বিশ্বকাপ শুরুর দিনেও নিরুত্তাপ শ্রীলঙ্কা by নোমান মোহাম্মদ
কলম্বোর বিমানবন্দরে আছে গোটা কয়েক পোস্টার। সাকিব-মালিঙ্গা-আফ্রিদিদের প্রমাণ সাইজ কিছু কাটআউট ছবি ছড়িয়ে শহরের এখানে-ওখানে। কিছু কিছু সড়কদ্বীপের দখল নিয়েছে তা। আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামের একপাশের রাস্তায় নতুন পিচের আস্তরণ।
ব্যস! শ্রীলঙ্কায় টোয়েন্টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যে শুরু হচ্ছে আজ, দিন চারেক এখানে কাটানোর পর চাক্ষুষ প্রতিফলন এটুকুনেই।
হ্যাঁ, বিশ্বের ক্রিকেট খেলুড়ে সব দল চলে এসেছে এখানে। শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন মস্তবড় সব তারকা। নিয়ম মেনে অনুশীলন হচ্ছে। অনুশীলন ম্যাচও। এর পরও সাধারণে বিশ্বকাপের রোমাঞ্চটা আশ্চর্য রকম অনুপস্থিত। ২০১১ বিশ্বকাপের সময় পুরো বাংলাদেশ যেমন উন্মাদনায় কেঁপেছিল, সেটিকে মনে হচ্ছে অবাস্তব। ওই তুলনায় এখানে সবই পানসে। অথচ টোয়েন্টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ঢাকে আজই পড়ে যাচ্ছে কাঠির বাড়ি।
ক্রিকেট নিয়ে খুব একটা খোঁজখবর যাঁরা রাখেন না, তেমন কলম্বোবাসীদের সেটি অবশ্য বোঝার উপায় নেই।
অতিভোজনে অমৃতেও অরুচি ধরে। এটি একটা কারণ হতে পারে। পাঁচ বছরে চতুর্থবারের মতো বসছে যে টোয়েন্টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর! এই বিশ্বকাপে তাই আর বিশ্ব কাঁপে না। আয়োজক দেশেই যেখানে কাঁপুনি নেই, সেখানে ক্রিকেট বিশ্বে কাঁপন ধরানো তো অসম্ভব কল্পনা!
তবে এখানে ভালো করার ব্যাপারে সব দলের চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা। নিজস্ব অভিযান আছে প্রত্যেকের। স্বাগতিকরা যেমন ট্রফি ঘরে রেখে দিতে চাইবে, ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া-ভারত-পাকিস্তানের মতো দলগুলো চাইবে তা ছিনিয়ে নিতে। আবার আয়ারল্যান্ড বা আফগানিস্তানের মতো দলের মিশন নিজেদের সামর্থ্যের জানান দেওয়ার। বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের বাস্তবসম্মত লক্ষ্য_গ্রুপ পর্ব টপকানোর। শুধু শুধু তো আর অলীক স্বপ্নের পেছনে ছুটে লাভ নেই!
এমনিতে এই ফরম্যাটের ক্রিকেটে বাংলাদেশের সুযোগ টেস্ট-ওয়ানডের চেয়ে বেশি থাকে বলে সবার ধারণা। মাঠে গিয়ে অবশ্য এর প্রতিফলন দেখা গেছে কমই। এ জন্য অভিজ্ঞতার ঘাটতিকেই বরাবর দুষেছেন অধিনায়ক থেকে শুরু করে টিম ম্যানেজমেন্টের সবাই। এবার আর সেই আক্ষেপে পোড়ার সুযোগ নেই। কেননা রূপকথার মতো এশিয়া কাপের পর থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ধ্যান-জ্ঞান এই টোয়েন্টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জিম্বাবুয়ে গিয়েছে তারা, ইউরোপ সফরে খেলেছে আয়ারল্যান্ড-স্কটল্যান্ড-নেদারল্যান্ডসের মতো দলগুলোর বিপক্ষে। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে বার্বাডোজ-ত্রিনিদাদ-আফগানিস্তানের পর শ্রীলঙ্কায় এসে আবার জিম্বাবুয়ে-আয়ারল্যান্ড। গাইতে গাইতে গায়েনের মতো বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা খেলতে খেলতে টোয়েন্টি টোয়েন্টির খেলোয়াড় হয়ে উঠলেই হয়। আর না হলে অন্তত সেটিকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করানোর দরজার কপাট বন্ধ হয়ে গেছে!
কালই ছিল বাংলাদেশের শেষ প্রস্তুতি ম্যাচ। আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরে তেতো স্বাদ নিয়েই বিশ্বকাপ অভিযানে নামবে তারা। পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডকে এর পরও সতর্কবার্তা ছুড়ছেন সাকিব-তামিম-আশরাফুলরা। গত কয়েক মাসে প্রমাণ করেছেন, নিজেদের দিনে অজেয় হয়ে ওঠার ক্ষমতা তাদের আছে। সেই দিনগুলো বিশ্বকাপে এলেই হয়! কাল কলম্বোয় ম্যাচ খেলে রাতেই ক্যান্ডি পেঁৗছে গেছে রিচার্ড পাইবাসের দল। ২১ ও ২৫ সেপ্টেম্বর গ্রুপ পর্বের দুটি ম্যাচ ওই শহরের পাল্লেকেলেতে।
তিন গ্রুপে ১২ দলের টুর্নামেন্ট ছড়িয়ে আয়োজিত হচ্ছে তিনটি শহরে। তবে কলম্বোতেই যখন উন্মাদনা নেই, হাম্বানটোটা কিংবা পাল্লেকেলেতেও এর ছিটেফোঁটা আশা করা বাড়াবাড়ি। ক্রিকেটের জনপ্রিয়তম ধারা বলে স্বীকৃত টোয়েন্টি টোয়েন্টির জনপ্রিয়তা তাই হুমকির মুখে। বিশেষত গতকাল প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের দর্শক সংখ্যা দেখে আইসিসির কপালে ভাঁজ পড়তে বাধ্য। শুরু হয়েছিল হাজারখানেক দিয়ে, শেষে মেরেকেটে দু-আড়াই হাজার! স্কোরবোর্ডের উল্টোদিকে উইকেটের আড়াআড়ি থাকা চিয়ারলিডারদের দেখে মায়াই হচ্ছিল। মাত্র দুজন, ভুল না মাত্র দুজন দর্শকের সামনেই নেচে নেচে স্ফূর্তির ভান করে যেতে হলো তাঁদের।
আবার কে জানে, আজ হাম্বানটোটায় শ্রীলঙ্কা-জিম্বাবুয়ে ম্যাচ দিয়ে মূল টুর্নামেন্ট শুরু হতেই হয়তো বদলে যাবে দৃশ্যপট।
জাতীয় দলের নীল-হলুদ রঙের তালে নেচে উঠবে গোটা লঙ্কাদ্বীপ। আইসিসির মুখরক্ষার জন্য সেটি যে বড্ড প্রয়োজন!
হ্যাঁ, বিশ্বের ক্রিকেট খেলুড়ে সব দল চলে এসেছে এখানে। শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন মস্তবড় সব তারকা। নিয়ম মেনে অনুশীলন হচ্ছে। অনুশীলন ম্যাচও। এর পরও সাধারণে বিশ্বকাপের রোমাঞ্চটা আশ্চর্য রকম অনুপস্থিত। ২০১১ বিশ্বকাপের সময় পুরো বাংলাদেশ যেমন উন্মাদনায় কেঁপেছিল, সেটিকে মনে হচ্ছে অবাস্তব। ওই তুলনায় এখানে সবই পানসে। অথচ টোয়েন্টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ঢাকে আজই পড়ে যাচ্ছে কাঠির বাড়ি।
ক্রিকেট নিয়ে খুব একটা খোঁজখবর যাঁরা রাখেন না, তেমন কলম্বোবাসীদের সেটি অবশ্য বোঝার উপায় নেই।
অতিভোজনে অমৃতেও অরুচি ধরে। এটি একটা কারণ হতে পারে। পাঁচ বছরে চতুর্থবারের মতো বসছে যে টোয়েন্টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর! এই বিশ্বকাপে তাই আর বিশ্ব কাঁপে না। আয়োজক দেশেই যেখানে কাঁপুনি নেই, সেখানে ক্রিকেট বিশ্বে কাঁপন ধরানো তো অসম্ভব কল্পনা!
তবে এখানে ভালো করার ব্যাপারে সব দলের চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা। নিজস্ব অভিযান আছে প্রত্যেকের। স্বাগতিকরা যেমন ট্রফি ঘরে রেখে দিতে চাইবে, ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া-ভারত-পাকিস্তানের মতো দলগুলো চাইবে তা ছিনিয়ে নিতে। আবার আয়ারল্যান্ড বা আফগানিস্তানের মতো দলের মিশন নিজেদের সামর্থ্যের জানান দেওয়ার। বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের বাস্তবসম্মত লক্ষ্য_গ্রুপ পর্ব টপকানোর। শুধু শুধু তো আর অলীক স্বপ্নের পেছনে ছুটে লাভ নেই!
এমনিতে এই ফরম্যাটের ক্রিকেটে বাংলাদেশের সুযোগ টেস্ট-ওয়ানডের চেয়ে বেশি থাকে বলে সবার ধারণা। মাঠে গিয়ে অবশ্য এর প্রতিফলন দেখা গেছে কমই। এ জন্য অভিজ্ঞতার ঘাটতিকেই বরাবর দুষেছেন অধিনায়ক থেকে শুরু করে টিম ম্যানেজমেন্টের সবাই। এবার আর সেই আক্ষেপে পোড়ার সুযোগ নেই। কেননা রূপকথার মতো এশিয়া কাপের পর থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ধ্যান-জ্ঞান এই টোয়েন্টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জিম্বাবুয়ে গিয়েছে তারা, ইউরোপ সফরে খেলেছে আয়ারল্যান্ড-স্কটল্যান্ড-নেদারল্যান্ডসের মতো দলগুলোর বিপক্ষে। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে বার্বাডোজ-ত্রিনিদাদ-আফগানিস্তানের পর শ্রীলঙ্কায় এসে আবার জিম্বাবুয়ে-আয়ারল্যান্ড। গাইতে গাইতে গায়েনের মতো বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা খেলতে খেলতে টোয়েন্টি টোয়েন্টির খেলোয়াড় হয়ে উঠলেই হয়। আর না হলে অন্তত সেটিকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করানোর দরজার কপাট বন্ধ হয়ে গেছে!
কালই ছিল বাংলাদেশের শেষ প্রস্তুতি ম্যাচ। আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরে তেতো স্বাদ নিয়েই বিশ্বকাপ অভিযানে নামবে তারা। পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডকে এর পরও সতর্কবার্তা ছুড়ছেন সাকিব-তামিম-আশরাফুলরা। গত কয়েক মাসে প্রমাণ করেছেন, নিজেদের দিনে অজেয় হয়ে ওঠার ক্ষমতা তাদের আছে। সেই দিনগুলো বিশ্বকাপে এলেই হয়! কাল কলম্বোয় ম্যাচ খেলে রাতেই ক্যান্ডি পেঁৗছে গেছে রিচার্ড পাইবাসের দল। ২১ ও ২৫ সেপ্টেম্বর গ্রুপ পর্বের দুটি ম্যাচ ওই শহরের পাল্লেকেলেতে।
তিন গ্রুপে ১২ দলের টুর্নামেন্ট ছড়িয়ে আয়োজিত হচ্ছে তিনটি শহরে। তবে কলম্বোতেই যখন উন্মাদনা নেই, হাম্বানটোটা কিংবা পাল্লেকেলেতেও এর ছিটেফোঁটা আশা করা বাড়াবাড়ি। ক্রিকেটের জনপ্রিয়তম ধারা বলে স্বীকৃত টোয়েন্টি টোয়েন্টির জনপ্রিয়তা তাই হুমকির মুখে। বিশেষত গতকাল প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের দর্শক সংখ্যা দেখে আইসিসির কপালে ভাঁজ পড়তে বাধ্য। শুরু হয়েছিল হাজারখানেক দিয়ে, শেষে মেরেকেটে দু-আড়াই হাজার! স্কোরবোর্ডের উল্টোদিকে উইকেটের আড়াআড়ি থাকা চিয়ারলিডারদের দেখে মায়াই হচ্ছিল। মাত্র দুজন, ভুল না মাত্র দুজন দর্শকের সামনেই নেচে নেচে স্ফূর্তির ভান করে যেতে হলো তাঁদের।
আবার কে জানে, আজ হাম্বানটোটায় শ্রীলঙ্কা-জিম্বাবুয়ে ম্যাচ দিয়ে মূল টুর্নামেন্ট শুরু হতেই হয়তো বদলে যাবে দৃশ্যপট।
জাতীয় দলের নীল-হলুদ রঙের তালে নেচে উঠবে গোটা লঙ্কাদ্বীপ। আইসিসির মুখরক্ষার জন্য সেটি যে বড্ড প্রয়োজন!
No comments