‘বদলে যাও বদলে দাও মিছিল’ বিশেষ সংলাপ- রাসায়নিক ও ভেজালমুক্ত খাবার চাই
‘বদলে যাও বদলে দাও মিছিল’-এর উদ্যোগে ‘রাসায়নিক ও ভেজালমুক্ত খাবার চাই’ শীর্ষক বিশেষ সংলাপ অনুষ্ঠান গত ১ আগস্ট দেশ টিভিতে প্রচারিত হয়েছে। প্রথম আলো ও দেশ টিভির যৌথ উদ্যোগে নির্মিত এ অনুষ্ঠানে সহায়তা করেছে বিএসআরএম।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের মতামত, সুপারিশ ও প্রতিশ্রুতিগুলো সংক্ষেপ করে ছাপা হলো এই ক্রোড়পত্রে।
যাঁরা অংশ নিলেন
জি এম কাদের
মন্ত্রী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
আ ব ম ফারুক
ডিন, ফার্মেসি অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
কাজী ফারুক
প্রেসিডেন্ট, কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)
মোহাম্মদ আল আমিন
ম্যাজিস্ট্রেট, ভেজালবিরোধী অভিযান
মাহমুদুজ্জামান বাবু
কণ্ঠশিল্পী ও সমাজকর্মী
কাজী মনজুর করিম
বদলে যাও, বদলেদাও মিছিল ব্লক লেখক
সঞ্চালক
মিথিলা ফারজানা
আয়োজনে প্রথম আলো
মিথিলা ফারজানা: এটি একটি ইস্যুভিত্তিক সমাধান খোঁজার অনুষ্ঠান। আজকের ইস্যু রাসায়নিক ও ভেজালমুক্ত খাবার চাই। বাংলাদেশে শুধু চালের সঙ্গে কাঁকর, দুধের সঙ্গে পানিই মেশানো হয় না, আরও কত কী যে মেশানো হয়, সেটি খুঁজে বের করতে চাই আজকের অনুষ্ঠান থেকে। প্রথমেই যাব দর্শকদের কাছে। আপনাদের কারও কি এ রকম কোনো অভিজ্ঞতা আছে?
জ্যোতিষ্ক বিশ্বাস: আমার এক শিক্ষক ঢাকার একটি নামকরা সুপারশপ থেকে চিংড়ি মাছ কিনেছিলেন। বাসায় নেওয়ার পর ভুলে সেটি ফ্রিজে না রেখে রান্নাঘরে রেখেছিলেন। দুই দিন পর তাঁরা যখন রান্নাঘরে চিংড়ি মাছগুলোকে খুঁজে পেলেন, তখন দেখা গেল মাছগুলো পচেনি, আগের মতোই রয়েছে।
মিথিলা ফারজানা: আজকাল আমাদের দেশের খাবার আর পচছে না। সেই অলৌকিক কাণ্ডটির কারণ কী?
আ ব ম ফারুক: চিংড়ি, কাচকি ও অন্যান্য পচনশীল মাছে ফরমালিন দেওয়া হয়। বাংলাদেশে প্রথম আশির দশকে ব্যাপারিরা দুধে ফরমালিন ব্যবহার করতেন দূর-দূরান্ত থেকে দুধ সংগ্রহ করতেন বলে।
মিথিলা ফারজানা: মাননীয় মন্ত্রী, আমের গন্ধে ম-ম করছে বাজার। আম খেয়েছেন? এবং কোথা থেকে খেয়েছেন? কোনো সমস্যা হয়নি?
জি এম কাদের: হ্যাঁ খেয়েছি। আমি উত্তরায় থাকি। উত্তরার একটি বাজার থেকে কিনে খেয়েছি। লিচুও খেয়েছি। কোনো সমস্যা হয়নি।
মিথিলা ফারজানা: আজ আমাদের সঙ্গে আছেন ম্যাজিস্ট্রেট আল আমিন, যিনি খাদ্যে ভেজাল ধরতে অসংখ্য মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেছেন। আপনার কাছে জানতে চাইব, আসলে আমরা কী খাচ্ছি?
মোহাম্মদ আল আমিন: আগে কার্বোহাইড্রেট দিয়ে আম বেশি পাকানো হতো। আমরা এটি শনাক্ত করে যখন হাজার হাজার কেজি আম নষ্ট করলাম, বিক্রেতাদের শাস্তি দিলাম, তখন তারা তাদের ধরন পরিবর্তন করল। তারা ইটোফেন নামের হরমোন দিয়ে পানিতে ভিজিয়ে অথবা স্প্রে করে আম পাকানো শুরু করল।
মিথিলা ফারজানা: দুধে কী মিশানো হয়?
মোহাম্মদ আল আমিন: দুধের মধ্যে আমরা দেখি কতটুকু পানি এবং ফরমালিন মেশানো হয়েছে। সবচেয়ে ভয়াবহ হচ্ছে, বাচ্চাদের জন্য যে জুস বানানো হয়, সেগুলো। লিচুর জুস বানানো হচ্ছে, তাতে লিচুর কোনো অস্তিত্ব নেই। কৃত্রিম লিচুর গন্ধ দিয়ে এই জুস বানানো হচ্ছে, কিন্তু মোড়কে সুন্দর লিচুর ছবি দেওয়া আছে। আমের ক্ষেত্রেও একই চিত্র। কোনো কারখানাতেই আমের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। কয়েকটি কারখানায় কিছু আমের দেখা পাওয়া গেলেও সেটা অতি নগণ্য মাত্রার। চকলেটের মধ্যে চিনির পরিবর্তে স্যাকারিন ব্যবহার করা হয়। চিনির চেয়ে স্যাকারিনের দাম কম এবং পরিমাণে চিনির চেয়ে অনেক কম লাগে। স্যাকারিন অনেক ক্ষতিকর। সেটি চিনির বিকল্প হতে পারে না। আবার খুব নিম্নমানের টেক্সটাইল রং ব্যবহার করা হয়।
মাহমুদুজ্জামান বাবু: একটা কথা একটু পরিষ্কার করছি। যেসব লিচু ব্যবসায়ী বা চাষি কীটনাশক ব্যবহার করেন, তাঁরা নিজেরাও জানেন না, তাঁরা নিজেদের অজান্তে কী বিষ ছড়িয়ে দিচ্ছেন। আমরা একটু ভিডিওতে দেখে নিই একজন লিচু ব্যবসায়ী বা গাছের মালিক কীভাবে তাঁর গাছে কীটনাশক ছড়াচ্ছেন।
ভিডিও সাক্ষাৎকার: লিচুর মুকুল আসার আগে একবার এবং পরে পাঁচবার স্প্রে করতে হয়। লিচু পাকার ১০-১২ দিন আগে স্প্রে বন্ধ করা হয়। এগ্রোমেথিন, ফাইটার, ডিপকট (কোম্পানির দেওয়া নাম) নামের বিষ দেওয়া হয়। ফাইটার দিলে লিচু বড় হয়। পোকা ধরে না। কিন্তু লিচুটা বিষাক্ত হয়ে যায়।
মাহমুদুজ্জামান বাবু: রাসায়নিক দ্রব্য যাঁরা ব্যবহার করেন, সেগুলোর অপব্যবহারের ফলে আমাদের দেহে যে ক্ষতিগুলো দেখতে পাই, সেই পরিসংখ্যান আমরা সংগ্রহ করেছি। সেটিও আমরা দেখে নিই।
গবেষণা তথ্য: বাংলাদেশে খাদ্যপণ্যে ব্যবহার নিষিদ্ধ রাসায়নিক দ্রব্যগুলো হলো—ফরমালিন, সোডিয়াম হাইড্রোসালফাইড (হাইড্রোজ), ক্যালসিয়াম কার্বাইড (কার্বাইড), ইথুফেন, ডিডিটি, টেক্সটাইল রং, স্যাকারিন।
খাদ্যপণ্যে ব্যবহূত নির্দিষ্ট মাত্রার রাসায়নিক দ্রব্য—টেস্টিং সল্ট, খাওয়ার সোডা, ফুল ফ্লেভার।
এগুলো অতিরিক্ত ব্যবহার করলে লিভার ও কিডনির সমস্যা হবে। ফরমালিন, হাইড্রোজ, কার্বাইড, ইথুফেন শুধু শিল্প ও গবেষণাগারে ব্যবহার হওয়ার কথা। কিন্তু এগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে মাছ ও ফলের পচন রোধ করতে, জিলাপি মচমচে করতে, মুড়ি বেশি ফোলাতে, ফল পাকাতে এবং রং ভালো করতে। আবার ডিডিটি ও টেক্সটাইল রং যথাক্রমে কীটনাশক ও কাপড় রং করতে ব্যবহার করার কথা। কিন্তু এগুলো ব্যবহূত হচ্ছে শুঁটকি মাছ, মরিচ, হলুদ, ধনিয়া, সস ও আইসক্রিমে।
মিথিলা ফারজানা: প্রফেসর আ ব ম ফারুক, হাইড্রোজ-ফরমালিনের প্যাকেটের ওপর লেখা থাকে খাদ্যপণ্যে ব্যবহার-নিষিদ্ধ রাসায়নিক দ্রব্য। এগুলো শিল্পকারখানা ছাড়া অন্য কোথাও ব্যবহার করার কথা নয়। এগুলো ব্যবহার করলে কী হবে?
আ ব ম ফারুক: আমরা অতি দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি, আমরা কয়েক জায়গায় লেদার কালারও পেয়েছি। লেদার কালার টেক্সটাইল কালারের চেয়ে আরও বেশি ক্ষতিকর। টেক্সটাইল কালার জৈব উপায়ে নষ্ট হয় না। টেক্সটাইল মিলের পাশে যে রঙিন পানি থাকে, সেখানে কোনো মশা, ব্যাঙ, পোকামাকড় বাস করে না। মরিচের গুঁড়া ও হলুদের গুঁড়া নিয়ে আমরা বেশি আতঙ্কিত। কারণ, সুডান রেড নিষিদ্ধ করা হয়েছে ষাটের দশক থেকে। কিন্তু আমাদের দেশে মরিচের গুঁড়াকে টকটকে লাল করার জন্য এটা ব্যবহার করা হচ্ছে। খাদ্য উৎপাদকেরা এটি আমদানি করছে। তারা সিসার লবণটাও বৈধভাবে আমদানি করছে। তারা হয়তো জানে না, এই জিনিসগুলো আমাদের ওপর কতটুকু প্রভাব ফেলে। একটা নীতিমালা যদি করে দেওয়া যায়, এই জিনিসগুলো খাদ্য উৎপাদকেরা আমদানি করতে পারবে না, তাহলে খুবই ভালো হয়। প্রকৃতপক্ষে সিসার লবণ শুধু খাদ্য উৎপাদক কেন, কারোরই আমদানি করার প্রয়োজন নেই।
জি এম কাদের: উনি যেসব কেমিক্যালের কথা বললেন, সেগুলোতে নিয়মনীতি আছে। আমাদের দেশে সবগুলোরই নীতিমালা আছে। কোনটা কীভাবে আনবেন, কোথায় ব্যবহার করবেন, সেগুলোর নীতিমালা রয়েছে। তাঁরা একটা নিয়মের ভেতর দিয়েই আমদানি করেন। কিন্তু আনার পর যেখানে যেটার ব্যবহার করা দরকার, সেখানে সেটা ব্যবহার না করে অন্য জায়গায় ব্যবহার করেন।
মিথিলা ফারজানা: খাদ্য উৎপাদনকারী যে প্রতিষ্ঠানগুলো, তাদের তো এ ধরনের জিনিস আনারই কথা নয়।
জি এম কাদের: খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এটা নিয়ে আসে না। যারা এটা অবাধে আমদানি করে, খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সেখান থেকে সংগ্রহ করে। একজন লোকের একাধিক ব্যবসাও থাকতে পারে।
আ ব ম ফারুক: ফরমালিন কিন্তু খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আমদানি করে না। এগুলো আমদানি করে তারা, যারা ফরমিকার তৈরি করে। যেমন, প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিগুলো, অর্থাৎ শিল্পকারখানায় ও গবেষণাগার। কিন্তু পরিমাণের তুলনায় তারা অনেক বেশি আমদানি করে। সরকারের কাছে আশা করব, এই আমদানি করার প্রক্রিয়ায় একটা সংরক্ষণশীলতা আসুক।
জি এম কাদের: আমরা একটা সমাধান খোঁজার চেষ্টা করছি। বিশেষ করে, ফরমালিনের ব্যাপারে।
মিথিলা ফারজানা: কী ধরনের সমাধান খুঁজছেন?
জি এম কাদের: এখানে আপনারা যেমন সাজেশন দিলেন, তেমন আরও সাজেশন নিয়ে সংরক্ষণ করা। কার কাছে কতটুকু আসবে, তা নির্ধারণ করা।
মিথিলা ফারজানা: ফরমালিনের যে বেচাকেনা, সেখানে কোনো লাইসেন্সিংয়ের ব্যবস্থা করা যায় কি না।
জি এম কাদের: লাইসেন্সিংয়ের ব্যবস্থা করলেও যে এটা সব সময় সুফল বয়ে আনবে, তা কিন্তু নয়। আগে কিন্তু লাইসেন্সের মাধ্যমেই ভেজাল জিনিস আসত। সেটা নিয়ে আরও বিরক্তিকর অবস্থায় পড়তে হতো। ফলের কথাই ধরা যাক, সেখানে কীটনাশক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। যখন আম, লিচু, শাকসবজি ইত্যাদিতে পোকা লাগে, তখন কীটনাশক হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে বাংলাদেশে। কিন্তু কোথায় কী পরিমাণে দেওয়া উচিত, সেই সচেতনতা সাধারণ মানুষের মধ্যে নেই।
মিথিলা ফারজানা: সচেতনতা তৈরির জন্য আমাদের মতো গণমাধ্যম কাজ করে যাচ্ছে। এসিড নিক্ষেপের ক্ষেত্রে যেটি হয়েছে, যখন এসিড বিক্রি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে, তখন এসিড নিক্ষেপও কমে এসেছে। সে রকম শিল্পকারখানায় ব্যবহূত যে জিনিসগুলো রয়েছে, সেগুলোর ওপর যদি নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব হয়, তাহলে এটি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আমরা আশা করি।
জি এম কাদের: এসিড নিক্ষেপ কমে এসেছে সচেতনতার জন্য, নাকি শাস্তির ভয়ে, সেটা আগে দেখতে হবে। এসিড ছোড়ায় অনেককে কঠিন শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আইন খুব কড়াকড়ি করা হয়েছে।
মিথিলা ফারজানা: এই কেনাবেচাটা কি কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না?
জি এম কাদের: সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। সরকার আরও খুশি হবে, যদি তার ওপর কোনো কিছু নিয়ন্ত্রণের ভার দেওয়া হয়। এই ভেজাল ধরতে গিয়ে আরও একটা সমস্যা দাঁড়িয়ে গেছে। আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটরা বাজারে গিয়ে ভেজাল দ্রব্য শনাক্ত করতে চাইলে ফরমালিন ছাড়া অন্যগুলো শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। প্রতিদিন নতুন নতুন রূপে এগুলো আমাদের সামনে হাজির হচ্ছে। এগুলো থেকে আমরা উত্তরণের চেষ্টা করছি। অনেক অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি আসছে ফরমালিন শনাক্ত করার জন্য।
মিথিলা ফারজানা: এবার দর্শকদের কিছু প্রশ্ন শুনি।
মোহাম্মদ আলম: মাননীয় মন্ত্রী, আপনার সরকারের শেষ সময়ে এসেও খাদ্যে ভেজালের ব্যাপারে বলছেন যে চেষ্টা করবেন। আমরা কি ভবিষ্যতে আশা করতে পারি, আমরা করেছি এমন কথা শুনব?
রোবায়েত ইসলাম: দিনাজপুরে লিচু খেয়ে ১৩ জন শিশুর মৃত্যু হলো, এর দায়দায়িত্ব কি শুধু রাষ্ট্রের?
কাজী সেলিম: মাঠপর্যায়ে যারা ফরমালিন ব্যবহার করে, তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে ব্যবসায়ীদের ধরতে পারেন এবং আমদানি লাইসেন্স বাতিল করা যেতে পারে।
জি এম কাদের: কাজ চলছে, এটা সব সময়ই বলা হবে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রতিদিন অনেক জিনিস নষ্ট করা হচ্ছে, শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতেও হবে। উন্নত দেশগুলোতে কোন জুসে কোন জিনিস কী পরিমাণ থাকবে, তার একটা মান নির্ধারণী রয়েছে। এর বাইরে গেলে প্রতিষ্ঠানকে শাস্তি পেতে হবে। বাংলাদেশে এ আইন আছে কি না, আমার জানা নেই। না থাকলে থাকা দরকার। বাইরের দেশগুলোতে যদি আমের জুসে আমের কোনো অংশ না থাকে, তাহলে উল্লেখ থাকে এটা আমের তৈরি নয়। আমের গন্ধ, সুবাস দিয়ে তৈরি। ২০০৯ সালের এপ্রিলে এ সংক্রান্ত একটি আইন পাস হয়েছে। এর জন্য আলাদা একটি অধিদপ্তর করা হয়েছে। ভোক্তাদের অধিকারের কথা চিন্তা করে আন্তর্জাতিক নিয়মাবলির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এটি করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করার জন্য জনবল, ভেজাল ধরার যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং হতে থাকবে।
মিথিলা ফারজানা: দর্শকদের জানা দরকার, আসলে ভোক্তা অধিকার কী। জনাব কাজী ফারুক, আপনার কাছ থেকে জানব।
কাজী ফারুক: বলা হয়ে থাকে, ভোক্তারা হচ্ছে অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি, অথচ তাদের কথা কেউ শোনে না। তারা অসহায় থাকে। আমরা সবাই ভোক্তা। রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে দিনমজুর পর্যন্ত সবাই ভোক্তা।
মিথিলা ফারজানা: এই ভোক্তা অধিকার আইনে কতটুকু অধিকার সংরক্ষিত হয়েছে?
কাজী ফারুক: ভোক্তা অধিকারের আইনটি ভালো। কিন্তু এই আইনে ভোক্তা নিজে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে না, এটা কেমন কথা!
মিথিলা ফারজানা: দর্শকদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি, আমি নিজে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলেও মামলা করতে পারব না।
কাজী ফারুক: ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরে ভোক্তা তাঁর অভিযোগ করতে পারবেন। ৩০ দিনের মধ্যে অধিদপ্তর সেটির ব্যবস্থা নেবে এবং ৯০ দিনের মধ্যে সেটি সুরাহা করবে। আসলে আমাদের ভোক্তা অধিকার আইন সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।
মিথিলা ফারজানা: ভোক্তা অধিকার আইন খুব কম ভোক্তারই জানা। দ্বিতীয়ত, মামলা করার পর সেটি লাল ফিতায় আবদ্ধ হবে কি না?
কাজী ফারুক: লাল ফিতায় যেন আবদ্ধ না হয়, সে ব্যাপারে ভোক্তাকে সচেতন থাকতে হবে। আবার আমরা যদি অবহিত হই, তাহলে আমাদেরও সচেতন থাকতে হবে।
কাজী মনজুর করিম: শুধু রাসায়নিক পদার্থ মেশানোই ভেজাল নয়, ওজনে কম দেওয়াও একটি ভেজাল। একই জিনিস বিভিন্ন মেশিনে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ওজন পাচ্ছি। এ ব্যাপারে আপনাদের কোনো ব্যবস্থা আছে কি না?
জি এম কাদের: ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়া কারও কাছে অভিযোগ করা যাবে না, তা কিন্তু নয়। ভোক্তা অধিদপ্তরে গিয়ে তারা অভিযোগ করতে পারে। অধিদপ্তর তাদের জরিমানা, শাস্তি দেওয়ার অধিকার রাখে। তাদের যে জরিমানা করা হবে, তার ২৫ শতাংশ ভোক্তাকে দিয়ে দেওয়া হয়।
মিথিলা ফারজানা: ভোক্তা নিজে কেন মামলা করতে পারবে না?
জি এম কাদের: ওটাও একটা মামলা। ওখানে ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছে। তারা জরিমানা করবে। আর যদি জেল দেওয়ার দরকার হয়, তাহলে তাকে আদালতে পাঠানো হবে। সেটা অধিদপ্তর থেকেই করা হবে। সরাসরি যেতে পারবে না। এ রকম আইন বহু আছে। সচেতনতা বাড়ানোর জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। জানার জন্য একতরফা পদ্ধতিতে হবে না। বাংলাদেশের বড় বড় পত্রিকার পুরো পাতা, অর্ধেক পাতাজুড়ে ভোক্তা অধিকার আইন সম্পর্কে সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে, এখনো হচ্ছে। কেউ যদি না জানে, সেটা তার দুর্ভাগ্য। এটা সবার জানা দরকার। সরকার সেটার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমাদেরও সেটা জানার চেষ্টা রাখতে হবে।
মিথিলা ফারজানা: জনাব কাজী ফারুক, অনেকক্ষণ যাবত একটি বিষয় যোগ করতে চাইছেন। সে ব্যাপারে কিছু বলুন।
কাজী ফারুক: আইনের বিষয়ে অজ্ঞ থাকলে সেটা কোনো অজুহাত হতে পারে না। ভোক্তাকে তার অধিকার জানতে হবে। তার উচিত জানা।
মিথিলা ফারজানা: মাননীয় মন্ত্রী বলেছেন, সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর যত বেশি নিয়ন্ত্রণের ভার দেওয়া হবে, তাঁরা তত বেশি খুশি হবেন। এ রকম কোনো ব্যাপার থাকে কি না?
মোহাম্মদ আল আমিন: আইন কিন্তু একটা জড় পদার্থ। আইনের সুফল হবে নাকি কুফল হবে, তা নির্ভর করে যিনি আইন প্রয়োগ করবেন তাঁর ওপর। যিনি আইন প্রয়োগ করবেন, তিনি যদি সৎ, দক্ষ, স্বচ্ছ না হন; তাহলে মানুষ কিন্তু এর দ্বারা কুফলও পেতে পারে। আমাদের একটি ভুল তথ্যের কারণে কোনো ভালো প্রতিষ্ঠানের সম্মান নষ্ট হতে পারে। আবার কোনো ভেজাল প্রতিষ্ঠান পার পেয়ে যেতে পারে। সে কারণে যাঁদের এ রকম মর্মস্পর্শী অভিযানের দায়িত্ব দেওয়া হবে, তাঁদের সৎ, স্বচ্ছ ও দক্ষ হওয়া দরকার। এবং যাঁদের এ কাজে নিয়োগ দেওয়া হবে, তাঁদের পূর্ব অভিজ্ঞতা, আচরণ, কাজের মান দেখে নির্বাচন করা উচিত। এটা করা সম্ভব।
মিথিলা ফারজানা: একটি দণ্ডাদেশ দেওয়ার পরও কেন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে?
মোহাম্মদ আল আমিন: আমরা যখন একটি কারখানায় অভিযান চালাই, তখন আমাদের সঙ্গে মিডিয়া থাকে। জনসমক্ষে দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। পত্রিকায় আসে। টেলিভিশনে দেখায়। কিন্তু পরে আর কেউ খোঁজখবর রাখে না। পরবর্তী সময়ে অপরাধীরা আপিল আদালতে যায়। জনসমক্ষে যেভাবে বিচার করা হয়, আদালতে ওই চিত্রটি ফুটে ওঠে না। এবং তারা নিজেদের পক্ষে চৌকস আইনজীবী ব্যবহার করে। নিজেকে নির্দোষ হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, এ রকম হাতেনাতে ধরার পর একজন বড় অপরাধী কয়েক দিন পর বের হয়ে গেছে।
মিথিলা ফারজানা: প্রফেসর আ ব ম ফারুক, দুই বছরের কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানাকে শাস্তি হিসেবে কি যথেষ্ট মনে করেন?
আ ব ম ফারুক: বিষয়টাকে যদি আমরা সরলীকরণ করি, আমরা যদি ভাবি যে সরকার আরও বেশি মোবাইল কোর্ট দেয় না কেন? আরও বেশি শাস্তির ব্যবস্থা করে না কেন—ব্যাপারটা কিন্তু সে রকম নয়। দুই লাখ টাকা একজন বড় ব্যবসায়ীর জন্য কিছুই নয়। আবার একজন ছোট ব্যবসায়ীর জন্য ২০ হাজার টাকাই অনেক বড়। তাই জরিমানাটা ব্যবসার আকার অনুযায়ী হওয়া উচিত।
মিথিলা ফারজানা: আমরা শুধু ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোর কথা বলছি, যারা শিঙাড়া বা জিলাপি তৈরি করে। কিন্তু বড় বড় প্রতিষ্ঠান যারা জুস বানাচ্ছে, গুঁড়া দুধ বানাচ্ছে, বিস্কুট বানাচ্ছে; তাদের সম্পর্কে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়?
আ ব ম ফারুক: বিদেশি সব জিনিস কিন্তু নিরাপদ নয়। মালয়েশিয়া থেকে যে বিস্কুট আসছে, সেখানেও কিন্তু ফরমালিনের ব্যাপারে পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হচ্ছে। সে পত্রিকাতেও টেক্সটাইল রঙের কথা লেখা হচ্ছে। আরেকটি কথা আসছে। আমের জুসের মধ্যে আমের দেখা নেই। আসলেই আম থাকার কথা নয়। কারণ, আপনি যে সাইজের জুসের প্যাকেটটি যে পরিমাণ টাকা দিয়ে কিনছেন, আপনি নিজেই ভেবে দেখুন অতটুকু পরিমাণ যদি আপনি আমের রস দিয়ে ভর্তি করতে চান, তাহলে কত টাকা হবে।
মিথিলা ফারজানা: বিদেশ থেকে যে খাবারগুলো বাংলাদেশে আসে, সেগুলো যে পথেই আসুক, সেখানে কাস্টমসে তেজস্ক্রিয়তা ও জীবাণু পরীক্ষা করার জায়গা আছে। কিন্তু রাসায়নিক কোনো দ্রব্য আছে কি না, সেটা পরীক্ষা করার উপায় আমাদের দেশে নেই।
জি এম কাদের: ভোক্তা অধিকার আইনে খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে কোনো নিষিদ্ধ/ বিষাক্ত দ্রব্য মেশালে তিন বছরের কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। আরেকটি ভেজাল পণ্য বা ওষুধ বিক্রয়ের দণ্ড: কেউ ভেজাল মেশালে, বিক্রয় করলে, কাউকে কেনার জন্য প্রস্তাব করলে অনূর্ধ্ব তিন বছরের কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। শুধু সম্মানহানি করলেই হবে না, তিন বছর হাজতে থাকার ব্যবস্থাও আছে। আইন যখন করা হয়, তখন বাস্তবতা উপলব্ধি করেই করা হয়। খাবারের কথা এসেছে, অন্য দেশ থেকে আমরা বিস্কুটসহ অনেক খাবার আনি কেন? আমরা একটা ডব্লিউটিওর আন্ডারে কাজ করি। তাদের দেশেও আমাদের দেশের খাবার পাঠাই। তারাও আমাদের দেশে তাদের খাবার পাঠায়। কিন্তু আমরা সেসব খাবারকে একটা বাণিজ্যিক বাধার মধ্যে ফেলি। সেটার দাম অনেক বেশি হয়। এর প্রতি মানুষকে অনুৎসাহী করার জন্যই এটি করা।
মিথিলা ফারজানা: পত্রপত্রিকায় যেটি বলা হয়, বিএসটিআইয়ের যে পণ্যগুলো আসে, তাদের সব পরীক্ষা করার মতো সুবিধা নেই।
জি এম কাদের: বিএসটিআই থেকে আমরা ফরমালিনের জন্য প্রচুর সুযোগ-সুবিধা নিয়ে থাকি, তাদেরও পর্যাপ্ত উন্নত যন্ত্রপাতি নেই। এখনো উন্নয়ন করছে। আমাদের সায়েন্স ল্যাবরেটরি রয়েছে, সেখানেও পরীক্ষা করাই। কিছু কিছু ডিপার্টমেন্টেও পরীক্ষা করার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু সেগুলো পর্যাপ্ত নয়।
মিথিলা ফারজানা: জনাব আ ব ম ফারুক, বাংলাদেশে গুঁড়া দুধের ব্যবহার নিয়ে কথা উঠেছে। দুধে মেলামিনের ব্যবহার নিয়ে কথা উঠেছে। চীন সেটিকে কীভাবে সমাধান করেছে?
আ ব ম ফারুক: যারা এর সঙ্গে জড়িত ছিল, যে প্রতিষ্ঠান জড়িত ছিল, তাদের প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মাহমুদুজ্জামান বাবু: দিনাজপুরে কীটনাশক মিশ্রিত লিচু খেয়ে পর্যায়ক্রমে ১৩ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আমরা তাদের স্বজন ও ডাক্তারদের কথা শুনব।
ভিডিও সংগ্রহ: ডা. মো. আবু বকর সিদ্দীক বলেন, প্রথমে আমরা অজ্ঞাত রোগ হিসেবে ডায়াগনোসিস করি এবং পরে আমাদের শিশু বিভাগের চিফ কনসালট্যান্ট ও অন্যান্য শিশু বিশেষজ্ঞকে নিয়ে একটি বোর্ড গঠন করি। সবাই যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তাদের বাঁচানো সম্ভব হয়নি। শিশুদের বাবা-মায়ের কাছ থেকে জানতে পারি কিছু নষ্ট লিচু না ধুয়ে তারা খেয়েছে। এতে হয়তো কোনো রাসায়নিক পদার্থ মেশানো ছিল। শিশুরা তো এ বিষয়ে সচেতন নয়। মায়েদের কাছ থেকে জানা যায়, ঝরে পড়া লিচু খেয়ে তাদের এই পরিণতি। কেউ কেউ রাতে ঘুমিয়ে আর ওঠেনি। অনেক শিশুকে হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা গেছে।
মিথিলা ফারজানা: শিশুরা গাছের নিচ থেকে লিচু কুড়িয়ে খাবে, সেটাও নিরাপদ নয়! সেই দায়ভার কে নেবে? তাহলে তো শিশুটি ভাববে, এ দেশে জন্ম নেওয়াটাই আমার অপরাধ কি না? মাননীয় মন্ত্রী, এই ভেজালমিশ্রিত খাবারের বিষয়ে কোন কোন মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট? সব মন্ত্রণালয়কে সমন্বয় করা সম্ভব কি না?
জি এম কাদের: যেটা দেখা যায়, সেটা একটা জায়গা থেকে দেখা যায়। কিন্তু এটার শিকড় অনেক জায়গায় থাকে। সে কারণে এটা বিভিন্ন জায়গা থেকে দেখতে হয়। তবে এর জন্য প্রক্রিয়া চলছে।
মিথিলা ফারজানা: জনাব আল আমিন, আপনি অনেক দিন ধরে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছেন। সমাধান কী হতে পারে?
মোহাম্মদ আল আমিন: ১৮৬০ সাল থেকে এ পর্যন্ত অনেক ভেজালবিরোধী আইন হয়েছে। এমনকি মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিধান পর্যন্ত রয়েছে। এসিডের মতো যদি এটিরও মজুদ আইন করা হয় এবং উৎপাদন, পরিবহন, আমদানি, বণ্টন ও ক্রয়কে একটা আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়, তাহলে কিছুটা প্রতিরোধ করা সম্ভব। তা ছাড়া শুধু রাসায়নিক ও গবেষণাগার ছাড়া এগুলো যেন অন্য কোথাও ব্যবহার না করা হয়। এখানে তিনটি শ্রেণী কাজ করছে। উৎপাদকেরা যদি আরও একটু মানবিক হন, আইন প্রয়োগকারীরা যদি আরও একটু দায়িত্বশীল হন আর ভোক্তারা যদি একটু সচেতন হন, তাহলেই এর সমাধান সম্ভব।
আ ব ম ফারুক: মন্ত্রী মহোদয় ঠিক বলেছেন। আমরা আরেকটা সরকারি সংস্থা বানালাম, তাদের অনেক ক্ষমতা দেওয়া হলো। তাহলে সেখানে আরেক সমস্যা দেখা দেবে। তাদের ঠিক রাখতে আরেক সমাবেশে বসতে হবে, এটা যেন না হয়। উন্নত দেশে কোনো ওষুধের দোকান দিতে হলে গোয়েন্দা সংস্থা তার তিন পুরুষ যাচাই করে দেখে। দেশে ওষুধে ভেজাল পরীক্ষা করার জন্য সম্প্রতি যে ড্রাগ ল্যাবরেটরি তৈরি করা হয়েছে, সেখানেই সব রাসায়নিক মিশ্রণ পরীক্ষা করা সম্ভব। সরকারের নতুন করে কোনো অর্থ ব্যয় করতে হবে না। শুধু এর সঙ্গে খাদ্যকে একত্র করে সিদ্ধান্ত দিলেই এটা সম্ভব। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ একত্রেই কাজ করে, কোথাও আলাদা নেই।
মিথিলা ফারজানা: ম্যাজিস্ট্রেট আল আমিন বলেছেন, একটি নিয়ন্ত্রণ আইন প্রতিষ্ঠা করা দরকার। সেটা কি সম্ভব?
জি এম কাদের: আইন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। আইন তৈরি হচ্ছে। আমি মনে করি, আইন হচ্ছে সহায়ক শক্তি। আমি এটাকে কম গুরুত্ব দিই। সুশাসনের মাধ্যমে আইনের প্রতিষ্ঠা স্থাপন করা। আইন ইচ্ছা করলেই বানানো যায়।
মিথিলা ফারজানা: মাননীয় মন্ত্রী, ম্যাজিস্ট্রেট আল আমিন বলেছেন, এই অপরাধের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। আপনি যে ভাত খাচ্ছেন, তাতে থাকতে পারে ইউরিয়া, তরকারিতে থাকতে পারে কীটনাশক, মাছে ফরমালিন, মরিচের গুঁড়ার মধ্যে থাকতে পারে টেক্সটাইলের রং। ভোক্তা হিসেবে আপনার যদি কোনো অধিকার থেকে থাকে, তাহলে আজই সচেতন হোন। খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন, প্রতিবাদী হোন, বদলে যান বদলে দিন—এই প্রত্যাশা নিয়ে শেষ করছি।
No comments