ডেসটিনির পরিচালক দিদার গ্রেপ্তার-রফিকুল ও মোহাম্মদকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত

ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের পরিচালক লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলমকে গ্রেপ্তার করেছে দুদক। কাফরুল থানার পুলিশের সহায়তায় গতকাল শনিবার দুপুর ২টায় মহাখালী নিউ ডিওএইচএসের নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের অফিস থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।


গ্রেপ্তারের পরই দুপুর আড়াইটায় তাঁকে সেগুনবাগিচায় দুর্র্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কার্যালয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
দুদক কার্যালয়ে দিদারের উপস্থিতিতে সংস্থার উপপরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার সাংবাদিকদের বলেন, '৩১ জুলাই কলাবাগান থানায় দায়ের করা মামলায় (মামলা নম্বর-৩৩) তাঁকে (দিদার) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।'
এদিকে অর্থপাচার মামলায় রিমান্ডে নিয়ে ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন ও ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল শনিবার তৃতীয় দিনে সকাল ১১টায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কার্যালয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তারা।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ডেসটিনি লিমিটেডের চেয়ারম্যানকে দুটি মামলায় ৯ দিন করে মোট ১৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটান আদালত।
সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন দুদকের উপপরিচালক মাহমুদ হাসান, বেনজীর আহম্মদ, মোজাহার আলী সরদার, আখতার হামিদ ভূঞা, নুরুল হক ও সহকারী পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম।
দুদক সূত্র জানায়, বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে সংগ্রহ করা টাকার বড় একটি অংশ ডেসটিনি গ্রুপের নীতিনির্ধারকরা বিদেশে পাচার করেছেন। শত শত এলসি খুলে আমদানি করা পণ্যের অতিরিক্ত মূল্য দেখিয়ে শত শত কোটি টাকা পাচার করা হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এলসি খোলা হলেও মালপত্র না এনেই অর্থপাচার করা হয়েছে। দুদকের অর্থপাচার মামলায় গত তিন দিনে রফিকুল আমীন ও মোহাম্মদ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তদন্ত করে অর্থপাচারের একাধিক তথ্য পেয়েছেন দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তবে তাঁদের বিরুদ্ধে দুটি মামলায় তিন হাজার ২৮৫ কোটি টাকা পাচারের বিষয়ে রফিকুল আমীন বস্তুনিষ্ঠ হিসাব দিতে পারছেন না।
সূত্র জানায়, গতকাল জিজ্ঞাসাবাদে রফিকুল আমীন ও মোহাম্মদ হোসেন মানুষের কাছ থেকে সংগ্রহ করা টাকা ডেসটিনির কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ফান্ডে রাখা হয়েছে উল্লেখ করলেও বাস্তবে সেসব কম্পানির কার্যক্রম এখন বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া বিদেশ থেকে দুটি বিমান ভাড়া নেওয়ার জন্য এলসি খোলা হলেও সেসব বিমান দেশে আনা হয়নি। কানাডাসহ কয়েকটি দেশে তাঁদের গোপন ব্যাংক হিসাবে শত শত কোটি টাকা জমা রাখার তথ্যও পেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। তবে জিজ্ঞাসাবাদে রফিকুল আমীন বলেছেন, তাঁরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে গেছেন, কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী পাঁচ হাজার ডলারের বেশি টাকা বহন করেননি। অন্য কোনো চ্যানেলে পাচার করার কথা অস্বীকার করেছেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, মামলার অভিযোগে বলা হয়, ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেড কর্তৃপক্ষ ডেসটিনি ট্রি প্লানটেশন ও ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কোঅপারেটিভ সোসাইটির মাধ্যমে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করে। কিন্তু বর্তমানে তাঁদের পৃথক দুটি অ্যাকাউন্টে ৫৬ লাখ ও চার কোটি ৮৭ লাখ টাকা জমা আছে। বাকি তিন হাজার ২৮৫ কোটি টাকা তাঁরা মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন।

No comments

Powered by Blogger.