মার্কিন এ্যাডমিরালের নেতৃত্বে কমান্ডো টিম এসেছে দূতাবাসের নিরাপত্তা

রাজধানীর গুলশানে আমেরিকান দূতাবাসের নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে একজন এ্যাডমিরালের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের একটি সশস্ত্র কমান্ডো টিম ঢাকায় এসেছে। শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় একটি বিশেষ বিমানে তারা রাজধানীতে অবতরণ করে। মুসলিমবিরোধী মার্কিন চলচ্চিত্রের প্রতিবাদে গত কয়েকদিনে লিবিয়া, মিসর,


তিউনিশিয়া ও সুদানের মার্কিন দূতাবাসে হামলার ঘটনায় রাষ্ট্রদূত জে ক্রিস্টোফার স্টিভেন্সসহ ১১ জন নিহত হয়। একই ঘটনায় গত শুক্রবার বাংলাদেশের বিক্ষুব্ধ মুসল্লিরা যুক্তরাষ্ট্রের পতাকায় জুতা নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগ করে। এসব কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের ঢাকার দূতাবাসকেও নিরাপদ মনে করছে না। তাই সর্বোচ্চ নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং নিজস্ব অর্ধশত সদস্যের নিজস্ব কমান্ডো বাহিনী থাকার পরও আমেরিকান সরকার ঢাকার দূতাবাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করার উদ্যোগ নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার সুদূর মার্কিন মুল্লুক থেকে ১৫ সদস্যের কমান্ডো বাহিনী উড়িয়ে আনা হয়। সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থার এক শীর্ষ কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির জানান, রাজধানীর গুলশানের বারিধারায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসসহ সকল বিদেশী দূতাবাস এবং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কোন পুলিশ সদস্য নিরাপত্তা প্রদানে অবহেলা করলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। দায়িত্ব পালনকালে দেশী এবং বিদেশী নাগরিক উভয়ের সঙ্গে পুলিশকে সুলভ আচরণ এবং চেকপোস্টে তল্লাশির নামে হয়রানি না করতেও নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়াও কূটনৈতিক কর্মকর্তাদের সন্ধ্যার পর জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ওইসব দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রীয় পোশাকে পাবলিক প্লেসে না যাওয়ার জন্যও সতর্ক করা হয় তাদের। বিধিনিষেধ আরোপের পর বিদেশীদের কড়া নিরাপত্তার মধ্যে রাখতে সতর্ক হতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। দূতাবাস এলাকায় নিরাপত্তা প্রদানের ক্ষেত্রে ‘স্পেশাল অ্যাটেনশন’ রয়েছে। কারণ দূতাবাস এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতের সঙ্গে সরকারের ভাবমূর্তির বিষয়টিও জড়িত। তাই সার্বিকভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে। এ কারণে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়াও টহল টিমের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে ।
গুলশান থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, কূটনৈতিক জোন গুলশান এবং বারিধারার ২০টি চেকপোস্টে ২৪ ঘণ্টা তল্লাশি চালানো হয়। প্রতি চেকপোস্টে একজন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে ৫ জন করে পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করে। দুটি শিফটে ১২ ঘণ্টা অন্তর মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে। এসব চেকেপোস্টে আর্মড পুলিশের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্যদের নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সড়কে সক্রিয় রয়েছে র‌্যাবের একাধিক টহল টিম । বিদেশী দূতাবাসগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ চেকপোস্টগুলো তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এ কার্যক্রমে যাতে করে দেশী-বিদেশী কাউকেই হয়রানি করা না হয় সেজন্যও পুলিশকে মার্জিত ও বন্ধুসুলভ আচরণ করতে বলা হয়েছে। পুরো কূটনৈতিক এলাকায় পুলিশের টহল টিমের কর্যক্রম বাড়ানো হয়েছে। আবার এসব টহল টিমের কার্যক্রমকে পর্যবেক্ষণ করতে আলাদা টিমও রাখা হয়েছে ।

No comments

Powered by Blogger.