সময়ের কথা-এমপিও যেন সোনার হরিণ by অজয় দাশগুপ্ত

তিনি একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নিযুক্ত হয়েছেন আট মাস। জ্ঞান বিতরণে নিবেদিত। ছাত্রছাত্রীরা তাকে পছন্দ করে। অভিভাবকরা মনে করেন, উপযুক্ত হাতে রয়েছে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের জন্য স্থাপিত স্কুলটি।


বিদ্যালয়ের প্রধান পদে নিযুক্তির আগে সাধারণ শিক্ষকের পদ ছেড়ে দিয়েছেন সরকারের নিয়ম অনুযায়ী। তখন তিনি বেতন পেতেন 'এমপিও' নামে পরিচিত সোনার হরিণের আওতায়। সে বেতনের পরিমাণ বর্তমান মাগ্গির সামান্যই_ সাকল্যে সাড়ে ১১ হাজার টাকা। এমএ পাস করেছেন। মাস্টার অব এডুকেশন বা এমএড ডিগ্রি আছে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ক্লাস নেন। বাসায় বসে খাতা দেখেন রাত জেগে, ঘরের কাজ ফেলে। তার এই বেতন!
প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়ার সময় স্বপ্ন দেখেছেন অনেক_ বেতন বেড়ে যে প্রায় ১৬ হাজার টাকা হবে! পরিবারের অপূর্ণ শখ মেটাবেন এক এক করে।
কিন্তু একবার তুলনা করুন সরকারি অফিসের ইন্টারমিডিয়েট ডিগ্রিধারী পিওন-দারোয়ানদের সঙ্গে_ ১৫-২০ বছর চাকরি জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে এর চেয়ে বেশি বেতন পান। কিন্তু এটা তো মনের কষ্ট। আমাদের ওই প্রধান শিক্ষিকা যে নতুন মর্যাদার পদে নিয়োগলাভের পর আট মাস ধরে বেতনই পাচ্ছেন না। কারণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা এত দিনেও তার কাগজপত্র তৈরি করে উঠতে পারেনি। কেউ বলেন গাফিলতি, কেউবা বলেন_ তারা ঘুষের অপেক্ষায়। আবার কারও মত_ মন্ত্রণালয়ের যেহেতু ফান্ড কম, তাই নতুন কাউকে এমপিওর (মান্থলি পে-অর্ডার) অধীন করার কাজ যত দিন পারা যায় বিলম্বিত করা হয়। এ কারণেই পিরোজপুরের স্বরূপকাঠির একজন শিক্ষক নিয়োগলাভের ২৭ মাস পরও বেতন পাচ্ছেন না। তিনি সব শর্ত পূরণ করে নিয়োগ পেয়েছেন। পরিবারে সচ্ছলতা না আসুক, মাস শেষে কিছু টাকা তো আসবে ঘরে। কিন্তু সরকার নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা বন্ধ রেখেছে। আর যারা এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজে শিক্ষক-কর্মচারী হিসেবে নতুন নিয়োগ লাভ করছেন, তাদের বেতন-ভাতা প্রদানের কাজ যতটা সম্ভব পিছিয়ে দিচ্ছে। এর প্রধান কারণ অর্থ সংকট।
কেন অর্থ সংকট? চলতি অর্থবছরে শিক্ষা খাতে সরকারের মোট বরাদ্দ ২১ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা। সব সরকারি খাতের মধ্যে শিক্ষার জন্যই বরাদ্দ সর্বোচ্চ। এই বরাদ্দের ৬০ শতাংশের বেশি ব্যয় হয়ে যায় শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের কাজে। এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গুরুতর সমস্যা দুটি_ এক. যারা এমপিওভুক্ত হয়ে আছেন তাদের দিক থেকে অব্যাহতভাবে প্রচণ্ড চাপ_ এত কম বেতনে সংসার চলে না। মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের স্কুল-শিক্ষকের পেশায় আনতে হলে এখনই মাসে অন্তত ৩০-৩৫ হাজার টাকা বেতন দিতে হবে। অন্যথায় তারাই শিক্ষকতা পেশায় আসবেন, যাদের প্রতিযোগিতায় টিকে ভালো চাকরি লাভের সম্ভাবনা কম। দুই. শিক্ষার প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। এসব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় যারা নিয়োগ পাচ্ছেন, তাদের দিক থেকে চাপ_ এমপিভুক্ত করতে হবে। এদের হয়ে তদবির করেন মন্ত্রী-এমপি ও সম্ভাব্য এমপিরা। অর্থের লেনদেনও ঘটে বিস্তর। শিক্ষকরা নিয়মিত বেতন পাবেন_ এমন আশায় অর্থ ঢালেন 'জনপ্রতিনিধি' এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখার অফিসার-কর্মচারীদের পেছনে।
অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, তহবিল সংকটের কারণে তাদের হাত-পা বাঁধা। বেসরকারি স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় প্রায় ৪ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষক ও কর্মচারীর বেতন-ভাতা দেওয়া হচ্ছে সরকারি তহবিল থেকে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে এমপিওভুক্তি বন্ধ রয়েছে। এ কারণে যে জট লেগেছে, তাতে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার প্রতিষ্ঠান লাইনে দাঁড়ানো। এসব প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করে শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারি খাত থেকে বেতন-ভাতা দিতে হলে বছরে বাড়তি প্রয়োজন ৯৩৫ কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয় এ অর্থ দিচ্ছে না। কেন দিচ্ছে না? কারণ তাদের দেওয়ার ক্ষমতা নেই। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এটাও জানে যে, নতুন যারা এমপিওভুক্ত হবেন, তারা 'সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতায়' বেশি দিন গদগদ হয়ে থাকবেন না; নেমে পড়বেন রাস্তায়_ এত কম টাকায় মানুষ গড়ার কারিগরদের জীবন চলে না। বেতন-ভাতা বাড়াতে হবে। নইলে কাফনের কাপড় পরে মিছিল এবং এক পর্যায়ে আগুনে পুড়ে প্রকাশ্যে আত্মাহুতির হুমকি।
এমপিওভুক্ত এবং এমপিওভুক্ত হওয়ার যোগ্যতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ। তাদের যদি মাসে ১০০ টাকা করে বাড়তি সুবিধা দিতে হয়, তাহলে সরকারের মাসে চলে যাবে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা_ বছরে ৬৬ কোটি টাকা। স্কুল শিক্ষকদের মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন এবং মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট করার মতো সুবিধা প্রদান করতে হলে মাসে গড়ে অন্তত ৩০ হাজার টাকা করে বেতন দিতে হলে বছরে প্রয়োজন ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। কলেজ শিক্ষকদের জন্য এর দ্বিগুণ না হোক, দেড় গুণ তো দিতে হবে। এভাবে শিক্ষকদের জন্য 'স্বপ্ন রাজ্যে' যেতে হলে সরকারের সব বাজেটই শিক্ষকদের দিয়ে দিতে হবে! আপাতত এটা সম্ভব নয়। নিকট ভবিষ্যতেও সম্ভব নয়। গড়ে মাসে ৩০ হাজার টাকা না হোক, ১৫ হাজার টাকাও তো দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ আমরা জানি_ সরকারের কোষাগারের ভিত দুর্বল।
সরকারের হাতে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদানের ভার তুলে দিয়ে অভিভাবকরা নিশ্চিত থাকলে শিক্ষকরা সারা বছর কোনো না কোনোভাবে আন্দোলনে থাকবেনই। তাদের যা বেতন দেওয়া হচ্ছে, তাতে সংসার চলছে না। আবার যে পরিমাণ বেতন-ভাতা দেওয়া হয়, তাতে মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আসতে উৎসাহ দেখাচ্ছে না। তাহলে কি কম মেধাবী এবং যাদের কোনো গতি নেই তাদের জন্যই আগামী অনেক বছর শিক্ষকতার পেশা নির্দিষ্ট থাকবে? এ প্রশ্নের উত্তর কেবল শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের জন্য নির্দিষ্ট রাখলে চলবে না। কেবল ক্ষমতাসীন দলেরও এটা বিষয় হতে পারে না। আওয়ামী লীগ বা বিএনপি যখন বিরোধী দলে থাকে; শিক্ষকরা পথে নামলে তাদের প্রতিশ্রুতি দেয় ক্ষমতায় গেলে দাবি পূরণের। কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে আর সেটা করতে পারে না। কারণ মাসে প্রতিজনকে ১০০ টাকার বাড়তি সুবিধা দিতে হলেই যে বছরে ৬৬ কোটি টাকা বাড়তি প্রয়োজন!
শিক্ষকদের বেতন ছাড়াও শিক্ষা খাতে অর্থ ব্যয়ের অনেক খাত রয়েছে। স্কুল-কলেজ ঘর নির্মাণ ও সংস্কার, লাইব্রেরির বই ও আসবাবপত্র, বিজ্ঞান গবেষণাগার এবং এ ধরনের আরও অনেক কিছু। সরকার এ দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে গ্রামের অনেক স্কুলে ছনের ঘর পাকা হয়েছে। 'বস্তির স্কুলে' গেছে বিজ্ঞানের যন্ত্রপাতি। এসব খাতে অর্থ বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি আসছে প্রতিনিয়ত এবং তা থেকেও সরকারের নিস্তার নেই। কিন্তু সরকারের সামর্থ্য নিকট ভবিষ্যতে কতটা বাড়বে? এ প্রশ্নের উত্তর সবাইকেই খুঁজতে হবে। সরকারের তহবিল থেকে পর্যাপ্ত অর্থ না মিললে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি হাত বাড়াতে হবে। আমাদের ভূখণ্ডে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায়। শিক্ষকতায় অনেকে এসেছেন কেবলই জ্ঞান বিতরণের তাগিদ থেকে। 'ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়িয়েছেন' অনেকে। কিন্তু এখন যুগ বদলেছে। ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় কেউ কেউ প্রতিষ্ঠান গড়ছেন। তাদের লক্ষ্য থাকে হয় নিজের কিংবা পিতা বা মাতার স্মৃতি ধরে রাখা অথবা এমপি হওয়ার বাসনা থেকে এলাকাবাসীকে খুশি রাখা। কিন্তু শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদানের দায় শেষ পর্যন্ত সরকারের ওপরেই এসে পড়ে। জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ অবশ্যই ব্যতিক্রম। নিজেকে জাহির করার কোনো ইচ্ছেই তার ছিল না। কেবলই শিক্ষার প্রসার ও মান বাড়াতে স্কুল গড়েছেন নেত্রকোনার এক নিভৃত পল্লীতে। কিন্তু এটাও তো লক্ষণীয় যে, নিজের শ্রম-ঘাম-মেধায় যে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছেন, সেটির পাশে গ্রামের খুব বেশি মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এসে দাঁড়ায়নি। যারা পড়ছে তাদের অভিভাবকরা বলেননি_ 'স্যার স্কুল গড়েছেন। এখন আমরা দেব শিক্ষকদের বেতন।' এ ধরনের নজির এখন দেশের সর্বত্র_ সবার ভরসা সরকারের ওপর। কিন্তু তাতে দুটি সমস্যা_ এক. শিক্ষার বিস্তার এবং আরও বিস্তারের আকাঙ্ক্ষার কারণে অবকাঠামো নির্মাণ এবং বেতন-ভাতা বাবদ সরকারের অতিসীমিত ক্ষমতা। দুই. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় যুক্তদের একাংশের অনিয়ম-দুর্নীতি। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সদস্য এবং প্রধান শিক্ষক ও অন্য শিক্ষকদের কেউ কেউ সরকারের বরাদ্দ থেকে ফায়দা আদায় করেন। উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে সচিবালয়েও রয়েছে এ দুষ্টচক্র। এমপিওভুক্ত স্কুলের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে হলে এক লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়_ এমন অভিযোগ রয়েছে এবং সেটা অমূলক নয়। শিক্ষকদের বেতন মাসে ৩০-৩৫ হাজার টাকা করা উচিত_ এমন প্রস্তাব একটি সভায় রেখেছিলাম। তখন উপস্থিত একজন প্রধান শিক্ষক বলে ওঠেন_ তাহলে ঘুষের রেট হবে কমসে কম পাঁচ লাখ টাকা।
এটা কিন্তু এখনকার বাস্তবতা। আমরা হাজার হাজার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাকে অভিভাবকদের হাত থেকে দূরে সরিয়ে এনেছি। তাদের বই কিনতে হয় না, স্কুলে মেয়েসন্তান পড়লে অনেক প্রতিষ্ঠানে বেতন দিতে হয় না। স্কুলঘর নির্মাণে অর্থ দিতে হয় না। এ কারণে স্কুল কেমন চলছে_ সেটা নিয়েও তাদের মাথাব্যথা নেই। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি-হেডমাস্টার মিলে স্কুল ফান্ডের টাকা কীভাবে ব্যয় করছেন, সেটা নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই। একজন ভালো শিক্ষক নিয়োগ দিতে হলে তার জন্য মাসে ৩০ হাজার টাকা ব্যয় করতে হবে। সরকার দিচ্ছে ১২-১৩ হাজার টাকা। বাকিটা স্থানীয়ভাবে অভিভাবক এবং প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করার উদ্যোগ নেই। শিক্ষকরা এ নিয়ে উদ্যোগ নেন না কিংবা নিতে আগ্রহী নন। সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেই তারা দাবি আদায় করতে চাইছেন। এ কারণে মাঝে মধ্যে তারা আন্দোলনে নামেন। যেহেতু সংখ্যায় তারা লাখ লাখ_ তাই সরকারের ভয় থাকে। বড় রাজনৈতিক দলগুলো এটাও ভাবে যে, এমপি নির্বাচনে শিক্ষকরা প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে এবং অন্যান্যভাবে দায়িত্ব পালন করেন। মাস্টার সাবদের সমাজেও কিছু প্রভাব থাকে। এ কারণে তাদের চটাতে নেই। যা দাবি তোলেন, তা থেকে কিছু মেনে নিয়ে আপাতত প্রবোধ দেওয়া হোক। কিন্তু এভাবে আর কতদিন চলবে? সমাজ কি উদাসীনই থেকে যাবে? রাজনৈতিক দলগুলো কেবল 'ক্ষমতায় এলে সব দাবি মানা হবে' বলে আশ্বাস দিয়েই দায় শেষ করবে? কিন্তু তাতে তো শিক্ষার মান বাড়ানোর লক্ষ্য পূরণ হবে না। আর এ মান না বাড়লে দেশের যেমন ক্ষতি, তেমনি ক্ষতি প্রতিটি পরিবারেরও। আপনার সন্তান দক্ষ-যোগ্য শিক্ষকের কাছে পড়তে পারলে তার মেধা-প্রতিভার আরও বিকাশ ঘটতে পারত। তাকে কি সে সুযোগ করে দেবেন না? নিজের সন্তান যে প্রতিষ্ঠানে পড়ছে, সেটিকে সেরা মানে নিয়ে যাওয়ার জন্য কিছুই কি করার নেই? স্কুলে আধুনিক সরঞ্জাম দরকার। ল্যাপটপ-বিজ্ঞানের সরঞ্জাম-বই দরকার। একটি যুক্তি অবশ্যই আসবে এবং তা যৌক্তিক_ ব্যবস্থাপনা কমিটি যদি দুর্নীতিমুক্ত হয়, হেডমাস্টার এবং অন্য শিক্ষকরা যদি যোগ্য হন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় যদি দুর্নীতি-অনিয়মের বেড়াজাল থেকে মুক্ত হয়ে আসতে পারে, তাহলে অভিভাবক ও সাবেক ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য সাধ্যমতো সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে প্রেরণা পাবে। আমাদের অবশ্যই এ বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে, কেবল সরকারের ওপরে শিক্ষার যাবতীয় ব্যয়ভার বহনের দায় চাপিয়ে দিয়ে চলা ঠিক হবে না। আমাদের দেশে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল-ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে শ'খানেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। সেগুলোতে গলাকাটা হারে অর্থ আদায় করা হয় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। এখন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যত ছাত্রছাত্রী পড়ছে, অন্তত সমানসংখ্যক পড়ছে এসব প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে। কোচিংয়ের নামেও লাখ লাখ অভিভাবক মাসে মাসে ব্যয় করেন শত শত কোটি টাকা। কেবল 'মানতে হবে'_ এ স্লোগানে ঘুরপাক খেতে থাকলে ক্ষতি কেবল সামান্য থাকবে না।

অজয় দাশগুপ্ত :সাংবাদিক
ধলড়ুফম@মসধরষ.পড়স

No comments

Powered by Blogger.