ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কে প্রভাব পড়বে না by মেহেদী হাসান
যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলাচেষ্টার অভিযোগে বাংলাদেশি তরুণ কাজী মোহাম্মদ রেজওয়ানুল আহসান নাফিসের গ্রেপ্তার হওয়া ও বিচারপ্রক্রিয়া দুই দেশের সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। তাঁদের যুক্তি, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সুস্পষ্ট অবস্থান রয়েছে।
বাংলাদেশ সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা করে না। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, নিজ নাগরিক হিসেবে নাফিসকে বাংলাদেশ তাঁর প্রাপ্য সব সুবিধা দিয়েছে; কিন্তু অপরাধী প্রমাণিত হলে এর দায় বাংলাদেশের নয়। যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সন্ত্রাস দমনে সহযোগিতামূলক সম্পর্কের প্রশংসা করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কও বেশ পুরনো ও জোরালো। সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে যোগসাজশ থাকার অভিযোগে ২০০৬ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এহসানুল হক সাদেকি নামের এক কিশোরকে এফবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছিল বাংলাদেশ। সিএনএন এবং বিবিসি ওই সময় সাদেকিকে নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর যুক্তরাষ্ট্র একটি সামরিক বিমানে করে তাঁকে বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কূটনীতিক গতকাল শনিবার কালের কণ্ঠকে জানান, গত বুধবার সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা ও চেষ্টার অভিযোগে এক বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বের সংবাদমাধ্যমে তা ফলাও করে প্রচারিত হয়। এতে বাংলাদেশিদের ভাবমূর্তি কিছুটা হলেও ক্ষুণ্ন হয়েছে।
কূটনীতিক জানান, আগামীতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর ভিসা-ব্যবস্থা কড়াকড়ি হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটররা ভিসা-ব্যবস্থা আরো কঠোর করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছেন।
ওই কূটনীতিক আরো জানান, সন্ত্রাসী হামলার চেষ্টার অভিযোগে নাফিস গ্রেপ্তার হওয়ার পর বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকানদের ওপর বিদ্বেষমূলক আচরণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ এ নিয়ে চিন্তিত এবং বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রকেও জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদের গত শুক্রবার রাতে ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্র ও বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের জানান, নাফিসের সঙ্গে একান্তে কথা বলার সুযোগ চাওয়ার পাশাপাশি ব্যক্তি নাফিসের কারণে অভিবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব না দেখানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করেছেন, ব্যক্তি নাফিসের কারণে বাংলাদেশি-আমেরিকানদের বিরূপ দৃষ্টিতে দেখার কোনো কারণ নেই।
নাফিস দোষী সাব্যস্ত হলে বাংলাদেশের অবস্থান কী হবে- সে ব্যাপারে ধারণা পাওয়া যায় রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদেরের আরেকটি বক্তব্য থেকে। তিনি বলেছেন, 'বিচারে যদি প্রমাণিত হয় নাফিস সত্যিকার অর্থেই যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলা করতে চেয়েছিলেন, তাহলে তাঁর যে শাস্তি হবে, তা আমরা মেনে নেব।'
নাফিসের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়ার ইচ্ছা এরই মধ্যে জানিয়ে রেখেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। শুক্রবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বোমা হামলার পরিকল্পনার অভিযোগে আটক বাংলাদেশি তরুণের পেছনে দেশের কোনো জঙ্গি শক্তি ক্রীড়ানক হিসেবে কাজ করলে সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত কোনো বিদেশি যদি তাদের প্রচলিত কোনো আইন ভেঙে থাকে, তবে আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের আছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কোনো নাগরিকও যদি ধ্বংসাত্মক কোনো কাজে জড়িত হয় সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রকে সব রকমের সহযোগিতা দেবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান ড. দেলোয়ার হোসেন কালের কণ্ঠকে জানান, ব্যক্তি নাফিস ইস্যুতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা তিনি দেখেন না। সত্যিকার অর্থে কেউ অপরাধ করে থাকলে তা বের করার দায়িত্ব সবার। যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নাগরিক বাংলাদেশে অভিযুক্ত হলে ওই দেশটি এ দেশের কাছে তথ্য জানতে চাইবে। বাংলাদেশও তাই করছে।
দেলোয়ার আরো জানান, বাংলাদেশ একে তো মুসলিম রাষ্ট্র। তার ওপর এই রাষ্ট্রের একজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ উঠেছে। সত্যিই যদি তিনি অপরাধী হয়ে থাকেন, তাহলে মাত্র ২১ বছর বয়সের একজন তরুণ কীভাবে অপরাধে জড়ালেন- তা খতিয়ে দেখা দরকার। কারণ এর ওপর অভিবাসী বাংলাদেশি ও উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যেতে আগ্রহী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের প্রতি দেশটির আচরণ নির্ভর করছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ মিশনে দায়িত্ব পালনকারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক রাষ্ট্রদূত গতকাল সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে জানান, নাফিস এখনো দোষী সাব্যস্ত হননি। তাঁর বিচার শুরু হয়েছে মাত্র। তিনি যদি অপরাধী প্রমাণিত হনও, তাতেও দুই দেশের সম্পর্কে প্রভাব পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কূটনীতিক গতকাল শনিবার কালের কণ্ঠকে জানান, গত বুধবার সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা ও চেষ্টার অভিযোগে এক বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বের সংবাদমাধ্যমে তা ফলাও করে প্রচারিত হয়। এতে বাংলাদেশিদের ভাবমূর্তি কিছুটা হলেও ক্ষুণ্ন হয়েছে।
কূটনীতিক জানান, আগামীতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর ভিসা-ব্যবস্থা কড়াকড়ি হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটররা ভিসা-ব্যবস্থা আরো কঠোর করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছেন।
ওই কূটনীতিক আরো জানান, সন্ত্রাসী হামলার চেষ্টার অভিযোগে নাফিস গ্রেপ্তার হওয়ার পর বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকানদের ওপর বিদ্বেষমূলক আচরণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ এ নিয়ে চিন্তিত এবং বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রকেও জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদের গত শুক্রবার রাতে ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্র ও বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের জানান, নাফিসের সঙ্গে একান্তে কথা বলার সুযোগ চাওয়ার পাশাপাশি ব্যক্তি নাফিসের কারণে অভিবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব না দেখানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করেছেন, ব্যক্তি নাফিসের কারণে বাংলাদেশি-আমেরিকানদের বিরূপ দৃষ্টিতে দেখার কোনো কারণ নেই।
নাফিস দোষী সাব্যস্ত হলে বাংলাদেশের অবস্থান কী হবে- সে ব্যাপারে ধারণা পাওয়া যায় রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদেরের আরেকটি বক্তব্য থেকে। তিনি বলেছেন, 'বিচারে যদি প্রমাণিত হয় নাফিস সত্যিকার অর্থেই যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলা করতে চেয়েছিলেন, তাহলে তাঁর যে শাস্তি হবে, তা আমরা মেনে নেব।'
নাফিসের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়ার ইচ্ছা এরই মধ্যে জানিয়ে রেখেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। শুক্রবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বোমা হামলার পরিকল্পনার অভিযোগে আটক বাংলাদেশি তরুণের পেছনে দেশের কোনো জঙ্গি শক্তি ক্রীড়ানক হিসেবে কাজ করলে সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত কোনো বিদেশি যদি তাদের প্রচলিত কোনো আইন ভেঙে থাকে, তবে আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের আছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কোনো নাগরিকও যদি ধ্বংসাত্মক কোনো কাজে জড়িত হয় সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রকে সব রকমের সহযোগিতা দেবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান ড. দেলোয়ার হোসেন কালের কণ্ঠকে জানান, ব্যক্তি নাফিস ইস্যুতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা তিনি দেখেন না। সত্যিকার অর্থে কেউ অপরাধ করে থাকলে তা বের করার দায়িত্ব সবার। যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নাগরিক বাংলাদেশে অভিযুক্ত হলে ওই দেশটি এ দেশের কাছে তথ্য জানতে চাইবে। বাংলাদেশও তাই করছে।
দেলোয়ার আরো জানান, বাংলাদেশ একে তো মুসলিম রাষ্ট্র। তার ওপর এই রাষ্ট্রের একজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ উঠেছে। সত্যিই যদি তিনি অপরাধী হয়ে থাকেন, তাহলে মাত্র ২১ বছর বয়সের একজন তরুণ কীভাবে অপরাধে জড়ালেন- তা খতিয়ে দেখা দরকার। কারণ এর ওপর অভিবাসী বাংলাদেশি ও উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যেতে আগ্রহী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের প্রতি দেশটির আচরণ নির্ভর করছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ মিশনে দায়িত্ব পালনকারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক রাষ্ট্রদূত গতকাল সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে জানান, নাফিস এখনো দোষী সাব্যস্ত হননি। তাঁর বিচার শুরু হয়েছে মাত্র। তিনি যদি অপরাধী প্রমাণিত হনও, তাতেও দুই দেশের সম্পর্কে প্রভাব পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই।
No comments