উন্নয়ন ফোরামের বৈঠক আটকে গেছে পদ্মা সেতুর ফাঁদে!- বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে টানাপোড়েনের সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত দাতারা বৈঠকে আগ্রহ দেখাচ্ছে না by হামিদ-উজ-জামান মামুন
পদ্মা সেতুর ফাঁদে আটকে গেছে বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের বৈঠক (বিডিএফ)। বাংলাদেশে বৈদেশিক অর্থায়ন নিশ্চিত করাসহ দাতাদের সহায়তা প্রাপ্তির অন্যতম মাধ্যম এ বৈঠকটি দীর্ঘদিন ঝুলে থাকলেও এ বছর আর হচ্ছে না।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ প্রাথমিক প্রস্তুতি নিলেও শেষ পর্যন্ত তা আটকে যাচ্ছে। তাছাড়া পদ্মা সেতু ইস্যুতে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে টানাপোড়েনের সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত দাতারাও এ বৈঠকে অংশ নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ইকবাল মাহমুদ জনকণ্ঠকে জানান, প্রতিবছর দাতাদের সঙ্গে বিডিএফ বৈঠকের কথা থাকলেও গত বছর সেটি হয়নি। এবছর আমরা বিডিএফ বৈঠকের বিষয়ে দাতাদের জানিয়েছি। তারা বলেছে, বৈঠকটি অনুষ্ঠানের আগে তাদের কমপক্ষে তিন মাস সময় দিতে হবে।
বিডিএফ বৈঠকের গুরুত্ব সম্পর্কে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম জনকণ্ঠকে বলেন, উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনে নিয়মিত বিডিএিফ বৈঠক হওয়া জরুরী। এ বৈঠকের মাধ্যমে সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী দাতারা তাদের সহযোগিতার প্রাধান্য সম্পর্কে অবহিত হতে পারে। তাছাড়া বৈঠকে অর্থনীতির বিভিন্ন দিক, আমাদের অর্জন, সম্পদের সীমাবদ্ধতা, সম্পদের চাহিদাসহ বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে দাতাদের জানিয়ে রাখা যায়। পর্যালোচনা না হলে দেশের অর্থনীতির প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে তারা অবহিত হতে পারে না। এটি জানতে না পারলে কান্ট্রি স্ট্র্যাটেজি তৈরিতে সমস্যা হয়। ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আর্থিক সংস্থান নিশ্চিত করতে যত দ্রুত এই বিডিএফ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে ততই ভাল।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) দায়িত্বশীল উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে জানান, বর্তমান প্রেক্ষাপটে দাতাদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন, পলিসিগত নানা বিষয় এবং বৈদেশিক অর্থছাড় বাড়ানোসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বিডিএফ বৈঠক হওয়া জরুরী। এ বিবেচনায় গত ১৪ জুন লোকাল কন্সালটেটিভ গ্রুপের (এলসিজি) বৈঠকে দাতাদের স্থানীয় প্রতিনিধিদের সামনে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিডিএফ বৈঠকের প্রস্তাব দেয়া হয়। দীর্ঘ আলোচনার পর দাতারা একমত হয়ে সম্মতি দিয়েছে। তারা বলেছে, তাদের কেন্দ্রীয় অফিসের সঙ্গে কথা বলে কবে এ বৈঠক করা যায় সে বিষয়ে ইআরডিকে শীঘ্রই জানাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর জানায়নি কোন দাতা সংস্থাই।
তাছাড়া পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকসহ দাতাদের সঙ্গে সৃষ্ট দূরত্ব কমাতে ব্যাপক তৎপরতার অংশ হিসেবে ২৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় লোকাল কন্সালটেটিভ গ্রুপের (এলসিজি) বৈঠক। বৈঠকে জেসিএস বৈঠক অনুষ্ঠান বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আগ্রহ প্রকাশ করে দাতাদের জানানো হয় অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে বৈঠকের তারিখসহ বিস্তারিত তাদরে জানানো হবে। কিন্তু এ বিষয়ে আগ্রহ দেখায়নি কোন দাতা সংস্থাই। এমনকি বিডিএফ নিয়ে কোন আলোচনায় অংশ নেননি কোন দাতা সংস্থার প্রতিনিধিই।
এর আগে ২০১১ সালের ২ ও ৩ নবেম্বর বিডিএফ বৈঠকের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পরও শেষ পর্যন্ত দাতাদের কারণেই এটি বাতিল হয়ে যায়। কেননা এ ধরনের বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বা ওই পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ চেয়েছিল বাংলাদেশ থেকে। কিন্তু বিশ্বব্যাংকসহ অন্য দাতারা মধ্যম সারির কর্মকর্তাদের অংশ গ্রহণের ইঙ্গিত দিলে এ বৈঠক বাতিল হয়ে যায়। কেননা বিডিএফ হচ্ছে দাতাদের সঙ্গে সর্বোচ্চ বৈঠক। এতে দাতা সংস্থাগুলোর উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ না থাকলে উদ্দেশ্য পূরণ হয় না বলে মনে করে ইআরডি।
এর আগে সর্বশেষ গত ২০১০ সালের ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয় বিডিএফ বৈঠক। সেখানে সাতটি খাতে ২৫টি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। এর জন্য সময়সীমাও নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল।
পরবর্তীতে ওই বছরের ৭ নবেম্বর অনুষ্ঠিত হয় বিডিএফ মূল্যায়ন বৈঠক। এতে উপস্থাপিত অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী দেখা গেছে, ২০১০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত কর্মপরিকল্পনার অগ্রগতি বিশ্লেষণে সবচেয়ে পিছিয়ে ছিল সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও জ্বালানি খাত। দাতাদের কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কর্মপরিকল্পনাগুলো নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে পারেনি মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। বিডিএফ ও জাতীয় কৌশল, যৌথ সহায়তা কৌশল ও বিদেশী সহায়তার কার্যকারিতা, প্রাকৃতিক সম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবহন ও যোগাযোগ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ বিষয়ে কর্মপরিকল্পনার অগ্রগতি ছিল ধীর। তবে ওই মূল্যায়ন বৈঠকের প্রায় পৌনে দুই বছর পেরিয়ে গেলেও আর কোন মূল্যায়ন বৈঠক হয়নি।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ সূত্র জানায়, ২০০২ সালে প্যারিসে বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের বৈঠক হয়। সে বছরই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এখন থেকে প্যারিসে নয় উন্নয়ন ফোরামের বৈঠক হবে ঢাকায়।
সে হিসেবে ২০০৩ এবং ২০০৪ সালে ঢাকাতেই বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের বৈঠক হয়েছিল। এর পর আর হয়নি। পরবর্তীতে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে এ ফোরামের বৈঠক অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই সরকারের জনভিত্তি না থাকায় উন্নয়ন সহযোগীরা বিডিএফ বৈঠকে বসার ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়নি। এর পর দীর্ঘ ৫ বছর পর ২০১০ সালে এসে বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর অনুষ্ঠিত হয় সর্বশেষ বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের বৈঠক।
বিডিএফ বৈঠকের গুরুত্ব সম্পর্কে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম জনকণ্ঠকে বলেন, উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনে নিয়মিত বিডিএিফ বৈঠক হওয়া জরুরী। এ বৈঠকের মাধ্যমে সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী দাতারা তাদের সহযোগিতার প্রাধান্য সম্পর্কে অবহিত হতে পারে। তাছাড়া বৈঠকে অর্থনীতির বিভিন্ন দিক, আমাদের অর্জন, সম্পদের সীমাবদ্ধতা, সম্পদের চাহিদাসহ বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে দাতাদের জানিয়ে রাখা যায়। পর্যালোচনা না হলে দেশের অর্থনীতির প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে তারা অবহিত হতে পারে না। এটি জানতে না পারলে কান্ট্রি স্ট্র্যাটেজি তৈরিতে সমস্যা হয়। ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আর্থিক সংস্থান নিশ্চিত করতে যত দ্রুত এই বিডিএফ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে ততই ভাল।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) দায়িত্বশীল উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে জানান, বর্তমান প্রেক্ষাপটে দাতাদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন, পলিসিগত নানা বিষয় এবং বৈদেশিক অর্থছাড় বাড়ানোসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বিডিএফ বৈঠক হওয়া জরুরী। এ বিবেচনায় গত ১৪ জুন লোকাল কন্সালটেটিভ গ্রুপের (এলসিজি) বৈঠকে দাতাদের স্থানীয় প্রতিনিধিদের সামনে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিডিএফ বৈঠকের প্রস্তাব দেয়া হয়। দীর্ঘ আলোচনার পর দাতারা একমত হয়ে সম্মতি দিয়েছে। তারা বলেছে, তাদের কেন্দ্রীয় অফিসের সঙ্গে কথা বলে কবে এ বৈঠক করা যায় সে বিষয়ে ইআরডিকে শীঘ্রই জানাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর জানায়নি কোন দাতা সংস্থাই।
তাছাড়া পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকসহ দাতাদের সঙ্গে সৃষ্ট দূরত্ব কমাতে ব্যাপক তৎপরতার অংশ হিসেবে ২৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় লোকাল কন্সালটেটিভ গ্রুপের (এলসিজি) বৈঠক। বৈঠকে জেসিএস বৈঠক অনুষ্ঠান বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আগ্রহ প্রকাশ করে দাতাদের জানানো হয় অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে বৈঠকের তারিখসহ বিস্তারিত তাদরে জানানো হবে। কিন্তু এ বিষয়ে আগ্রহ দেখায়নি কোন দাতা সংস্থাই। এমনকি বিডিএফ নিয়ে কোন আলোচনায় অংশ নেননি কোন দাতা সংস্থার প্রতিনিধিই।
এর আগে ২০১১ সালের ২ ও ৩ নবেম্বর বিডিএফ বৈঠকের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পরও শেষ পর্যন্ত দাতাদের কারণেই এটি বাতিল হয়ে যায়। কেননা এ ধরনের বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বা ওই পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ চেয়েছিল বাংলাদেশ থেকে। কিন্তু বিশ্বব্যাংকসহ অন্য দাতারা মধ্যম সারির কর্মকর্তাদের অংশ গ্রহণের ইঙ্গিত দিলে এ বৈঠক বাতিল হয়ে যায়। কেননা বিডিএফ হচ্ছে দাতাদের সঙ্গে সর্বোচ্চ বৈঠক। এতে দাতা সংস্থাগুলোর উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ না থাকলে উদ্দেশ্য পূরণ হয় না বলে মনে করে ইআরডি।
এর আগে সর্বশেষ গত ২০১০ সালের ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয় বিডিএফ বৈঠক। সেখানে সাতটি খাতে ২৫টি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। এর জন্য সময়সীমাও নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল।
পরবর্তীতে ওই বছরের ৭ নবেম্বর অনুষ্ঠিত হয় বিডিএফ মূল্যায়ন বৈঠক। এতে উপস্থাপিত অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী দেখা গেছে, ২০১০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত কর্মপরিকল্পনার অগ্রগতি বিশ্লেষণে সবচেয়ে পিছিয়ে ছিল সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও জ্বালানি খাত। দাতাদের কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কর্মপরিকল্পনাগুলো নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে পারেনি মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। বিডিএফ ও জাতীয় কৌশল, যৌথ সহায়তা কৌশল ও বিদেশী সহায়তার কার্যকারিতা, প্রাকৃতিক সম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবহন ও যোগাযোগ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ বিষয়ে কর্মপরিকল্পনার অগ্রগতি ছিল ধীর। তবে ওই মূল্যায়ন বৈঠকের প্রায় পৌনে দুই বছর পেরিয়ে গেলেও আর কোন মূল্যায়ন বৈঠক হয়নি।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ সূত্র জানায়, ২০০২ সালে প্যারিসে বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের বৈঠক হয়। সে বছরই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এখন থেকে প্যারিসে নয় উন্নয়ন ফোরামের বৈঠক হবে ঢাকায়।
সে হিসেবে ২০০৩ এবং ২০০৪ সালে ঢাকাতেই বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের বৈঠক হয়েছিল। এর পর আর হয়নি। পরবর্তীতে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে এ ফোরামের বৈঠক অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই সরকারের জনভিত্তি না থাকায় উন্নয়ন সহযোগীরা বিডিএফ বৈঠকে বসার ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়নি। এর পর দীর্ঘ ৫ বছর পর ২০১০ সালে এসে বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর অনুষ্ঠিত হয় সর্বশেষ বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের বৈঠক।
No comments