অর্থনৈতিক উন্নয়নে সামাজিক পুঁজি
মানবিক মূল্যবোধ ও সম্প্রীতি জাগ্রতকরণের মাধ্যমে সামাজিক পুঁজির সর্বোচ্চ বিকাশ ঘটানো যায়। সামাজিক পুঁজির বিকশিত অবস্থাকে ব্যবহার করে জনকল্যাণ এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধন এবং ছোট-বড় নানা ধরনের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।
তাই বিশ্বব্যাপী সামাজিক পুঁজির কাক্সিক্ষত মাত্রায় বিকাশ এবং নানা সমস্যা সমাধানে তাকে ব্যবহার করার বহুবিধ কৌশল উদ্ভাবনের চেষ্টা চলছে। এখন প্রশ্ন হলো, সামাজিক পুঁজি বলতে আমরা কি বুঝি? সাধারণভাবে মানুষের মনোগত অবস্থা বা মানসিকতার পরিবর্তন ঘটিয়ে কোন ধরনের বৈষয়িক স্বার্থের চিন্তা না করে কাউকে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপৃত করতে পারাকেই সামাজিক পুঁজি হিসেবে চিত্রিত করা হয়। সামাজিক পুঁজির বিষয়টি সামাজিক বা গোষ্ঠীগত দায়বদ্ধতা হতে উৎসারিত এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে তা জনকল্যাণে নিবেদিত। একটি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। হঠাৎ করেই গভীর রাতে একজন মানুষের বাড়িতে অগ্নিকা-ের সূত্রপাত হলো। আগুনের লেলিহান শিখা দাউদাউ করে জ্বলছে। এ অবস্থায় বিত্তবান হোক আর বিত্তহীন হোক আশপাশের বাড়িগুলো থেকে মানুষজন অসহায় পরিবারটিকে বাঁচানোর জন্য তাদের নৈশকালীন সুখ নিদ্রা, এমন কি অগ্নিকা- নির্বাপনকালে জীবন আশঙ্কাকে উপেক্ষা করে হলেও তারা আগুন নেভাতে আসে। এভাবে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে তারা প্রতিবেশীর উপকারে এগিয়ে আসে। অন্যের বিপদে মুখ ফিরিয়ে না থেকে নিঃস্বার্থভাবে অন্যের সাহায্যে এগিয়ে আসা বা সহযোগিতার হাত প্রসারিত করা এটাই হচ্ছে সামাজিক পুঁজির মূল ভিত্তি। আদিকাল থেকেই আমাদের দেশের মানুষ সামাজিক পুঁজি ধারণ এবং লালন করে আসছে। অবশ্য এটা শুধু আমাদের দেশের মানুষই ধারণ করে তা নয়। বিশ্বের সব দেশেই কম বেশি সামাজিক পুঁজি ধারণ করা হয়। যে দেশ সামাজিক পুঁজিতে যত উন্নত সে দেশ তত সমৃদ্ধ। আমাদের দেশের মানুষ অন্যের বিপদে সামাজিক পুঁজি নিয়ে হাজির হলেও অনেকেই এর গুরুত্ব এবং তাৎপর্য অনুধাবন করতে পারে না। সামাজিক পুঁজির বিষয়টি হৃদয় উৎসারিত আবেগের সঙ্গে সম্পর্কায়িত। যে সমাজ যত বেশি আবেগপ্রবণ তাদের সামাজিক পুঁজি তত শক্তিশালী ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। আমাদের দেশে একটি প্রবাদ প্রচলিত আছে, ‘বিজ্ঞান আমাদের দিয়েছে বেগ, কিন্তু কেড়ে নিয়েছে আবেগ।’ বিজ্ঞানের বদৌলতে আমরা গতি পেয়েছি বটে কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই সুকোমল হৃদয়বৃত্তির ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। অথচ আবেগকে কাজে লাগিয়ে আমরা দেশের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে পারি।
গ্রামের মানুষের আবেগ শহুরে মানুষের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি। শহরের মানুষের সম্পূর্ণ হৃদয়হীন তা বলা যায় না। তবে গ্রামের মানুষের তুলনায় তারা কিছুটা হলেও আত্মকেন্দ্রিক। সামাজিক যোগাযোগও অনেকটাই কমে গেছে। আবেগ সম্প্রসারণের মাধ্যমে সামাজিক পুঁজির বিকাশ ঘটানো যাচ্ছে না বলেই এমনটি হচ্ছে। অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে, সামাজিক পুঁজি বা মানুষের আবেগকে কিভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যবহার করা যেতে পারে বা আদৌ এর কোন অর্থনৈতিক মূল্য আছে কিনা? মানুষকে সুচিন্তা আর সুকর্ম সাধনে উদ্বুদ্ধ করা গেলেই সামাজিক পুঁজির অর্থনৈতিক ব্যবহার সম্ভব। সামাজিক পুঁজির সঙ্গে স্বেচ্ছাশ্রমের একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। কোন গ্রামে একটি ব্রিজ বা বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। এই ব্রিজ বা বাঁধ মেরামত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জন্য অপেক্ষা করার অর্থই হচ্ছে সময়ক্ষেপণ করা। গ্রামের মানুষ, বিশেষ করে যুবকদের একত্রিত করে ব্রিজ বা বাঁধ মেরামত করা যেতে পারে। এ জন্য টাকার দরকার হলে তা গ্রামের বিত্তবান পরিবারগুলোর নিকট থেকে সংগ্রহ করা যাবে। ছোটখাটো রাস্তাঘাট মেরামত, ব্রিজ-কালভার্ট মেরামত বা নির্মাণ, নদী খনন, পুকুর খনন বা পুনঃখনন, জলাশয় পরিষ্কার করা ইত্যাদি কাজ খুব সহজেই সামাজিক পুঁজি ব্যবহার করে সম্পাদন করা সম্ভব। বর্তমানে গ্রাম এলাকায় ফসল তোলার মৌসুমে কৃষি শ্রমিকের দারুণ অভাব লক্ষ্য করা যায়। ফলে অনেকেই সময় মতো ফসল ঘরে তুলতে পারেন না। এতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হন। এ সমস্যা সমাধানে সামাজিক পুঁজির ব্যবহার করা যেতে পারে। গ্রামের যুবকদের একত্রিত করে পর্যায়ক্রমে একেক দিন একেক জনের ক্ষেত থেকে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ফসল তোলার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। আগেকার দিনে আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলে এ ধরনের স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ফসল তোলার প্রক্রিয়া লক্ষ্য করা যেত। কারও ক্ষেত্রে ফসল তোলার প্রয়োজন হলে সবাই মিলে উৎসবে মিলিত হয়ে ফসল তোলার কাজ করে দিতেন। এ জন্য তারা কোন পারিশ্রমিক নিতেন না। ক্ষেতের মালিক শুধু দুপুরে তাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করতেন। এখনও এভাবে ফসল তোলার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এটা করা হলে ফসল তোলার মৌসুমে কৃষি শ্রমিকের অভাব অনেকাংশেই দূর হবে। ঠিক এভাবে যদি সকল ক্ষেত্রে আমরা সামাজিক পুঁজি ব্যবহার করতে পারি তবে আমাদের একদিকে ব্যয় সঙ্কোচন যেমন হবে তেমনি অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধন হবে। আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে একটি প্রবণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা হলো সব কাজের জন্যই সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকা। আমরা মনে করি সব কাজই সরকার করে দেবে। সরকারের একটি দায়িত্ব আছে বটে, কিন্তু তাই বলে সব কিছুর জন্য কি আমরা সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকব? গ্রামের একটি স্কুল ঝড়ে ভেঙ্গে গেছে। আমরা কি এই স্কুল পুনঃনির্মাণের জন্য সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকব? আমরা নিজেরা কি পারি না স্কুলটি মেরামত করতে? হ্যাঁ, সমস্যাটি যদি আমাদের সামর্থ্যরে বাইরে হয় তাহলে আমরা এ জন্য অবশ্যই সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করব। কিন্তু যদি আমাদের সামর্থ্যরে মধ্যে হয় তাহলে আমরা কেন নিজেরা তা মেরামত করব না? এলাকায় এক বা একাধিক মজা পুকুর আছে। তা থেকে মশার বংশ বৃদ্ধি হচ্ছে। আমরা কি এটা নিজেরা পরিষ্কার করে তাতে মাছ চাষের ব্যবস্থা করতে পারি না? প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে আমরা কি পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিতে পারি না? এভাবে আমরা চাইলেই গ্রাম বা শহরের ছোট ছোট সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে পারি। প্রত্যেক পাড়া বা মহল্লায় সামাজিক উন্নয়নে টিম গঠন করা যেতে পারে। এরা বিভিন্ন সময়ে একত্রিত হয়ে সমস্যা সমাধানে সচেষ্ট হবে। বিশেষ করে গ্রাম এলাকায় এ ধরনের টিম গঠন বেশ কার্যকর বলে প্রতীয়মান হতে পারে। এরা নানাভাবে গ্রামের উন্নয়নে কাজ করতে পারে। এমন কি গ্রামের মজা পুকুর বা ডোবা নালা সংস্কার করে এরা মাছ চাষ বা হাঁস পালনের মত উদ্যোগ নিতে পারে। যুবক শ্রেণীকে উদ্বৃদ্ধ করে সামাজিক পুঁজি ব্যবহারপূর্বক এদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজে লাগানো যেতে পারে। আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষেরই সামাজিক পুঁজি সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা নেই। এর যে একটি অর্থনৈতিক মূল্য আছে তাও তারা অনুধাবন করতে পারি না। গ্রামের সাধারণ দরিদ্র মানুষও তাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় একত্রিত করে সমবায়ের ভিত্তিতে শিল্প-কারখানা গড়ে তুলতে পারে। এভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখা যেতে পারে। প্রত্যেকটি কাজেরই অর্থনৈতিক মূল্য আছে যদি তাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়। আমাদের দেশের মানুষের মাঝে যদি সামাজিক পুঁজির ব্যাপারটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে অনুধাবন করানো যায় এবং এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা যায় তবে আমরা আমাদের সকল অর্থনৈতিক সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান করতে সক্ষম হব। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে সামাজিক পুঁজি অর্থনৈতিক উন্নয়নে যেরূপ ভূমিকা রেখেছে, আমাদের দেশের মানুষও আশা করি নিজেদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন তথা সার্বিক উন্নয়নের জন্য সামাজিক পুঁজির ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠবে।
এম এ খালেক
গ্রামের মানুষের আবেগ শহুরে মানুষের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি। শহরের মানুষের সম্পূর্ণ হৃদয়হীন তা বলা যায় না। তবে গ্রামের মানুষের তুলনায় তারা কিছুটা হলেও আত্মকেন্দ্রিক। সামাজিক যোগাযোগও অনেকটাই কমে গেছে। আবেগ সম্প্রসারণের মাধ্যমে সামাজিক পুঁজির বিকাশ ঘটানো যাচ্ছে না বলেই এমনটি হচ্ছে। অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে, সামাজিক পুঁজি বা মানুষের আবেগকে কিভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যবহার করা যেতে পারে বা আদৌ এর কোন অর্থনৈতিক মূল্য আছে কিনা? মানুষকে সুচিন্তা আর সুকর্ম সাধনে উদ্বুদ্ধ করা গেলেই সামাজিক পুঁজির অর্থনৈতিক ব্যবহার সম্ভব। সামাজিক পুঁজির সঙ্গে স্বেচ্ছাশ্রমের একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। কোন গ্রামে একটি ব্রিজ বা বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। এই ব্রিজ বা বাঁধ মেরামত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জন্য অপেক্ষা করার অর্থই হচ্ছে সময়ক্ষেপণ করা। গ্রামের মানুষ, বিশেষ করে যুবকদের একত্রিত করে ব্রিজ বা বাঁধ মেরামত করা যেতে পারে। এ জন্য টাকার দরকার হলে তা গ্রামের বিত্তবান পরিবারগুলোর নিকট থেকে সংগ্রহ করা যাবে। ছোটখাটো রাস্তাঘাট মেরামত, ব্রিজ-কালভার্ট মেরামত বা নির্মাণ, নদী খনন, পুকুর খনন বা পুনঃখনন, জলাশয় পরিষ্কার করা ইত্যাদি কাজ খুব সহজেই সামাজিক পুঁজি ব্যবহার করে সম্পাদন করা সম্ভব। বর্তমানে গ্রাম এলাকায় ফসল তোলার মৌসুমে কৃষি শ্রমিকের দারুণ অভাব লক্ষ্য করা যায়। ফলে অনেকেই সময় মতো ফসল ঘরে তুলতে পারেন না। এতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হন। এ সমস্যা সমাধানে সামাজিক পুঁজির ব্যবহার করা যেতে পারে। গ্রামের যুবকদের একত্রিত করে পর্যায়ক্রমে একেক দিন একেক জনের ক্ষেত থেকে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ফসল তোলার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। আগেকার দিনে আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলে এ ধরনের স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ফসল তোলার প্রক্রিয়া লক্ষ্য করা যেত। কারও ক্ষেত্রে ফসল তোলার প্রয়োজন হলে সবাই মিলে উৎসবে মিলিত হয়ে ফসল তোলার কাজ করে দিতেন। এ জন্য তারা কোন পারিশ্রমিক নিতেন না। ক্ষেতের মালিক শুধু দুপুরে তাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করতেন। এখনও এভাবে ফসল তোলার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এটা করা হলে ফসল তোলার মৌসুমে কৃষি শ্রমিকের অভাব অনেকাংশেই দূর হবে। ঠিক এভাবে যদি সকল ক্ষেত্রে আমরা সামাজিক পুঁজি ব্যবহার করতে পারি তবে আমাদের একদিকে ব্যয় সঙ্কোচন যেমন হবে তেমনি অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধন হবে। আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে একটি প্রবণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা হলো সব কাজের জন্যই সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকা। আমরা মনে করি সব কাজই সরকার করে দেবে। সরকারের একটি দায়িত্ব আছে বটে, কিন্তু তাই বলে সব কিছুর জন্য কি আমরা সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকব? গ্রামের একটি স্কুল ঝড়ে ভেঙ্গে গেছে। আমরা কি এই স্কুল পুনঃনির্মাণের জন্য সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকব? আমরা নিজেরা কি পারি না স্কুলটি মেরামত করতে? হ্যাঁ, সমস্যাটি যদি আমাদের সামর্থ্যরে বাইরে হয় তাহলে আমরা এ জন্য অবশ্যই সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করব। কিন্তু যদি আমাদের সামর্থ্যরে মধ্যে হয় তাহলে আমরা কেন নিজেরা তা মেরামত করব না? এলাকায় এক বা একাধিক মজা পুকুর আছে। তা থেকে মশার বংশ বৃদ্ধি হচ্ছে। আমরা কি এটা নিজেরা পরিষ্কার করে তাতে মাছ চাষের ব্যবস্থা করতে পারি না? প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে আমরা কি পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিতে পারি না? এভাবে আমরা চাইলেই গ্রাম বা শহরের ছোট ছোট সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে পারি। প্রত্যেক পাড়া বা মহল্লায় সামাজিক উন্নয়নে টিম গঠন করা যেতে পারে। এরা বিভিন্ন সময়ে একত্রিত হয়ে সমস্যা সমাধানে সচেষ্ট হবে। বিশেষ করে গ্রাম এলাকায় এ ধরনের টিম গঠন বেশ কার্যকর বলে প্রতীয়মান হতে পারে। এরা নানাভাবে গ্রামের উন্নয়নে কাজ করতে পারে। এমন কি গ্রামের মজা পুকুর বা ডোবা নালা সংস্কার করে এরা মাছ চাষ বা হাঁস পালনের মত উদ্যোগ নিতে পারে। যুবক শ্রেণীকে উদ্বৃদ্ধ করে সামাজিক পুঁজি ব্যবহারপূর্বক এদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজে লাগানো যেতে পারে। আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষেরই সামাজিক পুঁজি সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা নেই। এর যে একটি অর্থনৈতিক মূল্য আছে তাও তারা অনুধাবন করতে পারি না। গ্রামের সাধারণ দরিদ্র মানুষও তাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় একত্রিত করে সমবায়ের ভিত্তিতে শিল্প-কারখানা গড়ে তুলতে পারে। এভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখা যেতে পারে। প্রত্যেকটি কাজেরই অর্থনৈতিক মূল্য আছে যদি তাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়। আমাদের দেশের মানুষের মাঝে যদি সামাজিক পুঁজির ব্যাপারটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে অনুধাবন করানো যায় এবং এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা যায় তবে আমরা আমাদের সকল অর্থনৈতিক সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান করতে সক্ষম হব। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে সামাজিক পুঁজি অর্থনৈতিক উন্নয়নে যেরূপ ভূমিকা রেখেছে, আমাদের দেশের মানুষও আশা করি নিজেদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন তথা সার্বিক উন্নয়নের জন্য সামাজিক পুঁজির ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠবে।
এম এ খালেক
No comments