বদলে যাও! বদলে ফেলো! by ড. মাহবুব হাসান
কে না চায় পরিবর্তন? সবাই আমরা পরিবর্তন চাই। পরিবর্তন করি আমাদের চারপাশের পরিবেশ-প্রতিবেশ, প্রতিদিন-প্রতিনিয়ত। এ জন্যই মানুষকে বলা হয় সৃজনশীল প্রাণী। কিন্তু সেই প্রাণী যখন 'মানব' হয়ে উঠেছে তার সৃজনশক্তির গুণে, তখন প্রাণী পেয়েছে নতুন সম্মান 'মানুষ'।
মানুষের মানবিকতা-মানবতা, মননশীলতা ও সৃজনশীলতা তাকে প্রাণিকুলের মধ্যে 'শ্রেষ্ঠ' অভিধায় সিক্ত করেছে। সে জন্য আমরা গর্বিত। আমরা মেধাবী। মেধা খাটিয়ে পৃথিবীর প্রতিকূলতা জয় করেছি আমরা। আবার সৃষ্টি করেছি নানা প্রয়োজনীয় উপকরণ-উপাদান। আজ সেই মেধাবী প্রাণীটি যদি পরিবর্তন ও বিবর্তনের নামে ব্যক্তিগত 'আখের গোছায়', তখন তাকে কি আমরা পরিবর্তন বলব? কোনো কিছু বদলে ফেলা বা পরিবর্তনের প্রয়াসের চেয়ে যদি আখের গোছানো প্রধান হয়ে যায় কোনো সংঘবদ্ধ রাজনৈতিক দলের, তাহলে তাকেই আমরা বলি দুর্নীতি। এর আরেকটা নাম আমরা দিয়েছি 'লুটপাট'। বর্তমান সরকারের আমলে 'কুইক রেন্টাল' নামের বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়ে 'ইনডেমনিটি' আরোপ করে সেই লুটপাটের সূচনাকে আইনের বাইরে রাখা হয়েছে। আরেকটা লুটের নাম দেওয়া হয়েছে 'ডিজিটাল বাংলাদেশ'। বিদ্যুতের খবর নাই নাম দিয়েছেন ডিজিটাল বাংলাদেশ। কানা ছেলের নাম 'পদ্মলোচন' আর কি! বাংলাদেশকে ডিজিটাল করে ছাড়বেই শেখ হাসিনার মহাজোট সরকার! কিন্তু বাস্তবতা সম্পর্কে সরকারের যে কাণ্ডজ্ঞান নেই, বা থাকলেও তা যে অন্য উদ্দেশ্য সাধনের জন্য করা হয়েছে, সেটা বোঝা গেল, যখন আমরা দেখলাম, ডিজিটালের প্রধান প্রধান উপাদান-উপকরণের কোনো দেখা নেই। অথচ মাঠের বক্তৃতায়, জাতীয় সংসদে কিংবা সেমিনারে, এমনকি জাতিসংঘের ভাষণেও ওই ডিজিটাল নিশান তুলে চলেছেন সরকারপ্রধান। পরিবর্তন আমরা চাই, সেই পরিবর্তন হতে হবে দেশের আপামর জনগণের জন্য, তাদের উন্নয়নের স্বার্থে। তারা ও তাদের যেন কাজে লাগে সেই উন্নয়নের বিষয়গুলো, সেটাই প্রধান হওয়া জরুরি। কিন্তু সেই জরুরি দিকটির কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে দেশের শিক্ষিতজনের জন্য আওয়ামী মহাজোট সরকার ডিজিটাল নিশান উড়িয়ে দিয়েছে বাংলার আকাশে। দেশের ৮০ শতাংশ কৃষক-শ্রমিক-মজুর আর তাদের অধিকাংশের ছেলেমেয়েরা যে সাক্ষর বা শিক্ষিত হতে পারছে না প্রায় ৪০ হাজার গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভাবে, সে খবর নেই মহাজোট সরকারের কাছে। তারা নিশান তুলেই খালাস। এ জন্য আমাদের উন্নয়নের নিশান আছে, বিদ্যুতের খুঁটি যেমন তোলা হয়েছিল বিএনপি সরকারের আমলে, ঠিক সেই রকম আমরা ডিজিটালের নিশান দেখছি, ডিজিটালের রমরমা ব্যবহার দেখছি না কোথাও। বেশ ঘটা করে বাংলাদেশ সরকারের একটি প্রতিষ্ঠান ডিজিটালের সহায়ক মেশিন 'ল্যাপটপ' উৎপাদন করে জনসম্মুখে তুলে ধরেছিল। বলা হয়েছিল, প্রতিটি স্কুল ও কলেজে ওই দোয়েল ল্যাপটপ দেওয়া হবে। দোয়েল ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে মাত্র ১০ হাজার টাকায়। ওই ল্যাপটপ দোয়েল যে বাজারে উড়ে আসতে পারেনি আজও, সে খবর বোধ হয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জানতেও পারেননি। জানবেন কেমন করে? তিনি তো দায়িত্বশীল লোককে কাজটা দিয়ে রেখেছেন, তিনি তো সব কিছু সময়মতো করবেন এবং সরকার তথা শেখ হাসিনার ডিজিটালের নিশান আকাশে তুলে ধরবেন! কিন্তু সেই ব্যক্তিও বোধ হয় কারিগরি জ্ঞানীদের চোপার কাছে নতজানু হয়ে বসে আছেন। কিংবা 'তাহারা' দায়িত্বশীলকে ধোঁকা দিয়েছে সেই শুরুতেই। তরুণ প্রজন্মের ছেলে-ছোকরারা তাদের ল্যাপের ওপর টপটি- মানে 'দোয়েল ল্যাপটপ'টি দেখতে না পেয়ে যারপরনাই নাখোশ! "এত সাধের 'ময়না' আমার বাঁধন কেটে যায়!" বলে তারা ডিজিটালের মোহ থেকে নিজেদের বাস্তবে ফিরিয়ে এনেছে। আর আসল বাস্তবতা হচ্ছে, ১০ হাজার টাকায় ল্যাপটপ কেনার সামর্থ্য কয়জন গ্রামীণ মানুষের আছে? বিদ্যুৎ ঘরে ঘরে পৌঁছে গেলেও যে ঘরে ঘরে ল্যাপটপ যাবে না, এই সত্য তো রাজনৈতিক সত্য। সেই সত্যকে ধামাচাপা দিয়ে আওয়ামী সরকার এখনো সেই পরিবর্তনের ডিজিটাল স্লোগান দিয়ে চলেছে। কিন্তু আওয়ামী মহাজোটের স্লোগানগুলো দেশের আপামর জনগণের কাছে 'কেন্দার কাঁটা'র মতো বিঁধছে এখন। রক্তাক্ত হচ্ছে তাদের পরিবর্তনের আশা আর ভরসা। তাতে কি মহাজোটের রোয়াব কমেছে? মোটেই না! তাদের রোয়াব যে কমেনি, তার দুটি উজ্জ্বল সদস্য হচ্ছেন মাননীয় মন্ত্রী ম খা আলমগীর আর দপ্তরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। এই গুপ্তবাবু এখন তাঁর বিরুদ্ধে উত্থাপিত রেলের নিয়োগ-বাণিজ্যের 'অপরাধ' গলার জোরে চাপা দিতেই তাঁর ৫৫ বছরের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের দোহাই দিয়ে তাঁর ও তাঁর পরিবারের মান-ইজ্জতের কথা বলছেন। সেই তিনি মান-ইজ্জত রক্ষার জন্য কয়েকটি মিডিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করতেও যাচ্ছেন। সেই সঙ্গে এ কথা বলে হুমকিও তিনি দিয়েছেন যে মিডিয়ার মালিকদের তিনি জানেন, চেনেন, তারা কে কিভাবে কী করেন, সবই তাঁর জানা আছে। অতএব সাধু সাবধান!
তিনি সত্য বলেছেন বটে। মিডিয়ার মালিকরাও তাঁর মতোই ক্ষুদ্র মধ্যবিত্ত থেকে আওয়ামী-বিএনপি-জাপা-জামায়াতের প্রকাশ্য-গোপন পথ ধরে 'ধনপতি চাঁদ সদাগর' হয়েছেন। তিনি খুব বেশি দিন হয়নি আওয়ামী লীগে এসে ভিড়েছেন। এর আগে তিনি ছিলেন গণতন্ত্রী দলের একজন নামজাদা সদস্য। সেই ১৯৭৩ সালের নির্বাচনেও তিনি জিতেছিলেন প্রবল আওয়ামী ভোট কারচুপির যুগেও। সে জন্য তিনি একটু ব্যতিক্রমী রাজনীতিক হিসেবেও খ্যাত ছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার পর তাঁর সেই খ্যাতি কেবল নষ্টই হয়নি, তিনি নিজেও ভ্রষ্ট হয়েছেন বলে মন্তব্য করা হচ্ছে।
আর স্বনামধন্য মহীউদ্দীন খান আলমগীর ছিলেন আমলা। 'জনতার মঞ্চে'র এই অধিনায়ক বিএনপিকে নির্বাচনে হারানোর অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠেছিলেন। শেষে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে প্রমাণ করেন যে তিনি আমলা থাকার সময়ই আওয়ামী লীগকে গোপনে নানাভাবে সহায়তা দিয়েছেন। তিনি যে সরকারি নীতিমালার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এহেন কাজ করেছেন, সেটা আজ আয়নার মতো স্পষ্ট। গতবার ছিলেন তিনি প্রতিমন্ত্রী, এবার শেষ পর্যায়ে শেখ হাসিনা তাঁকে পুরো মন্ত্রিত্ব দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁর হাতে দিয়েছেন।
ম খা আলমগীর পরিবর্তন চেয়েছেন। কেবল নিজের নয়, দেশ ও জাতিরও। সেই লক্ষ্যেই তিনি কাজ করছেন। কিন্তু বাধ সাধছে তাঁর অনমনীয় রাজনৈতিক চেতনা। যেহেতু আমলাজীবনে তিনি বহু রকম সরকারকে সার্ভ করেছেন, মানে তাঁরা যে পাত্রে ঢুকেছেন, তিনি ও তারা সেই পাত্রের আকার ধারণ করেছেন।
ফলে তাঁর সুবিধা ও ফ্লেকজিবিলিটি অনেক বেশি রাজনীতিকদের চেয়ে। তিনি এখন রাজনৈতিক চরিত্র হিসেবে সত্য-মিথ্যা মিশিয়ে, সরকার ও দলের ভাবের ঘরের মূর্তি রক্ষায় আদাজল খেয়ে নেমেছেন।
এ দেশের মানুষ খুব ধৈর্যশীল। তারা ২২ বছর ধরে ধৈর্য ধারণ করে আছে। কিসের আশায়! তাদের উন্নতির আশায়। শেখ হাসিনা বলবেন, আমার সরকারের সময় বাম্পার ফলন হয়েছে। দেশের মানুষ এখন দুবেলা পেট পুরে খেতে-পরতে পারছে। কথা সত্য। উৎপাদন বেড়েছে। কিন্তু সেই ফসলের দাম বাড়েনি। সেটা শেখ হাসিনা বলবেন না। আবার দাম বাড়লে বলবেন আমার কৃষক ভাইদের হাতে দুটি পয়সা যাক, এটা বিরোধী দল চায় না। চান না বুদ্ধিজীবীরা। নিজের পেটের দায়ে ফসল ফলায় কৃষক, তাতে সরকারের অবদান কতটা? এর পাশাপাশি আমরা দেখি রাতারাতি রাজনীতিকদের 'ধনপতি চাঁদ সদাগর' হতে। মুদি দোকানিকে দেখি হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হতে। আবার তাঁরাই তিন-চার প্রতিষ্ঠানের নামে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লোন নিয়ে (নাকি লুট করে) গলাবাজি করেন। এ সবই আমাদের গণতান্ত্রিক খ্যাত রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য আজ। এই যদি পরিবর্তনের নমুনা হয়, তাহলে সত্যিকার পরিবর্তন কতটুকু হয়েছে গত ২২ বছরে? কিছু উন্নয়ন যে হয়নি, তা তো নয়। তবে তার সুবিধা ভোগ করতে পারছে দেশের বৃহত্তর জনগণ কতটুকু, সেটাই আসল প্রশ্ন। যারা খাদ্যশস্য উৎপাদন করে দেশের ১৬ কোটি মানুষের অন্ন জোগাচ্ছে, আমরা চাই, তারাই হোক উন্নয়নের প্রধান টার্গেট। ঢাকা মহানগরে এলিভেটেড এক্সপ্রেস হাইওয়ে বানালে কৃষকের কোনো উন্নতি নেই, পদ্মা সেতুও সেভাবে উপকারে আসবে না। সরকার যেমন বলেছিল, কৃষককে মাগনা সার দেবে, সেটা না দিয়ে বরং তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে সারের অগি্নমূল্য। এই প্রতারণার জবাব তারা দেবে আগামী নির্বাচনে, সেই উৎপাদিকাশক্তি, যারা আশায় বুক বেঁধে ভোট দিয়েছিল নৌকায়।
লেখক : কবি, সাংবাদিক
poetmahbub03@yahoo.com
তিনি সত্য বলেছেন বটে। মিডিয়ার মালিকরাও তাঁর মতোই ক্ষুদ্র মধ্যবিত্ত থেকে আওয়ামী-বিএনপি-জাপা-জামায়াতের প্রকাশ্য-গোপন পথ ধরে 'ধনপতি চাঁদ সদাগর' হয়েছেন। তিনি খুব বেশি দিন হয়নি আওয়ামী লীগে এসে ভিড়েছেন। এর আগে তিনি ছিলেন গণতন্ত্রী দলের একজন নামজাদা সদস্য। সেই ১৯৭৩ সালের নির্বাচনেও তিনি জিতেছিলেন প্রবল আওয়ামী ভোট কারচুপির যুগেও। সে জন্য তিনি একটু ব্যতিক্রমী রাজনীতিক হিসেবেও খ্যাত ছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার পর তাঁর সেই খ্যাতি কেবল নষ্টই হয়নি, তিনি নিজেও ভ্রষ্ট হয়েছেন বলে মন্তব্য করা হচ্ছে।
আর স্বনামধন্য মহীউদ্দীন খান আলমগীর ছিলেন আমলা। 'জনতার মঞ্চে'র এই অধিনায়ক বিএনপিকে নির্বাচনে হারানোর অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠেছিলেন। শেষে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে প্রমাণ করেন যে তিনি আমলা থাকার সময়ই আওয়ামী লীগকে গোপনে নানাভাবে সহায়তা দিয়েছেন। তিনি যে সরকারি নীতিমালার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এহেন কাজ করেছেন, সেটা আজ আয়নার মতো স্পষ্ট। গতবার ছিলেন তিনি প্রতিমন্ত্রী, এবার শেষ পর্যায়ে শেখ হাসিনা তাঁকে পুরো মন্ত্রিত্ব দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁর হাতে দিয়েছেন।
ম খা আলমগীর পরিবর্তন চেয়েছেন। কেবল নিজের নয়, দেশ ও জাতিরও। সেই লক্ষ্যেই তিনি কাজ করছেন। কিন্তু বাধ সাধছে তাঁর অনমনীয় রাজনৈতিক চেতনা। যেহেতু আমলাজীবনে তিনি বহু রকম সরকারকে সার্ভ করেছেন, মানে তাঁরা যে পাত্রে ঢুকেছেন, তিনি ও তারা সেই পাত্রের আকার ধারণ করেছেন।
ফলে তাঁর সুবিধা ও ফ্লেকজিবিলিটি অনেক বেশি রাজনীতিকদের চেয়ে। তিনি এখন রাজনৈতিক চরিত্র হিসেবে সত্য-মিথ্যা মিশিয়ে, সরকার ও দলের ভাবের ঘরের মূর্তি রক্ষায় আদাজল খেয়ে নেমেছেন।
এ দেশের মানুষ খুব ধৈর্যশীল। তারা ২২ বছর ধরে ধৈর্য ধারণ করে আছে। কিসের আশায়! তাদের উন্নতির আশায়। শেখ হাসিনা বলবেন, আমার সরকারের সময় বাম্পার ফলন হয়েছে। দেশের মানুষ এখন দুবেলা পেট পুরে খেতে-পরতে পারছে। কথা সত্য। উৎপাদন বেড়েছে। কিন্তু সেই ফসলের দাম বাড়েনি। সেটা শেখ হাসিনা বলবেন না। আবার দাম বাড়লে বলবেন আমার কৃষক ভাইদের হাতে দুটি পয়সা যাক, এটা বিরোধী দল চায় না। চান না বুদ্ধিজীবীরা। নিজের পেটের দায়ে ফসল ফলায় কৃষক, তাতে সরকারের অবদান কতটা? এর পাশাপাশি আমরা দেখি রাতারাতি রাজনীতিকদের 'ধনপতি চাঁদ সদাগর' হতে। মুদি দোকানিকে দেখি হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হতে। আবার তাঁরাই তিন-চার প্রতিষ্ঠানের নামে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লোন নিয়ে (নাকি লুট করে) গলাবাজি করেন। এ সবই আমাদের গণতান্ত্রিক খ্যাত রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য আজ। এই যদি পরিবর্তনের নমুনা হয়, তাহলে সত্যিকার পরিবর্তন কতটুকু হয়েছে গত ২২ বছরে? কিছু উন্নয়ন যে হয়নি, তা তো নয়। তবে তার সুবিধা ভোগ করতে পারছে দেশের বৃহত্তর জনগণ কতটুকু, সেটাই আসল প্রশ্ন। যারা খাদ্যশস্য উৎপাদন করে দেশের ১৬ কোটি মানুষের অন্ন জোগাচ্ছে, আমরা চাই, তারাই হোক উন্নয়নের প্রধান টার্গেট। ঢাকা মহানগরে এলিভেটেড এক্সপ্রেস হাইওয়ে বানালে কৃষকের কোনো উন্নতি নেই, পদ্মা সেতুও সেভাবে উপকারে আসবে না। সরকার যেমন বলেছিল, কৃষককে মাগনা সার দেবে, সেটা না দিয়ে বরং তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে সারের অগি্নমূল্য। এই প্রতারণার জবাব তারা দেবে আগামী নির্বাচনে, সেই উৎপাদিকাশক্তি, যারা আশায় বুক বেঁধে ভোট দিয়েছিল নৌকায়।
লেখক : কবি, সাংবাদিক
poetmahbub03@yahoo.com
No comments