুপল্লী অন্যতম। বিশেষ করে পিতামাতার যত্ন হারানো বা হারানোর ঝুঁকিতে
রয়েছে এমন শিশুদের পারিবারিক পরিবেশে লালন-পালনের পাশাপাশি সমাজের হতদরিদ্র
পরিবারকে শক্তিশালীকরণে কার্যকর ভূমিকা রাখে। মানবতাবাদী প্রফেসর হারম্যান
মাইনার সংস্থাটির স্বপ্নদ্রষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৪৯ সালে তিনি এটি স্থাপন
করেন। যেখানে এ ধরনের শিশুরা একটি পরিবারের ভালবাসা, স্নেহ ও নিরাপত্তায়
বেড়ে ওঠে।
আজ ২৩শে জুন আন্তর্জাতিক এসওএস শিশুপল্লী দিবস। ১৯১৯ সালের এদিনে অষ্ট্রিয়ার এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন প্রফেসর হারম্যান মাইনার। বিশ্বের ১৩৪ টি দেশে এসওএস শিশুপল্লীর স্থাপনাসমূহে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হচ্ছে দিনটি।
বাংলাদেশ এসওএস শিশুপল্লী আন্তর্জাতিক এসওএস শিশুপল্লী’র সদস্য। প্রফেসর হারম্যান মাইনারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের এতিম ও দুঃস্থ শিশুরা পারিবারিক পরিবেশে প্রতিপালিত হওয়ার সুযোগ পায়। পায় স্থায়ী ঠিকানা। তৎকালীন শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয় এবং সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ১৯৭২ সালের ১৭ই মে ঢাকার মিরপুর রোডস্থ শ্যামলীতে প্রথম এসওএস শিশুপল্লী স্থাপিত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে ছয়টি এসওএস শিশুপল্লী (ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রাম, বগুড়া ও সিলেটে) রয়েছে। এছাড়া এসওএস ইয়ূথ ফ্যাসিলিটি, এসওএস হারম্যান মাইনার স্কুল ও কলেজ, এসওএস ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার, এসওএস সামাজিক কেন্দ্র সহযোগী প্রকল্প হিসেবে শিশুকল্যাণে অনবদ্য ভূমিকা রাখছে। চারটি নীতিমালার ওপর ভিত্তি করে এসওএস শিশুপল্লী পরিচালিত হয়- মা, ভাইবোন, বাসস্থান ও শিশুপল্লী। সংস্থাটিতে রয়েছে পরিবারভিত্তিক শিশু যত্নের জন্য এসওএস মা- যিনি শিশুদের সঙ্গে আবেগিক বন্ধন, ভালবাসা ও স্নেহশীল সম্পর্ক স্থাপন করে প্রতিটি শিশুর প্রয়োজনমত নিরাপত্তা, ভালবাসা ও সুস্থির ভিত্তি প্রদান করেন। এতে তাদের মানসিক ক্ষতগুলো সেরে ওঠে এবং আত্মবিশ্বাসী হয়। সাধারনত ১০ থেকে ১৬টি বাড়ি নিয়ে একটি পল্লী গড়ে উঠে। প্রত্যেক বাড়িতে ৮-১০ জন শিশু মায়ের পরম মমতায় পারিবারিক পরিবেশে বেড়ে উঠে। এসওএস শিশুপল্লীর এই বাড়ি হল শিশুদের জন্য স্থায়ী আবাস। বিভিন্ন বয়সী ছেলে-মেয়েরা এখানে ভাই-বোন হিসেবে একত্রে বাস করে। একসঙ্গে বড় হয়, শিক্ষা গ্রহণ করে। সুখী শৈশব উপভোগ করে বেড়ে উঠে।
প্রতিটি শিশুরই পারিবারিক পরিবেশে বেড়ে উঠার অধিকার রয়েছে। কিন্তু আজ বিশ্বব্যাপী অসংখ্য শিশু পিতামাতা থাকা সত্ত্বেও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে, মানবেতর জীবনযাপন করছে। দারিদ্র এক্ষেত্রে প্রধান কারণ। দারিদ্রের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে যে বিষয়টি কার্যকর ভূমিকা পালন করে তা হল শিক্ষা। এসওএস ‘পরিবার শক্তিশালীকরণ কর্মসূচী’র আওতায় দরিদ্র ওইসব পরিবারকে সহায়তা করে যাতে শিশুরা ভালভাবে বাঁচতে পারে এবং ক্রমোন্নতির দিকে যেতে পারে। এ কর্মসূচীর মাধ্যমে অসহায় পরিবারকে সাহায্য করা হয় নিজ পায়ে দাঁড়াবার জন্য। বিশেষ করে পিতা বা মাতার অবর্তমানে কিংবা উভয়ের শারীরিক অসুস্থতার কারণে বা চরম আর্থিক দৈন্যতার জন্য শিশুরা যেন পারিবারিক বন্ধন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে না পড়ে। শিশুদের দেয়া হয় শিক্ষা খরচ ও মিড ডে মিল, পিতামাতাদের দেয়া হয় বিভিন্ন প্রশিক্ষণ। এসওএস শিশুর অস্তিত্ব রক্ষার্থে শিশুর পুষ্টি, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা প্রদান করে। পরিবারের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যেন তারা সকল প্রতিকূল অবস্থা মোকাবিলা করতে পারে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে শিশুরা তাদের মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা লাভ ও উন্নয়ন করতে পারে।
সমাজ বাস্তবতার আলোকে সহস্রাব্দ উন্নয়নের যে ৮টি কর্মসূচী তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করছে এসওএস শিশুপল্লী। এ জন্য তারা পাচঁটি বিষয়ের প্রতি আলোকপাত করেছে। এগুলো হলো- সামাজিক সুরক্ষা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য এবং সহিংসতামুক্ত। এ লক্ষ্যে যে টার্গেট নির্ধারন করা হয়েছে তা হলো- ১. সামাজিক এবং আয়-সহায় কৌশল প্রয়োগ করে দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করা পরিবার ও শিশুদের সংখ্যা কমিয়ে আনা। ২. পরিবার বিচ্ছিন্নতারোধে পরিবার শক্তিশালীকরণ কর্মসূচীতে এবং সহায়ক সামাজিক সেবাসমূহে সর্বজনীন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা এবং ৩. শিশুদের জন্য গুনগত মানসম্পন্ন যত্ন নিশ্চিত করা।
এসওএস হারম্যান মাইনার স্কুল/কলেজ, এসওএস ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার- এর মাধ্যমে একদিকে যেমন এসওএস শিশুপল্লীর শিশুরা মানসম্মত শিক্ষা ও ট্রেনিং পাচ্ছে তেমনি সমাজের অন্যান্য শিশুরা এখানে শিক্ষা লাভ ও ট্রেনিং- এর সুযোগ পাচ্ছে। মূলত: এসওএস শিশুপল্লী শৈশবকালীন শিক্ষা, সাধারন ও কারিগরি শিক্ষা, জীবনদক্ষতা উন্নয়ন এবং নমনীয় জীবনদীক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করে যেন ছেলেমেয়েরা কাজের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারে। এ লক্ষ্যে এসওএস-এর প্রকল্পসমূহে রয়েছে জব ব্যাংক সেল। এর দায়িত্বে থাকা কো-ওয়ার্কাররা ছেলেমেয়েদের সামনে বিভিন্ন ক্যারিয়ার তুলে ধরেন, তথ্য প্রদান করেন এবং নিয়োগকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন।
জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ বাস্তবায়নে শিশুপল্লী সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। শিশুসুরক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিশুদের জন্য একটি যত্নশীল ও নিরাপত্তামূলক পরিবেশ সৃষ্টি ও তা অক্ষুন্ন রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তারা।
শিশুদের কথা শুনতে, তাদের সমর্থন যোগাতে এবং শিশুদের জীবন মানোন্নয়নে এসওএস শিশুপল্লী কাজ করে যাচ্ছে নিরবচ্ছিন্নভাবে। এক্ষেত্রে সরকার, সমাজ ও অন্যান্য দায়ীত্বশীলদের সহযোগিতার প্রয়োজন। এসব লক্ষ্যে এসওএস শিশুপল্লী অন্যান্য স্বত্ত্বাধিকারীদের সঙ্গে একত্রে কাজ করতে চায়। শিশুদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে এসওএস শিশুপল্লী সমাজের বন্ধুদের স্বাগত জানায়।
আন্তর্জাতিক এসওএস শিশুপল্লী দিবসে তাই সংস্থাটির আহ্বান, আসুন শিশুদের কল্যাণে সবাই নিবেদিত হই, পরিবারে তাদের বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করি এবং গড়ে তুলি সমাজের যোগ্য নাগরিক হিসেবে।
লেখক: ন্যাশনাল ডাইরেক্টর, এসওএস আন্তর্জাতিক শিশুপল্লী বাংলাদেশ
আজ ২৩শে জুন আন্তর্জাতিক এসওএস শিশুপল্লী দিবস। ১৯১৯ সালের এদিনে অষ্ট্রিয়ার এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন প্রফেসর হারম্যান মাইনার। বিশ্বের ১৩৪ টি দেশে এসওএস শিশুপল্লীর স্থাপনাসমূহে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হচ্ছে দিনটি।
বাংলাদেশ এসওএস শিশুপল্লী আন্তর্জাতিক এসওএস শিশুপল্লী’র সদস্য। প্রফেসর হারম্যান মাইনারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের এতিম ও দুঃস্থ শিশুরা পারিবারিক পরিবেশে প্রতিপালিত হওয়ার সুযোগ পায়। পায় স্থায়ী ঠিকানা। তৎকালীন শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয় এবং সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ১৯৭২ সালের ১৭ই মে ঢাকার মিরপুর রোডস্থ শ্যামলীতে প্রথম এসওএস শিশুপল্লী স্থাপিত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে ছয়টি এসওএস শিশুপল্লী (ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রাম, বগুড়া ও সিলেটে) রয়েছে। এছাড়া এসওএস ইয়ূথ ফ্যাসিলিটি, এসওএস হারম্যান মাইনার স্কুল ও কলেজ, এসওএস ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার, এসওএস সামাজিক কেন্দ্র সহযোগী প্রকল্প হিসেবে শিশুকল্যাণে অনবদ্য ভূমিকা রাখছে। চারটি নীতিমালার ওপর ভিত্তি করে এসওএস শিশুপল্লী পরিচালিত হয়- মা, ভাইবোন, বাসস্থান ও শিশুপল্লী। সংস্থাটিতে রয়েছে পরিবারভিত্তিক শিশু যত্নের জন্য এসওএস মা- যিনি শিশুদের সঙ্গে আবেগিক বন্ধন, ভালবাসা ও স্নেহশীল সম্পর্ক স্থাপন করে প্রতিটি শিশুর প্রয়োজনমত নিরাপত্তা, ভালবাসা ও সুস্থির ভিত্তি প্রদান করেন। এতে তাদের মানসিক ক্ষতগুলো সেরে ওঠে এবং আত্মবিশ্বাসী হয়। সাধারনত ১০ থেকে ১৬টি বাড়ি নিয়ে একটি পল্লী গড়ে উঠে। প্রত্যেক বাড়িতে ৮-১০ জন শিশু মায়ের পরম মমতায় পারিবারিক পরিবেশে বেড়ে উঠে। এসওএস শিশুপল্লীর এই বাড়ি হল শিশুদের জন্য স্থায়ী আবাস। বিভিন্ন বয়সী ছেলে-মেয়েরা এখানে ভাই-বোন হিসেবে একত্রে বাস করে। একসঙ্গে বড় হয়, শিক্ষা গ্রহণ করে। সুখী শৈশব উপভোগ করে বেড়ে উঠে।
প্রতিটি শিশুরই পারিবারিক পরিবেশে বেড়ে উঠার অধিকার রয়েছে। কিন্তু আজ বিশ্বব্যাপী অসংখ্য শিশু পিতামাতা থাকা সত্ত্বেও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে, মানবেতর জীবনযাপন করছে। দারিদ্র এক্ষেত্রে প্রধান কারণ। দারিদ্রের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে যে বিষয়টি কার্যকর ভূমিকা পালন করে তা হল শিক্ষা। এসওএস ‘পরিবার শক্তিশালীকরণ কর্মসূচী’র আওতায় দরিদ্র ওইসব পরিবারকে সহায়তা করে যাতে শিশুরা ভালভাবে বাঁচতে পারে এবং ক্রমোন্নতির দিকে যেতে পারে। এ কর্মসূচীর মাধ্যমে অসহায় পরিবারকে সাহায্য করা হয় নিজ পায়ে দাঁড়াবার জন্য। বিশেষ করে পিতা বা মাতার অবর্তমানে কিংবা উভয়ের শারীরিক অসুস্থতার কারণে বা চরম আর্থিক দৈন্যতার জন্য শিশুরা যেন পারিবারিক বন্ধন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে না পড়ে। শিশুদের দেয়া হয় শিক্ষা খরচ ও মিড ডে মিল, পিতামাতাদের দেয়া হয় বিভিন্ন প্রশিক্ষণ। এসওএস শিশুর অস্তিত্ব রক্ষার্থে শিশুর পুষ্টি, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা প্রদান করে। পরিবারের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যেন তারা সকল প্রতিকূল অবস্থা মোকাবিলা করতে পারে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে শিশুরা তাদের মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা লাভ ও উন্নয়ন করতে পারে।
সমাজ বাস্তবতার আলোকে সহস্রাব্দ উন্নয়নের যে ৮টি কর্মসূচী তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করছে এসওএস শিশুপল্লী। এ জন্য তারা পাচঁটি বিষয়ের প্রতি আলোকপাত করেছে। এগুলো হলো- সামাজিক সুরক্ষা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য এবং সহিংসতামুক্ত। এ লক্ষ্যে যে টার্গেট নির্ধারন করা হয়েছে তা হলো- ১. সামাজিক এবং আয়-সহায় কৌশল প্রয়োগ করে দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করা পরিবার ও শিশুদের সংখ্যা কমিয়ে আনা। ২. পরিবার বিচ্ছিন্নতারোধে পরিবার শক্তিশালীকরণ কর্মসূচীতে এবং সহায়ক সামাজিক সেবাসমূহে সর্বজনীন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা এবং ৩. শিশুদের জন্য গুনগত মানসম্পন্ন যত্ন নিশ্চিত করা।
এসওএস হারম্যান মাইনার স্কুল/কলেজ, এসওএস ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার- এর মাধ্যমে একদিকে যেমন এসওএস শিশুপল্লীর শিশুরা মানসম্মত শিক্ষা ও ট্রেনিং পাচ্ছে তেমনি সমাজের অন্যান্য শিশুরা এখানে শিক্ষা লাভ ও ট্রেনিং- এর সুযোগ পাচ্ছে। মূলত: এসওএস শিশুপল্লী শৈশবকালীন শিক্ষা, সাধারন ও কারিগরি শিক্ষা, জীবনদক্ষতা উন্নয়ন এবং নমনীয় জীবনদীক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করে যেন ছেলেমেয়েরা কাজের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারে। এ লক্ষ্যে এসওএস-এর প্রকল্পসমূহে রয়েছে জব ব্যাংক সেল। এর দায়িত্বে থাকা কো-ওয়ার্কাররা ছেলেমেয়েদের সামনে বিভিন্ন ক্যারিয়ার তুলে ধরেন, তথ্য প্রদান করেন এবং নিয়োগকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন।
জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ বাস্তবায়নে শিশুপল্লী সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। শিশুসুরক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিশুদের জন্য একটি যত্নশীল ও নিরাপত্তামূলক পরিবেশ সৃষ্টি ও তা অক্ষুন্ন রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তারা।
শিশুদের কথা শুনতে, তাদের সমর্থন যোগাতে এবং শিশুদের জীবন মানোন্নয়নে এসওএস শিশুপল্লী কাজ করে যাচ্ছে নিরবচ্ছিন্নভাবে। এক্ষেত্রে সরকার, সমাজ ও অন্যান্য দায়ীত্বশীলদের সহযোগিতার প্রয়োজন। এসব লক্ষ্যে এসওএস শিশুপল্লী অন্যান্য স্বত্ত্বাধিকারীদের সঙ্গে একত্রে কাজ করতে চায়। শিশুদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে এসওএস শিশুপল্লী সমাজের বন্ধুদের স্বাগত জানায়।
আন্তর্জাতিক এসওএস শিশুপল্লী দিবসে তাই সংস্থাটির আহ্বান, আসুন শিশুদের কল্যাণে সবাই নিবেদিত হই, পরিবারে তাদের বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করি এবং গড়ে তুলি সমাজের যোগ্য নাগরিক হিসেবে।
লেখক: ন্যাশনাল ডাইরেক্টর, এসওএস আন্তর্জাতিক শিশুপল্লী বাংলাদেশ
No comments