যশোরে বিএনপি নেতা হত্যা- লাশ নিয়ে শহরে বিক্ষোভ মিছিল
যশোর সদর উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য ও বিএনপির নেতা জিয়াদুল ইসলামকে (৪৫) গত রোববার ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যার বিচারের দাবিতে গতকাল সোমবার ওই নেতার লাশ নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে জিয়াদুল ও বিএনপির আরেক নেতা মোহম্মদ আলীসহ কয়েকজন দেয়াড়া ইউনিয়নের দত্তপাড়া বাজারে একটি চায়ের দোকানে ক্যারমবোর্ড খেলছিলেন। এ সময় ১০-১২ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী সেখানে গিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে তারা জিয়াদুলকে দা দিয়ে কোপাতে থাকে এবং মোহম্মদ আলীর বুকে গুলি করে। পরে তারা বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই জিয়াদুল মারা যান। এ নিয়ে গতকাল প্রথম আলোতে ‘যশোরে বিএনপি নেতা খুন, আরেকজন গুলিবিদ্ধ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
জিয়াদুলকে হত্যা ও মোহাম্মদ আলীকে গুলি করার অভিযোগে গতকাল সকালে যশোর কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। নিহত জিয়াদুলের ভাই ইমাদুল ইসলাম বাদী হয়ে নয়জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতপরিচয়ের আরও কয়েকজনকে আসামি করে মামলাটি করেন।
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রহমান বলেন, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জের ধরে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হামলা চালিয়ে জিয়াদুলকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা ও মোহাম্মদ আলীকে গুলি করে জখম করা হয়েছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে বোমা বিস্ফোরণের আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। কী কারণে হামলা হয়েছে, তা-ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আসামিরা পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
নিহত জিয়াদুলের ছেলে মেহেদী হাসান বলেন, ‘রাতে বিকট শব্দ শুনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখি, বাবা ও মোহাম্মদ আলী চাচা রক্তাক্ত অবস্থায় চায়ের দোকানের মধ্যে পড়ে আছেন। বাবাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য কোনো যানবাহন পাওয়া যাচ্ছিল না। পাঁচ মিনিটের মধ্যে র্যাবের একটি টহল গাড়ি ঘটনাস্থলে আসে। র্যাবের গাড়িতে করে হাসপাতালের নেওয়ার জন্য র্যাবের সদস্যদের অনেক অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা বাবাকে তাঁদের গাড়ি দিয়ে হাসপাতালে পৌঁছে দেননি। জেনারেল হাসপাতালে যোগাযোগ করেও কোনো অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায়নি। ঘটনার দেড় ঘণ্টা পর বেসরকারি ক্লিনিকের একটি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে আসে। ততক্ষণে রক্তক্ষরণে বাবা মারা যান।’
র্যাব-৬-এর পরিচালক মেজর কে এম আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘র্যাবের গাড়িতে কেউ মারা গেলে আমাদের নানা রকম প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। এ জন্য সাধারণত র্যাবের গাড়িতে কোনো রোগী তোলা হয় না। তবে অ্যাম্বুলেন্স বা গাড়ির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। যে অ্যাম্বুলেন্সে করে মোহাম্মদ আলীকে হাসপাতালে নেওয়া হয়, তার ব্যবস্থা আমি নিজে করে দিয়েছিলাম।’
যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেরুল হক বলেন, জিয়াদুল দেয়াড়া ইউনিয়ন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন।
No comments